Ajker Patrika

ভোলার দৌলতখান: কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে লাগে টাকা

শিমুল চৌধুরী, ভোলা 
দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নের চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নের চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলার দৌলতখান উপজেলার একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে দিতে হয় টাকা। হতদরিদ্র রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগমের বিরুদ্ধে। তবে, কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগম বলছেন ক্লিনিকের বৈদ্যুতিক বিল ও ক্লিনিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য নেওয়া হয় ওই টাকা।

সরেজমিন দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে গেলে স্থানীয় লোকজন ও সেবাপ্রত্যাশীরা জানান, ওই এলাকার চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগম। তিনি টাকা ছাড়া দিচ্ছেন না ওষুধ।

সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরশুভী গ্রামের গৃহবধূ শাবনূর অভিযোগ করে বলেন, চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিকে টাকা ছাড়া কোনো ওষুধ দেয় না। কোনো গর্ভবতী নারী চেকআপের জন্য ক্লিনিকে গেলে ২০০ টাকা না দিলে চেকআপ করে না ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগম। খালেদা বেগম ও তাঁর স্বামী একই উপজেলার মনু মাতাব্বর বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহে আলম চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিকটিকে নিজেদের বাসাবাড়ি হিসেবে ব্যবহার করছেন।

একই গ্রামের গৃহবধূ শাহিনা বেগম বলেন, তিনি গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে চরশুভী মফিজ মিয়া বাড়ির কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিটামিন ‘বি’ প্লাস ক্যালসিয়ামের ইনজেকশন নিতে গেলে তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়েছেন ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগম। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মায়ের কাছ থেকেও ২০০ টাকা নিয়েছেন ক্লিনিকের সিএইচসিপি খালেদা বেগম।’

ভুক্তভোগীরা জানান, ওই ক্লিনিকে ভর্তি হতেও দিতে হয় টাকা। নাম রেজিস্ট্রেশন করতেও দিতে হয় ৫-১০ টাকা। টাকা ছাড়া যেন মিলছে না এই কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা।

ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও ওষুধ দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রোগীরা।

এ বিষয়ে সিএইচসিপি খালেদা বেগম বলেন, ‘এটি বাধ্যতামূলক নয়। যার ভালো লাগে টাকা দেবে, যার ভালো লাগে না তারা দেবে না। এই টাকা দিয়ে কারেন্ট (বিদ্যুৎ) বিল দেওয়া লাগে। বৈদ্যুতিক ফ্যান নষ্ট হলে মেরামত করা লাগে। এটা জনগণের ক্লিনিক, জনগণই চালাবে।’

দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রান্তিক হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সরবরাহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া হতদরিদ্র রোগীদের জন্য একজন করে হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার দায়িত্বে রয়েছেন প্রতিটি ক্লিনিকে।

এ বিষয়ে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ক্লিনিকে রোগীদের কাছ থেকে কোনো রকম টাকা নেওয়ার বিধান নেই। সেখানে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যেই সবাইকে ওষুধসহ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ‘ক্লিনিকে একটি সিজি কমিটি (কমিউনিটি গ্রুপ) গঠন করা হয়েছে। তারাই ক্লিনিকের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে। ক্লিনিকের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ কিংবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ যাবতীয় কাজ সেই কমিটিই করবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি না জেনে কেন এসব কথা বলেছে তা আমি জিজ্ঞেস করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাইয়ের গাদ্দারদের সব রেকর্ড প্রকাশ করা হবে—অব্যাহতির পর এনসিপি নেতার হুমকি

মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

‘ছোট ছোট চান্দাবাজি আমি হইতে দিছি’—বিএনপি নেতা সান্টুর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল

চট্টগ্রাম বন্দর: বিদেশিদের কাছে লিজে যাচ্ছে তিন টার্মিনাল

নাটোরে হোটেল কক্ষ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত