Ajker Patrika

চট্টগ্রামে যৌথ বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় আটক ৮০, দোকান সিলগালা

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে যৌথ বাহিনীর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে যৌথ বাহিনীর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার হাজারী গলি এলাকায় যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হামলার ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে নগরের দামপাড়ায় সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বাহিনী এই তথ্য জানায়।

যৌথ বাহিনীর পক্ষে টাস্কফোর্স-৪-এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘মাঠপর্যায়ে আমরা গোয়েন্দা তথ্য যাচাই বাছাই করছি। সে অনুযায়ী আমরা আইনি প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করব। সরকার পতনের পর যেসব শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়েছে, সেসব সমাবেশে যেন শান্তি বিঘ্নিত না হয় আমরা সে জন্য সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী কাজ করেছি।’

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদসহ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে হস্তান্তরের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং হাজারি গলিসহ নগরীর অন্যান্য এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’ জানালেন এই সেনা কর্মকর্তা।

হাজারী গলির দোকান সিলগালার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ওই এলাকায় সেনা ও পুলিশ সদস্যের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে সেই প্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দোকানগুলো সিলগালা করা হয়েছে। আমরা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বেড়াচ্ছি। অতিসত্বর তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দোকানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা হবে।’ আটক ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীদের কোনো পলিটিক্যাল পরিচয় থাকে না। তাদের জাতি, ধর্ম, বর্ণ নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজিবি ও র‍্যাবের একজন করে প্রতিনিধি।

এদিকে আজ সকালে নগরীর টেরিজাবাজার ও আশপাশের এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বর্ণ ও ওষুধসামগ্রী বিক্রির দোকান বেশির ভাগই সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। আর যেসব দোকান খোলা রয়েছে, তারাও অবসর সময় কাটাচ্ছেন। হাজারী গলির বাইরে জামালখান, এনায়েত বাজার মোড়, টেরিবাজার ও লালদীঘি এলাকায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন।

টাস্কফোর্স-৪ এর মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওসমান আলী নামের এক দোকানি ইসকনবিরোধী একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেন। হাজারী গলির মোল্লা স্টোরের মালিক ওই দোকানির স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে টেরীবাজার এলাকার হাজারী লেনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আনুমানিক ৫০০ থেকে ৬০০ জন দুষ্কৃতকারী হাজারী লেনে ওসমান আলী ও তাঁর ভাইকে হত্যা এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। স্থানীয় কন্ট্রোল রুম থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ছয়টি টহল দল সেখানে পৌঁছায়।’ ওই দোকানদার আরেকজনের পোস্টটি শেয়ার করেছিলেন বলে তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে।

ফেরদৌস আহমেদ আরও বলেন, জানমাল রক্ষা এবং মবজাস্টিস রোধে যৌথ বাহিনী ওসমান আলী ও তাঁর ভাইকে উদ্ধার করে। কারণ এখানে ‘বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা ছিল অনেক। উত্তেজিত জনতাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়টি আশ্বস্ত করা হলেও তারা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। দুর্বৃত্তরা এ সময় যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিতে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড হামলা চালায় এবং ভারী ইটপাটকেলসহ ভাঙা কাচের বোতল ছুড়তে শুরু করে।

হামলায় সেনাবাহিনীর পাঁচজন সদস্য এবং ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহত সেনাসদস্যরা বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া, ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তরা ইট ছুড়ে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে ফেলে। উদ্ধার অভিযানের পর দুর্বৃত্ত শনাক্তকরণে যৌথবাহিনীর ১০টি টহল দল রাত ৯টার দিকে ওই এলাকায় গেলে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতকারীরা ফের যৌথবাহিনীর ওপর অ্যাসিড ছুড়তে শুরু করে। এ সময় যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৮০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে গভীর রাতে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরে টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বুধবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় এই বিক্ষোভ করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন। পরে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে কিছু সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন বলেন, ‘কিছু যুবক হঠাৎ মহাসড়কে নেমে টায়ার জ্বালিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। তবে এর আগেই তারা পালিয়ে যায়। পরে টহল আরও বাড়ানো হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গজারিয়ায় থেমে থাকা ট্রাকে দুর্বৃত্তদের আগুন

গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আনারপুরা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আজ ভোরে আগুন দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আনারপুরা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আজ ভোরে আগুন দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় থেমে থাকা একটি মালবাহী ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রাকের ভেতরে থাকা মালপত্রের একটি বড় অংশ পুড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আনারপুরা এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মো. ফিরোজ মিয়া জানান, ভোর পৌনে ৪টার দিকে ট্রাকটিতে আগুন লাগে। ট্রাকটি পেপার তৈরির সরঞ্জাম বহন করছিল। এতে ট্রাকের কিছু অংশ ও তাতে থাকা মালপত্র পুড়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, আগুনে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে তাদের তৎপরতায় প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালপত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এটি উচ্ছৃঙ্খল জনতার আগুন লাগানোর ঘটনা হতে পারে।

ঘটনার পরপরই গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে মহাসড়কে আ.লীগের অবরোধ, শিশুদের হাতেও দেওয়া হয়েছে অস্ত্র

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
ভাঙ্গা উপজেলার শুয়াদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। এ সময় শিশুদের হাতে লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
ভাঙ্গা উপজেলার শুয়াদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। এ সময় শিশুদের হাতে লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত

কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের ঢাকা লকডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। অবরোধ চলাকালে শিশুদেরও দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ লাঠিসোঁটা হাতে সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শুয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই অবরোধ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত ছিল।

জেলা যুবলীগ নেতা দেবাশীষ নয়নকে তাঁর ফেসবুকে লাইভ করতে দেখা যায়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, মহাসড়কটির ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে রেখে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে শতাধিক স্থানীয় নেতা-কর্মী দেশীয় অস্ত্র রামদা, ঢাল-সরকি হাতে মহাসড়কে অবস্থান করছেন। এ সময় নারীদের পাশাপাশি অন্ততপক্ষে ১০ জন শিশু হেলমেট মাথায় ও লাঠিসোঁটা হাতে সড়কে অবস্থান করে, তাঁদের মধ্যে একটি শিশুর হাতে রামদা নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এ সময়ে ঢাকামুখী যানবাহনসহ সড়কের দুই পাশে বেশ কিছু গাড়ি আটকা পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জমুখী ওই এলাকা আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত। লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণার আগে থেকে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা ওই এলাকায় অবস্থান করেন। ভোর থেকে কয়েকজন নেতা-কর্মী লকডাউনের সমর্থনে সড়কে অবস্থান নেন এবং পরে অন্যরা যোগ দিয়ে পুরো রাস্তা অবরোধ করেন। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলে তিনি কেটে দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইলে কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাধবপুরে অবরোধকারীরা অবরোধ করতে পারেনি। তবে ভাঙ্গার পুলিয়া এলাকায় অবরোধ করা হলেও সেটি এক ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। পুলিশ অবরোধ সরিয়ে নিতে নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে ফরিদপুর বাসমালিক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত তারা সকল পথে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।

গোল্ডেন লাইন বাস কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর বাসমালিক গ্রুপের নেতা কামরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বাস চালাতে চাই, তবে যাত্রী না পেলে তো বাস চালানো সম্ভব নয়। খালি বাস নিয়ে তো আর পথে নামা যায় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা: ১৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন, মোড়ে মোড়ে তল্লাশিচৌকি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫০
রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, সরকারি স্থাপনা ও প্রবেশপথে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বিজিবির সাঁজোয়া যান অবস্থান নিয়েছে। শাহবাগ, ফার্মগেট, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, মহাখালী, গাবতলী, মিরপুরসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও সেনাসদস্যদের সতর্ক টহল অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রায়ের তারিখ ঘোষণা ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতা বা সহিংসতা প্রতিরোধে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁদের সহায়তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশের বিশেষ ইউনিটের সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার রাত থেকেই রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে ঢাকায় প্রবেশপথগুলোয় তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয়। গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, সাইনবোর্ড ও আব্দুল্লাহপুরে স্থাপন করা হয় বিশেষ চেকপোস্ট। সেখানে গণপরিবহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হয়। পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, গেস্ট হাউস ও মেসে অভিযান চালিয়ে রাতভর তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালেও সেই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সকাল ৭টার পর থেকে হাইকোর্ট এলাকায় আসার পথে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। বিমানবন্দরে প্রবেশ করা গাড়িগুলোতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। শুধু বিমানযাত্রীদেরই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে অন্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সকালে ঢাকার সড়কে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম। তবু প্রয়োজনীয় যানবাহন ও কর্মস্থলগামী মানুষ চলাফেরা করছিলেন। বাংলামোটর মোড়, শাহবাগ, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজারে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের যৌথ টহল চোখে পড়ে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশ চেকপোস্ট স্থাপন করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে; সেই পথে যেতে চাওয়া গাড়িগুলোকে শাহবাগের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রামপুরায় বিটিভি ভবন ও সবুজবাগ এলাকায়ও চেকপোস্ট কার্যক্রম চলছে।

অন্যদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে সীমিত আকারে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে। অনেক পরিবহন মালিক নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সায়েদাবাদ ও গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীরা গন্তব্যে যাওয়ার বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করছেন।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর তাঁরা আতঙ্কিত। এক পরিবহনের মালিক বলেন, ‘এত টাকার গাড়ি রাস্তায় নামিয়ে যদি পুড়িয়ে দেয়, আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। তা ছাড়া গাড়িতে যাত্রী থাকলে ক্ষয়ক্ষতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই সকাল থেকে অনেকেই গাড়ি চালাচ্ছেন না; পরিস্থিতি বুঝে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মুখপাত্র তালেবুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রতিটি এলাকা, প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমাদের সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।’ তিনি আরও জানান, যেকোনো গুজব বা উসকানিমূলক কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং জনগণকে সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত