Ajker Patrika

মেঘনায় ভেসে উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ, উৎকণ্ঠায় জেলে ও এলাকাবাসী

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ২০: ১৪
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ ভেসে উঠছে। আজ শুক্রবার ভোর থেকে উপজেলার ষাটনল থেকে দশানি পর্যন্ত মেঘনা নদীর পাড়জুড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ ভেসে উঠছে। আজ শুক্রবার ভোর থেকে উপজেলার ষাটনল থেকে দশানি পর্যন্ত মেঘনা নদীর পাড়জুড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ ভেসে উঠছে। আজ শুক্রবার (১৬ মে) ভোর থেকে উপজেলার ষাটনল থেকে দশানি পর্যন্ত মেঘনা নদীর পাড়জুড়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।

এলাকাবাসী বলছেন, নদীতে বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশে পানিদূষণের কারণে দেশীয় মাছ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে, জাটকা, চেউয়া, বাইলা, টেংরা, পুঁটি, চাপিলাসহ নানা প্রজাতির ছোট-বড় মাছ ভেসে উঠেছে।

প্রতিদিনের মতো আজ ভোরে মাছ ধরতে নদীতে যান স্থানীয় জেলেরা। তখনই তাঁরা নদীর পানিতে অসংখ্য মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখেন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে।

এদিকে মরা মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় নদীপাড়ের বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে বলছেন, এখন নদীর পানি ব্যবহার করাও সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ উৎপাদন নিয়েও শঙ্কা দেখা দিতে পারে।

ষাটনল এলাকার জেলে ফুলচান বর্মণ বলেন, ‘এখন এই পানিতে মাছ তো নেইই, বরং বিষ ছড়িয়ে আছে। কয়েক বছর ধরে এমন হচ্ছে। কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এভাবে চলতে থাকলে নদী একদিন মাছশূন্য হয়ে পড়বে।’

স্থানীয় জেলে ইমাম হোসেন জানান, ‘নদীতে আমাদের বাচ্চারা খেলতে যায়, গোসল করে। এখন আর পারছি না। পানির অবস্থা খুব খারাপ।’

মাছ ব্যবসায়ী জুয়েল রানা বলেন, ‘আজ যা দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে, আগামী কয়েক মাস নদী থেকে মাছ পাওয়া কঠিন হবে। বাজারে মাছের দাম বেড়ে যাবে, মানুষ কষ্ট পাবে।’

ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আক্কাস আলী মোল্লা বলেন, ‘মাছ মরার ঘটনা শুধু পরিবেশের নয়, মানুষের জীবিকার ওপরও আঘাত হানছে। বারবার অভিযোগ করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। নদী বাঁচলে আমরা বাঁচব—এই উপলব্ধি সবার মধ্যে জাগ্রত হওয়া উচিত।’

মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, ‘এটি একটি জলজ পরিবেশগত দুর্যোগ। শীতলক্ষ্যা থেকে আসা দূষিত পানির প্রবাহ একাধিকবার এই এলাকায় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ ও ২০২৪ সালের আগস্টেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এবার মরা মাছের পরিমাণ বেশি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত