Ajker Patrika

নোয়াখালীতে ইন্টারনেট সেবায় মানা হচ্ছে না সরকারি নীতি

মো. মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
নোয়াখালীতে ইন্টারনেট সেবায় মানা হচ্ছে না সরকারি নীতি

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাপ্য ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছেন না নোয়াখালীর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। গত ৬ জুন ‘এক দেশ, এক রেট’ ইন্টারনেট সেবামূল্য ঘোষণা করে সরকার। যা গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়। কিন্তু নোয়াখালীর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তদারকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এক গ্রাহক বলেন, '৫ এমবিপিএস গতির জন্য ৭০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে ঠিকই কিন্তু নির্ধারিত গতির ইন্টারনেট দেওয়া হচ্ছে না। ৫০ এমবির একটি ভিডিও ডাউনলোড করতে বেশ সময় লেগে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে বারবার বলা হলেও তাঁরা বলছেন, এটি কম্পিউটারের সমস্যা।'

অন্যান্য গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ জেলায় ইন্টারনেটের গতি অন্তত দুর্বল। শহরের তুলনায় গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। ফলে অনেকে অফিশিয়াল কাজ করতে গিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ এমবিপিএস গতির জন্য ৫০০ টাকা, ১০ এমবিপিএস গতির জন্য ৮০০ ও ২০ এমবিপিএস এর জন্য ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ব্যবহারকারীরা জানান, ৫ এমবিপিএস ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ৩ এমবিপিএস পাচ্ছে। একই অবস্থা ১০ এমবিপিএস ব্যবহারকারীদেরও। ৫ ও ১০ এমবিপিএস গতির টাকা নেওয়া হলেও স্পিড দেওয়া হচ্ছে অর্ধেক। 

জেলার কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও বেগমগঞ্জের একাধিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা জানান, সরকারি নির্দেশনার আগে তাঁরা ৫ এমবিপিএস গতির জন্য ৮০০-১০০০ টাকা দিয়েছেন। এখন সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০০ টাকা নেওয়ার কথা বলা হলেও ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকা নিচ্ছেন। কিন্তু সে অনুযায়ী ইন্টারনেটের গতি অনেক কম। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহর মাইজদীর কিছু ব্যবসায়ী সরকারি নির্দেশনা মানলেও বেশির ভাগ উপজেলা শহরের ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্দেশনা মানছেন না।

নোয়াখালী ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য অনুযায়ী সদর উপজেলাসহ জেলার সব উপজেলা শহরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা রয়েছে। এ ব্যবসার সঙ্গে ৬০ এর বেশি ব্যবসায়ী যুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে দুই শতাংশ রয়েছেন যারা সরকারি নির্দিষ্ট দপ্তরের লাইসেন্স প্রাপ্ত। আর বাকি সবাই বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ফলে তাঁরা ইচ্ছামতো টাকা নিচ্ছে এবং এমবিপিএস দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে সমিতি ও সাধারণ গ্রাহকেরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পর্যায়ের একাধিক ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ী জানান, সরকারের নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী গতি দিতে গেলে ব্যবসা করা কোনোভাবে সম্ভব নয়। তাঁদের দাবি, ঢাকা থেকে প্রতি এমবিপিএস নিতে তাঁদের খরচ হচ্ছে ৯০ টাকা। আবার তা হাউসে পৌঁছে দিতে খরচ হচ্ছে আরও ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি এমবিপিএস গতি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত খরচ হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ৫ এমবিপিএস গতিতে ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সরকারের ওই নির্দেশনাকে পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সমিতির সভাপতি মো. বাবর জানান, সরকারি নির্দেশনার পর থেকে তাঁরা লোকসানে রয়েছেন। যাদের লাইসেন্স নেই, তাঁরা হয়তো তাঁদের মতো করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যাদের লাইসেন্স আছে তাঁরা সরকারি নির্দেশনা মানতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

আক্কেলপুরে ‘একঘরে’ করে রাখা দিনমজুরকে মারধর, থানায় মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত