মধুপুরের শালবন
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মধুপুরের শালবন একদা ভেষজ-গুল্মলতা আর প্রাণবৈচিত্র্যে পূর্ণ থাকলেও আজ আনারস, কলা ও ক্ষতিকর আকাশমণি-ইউক্যালিপটাসের বাগানে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রাণিকুলের খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিকর কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত প্রভাবে বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। অপরিণামদর্শী প্রকল্প ও বাগানের চাপে বন তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মধুপুর শালবনে ৪৫ হাজার ৫৬৫ দশমিক ৩৮ একর বনভূমি রয়েছে। শাল, সেগুন, গর্জন, গামারিসহ বহু প্রজাতির বৃক্ষ আর ভেষজ-গুল্মলতায় পূর্ণ ঘন বন নানা প্রাণীতে পরিপূর্ণ ছিল। সেই বন আজ বৃক্ষশূন্য। বন বিভাগের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলের বনাঞ্চলের ৪১০ প্রজাতির গাছপালা ও ভেষজ-গুল্মলতা হারিয়ে গেছে। বনবাসী অজয় এ মৃ-এর মতে, গহিন এই বনে একসময় ৬৩ প্রজাতির ঔষধি গাছ ছিল। এর মধ্যে অর্জুন, বুনো ডুমুর, মনকাটা, জংলি খেজুর, দামন, তিতিজাম, কাশি গোটা, তিত ফল, দুধ কুরুজ, শতমূল, জারুল, পলাশ, তোফা, নাসিন ও গান্ধী গজারির মতো দেশীয় প্রজাতির গাছ ছিল। বর্তমানে ৪০ প্রজাতির বৃক্ষরাজির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে আরবোরেটাম (উদ্ভিদবিদ্যা অনুশীলনের উপযোগী উদ্যান) স্থাপন করে হারিয়ে যাওয়া বৃক্ষরাজি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বনে একসময় নিরাপদে থাকত অসংখ্য মায়া ও চিতল হরিণ। এ ছাড়া বানর, হনুমান, চিতাবাঘ, বাঘডাশা, জংলি শূকর, সাপ, বনবিড়াল, শিয়াল, শজারু, খরগোশ, উদ, গুইসাপ ও বনমোরগের লক্ষণীয় বিচরণ ছিল। বর্তমানে কিছু বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর বিচরণ দেখা যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই মধুপুর বনের গাছ লোপাট আর বনভূমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে প্রভাবশালীরা। কাঠ পাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকলে মধুপুরের অনার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি ছাত্রসংগঠন বন রক্ষার আন্দোলন গড়ে তোলে। ওই আন্দোলনের পর বন আইন সংশোধনসহ নানা পদক্ষেপে বনবৃক্ষ লুট কিছুটা থামলেও পরে সরকারি অপরিণামদর্শী প্রকল্প বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সামাজিক বনায়নের নামে প্লট বরাদ্দ পেয়েই প্রতি রাতে গাছ পাচার আর দিনে আকাশমণি-ইউক্যালিপটাস সৃজনে লিপ্ত হন স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
টাঙ্গাইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আনোয়ারুল হক বলেন, একসময় বন কর্মকর্তা, পুলিশ, রাজনৈতিক দলের নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা যৌথভাবে বনের গাছ লুট করেছেন। এখনো বন বিভাগের সহায়তায় বনভূমি দখল উৎসব চলমান।
বন গবেষক অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন জানান, বন শেষ হয়েছে সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে। এতে সুবিধা নিয়েছে বন বিভাগ আর একশ্রেণির প্রভাবশালী। ১৯৮৬ সালে রাবারবাগান সৃজন করা হয়েছে গজারি বন ধ্বংস করে। এডিবির অর্থায়নে ১৯৯০ সালে থানা বনায়ন ও নার্সারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভেষজ-গুল্মলতায় ভরা বাগান শেষ করে কৃত্রিম বনায়ন করে। তারপর উডলট ও অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক কাঠ পাচার হয়। ২০০১-০৩ পর্যন্ত অর্থসংকটে বন বিভাগের কার্যক্রমে স্থবিরতার সময় কলা আর আনারস বাগানে পরিণত হয় পুরো বনাঞ্চল।
কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের হিসাব অনুসারে, মধুপুর বনাঞ্চলে ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টরে আনারস, ২ হাজার ৬৮৫ হেক্টরে কলা, ৫৭৫ হেক্টরে পেঁপে, ৫৫০ হেক্টরে পেয়ারা, ২১৭ হেক্টরে লেবু, ৭০ হেক্টরে ড্রাগন আর প্রায় ১ হাজার হেক্টরে বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করা হয়, যাতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে সেই ফসল প্রাণীরা খেতে না পেয়ে খাদ্যসংকটে পড়ছে।
বেরীবাইদ এলাকার লিটন সরকার জানান, খাদ্যের অভাবে বানরের দল লোকালয়ে রাস্তার পাশে এসে অনেক সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে।
এ নিয়ে কথা হলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, মধুপুর বনাঞ্চলের ৪ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সামাজিক বনায়নের আওতায় সৃজিত বাগান শালবনে রূপান্তর করা হবে। একই সঙ্গে তা ভেষজ-গুল্মলতায় পরিপূর্ণ করে প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনা হবে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের শালবন একদা ভেষজ-গুল্মলতা আর প্রাণবৈচিত্র্যে পূর্ণ থাকলেও আজ আনারস, কলা ও ক্ষতিকর আকাশমণি-ইউক্যালিপটাসের বাগানে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রাণিকুলের খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিকর কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত প্রভাবে বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। অপরিণামদর্শী প্রকল্প ও বাগানের চাপে বন তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মধুপুর শালবনে ৪৫ হাজার ৫৬৫ দশমিক ৩৮ একর বনভূমি রয়েছে। শাল, সেগুন, গর্জন, গামারিসহ বহু প্রজাতির বৃক্ষ আর ভেষজ-গুল্মলতায় পূর্ণ ঘন বন নানা প্রাণীতে পরিপূর্ণ ছিল। সেই বন আজ বৃক্ষশূন্য। বন বিভাগের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলের বনাঞ্চলের ৪১০ প্রজাতির গাছপালা ও ভেষজ-গুল্মলতা হারিয়ে গেছে। বনবাসী অজয় এ মৃ-এর মতে, গহিন এই বনে একসময় ৬৩ প্রজাতির ঔষধি গাছ ছিল। এর মধ্যে অর্জুন, বুনো ডুমুর, মনকাটা, জংলি খেজুর, দামন, তিতিজাম, কাশি গোটা, তিত ফল, দুধ কুরুজ, শতমূল, জারুল, পলাশ, তোফা, নাসিন ও গান্ধী গজারির মতো দেশীয় প্রজাতির গাছ ছিল। বর্তমানে ৪০ প্রজাতির বৃক্ষরাজির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে আরবোরেটাম (উদ্ভিদবিদ্যা অনুশীলনের উপযোগী উদ্যান) স্থাপন করে হারিয়ে যাওয়া বৃক্ষরাজি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বনে একসময় নিরাপদে থাকত অসংখ্য মায়া ও চিতল হরিণ। এ ছাড়া বানর, হনুমান, চিতাবাঘ, বাঘডাশা, জংলি শূকর, সাপ, বনবিড়াল, শিয়াল, শজারু, খরগোশ, উদ, গুইসাপ ও বনমোরগের লক্ষণীয় বিচরণ ছিল। বর্তমানে কিছু বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর বিচরণ দেখা যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই মধুপুর বনের গাছ লোপাট আর বনভূমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে প্রভাবশালীরা। কাঠ পাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকলে মধুপুরের অনার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি ছাত্রসংগঠন বন রক্ষার আন্দোলন গড়ে তোলে। ওই আন্দোলনের পর বন আইন সংশোধনসহ নানা পদক্ষেপে বনবৃক্ষ লুট কিছুটা থামলেও পরে সরকারি অপরিণামদর্শী প্রকল্প বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সামাজিক বনায়নের নামে প্লট বরাদ্দ পেয়েই প্রতি রাতে গাছ পাচার আর দিনে আকাশমণি-ইউক্যালিপটাস সৃজনে লিপ্ত হন স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
টাঙ্গাইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আনোয়ারুল হক বলেন, একসময় বন কর্মকর্তা, পুলিশ, রাজনৈতিক দলের নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা যৌথভাবে বনের গাছ লুট করেছেন। এখনো বন বিভাগের সহায়তায় বনভূমি দখল উৎসব চলমান।
বন গবেষক অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন জানান, বন শেষ হয়েছে সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে। এতে সুবিধা নিয়েছে বন বিভাগ আর একশ্রেণির প্রভাবশালী। ১৯৮৬ সালে রাবারবাগান সৃজন করা হয়েছে গজারি বন ধ্বংস করে। এডিবির অর্থায়নে ১৯৯০ সালে থানা বনায়ন ও নার্সারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভেষজ-গুল্মলতায় ভরা বাগান শেষ করে কৃত্রিম বনায়ন করে। তারপর উডলট ও অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক কাঠ পাচার হয়। ২০০১-০৩ পর্যন্ত অর্থসংকটে বন বিভাগের কার্যক্রমে স্থবিরতার সময় কলা আর আনারস বাগানে পরিণত হয় পুরো বনাঞ্চল।
কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের হিসাব অনুসারে, মধুপুর বনাঞ্চলে ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টরে আনারস, ২ হাজার ৬৮৫ হেক্টরে কলা, ৫৭৫ হেক্টরে পেঁপে, ৫৫০ হেক্টরে পেয়ারা, ২১৭ হেক্টরে লেবু, ৭০ হেক্টরে ড্রাগন আর প্রায় ১ হাজার হেক্টরে বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করা হয়, যাতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে সেই ফসল প্রাণীরা খেতে না পেয়ে খাদ্যসংকটে পড়ছে।
বেরীবাইদ এলাকার লিটন সরকার জানান, খাদ্যের অভাবে বানরের দল লোকালয়ে রাস্তার পাশে এসে অনেক সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে।
এ নিয়ে কথা হলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, মধুপুর বনাঞ্চলের ৪ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সামাজিক বনায়নের আওতায় সৃজিত বাগান শালবনে রূপান্তর করা হবে। একই সঙ্গে তা ভেষজ-গুল্মলতায় পরিপূর্ণ করে প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনা হবে।
এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে দলটির কয়েকজন নেতা বলতে থাকেন, ‘এসব নিয়ে নিউজ করা যাবে না। এতে দলের বদনাম হবে।’ ওই সময় তাঁদের সামনেই বাড়ির মালিক ফাতেমা আহমেদ বলতে থাকেন, তিনি চার মাসের ভাড়া পাবেন। তাঁকে ভাড়া দেওয়া হয়নি। ভাড়ার টাকা দিয়েই তিনি সংসার চালান। ভাড়া না পেয়ে বিপদে পড়েছেন।
৫ মিনিট আগেকক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর পাড় থেকে এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চিংড়িজোনের চিলখালী কাটাবুনিয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
৩৫ মিনিট আগেআজ শনিবার ফরিদপুরে ‘মাদারস অব জুলাই’ অনুষ্ঠানে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন শহরের পূর্ব খাবাসপুর এলাকার শামসু মোল্যার স্ত্রী মেঘলা বেগম। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ফরিদপুরে নিহত হন শামসু। ফরিদপুর জেলা প্রশাসন এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে
১ ঘণ্টা আগেনরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগে এক ক্লিনিকের মালিককে আটক করা হয়েছে। আজ শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সিরাজ খান ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে