ফায়সাল করিম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর কেন্দ্রীয় রেলভবন (সিআরবি) চত্বরের যে জায়গায় পাহাড় আর গাছ কেটে বেসরকারি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে, সেটি শুধু নগরবাসীর স্বস্তিতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা নয়, বরং এটি জীব আর প্রাণবৈচিত্র্যের দিক থেকেও বেশ গুরুত্বপূর্ণও। পাহাড় ও গাছগাছালিতে ঘেরা এ অঞ্চলে রয়েছে প্রায় আড়াই শ প্রজাতির উদ্ভিদ ও পাখি, কয়েক শ প্রজাতির কীটপতঙ্গ, স্তন্যপায়ীসহ নানা প্রাণের সমারোহ। আছে রেইনট্রিগাছ, যাতে বসবাস অন্তত দেড় শ প্রজাতির শৈবাল, ছত্রাক, মস আর পোকামাকড়। রয়েছে ঔষধি আর বিপন্ন প্রজাতির গাছও।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) বেশ কয়েকটি গবেষণায় সিআরবি এলাকার পরিবেশগত গুরুত্বের এই চিত্রটি পাওয়া যায়। দুই মাস ধরে একটি জরিপ পরিচালিত হয় চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেলের তত্ত্বাবধানে। এতে সহায়তা দিয়েছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকোর সদস্যরা। অপর গবেষণা কার্যক্রমটি চালান ভেনম রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশের সহকারী গবেষক ও চিটাগং বার্ড ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান। তিন বছর ধরে নগরীর গাছপালা, বন আর পাখপাখালি নিয়ে পরিবেশগত গবেষণা করছেন তিনি।
জানতে চাইলে মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণা শেষ হতে আরও মাসখানেক লাগবে। তবে প্রাথমিক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যও তাজ্জব বনে যাওয়ার মতো।’ তাঁর জরিপে সিআরবির পাহাড়ি এক বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯২টি উদ্ভিদ প্রজাতি রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় বৃক্ষ ৭৪ প্রজাতি, মাঝারি ৩৭ প্রজাতি, গুল্ম প্রজাতি আছে ৬৭ টি, আর লতাজাতীয় উদ্ভিদ ১৪ প্রজাতির। এর মধ্যে ১৫৪টি প্রজাতিই ঔষধি গাছ। আর বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ আছে ৯ প্রজাতির। কেবল গাছপালায় নয়, পাখি, উভচর আর স্তন্যপায়ী নানা প্রাণের বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায় সিআরবিতে।
ভেনম রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশের সহকারী গবেষক ও চিটাগং বার্ড ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সিআরবি পাহাড়ে মোট ৩০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এসবের মধ্যে নিয়মিত দেখা যায় পাকড়া কাঠঠোকরা, বসন্ত বাউরি, সাদাবুক মাছরাঙা, সবুজনটিয়া, ঘুঘু, আবাবিলসহ আরও ২৭ প্রজাতির পাখি। নীললেজ সুইচোরা, বাদামি কসাই, তাইগা চুটকি নামের ৩ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে মাঝেমধ্যে। পাখি ছাড়াও ২ প্রজাতির ব্যাঙ, ৩ প্রজাতির গিরগিটি (রক্তচোষা, টিকটিকি ও আঁচিল), ২ প্রজাতির সাপ (ঘরগিন্নি, দাঁড়াশ), ও কমপক্ষে ৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী দেখা মেলে এখানে।
চবির ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক কামাল হোসেন বলেন, সিআরবিতে আছে অনেক রেইনট্রি বা শিরীষ ও গর্জনগাছ। সাধারণত একটি রেইনট্রি থেকে কমপক্ষে ৩০০ কিউবিক ফিট আর গর্জন থেকে ২০০ কিউবিক ফিট অক্সিজেন পাওয়া যায়। সে হিসাবে সিআরবি কয়েক হাজার কিউবিক ফিট অক্সিজেনের একটি উর্বর ক্ষেত্র। তাঁর মতে, একেকটি রেইনট্রির গায়ে আরও এক থেকে দেড় শ প্রজাতির জীববৈচিত্র্যের বাস। এদের বাকলের মধ্যে শৈবাল, ছত্রাক, মস, কয়েক প্রজাতির পোকামাকড়, অর্কিডসহ কয়েক শ প্রাণ দেখা যায়।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় কর্মকর্তা (বন রসায়ন বিভাগ) ডন মোহাম্মাদ জাকির হোসাইন বলেন, হাসপাতালের কৃত্রিম আলো আর কোলাহলের কারণে সেখানকার আশপাশের গাছে পাখি আর বাসা বাঁধবে না। বেজি বা কীটপতঙ্গ সেই কৃত্রিম আলো দেখে অন্যত্র সরে যাবে। তা ছাড়া, হাসপাতালের বর্জ্য আর রোগ-জীবাণু বাতাসে ভেসে আশপাশের পরিবেশকে অবশ্যই দূষিত করে তুলবে।
পরিবেশগত এত ক্ষতির পর কেন হাসপাতাল হচ্ছে–এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্পের পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ব্রিজ) আহসান জাবির বলেন, ‘পরিবেশগত প্রভাবের ব্যাপারে এখানে হাসপাতাল নির্মাণের আগেই একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে। সেটি আরও নিশ্চিতে আমরা আবারও কনসালট্যান্ট নিয়োগ দিয়েছি।’
নগরীতে প্রাণভরে অক্সিজেন আর মনভরে প্রকৃতি দেখার কথা উঠলেই মানুষ ছুটে যায় সিআরবিতে। ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতিক নানা চর্চার কারণেও সিআরবির শিরীষতলা চট্টগ্রামবাসীর কাছে আবেগের জায়গা বলে অনেকে মনে করেন।
চট্টগ্রাম নগরীর কেন্দ্রীয় রেলভবন (সিআরবি) চত্বরের যে জায়গায় পাহাড় আর গাছ কেটে বেসরকারি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে, সেটি শুধু নগরবাসীর স্বস্তিতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা নয়, বরং এটি জীব আর প্রাণবৈচিত্র্যের দিক থেকেও বেশ গুরুত্বপূর্ণও। পাহাড় ও গাছগাছালিতে ঘেরা এ অঞ্চলে রয়েছে প্রায় আড়াই শ প্রজাতির উদ্ভিদ ও পাখি, কয়েক শ প্রজাতির কীটপতঙ্গ, স্তন্যপায়ীসহ নানা প্রাণের সমারোহ। আছে রেইনট্রিগাছ, যাতে বসবাস অন্তত দেড় শ প্রজাতির শৈবাল, ছত্রাক, মস আর পোকামাকড়। রয়েছে ঔষধি আর বিপন্ন প্রজাতির গাছও।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) বেশ কয়েকটি গবেষণায় সিআরবি এলাকার পরিবেশগত গুরুত্বের এই চিত্রটি পাওয়া যায়। দুই মাস ধরে একটি জরিপ পরিচালিত হয় চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেলের তত্ত্বাবধানে। এতে সহায়তা দিয়েছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকোর সদস্যরা। অপর গবেষণা কার্যক্রমটি চালান ভেনম রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশের সহকারী গবেষক ও চিটাগং বার্ড ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান। তিন বছর ধরে নগরীর গাছপালা, বন আর পাখপাখালি নিয়ে পরিবেশগত গবেষণা করছেন তিনি।
জানতে চাইলে মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণা শেষ হতে আরও মাসখানেক লাগবে। তবে প্রাথমিক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যও তাজ্জব বনে যাওয়ার মতো।’ তাঁর জরিপে সিআরবির পাহাড়ি এক বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯২টি উদ্ভিদ প্রজাতি রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় বৃক্ষ ৭৪ প্রজাতি, মাঝারি ৩৭ প্রজাতি, গুল্ম প্রজাতি আছে ৬৭ টি, আর লতাজাতীয় উদ্ভিদ ১৪ প্রজাতির। এর মধ্যে ১৫৪টি প্রজাতিই ঔষধি গাছ। আর বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ আছে ৯ প্রজাতির। কেবল গাছপালায় নয়, পাখি, উভচর আর স্তন্যপায়ী নানা প্রাণের বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায় সিআরবিতে।
ভেনম রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশের সহকারী গবেষক ও চিটাগং বার্ড ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সিআরবি পাহাড়ে মোট ৩০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এসবের মধ্যে নিয়মিত দেখা যায় পাকড়া কাঠঠোকরা, বসন্ত বাউরি, সাদাবুক মাছরাঙা, সবুজনটিয়া, ঘুঘু, আবাবিলসহ আরও ২৭ প্রজাতির পাখি। নীললেজ সুইচোরা, বাদামি কসাই, তাইগা চুটকি নামের ৩ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে মাঝেমধ্যে। পাখি ছাড়াও ২ প্রজাতির ব্যাঙ, ৩ প্রজাতির গিরগিটি (রক্তচোষা, টিকটিকি ও আঁচিল), ২ প্রজাতির সাপ (ঘরগিন্নি, দাঁড়াশ), ও কমপক্ষে ৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী দেখা মেলে এখানে।
চবির ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক কামাল হোসেন বলেন, সিআরবিতে আছে অনেক রেইনট্রি বা শিরীষ ও গর্জনগাছ। সাধারণত একটি রেইনট্রি থেকে কমপক্ষে ৩০০ কিউবিক ফিট আর গর্জন থেকে ২০০ কিউবিক ফিট অক্সিজেন পাওয়া যায়। সে হিসাবে সিআরবি কয়েক হাজার কিউবিক ফিট অক্সিজেনের একটি উর্বর ক্ষেত্র। তাঁর মতে, একেকটি রেইনট্রির গায়ে আরও এক থেকে দেড় শ প্রজাতির জীববৈচিত্র্যের বাস। এদের বাকলের মধ্যে শৈবাল, ছত্রাক, মস, কয়েক প্রজাতির পোকামাকড়, অর্কিডসহ কয়েক শ প্রাণ দেখা যায়।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় কর্মকর্তা (বন রসায়ন বিভাগ) ডন মোহাম্মাদ জাকির হোসাইন বলেন, হাসপাতালের কৃত্রিম আলো আর কোলাহলের কারণে সেখানকার আশপাশের গাছে পাখি আর বাসা বাঁধবে না। বেজি বা কীটপতঙ্গ সেই কৃত্রিম আলো দেখে অন্যত্র সরে যাবে। তা ছাড়া, হাসপাতালের বর্জ্য আর রোগ-জীবাণু বাতাসে ভেসে আশপাশের পরিবেশকে অবশ্যই দূষিত করে তুলবে।
পরিবেশগত এত ক্ষতির পর কেন হাসপাতাল হচ্ছে–এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্পের পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ব্রিজ) আহসান জাবির বলেন, ‘পরিবেশগত প্রভাবের ব্যাপারে এখানে হাসপাতাল নির্মাণের আগেই একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে। সেটি আরও নিশ্চিতে আমরা আবারও কনসালট্যান্ট নিয়োগ দিয়েছি।’
নগরীতে প্রাণভরে অক্সিজেন আর মনভরে প্রকৃতি দেখার কথা উঠলেই মানুষ ছুটে যায় সিআরবিতে। ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতিক নানা চর্চার কারণেও সিআরবির শিরীষতলা চট্টগ্রামবাসীর কাছে আবেগের জায়গা বলে অনেকে মনে করেন।
রাজশাহীতে জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরের বেশি সময় পর একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সময়ের ব্যবধান ছাড়াও এজাহারভুক্ত আসামিদের পরিচয় এ মামলা নিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আসামিদের অনেকেই ‘পয়সাওয়ালা ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় অভিযোগ...
৪ ঘণ্টা আগেমৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই প্রতিষ্ঠান ঘিরে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একাডেমিতে মৈতৈ, বিষ্ণুপ্রিয়া এবং পাঙন—এই তিন সম্প্রদায়ের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা থাকলেও শুধু বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এতে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে...
৫ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে ভূমি অফিসের সহায়ক রশিদুজ্জামান বিপ্লবের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও দিয়ে জিম্মি করে চাঁদাবাজির অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ছাত্রদল ও জামায়াত। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি...
৫ ঘণ্টা আগেপিরোজপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় জুজখোলা সম্মিলিত বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপুল মিত্র (৫০) গুরুতর আহত হয়েছেন। মুখোশধারী হামলাকারীরা তাঁর দুই পা ও ডান হাত ভেঙে দেয় বলে জানা গেছে। তাঁর সঙ্গে থাকা সহকারী শিক্ষক অসীম কুমারও (৪৬) আহত হয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে