Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১০: ২৬
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন আবাসিক হল, কোয়ার্টার্সসহ ২৭০টির বেশি বাসায় বছরে ৩২ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল কেউ দেন না। জানা গেছে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ১৪টি, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলে ৪০টি, জগন্নাথ হলে ৯৩টি, মাস্টারদা সূর্য সেন হলে ১২টি, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৮টি, কবি জসীমউদ্‌দীন হলে ৮টি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৯টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ১০টি, অমর একুশে হলে ৪৫টি, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসিতে ১৩টি, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে ১৪টিসহ ২৭০টির বেশি বাসায় বিদ্যুতের মিটারই নেই। মিটার না থাকায় তাঁরা কেউ বিদ্যুতের বিল দেন না।

রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা যায়, দুটি ফ্যান, চারটি লাইট ও একটি ফ্রিজ ব্যবহার করলে মাসে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল আসার কথা। সে হিসাবে বছরে ৩২ লাখ টাকার বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এদিকে ৯৩টি বাসায় অবৈধ বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-বিদ্যুৎ (জোন-১)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সার্কেল-বিদ্যুৎ) মো. লুৎফর রহমান বলেন, হলের সঙ্গে সংযুক্ত যে বাসাগুলোতে বিদ্যুতের মিটার নেই, সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। দোকানের বিষয়টিও হল প্রশাসন দেখবে। তিনি জানান, বিদ্যুতের মিটারবিহীন বাসার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়নি।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, বিদ্যুতের মিটার বসানোর দায়িত্ব হল প্রশাসনের নয়, ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন বিষয়টি দেখবে, আর চিঠির বিষয়টি তাঁর মনে নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালকের দপ্তর জানায়, অর্থ বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পাঠানো পরিপত্রের আলোকে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেট থেকে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুতের খরচ বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩০ কোটি টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো আয় নেই। ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে যে বরাদ্দ দেয়, তা খুবই অপ্রতুল। সে জায়গায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যুৎ বিল না দিয়ে অবৈধ সংযোগ চালানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের বিদ্যুৎ শাখাকে বলা হয়েছে, বিষয়টি যেন নজরে রাখে এবং একটি তালিকা তৈরি করে। তালিকা তৈরি করা হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন ছাড়াও হলের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যানটিন ও দোকানের মালিকেরাও বিদ্যুৎ বিল দেন না। জানা যায়, হলগুলোতে ৩০টি ক্যানটিন, ১১০টির বেশি দোকান রয়েছে। দোকানগুলোতে জুস মেশিন, একাধিক লাইট ও ফ্যান ব্যবহার করা হয়। দোকানিরা বিশ্ববিদ্যালয়কে দোকান ভাড়া দিলেও বিদ্যুৎ বিল দেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইকবাল রউফ মামুন বলেন, ‘দোকানগুলোর বিদ্যুৎ ভাড়া দোকানমালিকেরা দেবেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে, মিটারও দেওয়া হবে। আর বাসায় মিটার স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল যুক্তরাজ্যে থাকায় তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা যায়নি। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে বিদ্যুৎ বিল না দিয়ে বাসায় থাকেন, সেটি সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপনের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত