Ajker Patrika

রোহিঙ্গা শিবিরের ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষা হুমকিতে: ইউনিসেফ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
ইউনিসেফের কক্সবাজার ফিল্ড অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কক্সবাজার প্রধান অ্যাঞ্জেলা কার্নে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইউনিসেফের কক্সবাজার ফিল্ড অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কক্সবাজার প্রধান অ্যাঞ্জেলা কার্নে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তহবিল সংকটের কারণে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। আজ সোমবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে সতর্ক করে জানায়, অবিলম্বে টেকসই অর্থনৈতিক সহযোগিতা না এলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবিরে শিশুদের মৌলিক শিক্ষার সুযোগও ঝুঁকিতে পড়বে।

ইউনিসেফ জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পরিচালিত মানবিক সহায়তার তহবিল উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে শরণার্থীশিবিরে ইউনিসেফের সহায়তাপুষ্ট শিক্ষা কার্যক্রমে। বর্তমানে স্কুলে ভর্তি থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের ৮৩ শতাংশের শিক্ষাজীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

আজ দুপুরে ইউনিসেফের কক্সবাজার ফিল্ড অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কক্সবাজার প্রধান অ্যাঞ্জেলা কার্নে এসব তথ্য জানান। এ সময় ইউনিসেফ চট্টগ্রাম ফিল্ড অফিসের প্রধান মাধুরী ব্যানার্জীসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কার্নে জানান, কক্সবাজারে ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাকেন্দ্র আপাতত জুন মাসের শেষ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। এরপর সেগুলো পুনরায় খোলা হবে কি না, তা নির্ভর করবে নতুন করে তহবিল পাওয়ার ওপর। শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও গ্রেড-১ ও ২ শ্রেণিভুক্ত স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষকেরা আর চাকরিতে থাকবেন না। ফলে চাকরি হারাবেন স্থানীয় ১ হাজার ১৭৯ জন শিক্ষক।

কার্নে আরও বলেন, এতে ইংরেজি, বিজ্ঞান ও সামাজিক শিক্ষা শেখানো বন্ধ হয়ে যাবে। অগ্রাধিকার পাবে বর্মিজ ভাষা, গণিত, জীবন দক্ষতা ও সামাজিক-মানসিক শিক্ষা। এসব পাঠদানে যুক্ত থাকবেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের শিক্ষকেরা।

এ ছাড়া ইউনিসেফ নতুন পাঠ্যবইও বিতরণ করবে না বলে জানিয়েছে। পুরোনো বইগুলোই শিক্ষাবর্ষ শেষে নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুনর্বিন্যাস করে দেওয়া হবে।

ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিশুরা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের অন্যতম। তাদের জরুরি শিক্ষা সেবা চালু রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিছু তহবিল সংগ্রহ করা গেলেও তা পেতে দেরি হচ্ছে, ফলে সাময়িকভাবে শিক্ষাকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। জরুরি তহবিল ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ থাকতে পারে এবং এতে পুরো একটি প্রজন্ম পেছনে পড়ে থাকার ঝুঁকিতে পড়বে।’

এ বিষয়ে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয়ের অংশ হিসেবে নিজ ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ। এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এখানকার অনেক স্থানীয় মানুষ ছোট চাকরির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন তারা চাকরি হারিয়ে ক্ষুব্ধ। পরিস্থিতি বিব্রতকর। আমরা বিষয়টি ইউনিসেফ ও সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত