Ajker Patrika

২৬ টুকরা লাশ

আশরাফুল হত্যার ভিন্ন কারণ বলল র‍্যাব-পুলিশ

  • বন্ধু জরেজকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি ও র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার এক নারী
  • র‍্যাব বলছে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা থেকে হত্যা
  • ডিবি বলেছে, ত্রিভুজ প্রেমের কারণে আশরাফুলকে হত্যা করা হয়েছে
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আশরাফুল হক।
আশরাফুল হক।

রাজধানীতে আশরাফুল হককে (৪২) হত্যার পর লাশ ২৬ টুকরা করে হাইকোর্ট এলাকায় ফেলার কারণ হিসেবে দুই রকম তথ্য দিয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ। র‍্যাবের দাবি, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা থেকে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ডিবি পুলিশ বলছে, এই হত্যার নেপথ্যে রয়েছে ত্রিভুজ প্রেম।

কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল শনিবার সকালে র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন এবং পরে মিন্টো রোডে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য তুলে ধরেন। এই মামলার প্রধান আসামি ফরেজুল ইসলাম জরেজকে (৩৯) গত শুক্রবার রাতে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশ কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এবং জরেজের বান্ধবী শামীমা আক্তারকে (৩৩) লাকসাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

হাইকোর্ট এলাকায় জাতীয় ঈদগাহের ফটকের কাছে ফুটপাতে নীল ড্রাম থেকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুরের বদরগঞ্জের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুলের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সিআইডি তাঁর পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় শুক্রবার তাঁর ছোট বোন আনজিলা বাদী হয়ে আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। আশরাফুলের মরদেহ গতকাল সকালে জানাজা শেষে বদরগঞ্জের গোপালপুর নয়াপাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব দাবি করে, শামীমা ও জরেজের মধ্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জরেজের পরিকল্পনা ছিল, শামীমাকে ব্যবহার করে আশরাফুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায় করা। পরিকল্পনা অনুযায়ী জরেজ ১১ নভেম্বর আশরাফুলকে নিয়ে রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন। ১২ নভেম্বর শনির আখড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। শামীমাও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। সেখানে সেদিন দুপুরে শামীমা আশরাফুলকে শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। পরে আশরাফুল ও শামীমার আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হয়, যা দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা ছিল। ভিডিওটি শামীমার মোবাইল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাব আরও বলেছে, জরেজ পরে অচেতন আশরাফুলের হাত বেঁধে মুখে স্কচ টেপ লাগান এবং হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। উপর্যুপরি আঘাত ও শ্বাসরোধ হয়ে আশরাফুল মারা যান। পরদিন সকালে মরদেহ গুম করতে বাজার থেকে দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম আনা হয়। পরে মরদেহ টুকরা করে ড্রামে ভরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে হাইকোর্ট এলাকায় ফেলে রেখে যান তাঁরা। হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি, স্কচ টেপ ও আশরাফুলের রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশ বলছে, পুরো ঘটনাই ত্রিভুজ প্রেমের জটিলতার পরিণতি। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলামের বক্তব্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়াপ্রবাসী জরেজের সঙ্গে তিন বছরের বেশি আগে একটি অ্যাপের মাধ্যমে শামীমার পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় মাস আগে জরেজ দেশে ফেরার পরও সেই যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে জরেজের স্ত্রী তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুলের সাহায্য চান এবং শামীমার নম্বর দেন। পরে আশরাফুল নিজেই শামীমার সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন এবং তাঁরা ভিডিও কলে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন।

ডিবি জানায়, শামীমা ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে জরেজকে জাপানে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরেজ ও আশরাফুল ১১ নভেম্বর রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন এবং শনির আখড়ায় শামীমাকে সঙ্গে নিয়ে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে জরেজ বুঝতে পারেন, শামীমা ও আশরাফুলের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে শামীমা চিৎকার করলে জরেজ আশরাফুলের হাত বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর মুখের ভেতর ওড়না ঢুকিয়ে স্কচ টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পরই আশরাফুল মারা যান। পরে মরদেহ টুকরা করে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে হাইকোর্ট এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার দুজনের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হত্যার কারণ সম্পর্কে দুই সংস্থার পৃথক বক্তব্যে হত্যার প্রকৃত কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। অবশ্য পুলিশ ও র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার দুজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং ফরেনসিক পরীক্ষার পর হত্যার প্রকৃত উদ্দেশ্য পরিষ্কার হবে।

আশরাফুলের দাফন সম্পন্ন

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, আশরাফুল হকের মরদেহ শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে বদরগঞ্জের গোপালপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। গতকাল সকাল ৮টার দিকে জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দাফনের পর আশরাফুলের বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘কী দোষ ছিল মোর ছইলের? তাকে ঢাকাত নিয়া যায়া টুকরা টুকরা করিলো জরেজ ও তার প্রেমিকা। মুই বাঁচি থাকতে ওদের ফাঁসি দেখতে চাও। তাহলে মোরিও কিছুটা শান্তি পাইম।’

আশরাফুলের স্ত্রী লাকী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না। এলাকার মানুষ তাঁকে খুব ভালোবাসত। কেউ আর্থিক বিপদে পড়ে এলে কাউকে খালি হাতে ফেরত দিতেন না। এই ভালো মানুষটাকে কেন মারল জরেজ? ও যে তার বন্ধু ছিল?’

মা এছরা খাতুন বলেন, তাঁর একমাত্র ছেলে ছিলেন আশরাফুল। এখন কে তাঁদের খোঁজখবর নেবে? ওষুধপাতি এনে দেবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনারগাঁয়ে অনুমতি ছাড়াই বসানো হয়েছে মেলা, অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বালুর মাঠে অবৈধ বিজয় মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বালুর মাঠে অবৈধ বিজয় মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর বালুর মাঠে অনুমোদন ছাড়া একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মেলার আয়োজন করেছেন কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক রুমির ছোট ভাই সুমন হক ও তাঁর ভাতিজা আকাশ হক। তাঁদের অভিযোগ, মেলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাদক কারবার, জুয়া, অশ্লীল নৃত্যসহ বেআইনি কর্মকাণ্ড। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড দিয়ে মেলা থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

গত শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া মেলায় জুয়াড়ি, মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মেলা আয়োজনের অনুমতিপত্র না থাকলেও মেলার আয়োজক বিএনপি নেতার ভাই সুমন হক দাবি করেন, ইউএনও অফিসে আবেদন করে থানা-পুলিশকে জানিয়ে এই মেলা বসিয়েছেন তিনি। তবে জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই।

জানা যায়, কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক রুমির ছোট ভাই সুমন হক ও ভাতিজা আকাশ হক ও মিঠু মিয়া কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে বালুর মাঠে এই মেলার আয়োজন করেন। বিজয় মেলার নামে মাসব্যাপী মেলা গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়। মেলায় নাগরদোলা, ইলেকট্রিক নৌকা, পুতুলনাচ, খেলনার দোকান, কসমেটিকসের দোকান, মুড়ি-মুড়কি, ফুচকার দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক দোকান বসেছে।

মেলায় বসানো খেলনা, কসমেটিকসের দোকান ও ফুচকার দোকান থেকে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইলেকট্রিক নৌকা ও নাগরদোলা থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মেলার ভেতরে বসানো হয়েছে লটারির নামে জুয়া ও মাদকের আসর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিন উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে আশপাশে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। প্রশাসনও তাঁদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই অবৈধ মেলা দ্রুত উচ্ছেদ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তাঁরা।

মেলার ব্যবস্থাপক মিঠু মিয়া বলেন, তিনি বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে দোকানগুলো নিয়ে এসেছেন। মেলা বসানোর জায়গা না দিলে মেলা করা সম্ভব না। তবে এই মেলার জায়গা দিয়েছেন সুমন ও তাঁর ভাতিজা আকাশ।

মেলার আয়োজক সুমন হক বলেন, ‘মেলার অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের কপিটি থানায় জমা দিয়ে অবগত করা হয়েছে। এখনো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলার অনুমতি পাইনি।’ অনুমতি ছাড়া মেলা কীভাবে হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি দেখা করতে অনুরোধ করেন।

কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক রুমি বলেন, ‘এই অবৈধ মেলা বন্ধ করতে আমি নিজেই ইউএনও কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই মেলা বন্ধ হওয়া উচিত।’

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন, মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আয়োজকদের ডেকে মেলা বসানোর বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। মেলা বসানোর চেষ্টা করা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আল জিনাত বলেন, ‘মেলা বসানোর বিষয়ে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার জমায়েত করার সুযোগ নেই। অবৈধ মেলা উচ্ছেদ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০১
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শরিফ ওসমান হাদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শরিফ ওসমান হাদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার এখনো দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।

এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, তাঁর মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’ এবং ক্লিনিক্যালি তিনি আগের মতোই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক পর্যায়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁকে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনাও চলছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের এক সদস্য।

আজ রোববার সকালে মেডিকেল বোর্ডের জরুরি বৈঠক শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বোর্ডের এক চিকিৎসক এসব তথ্য জানান।

ওই চিকিৎসক বলেন, ‘ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি কেস সামারি প্রস্তুত করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশের কোনো হাসপাতাল সেই কেস সামারি পর্যালোচনা করে রোগীকে গ্রহণ করলে তবেই বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসবে।’

হাদির চিকিৎসায় যুক্ত ওই চিকিৎসক আরও জানান, ‘আজ সকালে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের আগেই হাদির সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। পুনরায় সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কে ব্যাপক ইডেমা (পানি জমা) ও অক্সিজেনের ঘাটতির প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা ব্রেনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মস্তিষ্কের কিছু অংশে ছিটেফোঁটা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণও পাওয়া গেছে। সর্বশেষ সিটি স্ক্যান অনুযায়ী হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা জটিল। ফুসফুসের অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। বর্তমানে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে হাদির শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে। তবে তাঁর কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে। দিনে প্রায় ৪ লিটার ইউরিন আউটপুটের ভিত্তিতে ফ্লুইড ব্যালেন্স করা হচ্ছে।’

এর আগে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের ভারসাম্যহীনতা থেকে যে ডিসেমিনেটেড ইনট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন (ডিআইসি) দেখা দিয়েছিল, সেটির অবস্থাও বর্তমানে অপরিবর্তিত রয়েছে এবং নতুন করে কোনো সংকট তৈরি হয়নি বলে জানান চিকিৎসক।

তাঁর মতে, বড় উদ্বেগ মস্তিষ্ক নিয়ে। ব্রেন স্টেম ইনজুরি এখনো গুরুতর অবস্থায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে গেছে বাল্কহেড

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকালে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেডটি ডুবে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
আজ সকালে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেডটি ডুবে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা নদীতে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। নৌ পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যাত্রীবাহী লঞ্চের সঙ্গে বাল্কহেডের সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বাল্কহেডটি নদীতে ডুবে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, বাল্কহেডে থাকা স্টাফরা নদীতে লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন।

নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সদরঘাট থেকে ভোলাগামী ‘বোগদাদীয়া-১৩’ লঞ্চটি ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা অংশে পৌঁছালে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ধাক্কা দেওয়া লঞ্চটিকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

প্রতক্ষ্যদর্শী শেখ সাদ্দাম বলেন, ‘নদীপারাপারের সময় দুর্ঘটনাটি দেখেছি। সঙ্গে সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় প্রাইভেট কার থামিয়ে ডাকাতি, ভিডিও ভাইরাল

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
গতকাল দিবাগত রাতে ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়নের মনিপার্ক এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল দিবাগত রাতে ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়নের মনিপার্ক এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় প্রাইভেট কার থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রধারী ডাকাতেরা নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের মনিপার্ক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

প্রাইভেট কারটির মালিক শিমুল জানান, পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরদী থেকে রাতে গাড়ির জ্বালানি গ্যাস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মনিপার্ক এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন ডাকাত গাড়িটি লক্ষ্য করে তাড়া করে। অস্ত্রের মুখে তারা গাড়িতে থাকা ৩২ হাজার ৮০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় চালক হিমেলকে মারধর করা হয়।

ডাকাতির ঘটনা প্রাইভেট কারে থাকা বাপ্পি নামের এক যাত্রী ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। শিমুল জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় লিখিত অভিযোগ ও মামলা করা হবে।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত