Ajker Patrika

৫৫ বছরেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ১০: ৩৩
৫৫ বছরেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছর হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারও মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে মনোবিজ্ঞানীই ভরসা। মানসিক স্বাস্থ্যের উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে প্রায়ই জটিল সমস্যায় ভোগেন অনেক শিক্ষার্থী। এতে করে কেউ কেউ বেছে নেন আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথও।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলে অন্তত একজন করে কাউনসেলিং কর্মকর্তা প্রয়োজন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে দরকার অন্তত দুজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ভারসাম্য পাবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বিপ্লব কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, করোনার কারণে সবার জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়ে গেছে। আর্থিক অনটন, চাকরির বয়স চলে যাওয়া, পারিবারিক চাপ, ভালোবাসার সম্পর্কে ফাটল, সেশনজটসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশায় ভুগছেন। চরম হতাশায় অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের এসব হতাশা দূর করতে প্রতি মাসে অন্তত একবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা কাউনসেলিং করানো উচিত। 

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি আবাসিক হলে অন্তত একজন করে হলেও প্রফেশনাল কাউনসেলিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া দরকার। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রেও অন্তত দুজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকা উচিত। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় কাউনসেলিং সেবা চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী মনোরোগের চিকিৎসা নেন, যাঁদের মধ্যে সিংহভাগই স্বাভাবিক জীবনের পর্যায়ে চলে এসেছেন। তবে করোনার শুরু থেকে এই সেবা বন্ধ রয়েছে। 

এ দিকে আজকের পত্রিকার এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত এক যুগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি পারিবারিক কারণ, পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়া, সম্পর্কের টানাপোড়েনসহ নানা কারণে আরও কয়েকজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনো সাইকোলজিস্ট নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তত একজন হলেও সাইকোলজিস্টের প্রয়োজন আছে। আমাদের এখানে ডাক্তারেরও বেশ সংকট আছে। আমরা অনেক আগেই এসবের চাহিদা দিয়েছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।’ 

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাউনসেলিং সেবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে এই সেবা বন্ধ রয়েছে ৷ এটা শিক্ষার্থীদের খুব কাজে এসেছিল। আমরা এটি আবার চালু করার চিন্তা করছি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন আছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এটার জন্য পদ সৃষ্টির একটা বিষয় আছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত