Ajker Patrika

কুমিল্লার ‘হাতিরঝিল’ প্রকল্প আটকে আছে ঠেলাঠেলিতে

  • পুরাতন গোমতীকে ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে রূপ দেওয়ার প্রকল্প নেওয়া হলেও বাস্তবায়ন নেই।
  • উচ্ছেদের বিষয়ে সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের কেউই নিচ্ছে না দায়িত্ব।
  • স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা 
আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ০৯: ১৭
কুমিল্লার পুরাতন গোমতী নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কালক্ষেপণের কারণে আটকে আছে নদীর সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার পুরাতন গোমতী নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কালক্ষেপণের কারণে আটকে আছে নদীর সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

দখল-দূষণে অস্তিত্বসংকটে পড়েছে কুমিল্লার পুরাতন গোমতী নদী। দখলদারদের কাছ থেকে নদীটি উদ্ধারের পর সংস্কার করে রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে নান্দনিক করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। নদীপাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক), পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসনের কেউই নিচ্ছে না দায়িত্ব। ওই তিন দপ্তরের ঠেলাঠেলিতে প্রকল্পের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হলেও শুরু হয়নি কাজ। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন গোমতী নদীর জায়গা দখলমুক্ত করে সৌন্দর্য প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে ২০২১ সালে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও দখলমুক্ত না হওয়ার কারণে উন্নয়ন প্রকল্প অনেকটাই ফাইলবন্দী।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় গোমতী নদীতে ছিল পানির অবাধ প্রবাহ। বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ ভেঙে শহর তলিয়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করত। তাই শহর রক্ষার জন্য গত শতাব্দীর ষাটের দশকে এই নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। এরপর থেকে শহরের উত্তর প্রান্তের কাপ্তানবাজার থেকে পূর্ব প্রান্তের শুভপুর এলাকা পর্যন্ত নদীর প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশ ‘পুরাতন গোমতী নদী’ নামে পরিচিতি লাভ করে। এই নদীর দুই তীরের জলাধার দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল আবাসিক, বাণিজ্যিক ভবনসহ নানা স্থাপনা। বিগত সময়ে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার জন্য প্রশাসন পদক্ষেপ নিলেও রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন কারণে তা আজও আলোর মুখ দেখেনি।

আদর্শ সদর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, পুরাতন গোমতী নদীর দুই পাশের ৭৭২ জন অবৈধ দখলদারের একটি তালিকা করা হয়েছে। তাদের উচ্ছেদের জন্য ২০০৩ সাল থেকে আট-নয় দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নদীর ২৫৮ দশমিক ০২ একর জমি দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে জেলা প্রশাসকের কাছে তথ্য দিয়েছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এ বিষয়ে ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করলেও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ হয়নি।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল নগরীর বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি পুরাতন গোমতী নদীকে ঢাকার হাতিরঝিলের রূপদান করা।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন চিশতী বলেন, হাতিরঝিলের আদলে পুরাতন গোমতীর সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ জন্য নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ প্রয়োজন। কিন্তু এসব স্থাপনা কেউই উচ্ছেদ করছে না। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার এখতিয়ার সিটি করপোরেশনের নেই। এগুলো উচ্ছেদের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

পাউবো, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীজ্জামান বলেন, পুরাতন গোমতী নদীকে দখলমুক্ত করার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের।

এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, উচ্ছেদ কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ-সংকট রয়েছে। পুরাতন গোমতী নদীর দখলদারদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ সাপেক্ষে উচ্ছেদ কার্যক্রমে পানি উন্নয়ন বোর্ড সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করা হবে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আবু সায়েম ভূঁইয়া বলেন, ‘পুরাতন গোমতী নদীকে হাতিরঝিলের আদলে সৌন্দর্যবর্ধনে ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের মরদেহ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালি সড়কের মাথার ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. ইউনুস (৫৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়া এলাকার হাছন আলীর ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘সকালে লেদা বাজার যাওয়ার পথে রঙিখালি ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, মরদেহটি সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস মেম্বারের।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত