Ajker Patrika

রাতে রুমে ডেকে দুই কর্মীকে পেটালেন ঢাবি হল ছাত্রলীগের নেতা

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ২৪
রাতে রুমে ডেকে দুই কর্মীকে পেটালেন ঢাবি হল ছাত্রলীগের নেতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম। আরিফুল ইসলাম হল সংসদের সদ্য সাবেক সদস্য। 

তাঁরা দুজন বর্তমানে হলের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। 

উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সিফাত উল্লাহ সিফাত এবং আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের অধীন ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান অর্পণ এই নির্যাতনে নেতৃত্ব দেন বলে জানা গেছে। আর তাঁদের সঙ্গে ছিলেন একই সেশনের তাহসিন, মারুফ এবং রেদওয়ান। 

জানা গেছে, তাঁরা দুজনেই ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী। এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের কারণে তাঁরা দুজন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন। হলে তাঁরা দুজন ইমরান সাগরের অনুসারী। 

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী জানান, গতকাল রোববার রাতে তাঁরা দুজন নিজ কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত ২টা ৪০ মিনিটের দিকে হলের ইমিডিয়েট সিনিয়র সিফাত ও মাহমুদুর রহমান তাঁদের ৩৫১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান। তখন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী ডেকে পাঠানোর কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্তরা আগে রুমে যাওয়ার কথা বলেন। সেই কক্ষে গেলে তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং মারধর করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিকভাবে আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের থেকে এগিয়ে যাচ্ছি। এতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে আমাদের ওপর নির্যাতন শুরু করেছে।’

আরিফুল আরও বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা থাকার কারণে প্রোগ্রাম ও গেস্টরুমে অনিয়মিত যাই। তাই তারা আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং নির্যাতন করে। একপর্যায়ে আমি অসুস্থ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়ি। এ ছাড়া মারার সময় আমাদের দুপুর ১২টার মধ্যে সব জিনিসপত্র নিয়ে হল থেকে বের না হলে “মেরে টাঙ্কিতে ফালাই রাখমু” বলে হুমকি দেয়।’

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সিফাত উল্লাহ সিফাত বলেন, ‘সামনে হল সম্মেলন। আর আমি ভালো অবস্থানে আছি। তাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান অর্পণের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী ও গ্রুপ নিয়ন্ত্রক ইমরান সাগর বলেন, ‘তারা তো আমার ছোট ভাই। বিষয়টি আমি মীমাংসা করে দেব। আমি জানতাম তারা রাতে বসবে, কিন্তু এতে কোনো ধরনের মারধরের ঘটনা ঘটবে তা আমি জানতাম না। খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল করিম সুমন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি না। ক্যাম্পাসে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে সাংগঠনিক নিয়মে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মকবুল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। আপাতত এতটুকু বলতে পারি, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা প্রক্রিয়াধীন। আলোচনার পর বাকি প্রক্রিয়া আমরা বিবেচনা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি এবং সার্বিক খোঁজখবর নেওয়ার জন্য হল প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। হল প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‎ডিভোর্সের পরও জোর করে রাতযাপন, বর্তমান স্বামীকে নিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে হত্যা ‎

৯ পুলিশ পরিদর্শক বাধ্যতামূলক অবসরে

গণবিক্ষোভ আতঙ্কে মোদি সরকার, ১৯৭৪-পরবর্তী সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘সন্ত্রাসী খেল’ ফাঁস করে দিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী জইশের সদস্য

নিজের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি কলেজশিক্ষকের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত