Ajker Patrika

চুরি-ছিনতাই মামলা না নিলে থানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ডিবির যুগ্ম কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৪৮
চুরি-ছিনতাই মামলা না নিলে থানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ডিবির যুগ্ম কমিশনার

ঢাকা মহানগরের কোনো এলাকায় চুরি কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ মামলা না নিলে বা মামলা নিতে গড়িমসি করছে—এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্রসহ ২৭ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আব্দুর রহমান শুভ (২২), ইয়াছিন আরাফাত জয় (১৯), বাবু মিয়া (২৮), ফরহাদ (২১), হৃদয় সরকার (২৪), আকাশ (২০), জনি খান (২২), রোকন (১৮), মেহেদী হাসান ওরফে ইমরান (২৭), মনির হোসেন (৪১), জুয়েল (২২), জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে মাইকেল (৩৬), আজিম ওরফে গালকাটা আজিম (৩৫), শাকিল ওরফে লাদেন (২৪), ইমন (২২), রাজিব (২৫), রাসেল (৩২), মিন্টু মিয়া ওরফে বিদ্যুৎ (৩৯), মাসুদ (৩০), তাজুল ইসলাম মামুন (৩০), সবুজ (৩০), জীবন (২৫), রিয়াজুল ইসলাম (২৫), মুন্না হাওলাদার (১৯), শাকিল হাওলাদার (২০), ফেরদৌস (২২) ও আবুল কালাম আজাদ (৩৪)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে লোহার রড, দা, ছোরা, চাকু, চেতনানাশক ট্যাবলেট ও মলম জব্দ করা হয়। 

ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে ছিনতাই, মলম ও টানা পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা ও লালবাগ বিভাগের বিশেষ অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ২৭ জনই পেশাদার ছিনতাইকারী, ডাকাত দলের সদস্য। আজ তাঁদের মধ্যে ২২ জনকে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ২৭ জনের বিরুদ্ধেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। 

মাহবুব আলম বলেন, ‘চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে পুনরায় ব্যবহার হচ্ছে। আর এগুলো করার জন্য একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। বিশেষ করে হাতিরপুলের ইস্টার্ন প্লাজা, মোতালেব প্লাজা, গুলিস্তান এলাকায় যে কেউ গিয়ে তাঁদের মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে নিতে পারে। এবার আমরা পরিকল্পনা করেছি, যাঁরা এ ধরনের চোরাই মোবাইলের কারবার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। কারণ, চক্রটির সদস্যদের বিরুদ্ধে শুধু ছিনতাই মামলা নয়, মাদক মামলাও রয়েছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, চোরাই মোবাইল শুধু দেশীয় মার্কেট কিংবা শপিং মলগুলোতে নয়, চোরাই মোবাইল বিদেশে পাচার হচ্ছে। যেমন—ছিনতাই হওয়া আইফোনগুলো দেশের বাইরে যাচ্ছে। 

গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরামাহবুব আলম বলেন, যাঁরা চোরাই মোবাইল ফোন কেনেন, তাঁরা হয়রানির শিকার হন। তাই প্রকৃত মোবাইল কোম্পানির কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেনা উচিত। 

ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে চায় না—এমন অভিযোগের ব্যাপারে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, এমন হয়তো হয়ে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন কীভাবে মোবাইল চুরি হয়েছে তা ভুক্তভোগী জানেন না। কারণ, তিনি স্পষ্ট নন চুরি হয়েছে, নাকি হারিয়ে গেছে। যখন তাঁরা পুলিশের কাছে যান, তখন সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন না। তখন স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ হয়তো চুরির মামলা না নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার জিডি নেয়। ক্ষেত্রবিশেষে ছিনতাইয়ের পর মামলা রেকর্ড না হওয়ার প্রবণতা আছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে। তবে পরে তদন্তে যদি এটা জানা যায় যে মোবাইল ফোনটা ছিনতাই হয়েছিল বা টানা পার্টির ঘটনা, তখন মামলা হয়। 

মাহবুব আলম বলেন, ‘যদি কোনো বিশেষ অভিযোগ পাওয়া যায় যে কোনো থানা মামলা নিচ্ছে না বা নিতে গড়িমসি করছে, তাহলে ডিএমপি কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সেটা আমরা নিচ্ছি।’ 

এ পর্যন্ত কতগুলো মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে—জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করছি, মোবাইল উদ্ধার করছি, থানা-পুলিশও উদ্ধার করছে। সংখ্যাটা বলা যাচ্ছে না। এসব ঘটনার সঙ্গে তালিকা করা কিশোর গ্যাং সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে তাদের আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত