Ajker Patrika

নেশার টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নেশার টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন, থানায় মামলা

রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়া এলাকায় নেশার টাকার দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে স্বামী যোবায়ের হোসেন (৩৭) বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় নারী শিশু নির্যাতন ও যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর থেকে যোবায়ের পলাতক রয়েছে।

১৭ বছরের সংসারে বিয়ের পর থেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে নির্যাতিত নারী লায়লা মাহাদিয়া বলেন, পাঁচ বছর প্রেমের পর ২০০৫ সালে বিয়ে। আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বেকার। আমি অনলাইনে একটি ছোট ব্যবসা করে বাচ্চাদের নিয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি। সে মাদকাসক্ত হওয়ায় ২০১২ সাল থেকে চাকরি করত না। ২০১৫ সালে বিদেশে গিয়েছিল। সেখানে অনেক টাকা নষ্ট করে দেশে ফিরে আসে। নেশার টাকার জন্য প্রায়ই আমাকে নির্যাতন করত। গত ১৮ সেপ্টেম্বর টাকা দাবি করে। দিতে না পারায় প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। জীবন বাঁচাতে কাকুতি মিনতি করার পরে ছাড়ে নাই। পরে আমার বড় ছেলে রশি কেটে দেয়। সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর সামান্য একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এরপর বাইরে থেকে নেশা করে এসে আমাকে বাচ্চার স্কুটির স্ট্যান্ড দিয়ে রাতভর নির্যাতন করে। আমার শরীরের এমন কোনো স্থান নেই যে নির্যাতন করেনি। পরবর্তীতে আমি জীবন বাঁচাতে আমার তিন বাচ্চাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসি।

লায়লা আরও বলেন, আমার স্বামীর হাতে এমন নির্যাতনের বিষয়টি তারা বাবা মা জানার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আমি বাধ্য হয়ে আজ মামলা করলাম। এমনকি আমার বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে সে।

স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাচ্চারাও রক্ষা পায়নি উল্লেখ করে লায়লা বলেন, কিছু হলেই আমার বাচ্চাদেরও নির্যাতন করত। এমনকি আমার ছোট ছোট তিন বাচ্চার সামনেই আমাকে নির্মম নির্যাতন করা হতো। আমার বড় ছেলের বয়স ১২ বছর, মেজ ছেলের বয়স ৮ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স ৪ বছর। বাচ্চাদের খেলার ব্যাট, লাঠি, রশি দিয়ে নির্যাতন করা হতো। টাকার জন্য বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

অক্টোবরের ২ তারিখের ঘটনায় ৫ তারিখ মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে এই নারী বলেন, ২ তারিখ রাতের ঘটনা। পরের দিন ৩ তারিখ সকালে আমি থানায় গেলে পুলিশ আমার কোনো কথা শোনেনি। পরে আমার বোনের সহযোগীতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এরপর আবারও থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেই। ওসি থানায় না থাকায় মামলায় স্বাক্ষর হয়নি। আজ মামলায় গ্রহণ করেছে থানা। 

জীবন বাঁচাতে লায়লা ও তার সন্তানদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে লায়লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিন্তু এভাবে বাঁচতে পারব না। আমাকে যেকোনো সময়ে মেরে ফেলবে। তাই আমার বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য সবার সহযোগীতা চাই। 

এ দিকে মামলাটি তদন্ত করছে হাতিরঝিল থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. ফয়সাল রেজা। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, শারীরিকভাবে নির্যাতনের একটি অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী। এরপর আমরা আইন অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করব। পাশাপাশি নির্যাতনকারী ও বাদীর স্বামীকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায়, শোকাহত আজকের পত্রিকা

‘সামনে চমকপ্রদ বেশ কিছু ঘটনা ঘটবে, অনেক বিষয় আমি জানি’

‘মব’ সৃষ্টি করে ৩ কিশোরকে সেতুর সঙ্গে বেঁধে রাতভর পিটুনি, নিহত ১

সনদ জালিয়াতি: ব্যাংকের চাকরি যাওয়া জাহাঙ্গীরের স্কুল সভাপতির পদও গেল

এনসিটিবি: পাঠ্যবইয়ে আবার পরিবর্তন আসছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত