Ajker Patrika

সেই জামায়াত নেতাকে আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি

চবি প্রতিনিধি 
সিরাজুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
সিরাজুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।’ বলে মন্তব্য করা হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াত।

আজ রোববার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ফজলুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক ফজলুল করিম বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির মো. আলা উদ্দিন সিকদারের সভাপতিত্বে জরুরি জেলা কর্মপরিষদ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য শুনেছি। এ ছাড়া এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।’

সিরাজুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁকে তাৎক্ষণিক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি, এ জন্য শোকজ করিনি।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জোবরা গ্রাম নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হাটহাজারী উপজেলা আমির মো. সিরাজুল ইসলামের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি বক্তব্য বিভিন্ন অনলাইন, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে; যা জামায়াতে ইসলামীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী মনে করে তাঁর এ বক্তব্য নিজস্ব। যার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়েছে এবং সংগঠন এ বক্তব্যকে বিনয় পরিপন্থী মনে করে। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এ বক্তব্যের কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁকে হাটহাজারী উপজেলা আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘জামায়াতে ইসলামী মনে করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জোবরা গ্রাম কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়। পরস্পর পরিপূরক। এলাকাবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অতীত ঐতিহ্য ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে, এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

‘সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রী ও জোবরা গ্রামের অধিবাসী যারা আহত হয়েছেন, বাড়িঘরে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এ ছাড়া এ ঘটনাকে পুঁজি করে কেউ যাতে আর কোনো ঘটনা ঘটাতে না পারে, এ জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকলের সজাগ দৃষ্টি কামনা করছি।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না। এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের ওপর। আমরা এই জায়গার মালিক, তাই অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদের সম্মান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তবে আমরা জনগণ নিয়ে প্রয়োজনীয় নেব।’

এদিকে বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে ক্ষমা চেয়ে গতকাল শনিবার রাতেই নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম। ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘বক্তব্যের কিছু অংশ অনেকের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপিত হতে পারে। এটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। এ জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত