Ajker Patrika

বদলে যাবে কক্সবাজার

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
বদলে যাবে কক্সবাজার

কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র। বালুকাময় সৈকত ছাড়াও আশপাশ বন-উপবন, খাল-নদী, ঝিরি-ঝরনা, বন্যপ্রাণি, পাখ-পাখালি ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই জেলা। এসব নৈসর্গিক সৌন্দর্য ঘিরে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার।

শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ এখন দৃশ্যমান। এই সৈকতের তীর ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়ক।

এছাড়া টেকনাফের সাবরাং ও মহেশখালীর সোনাদিয়ায় ইকো টুরিজম পার্ক তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। এখানে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন গড়ে তোলা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে সাগরপথে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার হয়ে সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে খুলনা অঞ্চলের সুন্দরবনে জাহাজ চলাচলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কেরও উন্নয়ন দৃশ্যমান।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সম্প্রসারণ, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ২৬৮ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ, আনোয়ারা থেকে চকরিয়া হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শহরের সঙ্গে যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করতে লিংক রোড থেকে শহরের হলিডে মোড় ও শহরের প্রধান সড়ক-উপসড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

এক পাশে পাহাড় ও অন্য পাশে সাগর ধরে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে গেলে বন্যপ্রাণী-পাখপাখালির হাঁকডাক, সমুদ্রের জলরাশিতে সারি সারি মাছ ধরার ট্রলার, ঝাউবন ও সামুদ্রিক প্রাণীর বিচরণ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বিমোহিত করে। চলতি পথে আরও আকর্ষণ বাড়ায় দরিয়ানগর, হিমছড়ির জাতীয় উদ্যান, ছড়া ও ঝরনা।

এরপর রয়েছে প্যাঁচার দ্বীপ ও ইনানির পাথুরে সৈকত। রয়েছে একমাত্র শৈলদ্বীপ মহেশখালী। আছে দেশের বৃহত্তর রামু রাবার বাগান, দেশের প্রথম চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, দেশের একমাত্র কুমির প্রজননকেন্দ্র, লবণমাঠ, চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের ঘের, দেশের বৃহত্তম রামুর বুদ্ধমূর্তি ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির পীঠস্থান। দেশের ১৯টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে তিনটি কক্সবাজারেই অবস্থিত।

এ ছাড়া দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনও এ জেলার দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফে। সব মিলিয়ে দেশের অন্য কোথাও এমন সব সম্পদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নেই, যা আছে শুধুই কক্সবাজারে। 
গত ২৯ আগস্ট কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কথা জানান।

পর্যটনকে ঘিরে জল, স্থল ও আকাশপথে কক্সবাজারের বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আগামী বছরের ডিসেম্বরেই পর্যটকেরা কক্সবাজারে ট্রেনে করে ভ্রমণে আসতে পারবেন। এ জন্য টুরিস্ট রেল চালু হবে। রেল যোগাযোগের মাধ্যমে এখানে পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে কক্সবাজারের পর্যটনের চেহারা পাল্টে যাবে।

কক্সবাজার-৩ (সদর ও রামু) আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজার পর্যটনের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একাধিক অগ্রাধিকার প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিশ্বের কাছে কক্সবাজার অন্য উচ্চতায় স্থান করে নেবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত