Ajker Patrika

নিষেধের পরও স্ত্রী ভোট দিতে যাওয়ায় বাড়ি ছাড়লেন স্বামী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩, ১১: ৫৪
নিষেধের পরও স্ত্রী ভোট দিতে যাওয়ায় বাড়ি ছাড়লেন স্বামী 

চট্টগ্রামে ভোট দিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া দ্বন্দ্বে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় নেতা হত্যার হুমকি দেওয়ায় ভয়ে পালিয়েছেন তিনি। 

গতকাল রোববার এ ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর আমবাগান এলাকায়। এ দিন চট্টগ্রাম ১০ আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ ছিল। 

ওই দম্পতি হলেন নগরীর আমবাগান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী গোলাপ মিয়া (৫১) ও রুবি বেগম (৩৯)। গোলাপ মিয়া ডেকোরেটরের দোকানে কাজ করেন। রুবি বেগম গৃহকর্মীর কাজ করেন। 

স্থানীয়রা বলছে, রোববার সকালে নৌকা সমর্থিত কয়েকজন গিয়ে স্থানীয় অন্যান্য নারীদের সঙ্গে রুবি বেগমকেও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে ডেকে নিয়ে যান। ভোট দেওয়া শেষে রুবি বেগম দুপুরে বাড়ি ফিরলে তাঁর স্বামীর সঙ্গে এ নিয়ে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে রাতে গোলাপ মিয়া আমবাগান এলাকা ছেড়ে নিজ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা দেন। 

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ভোট দিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রীকে বকাঝকা করায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা গোলাপ মিয়াকে হুমকি দিয়েছেন। সে কারণে তিনি ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। 

রাতে গোলাপ মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি ফেনী এলাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, ‘ভোট না দেওয়ার জন্য সকালে আমি তাকে (স্ত্রীকে) বারণ করেছিলাম। কিন্তু সে আমার কোনো কথা শোনেনি। সে ভোট দিতে চলে গিয়েছিল। আমার কথা না শোনায় খুব খারাপ লেগেছে।’ 

গোলাপ মিয়া আরও বলেন, ‘সে (স্ত্রী) বলেছে, তাকে নাকি জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে আমি তাকে বলে দিয়েছি, তোমার সংসার নিয়ে তুমি থাকো। আমার দু-চোখ যেদিকে যায় সেদিকে চলে যাব। পরে আমি বাসা ছেড়ে চলে আসি।’ 

ভোট প্রদান নাগরিক অধিকার-তাহলে নিষেধ করেছেন কেন, জানতে চাইলে গোলাপ মিয়া বলেন, ‘আপনারা কয়দিন আগে আমাদের লাত্থাইলেন, এখন এসে আপ্যায়ন করছেন। এটা কী ধরনের নাগরিক অধিকার। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের ভোট দিতে দেয়নি। তাঁরা এবার এসেছে ভোট দিতে আপ্যায়নের জন্য।’ 

গোলাপ মিয়া আরও বলেন, ‘কে কোন দল করে সেটা বড় কথা না। আমার ভোট আমি দেব, এইটা আমার অধিকার। তাই রাগে এবার ভোট না দিতে ওরে (স্ত্রীকে) বারণ করেছিলাম। এরপরও সে ভোট দিতে গেছে।’ 

এ বিষয়ে রুবি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ভাই মো. জাহাঙ্গীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোট দেওয়ায় ঝগড়ার পর তাঁর স্বামী গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। আমার বোন স্বামী এখন গ্রামের বাড়িতে আছেন। তবে এটা নিয়ে তাঁরা দুজনই ভালো জানবেন।’ 

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঘটনাটি আমার জানা নেই। আর হুমকি বা এ ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।’ 

প্রসঙ্গত গত ২ জুন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের এই আসনটি শূন্য হয়। রোববার সকাল ৮টা থেকে এই আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলে। নির্ধারিত দিনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারীদের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত