Ajker Patrika

মাদকাসক্ত ও অসহায় ব্যক্তিদের রক্ত নিয়ে ঢাকায় বিক্রি করতেন তিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ২২ জুন ২০২৩, ১৮: ২৬
মাদকাসক্ত ও অসহায় ব্যক্তিদের রক্ত নিয়ে ঢাকায় বিক্রি করতেন তিনি

প্রাতিষ্ঠানিক কোনো বিদ্যা না থাকলেও সামান্য অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, মাদকাসক্ত ও অসহায় ব্যক্তিদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় নিয়ে যেতেন। এরপর ব্লাড ব্যাগে করে তাঁদের রক্ত নিয়ে, মাছ-মাংসের সঙ্গে ফ্রিজে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে বিক্রি করতেন আব্দুল জলিল (৪০) নামের এক ব্যক্তি।

গতকাল বুধবার রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশকে এসব তথ্য দিয়েছেন তিনি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। আদালত পরিচালনা করেন সাভার রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল হোসেন।

গ্রেপ্তার আব্দুল জলিলের বাড়ি পাবনার চাটমোহরে। তিনি প্রায় দুই বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সাভার পৌর এলাকার তালবাগের একটি ভাড়া বাসায় থেকে অবৈধভাবে রক্তের ব্যবসা করে আসছিলেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের তৃতীয় তলায় ‘রেডিয়াম ব্লাড ব্যাংক ও ট্রান্সফিউশন সেন্টার’ নামের তাঁর একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একজন মাদকাসক্তের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে আব্দুল জলিলের বাসায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাঁর বাসার ফ্রিজ থেকে মাছ-মাংসের সঙ্গে রাখা ১০ ব্যাগ রক্ত, আর রক্ত বেড় করার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত গিয়ে জলিলকে সাজা দেন।’

এদিকে ওই রক্ত মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আব্দুল জলিলের রক্ত সংগ্রহ করার মতো প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা এবং তা বাজারজাত করার সরকারি কোনো অনুমোদন ছিল না। নিরাপদ রক্তের জন্য একজন মানুষের দেহ থেকে রক্ত বের করার পর যেসব পরীক্ষা করার কথা, তা না করেই তিনি রক্তের ব্যাগে সব সঠিক আছে বলে লিখে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে সরবরাহ করতেন। সুস্থ হওয়ার জন্য কোনো মানুষ এই রক্ত নিলে, তার অন্য রোগে আক্রান্ত হওয়াসহ মৃত্যুও হতে পারে।’

পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার আব্দুল জলিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এক সময় ব্লাড ব্যাংকে চাকরি করতাম। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দুই বছর ধরে রক্তের ব্যবসা করে আসছিলাম। আমি মাদকাসক্ত, ভিক্ষুক ও অসহায় লোকদের বাসায় নিয়ে, তাঁদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করতাম। বিনিময়ে নেগেটিভ গ্রুপের এক ব্যাগ রক্তের জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা আর পজিটিভ গ্রুপের এক ব্যাগ রক্তের জন্য ৭০০ টাকা করে দিতাম। এরপর তা আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করতাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত