Ajker Patrika

সাংবাদিক রোজিনাকে সচিবালয়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে থানায় সোপর্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৭ মে ২০২১, ২২: ১৯
সাংবাদিক রোজিনাকে সচিবালয়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে থানায় সোপর্দ

ঢাকা: দৈ‌নিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতি‌বেদক রো‌জিনা ইসলাম‌কে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশে তুলে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স‌চিবাল‌য়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভা‌গের স‌চি‌বের একান্ত স‌চিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষ থে‌কে ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয় ন‌থি’ নেওয়ার অভিযোগে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে সোমবার রাতে তাঁকে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।

যদিও রো‌জিনা ইসলাম দাবি করেছেন, স‌চি‌বের পিএস এর ক‌ক্ষে ঢুক‌লেও তি‌নি কো‌নো ‌কিছু‌তে হাত দেন‌নি, নথি নেননি। এরপ‌রেও তাঁকে আট‌কে রাখা হয়। মিজান না‌মের পু‌লি‌শের এক সদস্য তাঁর গা‌য়ে হাত দি‌য়ে‌ছেন। অন্যরা তাঁর শরী‌রে তল্লা‌শি চা‌লি‌য়ে‌ছে।

রোজিনা ইসলামকে বিকাল ৩টা থেকে স্বাস্থ্য সচিবের দপ্তরে আটকে রাখার খবর পেয়ে সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বিষয়টি নিয়ে কারো সঙ্গেই কথা বলেননি। রোজিনা ইসলামকে সচিবের পিএস এর কক্ষে আটকে রাখার পর থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর সচিবালয়ের দপ্তরে ছিলেন না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম-পদবি প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, নথি নেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটক করা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে কিনা, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছিল না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এরইমধ্যে রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে বিষয়টির সমাধান করতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পুলিশ প্রধানকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাঁকে পুলিশে তুলে দিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন এবং তাতে অনড় থাকেন তিনি।

এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বসে প্রথমে পুলিশ বাদি হয়ে রোজিনা ইসলামের নামে একটি অভিযোগ প্রস্তুত করে। পরে পুলিশ বাদি হতে আপত্তি জানালে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৮টার পর একটি মাইক্রোবাসে করে তাঁকে শাহাবাগ থানায় নেওয়া হয়।

ছবি: ফেসবুক

রাত ৯টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, সচিবের পিএসের রুমে ঢুকে মোবাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল-নথির ছবি তোলেন রোজিনা ইসলাম। আর কিছু কাগজপত্র তিনি সাথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। একজন অতিরিক্ত সচিব, পুলিশের একজন সদস্য তা দেখে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এটা নিয়ে যেতে পারেন না। তখন পুলিশকে জানানোর পর মহিলা পুলিশ আসে। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান জানান, দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি হারানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এই সাংবাদিককে তল্লাশি করা হলে তাঁর কাছ থেকে নথিগুলো পাওয়া যায়। এখন তিনি শাহবাগ থানায় পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

রো‌জিনা ইসলা‌মের স্বামী ম‌নিরুল ইসলাম মিঠু ব‌লেন, ‘আমার স্ত্রী সৎ সাংবা‌দিক। অতী‌তেও সত‌্য সংবাদ লি‌খে রোশান‌লে পড়েছে। সত‌্য প্রকাশ করায় তাঁকে না‌জেহাল করা হ‌চ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত