Ajker Patrika

আমতলীর ১২ কিলোমিটার সড়কে ৫০টি খানাখন্দ, দুর্ভোগে ২ লাখ মানুষ

প্রতিনিধি, আমতলী (বরগুনা) 
আমতলীর ১২ কিলোমিটার সড়কে ৫০টি খানাখন্দ, দুর্ভোগে ২ লাখ মানুষ

বরগুনার আমতলী ও তালতলীর ১২ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় বর্তমানে তা একটি ছোট পুকুরে পরিণত হয়েছে। এতে দুই উপজেলার অন্তত ২ লাখ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া গত এক বছর ধরে সড়কে ভারী যানবাহন ও পরিবহন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এসব দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে তালতলী উপজেলা শহরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে এ সড়ক নির্মাণ করা উদ্যোগ নেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এটি মানিকঝুড়ি থেকে সোনাকাটা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সড়ক। ওই বছর মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। পরে ২০০৩ সালে কচুপাত্রা থেকে সোনাকাটা পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার সড়ক হেরিনবন করা হয়। পরে ২০০৮ সালে ওই সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। ভেঙে যাওয়ায় পুনরায় ২০১৬ সালে ওই সড়কটি সংস্কার করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা বীজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রতি ১০ মিটার পরপর বড় বড় খানাখন্দ রয়েছে। গর্তে পানি জমে ডোবায় পরিণত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন এক ছোট পুকুর। অনেক স্থানে ছোট গাড়ি আটকে যাচ্ছে। এতে প্রায়ই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়ক সংস্কারে ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছেন। এতে সড়ক সংস্কারের তিন বছরের মাথায় ওই সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়। এদিকে মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সড়কটি ২০১৯ সালে সংস্কার করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। সড়ক সংস্কারের এক বছরের মাথায় ১২ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে ডোবায় পরিণত হয়। বর্তমানে সড়কটি বেহাল দশায় পড়ে আছে। বৃষ্টি এলেই সড়কের খানাখন্দ পানি জমে ছোট পুকুরে পরিণত হয়। ওই সড়ক দিয়ে আমতলী ও তালতলী উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ, ঢাকা ও তালতলীগামী পরিবহন বাস, তালতলী আইসোটেক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাভার ভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্র, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সহস্রাধিক গাড়ি চলাচল করে। বর্তমানে ওই সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে উপজেলাবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেহাল সড়কের কারণে গত এক বছর ধরে পরিবহন গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

বরগুনার আমতলী ও তালতলীর ১২ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় দুর্ভোগে ২ লাখ মানুষস্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, গত দুই বছর ধরে সড়কটি সংস্কারের অভাবে অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে আছে। কেউ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে চলাচলের পথ সুগম করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। 

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মাহবুবুর বহমান জাফর বিশ্বাস বলেন, দুই বছর ধরে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ। এতে দুর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার অন্তত দুই লাখ মানুষ। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কে হাজারো খানাখন্দ। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের পথ সুগম করার দাবি জানান তিনি। 

তারিকাটা গ্রামের বাসচালক মিজানুর রহমান ও মজিবুর রহমান বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে গত এক বছর ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।

তালতলী উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম পাটোয়ারি বলেন, সড়কে নয় এ যেন এক ছোট পুকুর। ১২ কিলোমিটার সড়কে অন্তত ৫০টি স্থানে ছোট পুকুরে পরিণত হয়েছে। অভিভাবকহীন এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক সংস্কারের জন্য বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রকল্প জমা দিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।

বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এসকে আরিফুল ইসলাম বলেন, সড়কের প্রাক্কলন তৈরি করে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত