Ajker Patrika

ফরিদপুরে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার ২ সাংবাদিক

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এক সাংবাদিককে হেনস্তা করছেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এক সাংবাদিককে হেনস্তা করছেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁদেরকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয়। পরে সাংবাদিক নেতাদের মাধ্যমে প্রশাসনের সহযোগিতায় জিম্মিদশা থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে জেলার মধুখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত সাংবাদিকেরা হলেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ও মধুখালীর স্থানীয় সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম (পাজবা)। তাঁদেরকে জিম্মি করার খবর পেয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল, মধুখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্নু ঘটনাস্থলে যান। পরে থানা-পুলিশের সহযোগিতায় তাঁদেরকে উদ্ধার করা হয়। পরে আহতরা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

হামলার অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা হলেন মহিষাপুর এলাকার বাসিন্দা ও ফরিদপুর চিনিকলের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তাঁর ভাই মাইক্রোবাস চালক রানা মোল্যা, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান হোসেনসহ অজ্ঞাত ১০-১২ ব্যক্তি।

আহত সাংবাদিক শ্রাবণ বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুর শহরে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় তাঁকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আমার কাছে আসে। তখন বিষয়টি জানার জন্য ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

তখন আবুল কালাম দাবি করেছিলেন, তিনি একটি চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ফোনে বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ওই চক্রের তথ্য সম্পর্কে জানতে ও তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা যোগাযোগ করে মধুখালীতে যাই।

সাংবাদিক শ্রাবণ আরও বলেন, কথা বলার সময় হঠাৎ আবুল কালামের স্ত্রী জানতে চান, আমাদের ভিডিও কে দিয়েছে, কোথায় আমরা ভিডিও পেয়েছি। বিষয়টি গোপনীয়তার কারণে আমরা এড়িয়ে গেলে তখন তিনি দাবি করেন আমরা ব্ল্যাকমেল চক্র। ওই মুহূর্তেই ১০-১২ জন আমাদের ওপর হামলা চালান। আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং টানাহেঁচড়া করে মারধর শুরু করেন। এরপরই রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাদের প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখেন। এ ছাড়া মেরে ফেলারও হুমকি দেন। পরে আমাদের সাংবাদিক নেতাদের মাধ্যমে ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হই।

হামলার বিষয় নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল মঙ্গলবার মামলা করা হবে বলে জানান সাংবাদিক শ্রাবণ।

এ বিষয়ে জানতে হামলাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম নুরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়। তবে, এখন পর্যন্ত ওই সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত