Ajker Patrika

মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়, রাস্তায় যানজটে নাকাল

অর্চি হক, ঢাকা
মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়, রাস্তায় যানজটে নাকাল

—মা, এই ভিড়ে আজকে আর কিছু না কিনি। বাসায় চলো। 
—জামা কাপড় বানাইতে দিতে হইব না? আইজকা না কিন্না উপায় আছে? 

আজ শুক্রবার রাজধানীর চাঁদনি চক মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ফিরোজা আক্তার আর তাঁর ছেলে নাইমুল শুভ্রর মধ্যে এ রকম আলাপই চলছিল। ছুটির দিনে মার্কেটে উপচেপড়া ভিড় দেখে ছেলে বিরক্ত। কিন্তু দেরি হয়ে গেলে দরজির দোকানে সিরিয়াল পাওয়া যাবে না ভেবেই আজই কাপড় কিনে বাড়ি ফিরতে চান মা। 

দেরিতে কাপড় কিনে গত বছর বিপাকে পড়তে হয়েছে ফিরোজাকে। সে অভিজ্ঞতাই এ প্রতিবেদকের কাছে বর্ণনা করলেন তিনি। ‘গত বছর ছেলে, আমি, ওর বাবা কেউই ঈদের জামা পরতে পারি নাই। একদম শেষ মুহূর্তে কিনছিলাম। দরজি বানানো শেষ করতে পারে নাই। এবার আর সেই ভুল করব না’, বলেন ফিরোজা। 

ঈদের এখনো দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বাকি। তারপরও আজ লোকে লোকারণ্য ছিল রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট। বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। রাস্তায় যানজটও চরমে। 

বিকেলে মোহাম্মদপুর থেকে নিউমার্কেটে আসা নাসিমা আক্তার জানান, রিকশায় করে মার্কেটে পৌঁছাতে তাঁর দেড় ঘণ্টা লেগেছে। অন্য সময় হলে আধা ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছাতে পারেন। 

সিটি কলেজের সামনে ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা বাসচালক মোহাম্মদ রমিজ বলেন, ‘আমগো আর শান্তি নাই। অফিসের দিনেও জ্যাম, ছুটির দিনেও জ্যাম। জ্যামে থাকতে থাকতেই জীবন পার।’ 

অন্যদিকে দুই বছরের খরা কাটিয়ে ঈদের বাজারে উপচেপড়া ভিড় দেখে দোকানিরা বেজায় খুশি। নিউমার্কেট এলাকার খান প্লাজা শপিং সেন্টারের বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলছিলেন, ‘রোজা শুরু পর থেকে আজকে বেশ ভালো বেচাবিক্রি হইছে। এইটার প্রতীক্ষাতেই ছিলাম। দুই বছরের লস এইবার কাটবে ইনশাআল্লাহ।’ 

ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাঁরা দরজির কাছে বানিয়ে জামাকাপড় পরেন, তাঁরা দু-এক দিনের মধ্যে কেনাকাটা শেষ করে ফেলতে চাইছেন। এ জন্য মেয়েদের থ্রিপিস, ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবির কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। বেচাবিক্রিও হচ্ছে দেদারসে। কিন্তু তৈরি পোশাক বিক্রির দোকানগুলোতে ভিড় কিছুটা কম। জুতা, বেল্ট গয়নাগাটির দোকানগুলোও তুলনামূলক ফাঁকা। 

মার্কেটে ভিড় আর রাস্তায় যানজটে নাকাল নগরবাসীনিউমার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন জানালেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। দর্জিবাড়ি ছুটতে হবে যাঁদের তাঁরা কেনাকাটা খুব দ্রুত সেরে নিচ্ছেন। এ জন্য তৈরি পোশাক আর জুতার দোকানে ভিড় তুলনামূলক কম। 

গাউছিয়ার মার্কেটের সামনের জুতা বিক্রেতা শাহনুর মিয়া বলেন, ‘এহন বেচাবিক্রি হইতেছে। কিন্তু এট্টু কম। আর একটা সপ্তাহ পর আমরা জুতা আইনা কুলাইতে পারমু না।’ 

দুবছর পর করোনার শঙ্কামুক্ত হয়ে কেনাকাটা করতে পেরে ক্রেতা-বিক্রেতা দুপক্ষই খুশি। তবে কয়েকজন ক্রেতা জানান, এবার সবকিছুরই দাম আগের চেয়ে অনেকটা বেশি। 

মগবাজার থেকে ইস্টার্ন মল্লিকায় কেনাকাটা করতে আসা শর্মি ইসলাম বলেন, ‘যেই থ্রিপিসটা গতবার পনেরো শতে কিনেছি, এবার সেটাই পঁচিশ শ চাচ্ছে। এমন হলে তো আমরা সমস্যায় পড়ে যাই।’ 

ক্রেতাদের অভিযোগের বিষয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘আমি এখনো দাম বেশি এমন কিছু দেখিনি। তবে সবকিছুরই এখন আগের চেয়ে দাম বেড়েছে। তাই জামাকাপড়ের দামও বাড়তে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত