Ajker Patrika

নগর ভবনে হামলায় আসিফ মাহমুদের যোগসাজশ রয়েছে, অভিযোগ ইশরাকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ইশরাক। সেখানে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ইশরাক। সেখানে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নগর ভবনে আন্দোলনরত কর্মচারীদের ওপর ‘হামলার’ ঘটনায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘হামলাকারীদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনার পর বিকেলে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ইশরাক। সেখানে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই অভিযোগ করেন।

ইশরাক বলেন, ‘আহতদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, গোলাম কিবরিয়া রুবেল নামে একজন কর্মকর্তা এবং আরিফুজ্জামান প্রিন্স নামে আরেকজন কর্মচারী। এই দুজনের নেতৃত্বে কতিপয় স্বৈরাচারের দোসর ও শতাধিক বহিরাগত সন্ত্রাসী মুখোশ পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। গোলাম কিবরিয়া রুবেল বর্তমান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরার যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। তার গাড়িতে করেও সে ঘোরাফেরা করত বলে আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি।’

ইশরাক আরও অভিযোগ করেন, ‘রুবেল যে বিভাগে কর্মরত ছিল, নির্বাহী প্রকৌশলী বিভাগ, সেখান থেকে সকল প্রকারের দুর্নীতি, লুটপাট, সকল প্রকারের টেন্ডারবাজি, ভাগাভাগি সবকিছু করা হতো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে যারা বিভিন্ন সরকারি অফিসে গিয়ে টেন্ডারবাজি করছে, তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে তার অবস্থানটি ঠিক রেখেছিল সে। অতএব এখানে একটা যোগসূত্র অবশ্যই খুঁজে পাওয়ার বিষয় রয়েছে বলে আমি মনে করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুবেল ও আরিফুজ্জামান প্রিন্সসহ জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে যথাযথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, মোবাইল ফোন চেক করলে এবং তাদের অন্যান্য কার্যক্রম তদন্ত করলে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার যোগসাজশ বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে ইশরাকের আন্দোলনের মধ্যে নগর ভবনে কর্মচারীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ডিএসসিসি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যে এই সংঘর্ষ চলার সময় ভিডিও ধারণকালে এক সাংবাদিককে ছুরি দেখিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা যায়, দুজনেই বিএনপিপন্থী হলেও আরিফ চৌধুরী এবং আরিফুজ্জামান প্রিন্সের মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব চলমান। সম্প্রতি ইশরাক হোসেনের শপথের আন্দোলনে সক্রিয় না থাকার অভিযোগ করে’ বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে হামলা চালানো হয় আরিফুজ্জামান প্রিন্সের পক্ষের লোকদের ওপর। পরবর্তীতে তারাও পালটা হামলা চালান। সংঘর্ষে মনির, জসীম, মহিদুল, জুয়েল, কাইয়ুম, দিনার, জনিসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আঘাত পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংঘর্ষ চলাকালে ছবি ও ভিডিও ধারণ করলে সাংবাদিকদের হুমকি ও বাঁধা প্রদান করেন জড়িতরা। এ সময় নাগরিক টিভি, এখন টিভিসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদক ও চিত্রগ্রাহককে বাঁধা দেন তাঁরা। একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে ছবি-ভিডিও ডিলিট করা হয়।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, ঢাকাবাসীর ন্যায্য আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি পক্ষ বহিরাগতদের সংগঠিত করে এই হামলা চালায়।

আরিফুজ্জামান প্রিন্স জানান, আন্দোলনে সক্রিয় না থাকায় ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে গতকাল কয়েকজনকে নগর ভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই বিষয়টি তাঁর কানে আসলে তিনি প্রতিবাদ জানানোর জন্য নগর ভবনে যান। তিনি বলেন, আমি নগর ভবনে গেলে অন্য পক্ষ আমাকে দেখে তেড়ে আসে। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁরা হামলা চালায়। আমিসহ আমাদের দলের পাঁচজন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৯ এপ্রিল এই দুই পক্ষের মধ্যে আরও একবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেদিনও উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজনের আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত