Ajker Patrika

কর্ণফুলীর দুই তীরে ভাঙন, নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
কর্ণফুলীর দুই তীরে ভাঙন, নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

বর্ষার শুরুতে টানা বর্ষণে কর্ণফুলী নদীতে বেড়েছে তীব্র স্রোত। এতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ও বেতাগী ইউনিয়নে কর্ণফুলীর দুই পাড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে সহস্রাধিক মানুষের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জমি। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এসব গ্রামবাসীরা। নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামের বাসিন্দাদের। তারা ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্লক স্থাপনের দাবি জানান। 

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বর্ষণে কর্ণফুলীর তীব্র স্রোতে ৭ নম্বর বেতাগী ইউনিয়নের গুনগুনিয়া বেতাগী গ্রামের কাউখালী খালের মুখ, হাজী ইদ্রিছ মিয়ার ঘাট, মাতব্বর বাড়ি, চিড়িঙ্গা, মৌলভী সাহেবের ঘাট, চান্দার বাড়ি, বড়ুয়াপাড়া, কুলালপাড়া, কাটাখালী, গোলাম ব্যাপারীর হাট, বশর মাস্টার বাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন স্পটে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে একই রূপ দেখা দিয়েছে ৮ নম্বর সরফভাটা ইউনিয়নের পশ্চিম সরফভাটা পাইট্টালি কুল ও মৌলানা গ্রাম থেকে পুরোনো সিকদার হাট পর্যন্ত ৫০০ মিটারেরও অধিক এলাকা। এই বর্ষাতেই এসব এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি-ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্য কোথাও যাওয়ার উপায় না পেয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ের বসতঘরেই বসবাস করছেন।

বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালি গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই ভাঙনে ফসলি জমি হারিয়েছি। গেল বর্ষায় বসতঘরও ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে বাড়ির সামনের কক্ষগুলো ভেঙে যায়। অন্যত্র যাওয়ার জায়গা না থাকায় পেছনের কক্ষগুলোতেই আমরা থেকেছি। এই বর্ষায় তাও ভেঙে যাচ্ছে।’

বেতাগী ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম জানান, ভৌগোলিক কারণে বেতাগী ইউনিয়নের তিনদিকেই কর্ণফুলী নদী। বর্ষা এলেই নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙন দেখা দেয়। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধক ব্লক স্থাপন করা হয়েছে। চলমান ভাঙন ঠেকাতে আশা করি দ্রুততম সময়ে ভাঙন প্রতিরোধ ব্লক স্থাপন করে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করা হবে। 

সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, একসময় বর্ষা এলেই রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে নদী ভাঙনের হাহাকার দেখা যেত। বর্তমানে ৩৯৮ কোটি টাকার বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়াতে চন্দ্রঘোনা থেকে বেতাগী ইউনিয়ন পর্যন্ত কর্ণফুলীর দুই পাড়ে ব্লক স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব এলাকায় এখনো ব্লক স্থাপন বাকি রয়েছে তার মধ্যে সরফভাটা মৌলানা গ্রাম থেকে সিকদার হাট পর্যন্ত এলাকা অন্যতম। ভাঙন প্রতিরোধে এই গ্রামেও ব্লক স্থাপনের প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। 

কর্ণফুলীর ভাঙনের বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গণি ওসমানী জানান, ‘টানা বর্ষণে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেতাগীতে কিছু জায়গায় ভাঙনের সম্ভাবনা আছে, যা আমি নিজেই দেখেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লোকজন জানিয়েছেন, তেমন বড় কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। নদীর কিছু কিছু জায়গা ঝুঁকিতে রয়েছে, সেসব স্থানে ব্লক স্থাপনের জন্য একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন আছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে সমস্যা নিরসন হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের ‘কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে’ সপরিবারে পালিয়েছেন বিএসবির বাশার

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের’ নির্দেশ

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত