Ajker Patrika

সেতুর এপাশ-ওপাশে নেই রাস্তা, মই বেয়ে পারাপার 

কক্সবাজার ও মহেশখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ২৩
সেতুর এপাশ-ওপাশে নেই রাস্তা, মই বেয়ে পারাপার 

পানিতে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে একটি সেতু। সেতুর এপাশ-ওপাশ নেই কোনো রাস্তা। বাঁশের তৈরি মই বেয়ে সেতুর এপার থেকে ওপারে যেতে হয়। এভাবেই পায়ে হেঁটে সেতু পার হয়ে দ্বীপবাসীর কেটেছে ১৫ বছর। কখন সেতুটির সংযোগ সড়ক হবে তাও কেউ জানেন না। 
 
জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের স্বর্ণদ্বীপ খ্যাত সোনাদিয়ায় সড়ক যোগাযোগের জন্য নির্মিত হয়েছে দরবেশকাটা সেতুটি। ২০০৬ সালে দরবেশকাটা খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সোনাদিয়া দ্বীপের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করেন। এ সেতু নির্মাণের ফলে কুতুবজোম থেকে ঘটিভাঙা হয়ে সোনাদিয়া সড়কে সরাসরি যোগাযোগ সৃষ্টি হয়। সে সময় একই সড়কের সোনাদিয়া প্যারাবনের ভেতর আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। 

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭০ ও ২২০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু দুইটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দরবেশকাটা সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শেষ করার পরপরই সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সড়কটি বিলীন হয়ে যায়। 

দেশের একমাত্র শৈলদ্বীপ মহেশখালীর আরেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সোনাদিয়া। এ দ্বীপের আয়তন ১০ হাজার একর। পর্যটনের জন্য দেশজুড়ে দ্বীপটির খ্যাতি রয়েছে। এরই মধ্যে সরকার এখানে পর্যটন কেন্দ্রের বিকাশে নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ দ্বীপ চিংড়ি, লবণ ও শুঁটকি উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুতুবজোম-ঘটিভাঙা সড়কের দরবেশকাটা খালের ওপর নির্মিত হয় এই সেতু। এ সেতু সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দা এবং আশপাশের লবণ ও চিংড়ি চাষিদের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন। এ সড়ক ছাড়া সোনাদিয়ায় পায়ে হেঁটে যাওয়ার কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। 
 
সড়ক নিয়ে ঘটিভাঙা এলাকার বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী বাদশাহ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, সড়ক নির্মাণে মাটির পরিবর্তে বালি ব্যবহার করায় ৬-৭ মাসের মাথায় সড়কটি বিলীন হয়ে যায়। এরপর আর সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 
 
উৎপাদনের বিষয়ে ঘটিভাঙার কৃষক জালাল আহমদ বলেন, ঘটিভাঙা ও সোনাদিয়ায় প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে প্রতিবছর লবণ, চিংড়ি মাছ ও বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে উৎপাদন হয় শুঁটকির। সড়ক যোগাযোগের অভাবে পানির দরেই এসব পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া সমুদ্রপথে নৌকায় করে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ পড়ে। 
 
কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ কামাল জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অধীনে সোনাদিয়ার সাড়ে ৯ হাজার একর জমি রয়েছে। সেখানে সেতু ও সড়কসহ অবকাঠামো নির্মাণে আপাতত কোনো তথ্য নেই। 

বেজার সূত্রে জানা গেছে, সেতু দুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেখানে বেজারের বাইরে নতুন কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনার সুযোগ নেই। 
 
এ ব্যাপারে মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্প্রতি সেতুগুলোর সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। তবে বেজারের আপত্তিতে তা বাতিল করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

অপারেশন সিঁদুরে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার হচ্ছেন ভারতের র-এর প্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত