Ajker Patrika

বিচারালয়ে বিচারক ও আইনজীবীদের বসার জায়গা থাকলেও বিচারপ্রার্থীদের নেই: প্রধান বিচারপতি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, ২০: ০৫
বিচারালয়ে বিচারক ও আইনজীবীদের বসার জায়গা থাকলেও বিচারপ্রার্থীদের নেই: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দূরদূরান্ত গ্রামাঞ্চল থেকে পুরুষের সঙ্গে নারী বিচারপ্রার্থীরাও আদালতে আসেন। বিচারালয়ে বিচারকদের বসার জায়গা আছে, আইনজীবীদেরও বসার জায়গা আছে। কিন্তু বিচারপ্রার্থীদের বসার জায়গা নেই। অথচ বিচারপ্রার্থীদের জন্যই এই আদালত এবং বিচারব্যবস্থা। 

আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিতব্য ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। 

প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সাল এই দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে মামলা নিষ্পত্তির হার একটু ধীরগতি হয়ে যায়। তবে পরের বছরে মামলা নিষ্পত্তির হারের গতি অনেকটা বেড়েছে। প্রায় ৩৪টি জেলায় মামলা নিষ্পত্তির হার ১০০ শতাংশ। মামলা নিষ্পত্তির হার ১২৫ থেকে ১৩০ শতাংশ করা গেলে আগামী পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে মামলার জট সহনীয় পর্যায়ে আনা যাবে। 

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি যখন প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেই, সেদিনই প্রধানমন্ত্রীকে বলি, আমাদের বিচারালয় আছে; বিচারকদের বসার জায়গা আছে। আইনজীবীদেরও বসার জায়গা আছে। কিন্তু বিচারপ্রার্থীদের বসার জায়গা নেই। অথচ বিচারপ্রার্থীদের জন্যই এই আদালত এবং বিচারব্যবস্থা। বিচারপ্রার্থীরা আদালত প্রাঙ্গণে এসে স্বস্তিতে বসবেন—এ রকম আয়োজন সারা দেশে কোনো আদালতে নেই। অথচ এই আদালত ভবন, বিচার প্রশাসন ও আইনজীবী বিচারপ্রার্থীদের সেবার জন্য নিয়োজিত থাকেন।’ 

মামলার জটের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বাদী ও বিবাদী মিলে প্রতিদিন লাখ লাখ লোকের আদালত প্রাঙ্গণে আসতে হয়। তাঁরা যেন স্বস্তিতে বসে পানি পান করতে পারেন, শৌচাগার ব্যবহার করতে পারেন—এ রকম কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেওয়ার পরপরই তিনি ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য ৩৫ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। 

৬৪টি জেলায় ৫০ লাখ করে টাকা দিলেও প্রত্যেকটি জেলায় ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা যাবে। সেখানে পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক শৌচাগার। বসার জন্য থাকবে ৫০ থেকে ৭০টি চেয়ারের ব্যবস্থা। একপাশে থাকবে ফাস্ট ফুডের দোকান এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেগুলো আদালতে দরকার হয়। 

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘মামলা জটের কারণে বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে মানুষ যেন ন্যায়বিচার পান তার ব্যবস্থা করা। এতে “বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে” এই পরিস্থিতি আর হবে না।’ 

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের বিচারকেরা প্রচণ্ড পরিশ্রমী। তাঁরা রাত-দিন পরিশ্রম করেন। বিচারকদের কাজ বাইরে থেকে দেখা যায় না। তাঁরা আদালতে যে সময় ব্যয় করেন, বাসায় গিয়েও অনেক রাত পর্যন্ত মামলার রায় লিখতে হয়। আমরা একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে জয়ী হয়েছি, মামলা জট নিরসনের এই যুদ্ধেও আমরা জয়ী হব।’ 

ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রইস উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী, জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমদ্দার, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শামীমা আক্তার, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উৎপল ভট্টাচার্য্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মেজবাউল হক, সাধারণ সম্পাদক নূরতাজ আলম বাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত