Ajker Patrika

থানার ভেতরে সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারলেন উপকমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
থানার ভেতরে সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারলেন উপকমিশনার। ছবি: সংগৃহীত
থানার ভেতরে সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারলেন উপকমিশনার। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আমিরুল ইসলাম নামের ওই কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উত্তর জোনের উপকমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নগরের খুলশী থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন যমুনা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো স্টাফ রিপোর্টার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত ও ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমন।

জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত বলেন, ‘শনিবার রাতে জিইসি কনভেনশন হলে শেখ হাসিনার নামে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলির আপডেট নিতে দুপুরে খুলশী থানায় আসি। থানার ভেতরে ওসির কক্ষে বসা ছিলেন নগর পুলিশের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম।

এ সময় আমি সেখানে উপকমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি ১০ অক্টোবর সিএমপির সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন? আমি না বলার পর ডিসি বলেন, এখনই রুম থেকে বেরিয়ে যান।’

এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে জিইসি কনভেনশনের ঘটনায় থানায় আটক থাকা দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে যাই। সেখানে তাঁর ওপর হামলা হয়। এ সময় উপকমিশনার আমিরুল আমাকে মারধর করতে করতে মাটিতে শুয়ে ফেলেন এবং এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার কমিটি গঠন করলে কমিটির সামনে আমি আমার বক্তব্য দেব। আমি এখন কিছু বলব না।’

এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে থানার ভেতরে সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (সিইউজে) বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।

এর আগে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সাংবাদিক নেতারা ছুটে যান নগরীর খুলশী থানায়। সেখানে তাঁরা অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পাঠানো প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

পরে কোনো সমাধান না হওয়ায় হামলার প্রতিবাদে খুলশী থানার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংবাদিকেরা। সমাবেশে অবিলম্বে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান নেতারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তাঁরা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার ও চট্টগ্রাম টিভি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক হোসাইন জিয়াদ।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, ‘আমরা বলেছি, থানার ওয়াশরুমে পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। সেগুলো চেক করুন, কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা তাতে রাজি হননি।’

সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ এক বিবৃতিতে বলেন, উচ্চপদস্থ একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ ঘৃণ্য, নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য। এটি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।

এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সর্বজনীন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

বিবৃতিতে অবিলম্বে হামলাকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার এবং ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। আহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান লিমন ও জোবায়েদ ইবনে শাহাদাতের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়েছে বিবৃতিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কলিজা ছেঁড়ার’ হুমকি সারজিসের: ৮ মিনিট বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণ জানাল নেসকো

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ দম্পতি অভিজিৎ ও দুফলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীসহ সব আসামি খালাস

ট্রাম্পে আস্থা: গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস কি জুয়া খেলছে

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে রাখা হতে পারে সাবজেলে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত