Ajker Patrika

‘মানুষ বানর থেকে আসেনি’ কথাটি বইতে ৩ বার লেখা আছে: দীপু মনি

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১১: ৩৫
‘মানুষ বানর থেকে আসেনি’ কথাটি বইতে ৩ বার লেখা আছে: দীপু মনি

বইয়ে মানুষ বানর থেকে এসেছে এটি নেই বরং ‘মানুষ বানর থেকে আসেনি’–এটি তিনবার লেখা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। 

আজ শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব-সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শিক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে অভিজ্ঞতামূলক শিক্ষাতরীর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আপনারা যারা এখানে উপস্থিত আছেন, মানুষ বানর থেকে হয়েছে–কেউ বইতে পড়ে দেখেছেন? কেউ দেখেননি এবং আমাদের বইতেও নেই। বইতে লেখা আছে ‘শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেছে, মানুষ কি বানর থেকে এসেছে? শিক্ষক বলেছেন না। মানুষ বানর থেকে আসেনি। বানর এবং শিম্পাঞ্জি মানুষের পূর্বপুরুষ এ কথা ঠিক নয়। কথাটি বইতে তিনবার বলা আছে। অথচ একটি গোষ্ঠী এটি নিয়ে অপপ্রচার করছে।’ 

নতুন পাঠ্যক্রমের বই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যে শুধু মাধ্যমিকের ৬৫টি বই নতুন করতে হয়েছে। এই ৬৫টি বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি অক্ষর আমরা সবাই দেখেছি তা কিন্তু নয়। অনেকেই খুব কম দেখতে পেরেছি। কিন্তু তার পরেও সেখানে যদি কোনো ভুল থেকে থাকে, সেটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যদি কেউ ইচ্ছেকৃত করে থাকে, তার জন্য তদন্ত কমিটি করেছি। এখন পর্যন্ত যে ভুলগুলো বেরিয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই হচ্ছে ১০ বছর আগের ভুল। আমি খুব খুশি, ১০ বছর আগের বই সবাই পড়ছে। এতে ভবিষ্যতে আমাদের কোনো বইয়ে ত্রুটি থাকবে না।’ 

দীপু মনি বলেন ‘আমরা আমাদের বাচ্চাদের কি শেখাতে চাই। আমরা তাদের ভাষা, বিজ্ঞান, অঙ্ক শেখাতে চাই এবং সমাজ সম্পর্কে জানাতে চাই। কিন্তু এর সঙ্গে তারা যেন সত্যিকারে দক্ষ, যোগ্য, মানবিক ও সৃজনশীল মানুষ হয়, তার জন্য একই সঙ্গে আমরা তাদের মূল্যবোধও শেখাতে চাই। কী করে সৃজনশীল মানুষ হবে। মুখস্থ করে কিন্তু সৃজনশীল মানুষ হওয়া যায় না। হাতে–কলমে শেখাতে হবে। তাহলে সেটা আর সে ভুলবে না এবং আত্মস্থ করবে। নতুন শিক্ষাক্রমে এ ধরনের শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি।’ 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় হাওর ও চরাঞ্চলে শিক্ষার্থীরা যখন স্কুলে যেতে পারে না, সে সময়ে বাচ্চারা স্কুলে যেতে না পারলে স্কুল বাচ্চাদের কাছে চলে যাবে। এই ধারণা নিয়ে অনেক আগে থেকে ৫০০ নৌকা দিয়ে সেবা দিয়ে আসছে। সেগুলোর অনেকগুলো নৌকা স্কুলে পরিণত করেছে। সেগুলোরই একটি অংশ এখন বিভিন্ন জেলা ভ্রমণ করছে।’ 

দীপু মনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিমারির সময় আমরা অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি। প্রয়োজনে নৌকা নিয়েও যেতে হবে। মূল কথা হচ্ছে, আমাদের শিক্ষায় একটি রূপান্তর ঘটছেই। এটাও রূপান্তরের একটি অংশ। ব্র্যাক বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাতরী নিয়ে জেলায় জেলায় যাচ্ছে।’ 

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দেখি, অনেক শিক্ষার্থী গণিত কিংবা বিজ্ঞান বিষয়ে ভয় পায়। অনেকে বলে, বিজ্ঞান ভয়ের বিষয়। কিন্তু বিজ্ঞানও যে মজার এবং গণিতও যে আনন্দের বিষয় এবং আনন্দ নিয়ে শেখা যায়, কিন্তু তা কী পদ্ধতিতে শেখালে আনন্দদায়ক হয়, সেই পদ্ধতি আমাদের ব্যবহার করতে হবে।’ 

সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, মাইগ্রেশনের পরিচালক সাফী রহমান খান। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, চাঁদপুর আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম, ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান প্রফুল্ল কুমার বর্মণ, ডিভিশনাল ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা সমন্বয়ক প্রদীপ কুমার রায়সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে ফিতা কেটে শিক্ষাতরীর উদ্বোধন করেন এবং মূল্যবোধ, গণিত ও বিজ্ঞানতরী পরিদর্শন করেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত