Ajker Patrika

‘মদ নিয়ে সড়কে’ জাবির অ্যাম্বুলেন্স, ধাক্কায় প্রাণ গেল রিকশাচালক ও গর্ভের সন্তানের

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ১৭
‘মদ নিয়ে সড়কে’ জাবির অ্যাম্বুলেন্স, ধাক্কায় প্রাণ গেল রিকশাচালক ও গর্ভের সন্তানের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় অটোরিকশাচালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারী আহত হয়ে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুরুতর আহত ওই নারীর গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে জানিয়েছে সাভার হাইওয়ে থানা-পুলিশ। অ্যাম্বুলেন্সটিতে মদ বহন করা হচ্ছিল বলে জানা গেছে।

গত ২৬ জানুয়ারি (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে জানাজানি হয় আজ সোমবার। 

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনা নিয়ে গতকাল রোববার সাভার হাইওয়ে থানার পুলিশ তদন্ত করতে এলে বিষয়টি সামনে আসে। 

পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল কুদ্দুস (৩০)। তিনি পটুয়াখালীর কাউখালী উপজেলার কোনাহোড়া এলাকার আব্দুল মজিদ শিকদারের ছেলে। সাভারের কলমা এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই নারীর পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

ওসি আজিজুল হক বলেন, ‘ঘটনাটি ২৬ জানুয়ারি রাতের। সে রাতেই সাভার মডেল থানায় এ দুর্ঘটনা নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ৭৭। মামলার বাদী সাভার হাইওয়ে থানা।’ 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সেদিন রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিপিএটিসি এলাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশা থেকে ছিটকে পড়ে যান চালক আব্দুল কুদ্দুস। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর অটোরিকশার আরোহী এক গর্ভবতী নারী গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার ও গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ 

ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত এক গাড়ির চালককে। তবে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে আমরা ওই চালককে শনাক্ত করেছি। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করব না। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাহায্য নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে গতকাল আশ্বাস দিয়েছেন।’ 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চালক রিপন হাওলাদার। অ্যাম্বুলেন্সটিতে আরোহী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক রিফাত চৌধুরী ও উপ অর্থসম্পাদক আহসান হাবিব ইমন। দুজনই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানান, গত ২৭ জানুয়ারি মওলানা ভাসানী হলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানেই মাদক পরিবহনে ব্যবহার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স। 

সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় জাবির ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাম্বুলেন্সটি (ঢাকা মেট্রো ছ ৭১-৪৫৪৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসে রাখা হয়েছে। 

এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান সাভার হাইওয়ে থানা-পুলিশের এসআই বাবুল (মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা)। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে সহযোগিতা করা হয়নি। তদন্তকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও তাঁরা সহায়তা করেননি।’ 

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবরটি পুলিশ প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স নাকি চিহ্নিত হয়েছে। এখন আইন অনুসারে যা হওয়া দরকার সেটা হবে।’ 

মওলানা ভাসানী হলের পুনর্মিলনীর জন্য মাদক পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’ 

মাদক বহনে শিক্ষার্থীদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার দিন মওলানা ভাসানী হলের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করছিলেন।’ 

দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মওলানা ভাসানী হলের ছাত্র রিফাত চৌধুরী বলেন, ‘সেদিন দুর্ঘটনার সময় আমিও গুরুতর আহত হই। আমার সঙ্গে ৪৬ ব্যাচের ইমন ছিল।’ 

আলামত হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সটি থানায় থাকার কথা। কিন্তু সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কার্যালয়ে দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামসুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার রাতেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। আইন মেনে অ্যাম্বুলেন্স কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারবে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। এ জন্য গাড়িটি পুলিশ জব্দ করেনি। কারণ আমাদের অ্যাম্বুলেন্স সংকট রয়েছে।’ 

ডা. শামসুর আরও বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সের চালক রিপন হাওলাদার আমাকে জানায়, গাড়িতে মাদক আছে জানতে পেরে তিনি ঘাবড়ে যান। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই মাদক আনতে যাওয়া ছাত্ররা পালিয়ে যায়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলমান থাকায় রিপনকে ছুটিতে রাখা হয়েছে।’ 

সাভার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অচেনা সেই গাড়ি ও চালককে শনাক্তের জন্য সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্য নিয়েছি। সেই অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি।’ 

এদিকে গত শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থীসহ চারজনকে আটক করে বংশাল থানা-পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছাড়িয়ে নেয়। জাবির ৪৩তম ব্যাচের ‘শিক্ষা সমাপনী দিবস’ উদ্‌যাপনের জন্য এই মদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন ওই ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠকের বাসায় দুর্বৃত্তের আগুন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য। ছবি : আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য। ছবি : আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগের বাড়ির ফটকে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার গজিনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে দুর্বৃত্তরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ কাজ করেছে বলে দাবি করেন প্রীতম সোহাগ।

প্রীতম সোহাগ বলেন, ‘রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কে বা কারা বাড়ির ফটকের সামনে আগুন দেয়। এতে আমার স্ত্রীর স্যান্ডেল, পাপোশ পুড়ে যায়। এ ছাড়া ওপরে থাকা বিদ্যুতের কার্ড মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি, আগুন নিভে যায়। আজ সোমবার সকাল ৬টার দিকে পাশের বাড়ির লোকজন আমাকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানান।’

প্রীতম সোহাগ বলেন, ‘ধারণা করছি, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এই অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। যারা রাজনৈতিকভাবে আমার সঙ্গে পেরে উঠছে না। তবে এসবে আমি ভীত নই। যারা এই হীন কাজ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি থানা-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।’

আগুনে পুড়ে যাওয়া অংশের ভিডিও করে প্রীতম সোহাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর নিজস্ব আইডিতে আজ সকাল ৭টার দিকে পোস্ট করেন। এতে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, ‘এনসিপি নেতার বাড়ির গেটে আগুন দিয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনদুপুরে ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তারিক সাইফ মামুন (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, মামুনের বাবার নাম এস এম ইকবাল। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকায়।

ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে তাঁদের হাসপাতালের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দ শুনে হাসপাতালের মেইন গেটের সামনের এসে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভেতরে আনা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে নিহতের পূর্বপরিচিত ফাইজুল হক অপু জানান, সকালে তারিক সাইফ মামুনের ফোন নম্বর থেকে তাঁকে কল করে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেলে এসে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুমন্ত বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে আটক

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরের শিবচরে পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘুমন্ত বাবাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মতি মিয়া (৬৬)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলারহাট উপজেলার বড়হাটি গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলে ফারুক মিয়াকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতি মিয়া ও তাঁর ছেলে ফারুক মিয়া দুজনেই শিবচরের বাঁশকান্দি এলাকায় থাকতেন এবং মতি মিয়া ওই এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কৃষিকাজ করতেন। ফারুক মিয়া সাধারণত ঢাকায় কাজ করলেও গত বুধবার (৫ নভেম্বর) শিবচরে তাঁর বাবার কাছে আসেন এবং বাবার সঙ্গে থাকা শুরু করেন। গতকাল রোববার বিকেলে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বাবা মতি মিয়ার সঙ্গে ছেলে ফারুক মিয়ার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

এই বিরোধের জেরে রাত ১২টার দিকে বাবা মতি মিয়া ঘুমিয়ে থাকলে ছেলে ফারুক মিয়া তাঁকে কোদাল (মাটি খননযন্ত্র) দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর ছেলে ফারুক মিয়া লাশের পাশেই বসে ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ফারুক মিয়াকে আটক করে।

স্থানীয়দের ধারণা, ফারুক মিয়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করা হয়।’ তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

নিহত মতি মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১২
মোহাম্মদপুরে ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদপুরে ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘প্রবর্তনা’র সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে একটি মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি এসে প্রবর্তনার সামনে রাস্তার ওপর দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। দুটি ককটেলই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে কেয়ারটেকার ও আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আশপাশের এলাকায় টহল জোরদার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ বলেন, দুষ্কৃতকারীরা ব্যবসায়ী ওই প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে ঘটনার কারণ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত