নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পাঁচ সরকারি ব্যাংকের ‘অফিসার ক্যাশ’ ১ হাজার ৫১১টি পদে নিয়োগে গুচ্ছ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার অন্যতম হোতা হলেন আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইটি কর্মকর্তা মোক্তারুজ্জামান রয়েল। রয়েল কৌশলে প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁস চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে সরবরাহ করেন। এরপর চক্রের অন্য সদস্যরা শিক্ষার্থীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন। পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষার্থীদের একটি বুথে নিয়ে মুখস্থ করানো হতো বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ বুধবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।
হাফিজ আক্তার বলেন, তিনটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকায় ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বিক্রি করেছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের গ্রেপ্তার সদস্যরা হলেন প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁসের মূল হোতা আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার শামসুল হক শ্যামল (৩৪), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও পরীক্ষার্থী স্বপন। ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি প্রধান আরও জানান, ব্যাংকে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন কিনতে যাঁরা চুক্তিবদ্ধ হন, তাঁদের রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা ‘গোপন বুথে’ নিয়ে ৮৫টি প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানো হয়। মুখস্থ করা উত্তর থেকে ৬০-৭০ ভাগ এমসিকিউর সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়েছে। টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন এমন দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর তালিকা পেয়েছে পুলিশ। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে ডিবি তেজগাঁও বিভাগ গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।
এই চক্রটি এখন পর্যন্ত চারটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে উল্লেখ করে হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা চারটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনই সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬০ কোটি টাকা।
এর আগে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত ৫টি ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১টি ‘অফিসার ক্যাশ’ শূন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা ৬ নভেম্বর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ১৮৩টি, জনতা ব্যাংকে ৫১৬টি, অগ্রণী ব্যাংকে ৫০০টি, রূপালী ব্যাংকে ৫টি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ৭টি পদ রয়েছে। বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পুরো পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে কাজ করতে থাকা ডিবির তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিমের কাছে ৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে মর্মে তথ্য আসে। পর ডিবির টিমটি ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে পরীক্ষার দিন ৬ নভেম্বর সকাল ৭টায় প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন (৩৬) অগ্রিম টাকা পরিশোধ করা হলে পরীক্ষার্থীকে বুঝে নিয়ে যায়। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
৬ নভেম্বর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে আলম মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনের তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান পরিচালনা করে জানা যায় যে, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছে। পরে ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে শামসুল হক শ্যামলকে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়।
শামসুল হক শ্যামলকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নপত্রসহ উত্তরপত্র ফাঁস করার কথা স্বীকার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যে চক্রের মূল হোতা মুক্তারুজ্জামান রয়েলকে (২৬) বাড্ডার আলিফনগর স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তারুজ্জামান আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ICT টেকনিশিয়ান (হ্যার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার) হিসেবে কর্মরত।
রাজধানীর লালবাগ থেকে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, পরীক্ষার ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা আগে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ফাঁস করা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হয়। চক্রের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক বুথে ২০ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করিয়ে কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। মুক্তারুজ্জামান ও শ্যামল জানান, সুকৌশলে তাঁরা এর আগে আরও তিনটি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপক্র ও উত্তরপত্র ফাঁস করেছেন। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়োগ পাওয়ার আগপর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ৫ থেকে ১৫ লখি টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। এমসিকিউ পরীক্ষার আগে ২০ শতাংশ, লিখিত পরীক্ষার আগে আরও ২০ শতাংশ ও নিয়োগ পাওয়ার পর বাকি ৬০ শতাংশ টাকা পরিশোধের শর্তে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে ডেকে নেওয়া হতো।
মহানগর ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ১১টি বুথ এই চক্রের ২৫ থেকে ৩০ জনের নাম এবং প্রায় ২০০ জন পরীক্ষার্থীর নাম পেয়েছি। মোক্তারুজ্জামান রয়েল প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ফাঁসের মূল হোতা। মোক্তারের কাছ থেকে প্রশ্ন নিয়ে শামসুল হক শ্যামল বিভিন্ন বুথে সরবরাহ করে। জানে আলম মিলন বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ ও বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করায়। অর্থের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। মোস্তাফিজুর রহমান মিলন পরীক্ষার্থী এবং বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করায়। অর্থের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। স্বপন পরীক্ষার্থী। সে-ও প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সংগ্রহ এবং বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। এ পর্যন্ত এই চক্রের শনাক্ত সদস্যসংখ্যা ২৫-৩০ জন বলে জানা গেছে। বিগত সময়ে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৩টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছিল বলে তথ্য মিলেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, এই প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে আহ্ছানউল্লাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির কেউ জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই চক্রে আর যাঁরা জড়িত তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
অভিযোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছিল, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, কিন্তু আপনাদের অভিযানে প্রমাণিত হচ্ছে যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল।’ এ ক্ষেত্রে এই নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিগত তিনটি পরীক্ষার নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিলের সুপারিশ ডিবি করবে কি না, জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য জানিয়েছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পাঁচ সরকারি ব্যাংকের ‘অফিসার ক্যাশ’ ১ হাজার ৫১১টি পদে নিয়োগে গুচ্ছ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার অন্যতম হোতা হলেন আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইটি কর্মকর্তা মোক্তারুজ্জামান রয়েল। রয়েল কৌশলে প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁস চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে সরবরাহ করেন। এরপর চক্রের অন্য সদস্যরা শিক্ষার্থীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন। পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষার্থীদের একটি বুথে নিয়ে মুখস্থ করানো হতো বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ বুধবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।
হাফিজ আক্তার বলেন, তিনটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকায় ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বিক্রি করেছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের গ্রেপ্তার সদস্যরা হলেন প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁসের মূল হোতা আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার শামসুল হক শ্যামল (৩৪), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও পরীক্ষার্থী স্বপন। ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি প্রধান আরও জানান, ব্যাংকে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন কিনতে যাঁরা চুক্তিবদ্ধ হন, তাঁদের রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা ‘গোপন বুথে’ নিয়ে ৮৫টি প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানো হয়। মুখস্থ করা উত্তর থেকে ৬০-৭০ ভাগ এমসিকিউর সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়েছে। টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন এমন দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর তালিকা পেয়েছে পুলিশ। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে ডিবি তেজগাঁও বিভাগ গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।
এই চক্রটি এখন পর্যন্ত চারটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে উল্লেখ করে হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা চারটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনই সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬০ কোটি টাকা।
এর আগে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত ৫টি ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১টি ‘অফিসার ক্যাশ’ শূন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা ৬ নভেম্বর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ১৮৩টি, জনতা ব্যাংকে ৫১৬টি, অগ্রণী ব্যাংকে ৫০০টি, রূপালী ব্যাংকে ৫টি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ৭টি পদ রয়েছে। বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পুরো পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে কাজ করতে থাকা ডিবির তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিমের কাছে ৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে মর্মে তথ্য আসে। পর ডিবির টিমটি ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে পরীক্ষার দিন ৬ নভেম্বর সকাল ৭টায় প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন (৩৬) অগ্রিম টাকা পরিশোধ করা হলে পরীক্ষার্থীকে বুঝে নিয়ে যায়। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
৬ নভেম্বর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে আলম মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনের তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান পরিচালনা করে জানা যায় যে, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছে। পরে ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে শামসুল হক শ্যামলকে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়।
শামসুল হক শ্যামলকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নপত্রসহ উত্তরপত্র ফাঁস করার কথা স্বীকার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যে চক্রের মূল হোতা মুক্তারুজ্জামান রয়েলকে (২৬) বাড্ডার আলিফনগর স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তারুজ্জামান আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ICT টেকনিশিয়ান (হ্যার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার) হিসেবে কর্মরত।
রাজধানীর লালবাগ থেকে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, পরীক্ষার ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা আগে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ফাঁস করা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হয়। চক্রের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক বুথে ২০ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করিয়ে কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। মুক্তারুজ্জামান ও শ্যামল জানান, সুকৌশলে তাঁরা এর আগে আরও তিনটি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপক্র ও উত্তরপত্র ফাঁস করেছেন। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়োগ পাওয়ার আগপর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ৫ থেকে ১৫ লখি টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। এমসিকিউ পরীক্ষার আগে ২০ শতাংশ, লিখিত পরীক্ষার আগে আরও ২০ শতাংশ ও নিয়োগ পাওয়ার পর বাকি ৬০ শতাংশ টাকা পরিশোধের শর্তে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে ডেকে নেওয়া হতো।
মহানগর ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ১১টি বুথ এই চক্রের ২৫ থেকে ৩০ জনের নাম এবং প্রায় ২০০ জন পরীক্ষার্থীর নাম পেয়েছি। মোক্তারুজ্জামান রয়েল প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ফাঁসের মূল হোতা। মোক্তারের কাছ থেকে প্রশ্ন নিয়ে শামসুল হক শ্যামল বিভিন্ন বুথে সরবরাহ করে। জানে আলম মিলন বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ ও বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করায়। অর্থের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। মোস্তাফিজুর রহমান মিলন পরীক্ষার্থী এবং বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তর মুখস্থ করায়। অর্থের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। স্বপন পরীক্ষার্থী। সে-ও প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সংগ্রহ এবং বুথ নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ও উত্তর প্রদান করে। এ পর্যন্ত এই চক্রের শনাক্ত সদস্যসংখ্যা ২৫-৩০ জন বলে জানা গেছে। বিগত সময়ে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৩টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছিল বলে তথ্য মিলেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, এই প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে আহ্ছানউল্লাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির কেউ জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই চক্রে আর যাঁরা জড়িত তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
অভিযোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছিল, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, কিন্তু আপনাদের অভিযানে প্রমাণিত হচ্ছে যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল।’ এ ক্ষেত্রে এই নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিগত তিনটি পরীক্ষার নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিলের সুপারিশ ডিবি করবে কি না, জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য জানিয়েছি।’
যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ও বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলার বুক চিরে উত্তর-দক্ষিণে বয়ে গেছে ভৈরব নদ। নদের পশ্চিমে কচুয়া ইউনিয়ন। পূর্বে বাঘারপাড়ার ছাতিয়ানতলা ইউনিয়ন। ছাতিয়ানতলা বাজারের পাশেই এই নদীর ওপরে জরাজীর্ণ সেতুটি ছিল দুটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রামের যাতায়াতের ভরসা।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত সেই সানজিদা আহমেদ তন্বীসহ গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকে লড়বে ১১ জন। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের তথ্য যাচাই বাছাই শেষে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেপটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিচারককে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতি তাঁর সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নোটিশ দিয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেপাহাড় ও বনের মিশেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুর। তবে এ অঞ্চলের বনভূমির চিত্র আর আগের মতো নেই। একসময়ের বিশাল বনভূমি এখন অনেকটাই উজাড় হয়ে গেছে। বনের মূল্যবান গাছের অধিকাংশই শেষ পর্যন্ত ঠাঁই নিয়েছে করাতকলে।
৫ ঘণ্টা আগে