Ajker Patrika

ঢাবিতে পাঁচ মাসে ‘নির্যাতনের শিকার’ ১৮ শিক্ষার্থী

ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবিতে পাঁচ মাসে ‘নির্যাতনের শিকার’ ১৮ শিক্ষার্থী

গত পাঁচ মাসেনির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনজন সাংবাদিক ও দুজন ফটো সাংবাদিকও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় নির্যাতকের ভূমিকা পালন করেছে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার সংগঠন স্টুডেন্ট এগেনেস্ট টর্চার (স্যাট) এ তথ্য জানিয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। 

সংগঠনটির কর্মীরা বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই প্রতিবেদন তুলে ধরছি যাতে প্রত্যেকটি নির্যাতনের ঘটনা তদন্তপূর্বক নির্যাতকদের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি প্রশাসনিক বিধি এবং আইন তৈরি করারও প্রস্তাব রাখছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতাকে আমরা মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখি। নাগরিকরা কোনো নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক দণ্ডের শিকার হবে না-এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমনি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা যে কোনো নির্যাতন, নিপীড়ন কিংবা সহিংসতার শিকার হবে না, তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি আবাসিক হলগুলোর গেস্টরুমে। যা নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারকেও নীরবে হরণ করছে।’ 

সিফাত বলেন, ‘প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংগঠিত নির্যাতনগুলোর পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে স্টুডেন্ট এগেনেস্ট টর্চার। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনা তথ্যবহুল আকারে কখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের জানা সম্ভব হয় না।’ 

সিফাত আরও বলেন, ‘আমরা এবারের প্রতিবেদনে নির্যাতনকারীর নাম প্রকাশ করছি না। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে আমরা নির্যাতনকারীর নাম, বিভাগ, হল এসব প্রকাশ করব। প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দেব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আচার্য ও মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হব, রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।’ 

গত কয়েক মাসের ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার পর নির্যাতন শুরু হয়। এসব নির্যাতনের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সেগুলো নামমাত্র ব্যবস্থা। সত্তর শতাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিকার থাকে, বাকি ত্রিশ শতাংশ নির্যাতনের ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত