Ajker Patrika

নিয়ন্ত্রণহীন চিংড়িঘেরে ঢালা হচ্ছে আরও দেড় শ কোটি টাকা

  • চকরিয়ার সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প।
  • দরিদ্রদের উপকার লক্ষ্য হলেও সুবিধা পাচ্ছে প্রভাবশালী ইজারাদার।
  • জটিল প্রকল্প, কাজে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে: প্রকল্প পরিচালক
সাইফুল মাসুম, ঢাকা 
নিয়ন্ত্রণহীন চিংড়িঘেরে ঢালা হচ্ছে আরও দেড় শ কোটি টাকা

কক্সবাজারের একসময়ের সমৃদ্ধ প্যারাবন ‘চকরিয়া সুন্দরবন’ উজাড় করে তৈরি করা চিংড়ি চাষের ঘেরের ওপর এখন মৎস্য বিভাগের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই। চিংড়িচাষিদের কাছ থেকে চাঁদা তোলায় তৎপর থাকে দৃর্বৃত্তরা। অথচ বিশ্বব্যাংকের ঋণে ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্পের আওতায় সেই চিংড়িঘেরে আবার প্রায় দেড় শ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হাতে নিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।

গত শতকের আশির দশকে চকরিয়ায় চিংড়িঘের ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে ব্যয় করা হয়েছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) ঋণের টাকা। মৎস্য অধিদপ্তরের ওই উদ্যোগের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাত হাজার একরের ওই বিশাল ঘের ইজারা পেয়েছে চিংড়ি চাষের সঙ্গে জড়িত নন এমন প্রভাবশালীরা। সেই ইজারাদারেরা ঘেরগুলো সাবলিজ দিয়ে অর্থ পাচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত চিংড়িচাষিরা।

অভিযোগ রয়েছে, সুবিধাভোগী প্রভাবশালী গোষ্ঠী ঘেরে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।

ওই সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্যে কার্যত চকরিয়া চিংড়ি এস্টেটের ওপর সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানে থাকা অধিদপ্তরের ৪৮ একরের প্রদর্শনী ঘেরের পরিত্যক্ত ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতদের আস্তানা। প্রতি রাতে চিংড়িচাষিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে ডাকাতেরা সশস্ত্র মহড়া দেয়।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংকের ঋণে টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ প্রকল্পটির আওতায় সেই চিংড়ি এস্টেটে আবার টাকা ঢালছে মৎস্য অধিদপ্তর। প্রায় দেড় শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। প্রকল্পের তথ্য অনুসারে, বেড়িবাঁধ তৈরিতে ৬৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা; স্লুইসগেট ব্যবস্থাপনায় ৫৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা; প্রদর্শনী প্লটে ভবন তৈরির জন্য প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। এভাবে চিংড়িঘেরে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও লাভের গুড় খাচ্ছে ঠিকাদার, মৎস্য অফিসের কিছু কর্মকর্তা এবং ঘেরের ইজারাদার। সরকার কিংবা প্রকৃত চিংড়িচাষি—কেউই এর সুফল পাচ্ছেন না।

১৯৭৯ সালে ১১৯ ব্যক্তিকে ঘেরে ১১ একরের ১১৯টি প্লট ইজারা দেওয়া হয়। আর ১৯৮৬ সালে ১০ একর ঘেরের ৪৬৭ প্লটের মধ্যে ৪৫১টি ৩২৫ ব্যক্তি ও ৪২টি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে ইজারা দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের নীতিমালা অনুসারে, প্রতি একরের জন্য বার্ষিক রাজস্ব ধরা হয় ২ হাজার টাকা। ২০১৩ সালের আগে একরপ্রতি রাজস্ব ছিল মাত্র এক হাজার টাকা। সরকারকে এই সামান্য টাকা রাজস্ব দিয়ে ঘের সাবলিজ দিয়ে ইজারাদারেরা পকেটে পুরছে লাখ লাখ টাকা।

সম্প্রতি চকরিয়ার ছোঁয়ারফাঁড়ি বাজার থেকে মাছকাটা খাল হয়ে চিংড়িঘেরের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, শতাধিক এক্সকাভেটর (গ্রামে ভেকু নামে পরিচিত) দিয়ে মাটি কেটে বেড়িবাঁধ তৈরির কাজ চলছে। অধিদপ্তরের ৪৮ একরের প্রদর্শনী ঘেরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুটি ভবন নির্মিত হচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষী জামাল হোসেন (৫২) বলেন, ‘এখানে ভয়ের মধ্যে থাকি। গত বছরের আগস্ট মাসে সরকার বদলের পর ডাকাতেরা আমাকে অপহরণ করে। নির্মাণকাজের ঠিকাদার তিন লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেয়।’

চকরিয়া চিংড়িঘেরের নিরাপত্তা নিয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূইয়া বলেন, ‘চিংড়িঘের এলাকা দুর্গম হওয়ায় সন্ত্রাসীদের দমন করতে সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া আমাদের জনবলের সংকট রয়েছে।’

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ আজকের পত্রিকাকে পরিস্থিতির বিষয়ে বলেন, ‘ঘেরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই, এটা বলা যাবে না। যারা ঘের ইজারা পেয়েছে, এটা তাদের ব্যবস্থাপনার বিষয়। সম্ভাব্যতা যাচাই করেই সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় কাজ হচ্ছে। উৎপাদন কমে আসায় ইজারাদারেরা ঘেরের উন্নয়নের দাবি জানিয়ে আসছিল বলেও জানান তিনি।

জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক এম এম মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিন হয়েছে আমি প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছি। এটা জটিল প্রকল্প। তবে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারলে এবং ঘের এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক করতে পারলে চিংড়ি উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে।’

চকরিয়া চিংড়িঘেরের পরিস্থিতি নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চকরিয়া চিংড়িঘেরের অনেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। এগুলো দখলমুক্ত না করে অবকাঠামো উন্নয়নে দেড় শ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এর সুফল পাবে ইজারাদার, প্রভাবশালী লোকজন আর দখলদারেরা। এতে এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরও প্রান্তিক হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, দীর্ঘ যানজট

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী কান্দিরপাড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।

ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার রাত পৌনে ১২টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাজী ইয়াছিনের সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছি। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বলে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়া-তারেক রহমান প্রার্থী হওয়ায় বগুড়ায় বিএনপির আনন্দ মিছিল

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়া শহরে বিএনপির আনন্দ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়া শহরে বিএনপির আনন্দ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনে ধানের শীষের জয়ের জন্য লড়বেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লড়বেন বগুড়া-৬ আসন থেকে। বগুড়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করার ঘোষণায় জেলাজুড়ে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষণার পরপরই বগুড়ায় জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় বরাবরই বগুড়া বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে এই জেলার দুটি আসনে (বগুড়া-৬ ও ৭) নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনো পরাজিত হননি। ঐতিহ্যবাহী এই নির্বাচনী এলাকায় এবার তাঁর সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

আজ রাত ৮টায় বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে এক আনন্দ মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সাতমাথা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।

সমাবেশে রেজাউল করিম বাদশা এই মনোনয়নকে ‘বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুশির সংবাদ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ খবর পাওয়ার পরপরই তারেক রহমানকে ফোন করে বগুড়াবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। তিনি বগুড়াবাসীর কাছে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেছেন।

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বগুড়াবাসী নির্বাচিত করবে। আমরা আশা করছি, বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন এবং প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ

মাদারীপুর ও শিবচর প্রতিনিধি
শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় মাদারীপুর শিবচরের ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছে সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর কর্মী-সমর্থকেরা। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় আড়াই ঘন্টার সড়ক অবরোধে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি পদপ্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে মাদারীপুর-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে কামাল জামান মোল্লার নাম ঘোষণা করা হয়। এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু। এখন মনোনয়ন না পাওয়ায় লাভলুর কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন।

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত