Ajker Patrika

নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র নেওয়া হচ্ছে টোল

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ০০: ৩২
নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র নেওয়া হচ্ছে টোল

নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চাঁদপুরের বেশির ভাগ পৌরসভার পক্ষ থেকেই সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। নির্ধারিত স্ট্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন থেকে পৌরসভার পক্ষ থেকে টোল আদায় না করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে এই অনিয়মের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোচালকেরা। কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে টোল আদায় ও হয়রানির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। তবে এ সব নিয়ে জানতে চাইলে জেলার কোনো পৌরসভার পক্ষ থেকে মেলেনি কোনো সদুত্তর। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টোল আদায়ে অনিয়ম রোধে গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের সব পৌরসভায় নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে গত ২১ এপ্রিল উচ্চ আদালতের দায়ের করা রিটের আদেশের আলোকে টার্মিনাল ব্যতিরেকে কোনো সড়ক বা মহাসড়কে টোল আদায় না করার আদেশ দেওয়া হয়। 

সম্প্রতি চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, কচুয়া, মতলব দক্ষিণ, মতলব উত্তর চেঙ্গারচর ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ড নেই। তাই এলাকার প্রবেশমুখগুলোতে পৌরসভার নিয়োগ করা ঠিকাদারের লোকজন টোল আদায় করছেন। কয়েকটি পৌরসভায় ৪ থেকে ৫ স্থানে ইচ্ছে মতো টাকার অঙ্কে আদায় করা হচ্ছে এ সব টোল।

কোথাও ১০ টাকা কোথাও ১৫ আবার কোথাও ২০ টাকা করে টোল আদায় করা হচ্ছে। 

হাজীগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বাজার এলাকার অস্থায়ী স্ট্যান্ডের অটোরিকশা চালক রাব্বি ও সুজন জানান, এই পৌরসভায় অটোরিকশার জন্য কোনো স্ট্যান্ড নেই। কিন্তু পৌরসভার ৫ স্থানে টোল আদায় করা হয়। সড়কের মাঝখানে যাত্রীসহ গাড়ি থামিয়ে আদায় করা হয় টোল। পৌরসভার পক্ষ থেকে চালকদের জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধাও নেই। কোনো পাবলিক টয়লেটও নেই। 

চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার-পুরান বাজার সেতুর নতুন বাজার অংশে, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এলাকা, ওয়্যারলেস ও বাবুরহাট এলাকায় আদায় করা হয় পৌরসভার টোল। তা ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ডও নেই। তাই যত্রতত্র যানবাহন পার্কিংয়ের কারণে শহরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। 

শহরের বাবুরহাট এলাকার অটোরিকশাচালক লতিফ বলেন, ‘স্ট্যান্ড না থাকায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। গাড়ি রাখলেই ট্রাফিক এসে মারধর করে। আমাদের দাঁড়ানোর কোনো জায়গা নেই। কিন্তু সব পৌরসভাই টোল আদায় করে। আমরা চাই পৌরসভার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড তৈরি করে আমাদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা করা হোক।’ 

হাজীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী মনির বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি আমরা পেয়েছি। কিন্তু টোল আদায় করা হয় বাংলা সন হিসেব করে। এই ঠিকাদারের মেয়াদ চৈত্র মাস পর্যন্ত। এরপর পৌরসভার নির্ধারিত কমিটি এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’ 

মতলব চেঙ্গারচর পৌরসভার প্রশাসক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল-ইমরান খাঁন বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব এসেছি। এ নিয়ে এখনো কিছু জানি না। কীভাবে টোল আদায় হচ্ছে বিষয়টি সময় নিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’ 

মতলব দক্ষিণ পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন বলেন, ‘স্থানীয় সরকার যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তা আমরা পেয়েছি। নোটিশের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে পৌরসভার আয় বন্ধ হয়ে যাবে।’ 

কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপন বলেন, ‘আমরা ইজরা দিয়েছি স্ট্যান্ড থেকে টোল আদায়ের জন্য। যদি অন্যস্থান থেকে আদায় করা হয় সেটা অবৈধ। এই বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।’ 

এ নিয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, ‘স্থানীয় সরকার থেকে বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। কিন্তু টোল আদায় নিয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আমরা এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত