Ajker Patrika

রাজাকার স্লোগানের নিন্দা ঢাবি শিক্ষক সমিতির, মারধর নিয়ে চুপ 

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৬: ৩৩
রাজাকার স্লোগানের নিন্দা ঢাবি শিক্ষক সমিতির, মারধর নিয়ে চুপ 

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘বিকৃত’ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘আমি রাজাকার’ স্লোগানের নিন্দা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তবে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর ছাত্রলীগ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মন্তব্য করতে রাজি হননি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে বিকৃত করে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পক্ষে আন্দোলনকারী একদল শিক্ষার্থী যেভাবে গত ১৪ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “আমি কে তুমি কে, রাজাকার-রাজাকার” বলে স্লোগান দিয়েছে তা আমাদের ব্যথিত, লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ করেছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই স্লোগান প্রদানের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের প্রতি অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে। অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে ২ থেকে ৬ লাখ নির্যাতিত নারীর প্রতি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র ভূমিতে—যা বাংলাদেশের মহান মুক্তিসংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদের রক্তে রঞ্জিত এবং যে বিশ্ববিদ্যালয় মহান মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে—মুক্তিযুদ্ধকালীন হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন পরিচালনাকারী রাজাকারের পক্ষে স্লোগান প্রদানের তীব্র নিন্দা জানাই। কোনো অজুহাতেই রাজাকারের পক্ষাবলম্বন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের অবমাননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ গ্রহণ করবে না।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কোটা বাতিলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করার প্রয়াস রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা নিন্দনীয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং রাজাকারদের পক্ষাবলম্বনকারী সব অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা সরকারকে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের আহ্বান জানাই।’

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জিনাত হুদা। আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদক ফোন দিলে জিনাত হুদা বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব না। এটা প্রশাসন দেখবে।’

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে শিক্ষকদের কোনো প্রতিবাদী কর্মসূচি চোখে না পড়লেও সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা। প্রতিদিনের মতো কলাভবনের প্রধান ফটকে দুপুর ১২ থেকে ১ পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের এমন অবস্থানে নিন্দা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও করেছেন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এরা (শিক্ষক) এত পরিমাণ নির্লজ্জ কেমনে হয়! শিক্ষার্থীদের নিয়ে কথা বলতে পারে না, নিজেদের পেনশন নিয়ে আন্দোলনে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত