Ajker Patrika

চাকরির জন্য যৌতুকের টাকা না দেওয়া অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
চাকরির জন্য যৌতুকের টাকা না দেওয়া অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর

সরকারি চাকরির জন্য ৭ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে না পাওয়া স্বামীর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ অন্তঃসত্ত্বা মাকসুদাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গত বুধবার সন্ধ্যায় আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত স্বামীর নাম কাইয়ুম ইসলাম। উত্তর টিয়াখালী গ্রামের নাশির হাওলাদারের ছেলে এবং পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়েন। স্ত্রী মকসুদা আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মো. মতিউর রহমানের মেয়ে। 

জানা যায়, ২০১৬ মাসের মার্চ মাসে মাকসুদার সঙ্গে কাইয়ুমের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় শ্বশুর জামাতাকে দেড় ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেন। কিন্তু এতে তুষ্ট নন জামাতা কাইয়ুম। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই মাকসুদাকে মারধর করে আসছেন তিনি। গত তিন মাস পূর্বে স্বামী কাইয়ুম স্ত্রী মাকসুদার কাছে সরকারি চাকরির জন্য ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন বলে যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু এ টাকা দিতে অস্বীকার করে মাকসুদা ও তাঁর বাবা মতিউর রহমান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাইয়ুম তাঁর মা শিরিনা বেগম ও বোন তাইরিনের কু-পরামর্শে বাড়ি থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেন। এরপর থেকে মাকসুদা তাঁর বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। 

গত বুধবার সন্ধ্যায় কাইয়ুম মাকসুদার কাছে পুনরায় চাকরির জন্য যৌতুকের টাকা দাবি করেন। এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মাসকুদাকে বেধড়ক মারধর করেন। মারধরে তাঁর নাক মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে মাকসুদা ৯৯৯ ফোন দেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। 

বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লেবার ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মাকসুদা শরীরের অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। 

অন্তঃসত্ত্বা মাকসুদা কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘সরকারি চাকরির জন্য আমার স্বামীর ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন। ওই টাকা আমার বাবার কাছে যৌতুক দাবি করেন। আমার বাবা এত টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে তিন মাস পূর্বে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ওই টাকার জন্য আমার বাবার বাড়িতে আসে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে বেধড়ক মারধর করে। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি ও ননদের কুপরামর্শে যৌতুক দাবিতে আমাকে মারধর করে আসছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’

স্বামী কাইয়ুম ইসলাম যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করে বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি এক পর্যায় দু-একটি কিল ঘুষি দিয়েছি। 

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অন্তঃসত্ত্বা মাকসুদার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত