Ajker Patrika

পাইকারি বাজারে চালের দাম কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
পাইকারি বাজারে চালের দাম কমেছে

ঢাকা: চলতি বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে ওঠায় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর পুরান ঢাকার পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি সের্বাচ্চ ছয় টাকা পর্যন্ত কমেছে। দেশের বিভিন্ন মোকামে মাঝারি মানের চালের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এর প্রভাবে খুচরা বাজারেও চালের দাম কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশের উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ জেলার চাল ব্যবসায়ীরা জানান, আগে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চালের দাম ছিল ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়ত ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা। বর্তমানে বস্তাপ্রতি চালের দাম তিন–চার শ টাকা কমেছে। কেজিপ্রতি দামও তাই কমেছে সর্বোচ্চ ছয় টাকা। আর বিআর-২৮ চাল (লতা নামে পরিচিত) বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছিল ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, যা বর্তমানে কমে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ হিসাবে এ চালের কেজিপ্রতি দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছর বোরোর ফলন গত বছরের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। গত বছর বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছিল ২০ থেকে ২২ মণ, যা এ বছর হয়েছে ২৪ থেকে ২৬ মণ। বাজারে ধানের দামও কিছুটা কমেছে। আগে প্রতিমণ মিনিকেট ধানের দাম ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা, যা বর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। তবে বাজারে চালের দাম আর কমার সম্ভাবনা নেই।

নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার শিবপ্রসাদপুর গ্রামের কৃষক আবদুল বারী জানান, প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে চাষ, হালি, রোপন, সার, বীজ, নিড়ানি ও কাটাসহ সর্বমোট খরচ পড়েছে ২ হাজার টাকা। আর ১০ শতাংশ জমিতে ধান হবে ছয় মণের মতো। বর্তমানে বিআর-২৮ প্রতিমণ (৪০ কেজি) ধান ৮৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আবহাওয়া খারাপ হলে দাম কমে যাবে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে প্রতিমণ বিআর-২৮ ধানের দাম ছিল ৫২০ টাকা। পরে দাম কমে ৪৮০ টাকা হয়েছিল।

রাজধানীর বাবুবাজার ও বাদামতলী এলাকার পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে মানভেদে প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৪ টাকা, যা গতকাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকায়। আর বিআর-২৮ চালের দাম আগের ৫০ টাকা থেকে কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪৪ টাকায়। এ হিসাবে পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি তিন থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত কমেছে।

চালের দাম কমার কারণ হিসেবে বাবুবাজারের মেসার্স ফরিদ রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেনও বললেন বোরো মৌসুমের চাল বাজারে ওঠার কথা। তিনি বলেন, এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। দাম কমায় বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও কমতে শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বাজারে চালি বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে।

রাষ্ট্রয়াত্ব বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গতকাল বুধবার কেজিপ্রতি সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা। একই দিনে মাঝারি মানের চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা আগে ছিল ৫২ থেকে ৫৮ টাকা। আর মোটা চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় এ বছর বোরো মৌসুমে ১৮ লাখ টন ধান-চাল কিনবে। এর মধ্যে ১০ লাখ টন সেদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল ও ৬ লাখ ৫০ হাজার টন ধান কিনবে সরকার। প্রতি কেজি ধানের মূল্য ২৭ টাকা এবং চালের মূল্য ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত