Ajker Patrika

হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স রাখা নিয়ে চালকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

গৌরনদী প্রতিনিধি 
হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স রাখা নিয়ে চালকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখা নিয়ে চালকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের আটজন আহত হন। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে যত্রতত্র বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করে রাখার কারণে আগত রোগী ও তাদের স্বজনদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালে সদ্য যোগদান করা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তিনটি করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল কম্পাউন্ডে রাখার নির্দেশ দেন। অন্য সব বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের বাইরে রাখতে বলেন। পরে নির্ধারিত স্থানে অ্যাম্বুলেন্স রাখা নিয়ে চালকদের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১টার দিকে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সের মালিক জাবেদ সেলিম অপর মালিক জামাল সিকদারকে তাঁর দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি ভেতরে রাখতে বলেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সেলিম ও জামালের সমর্থকেরা হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সংঘর্ষের সময় আগত রোগী ও তাদের স্বজনেরা ছোটাছুটি শুরু করেন। একপর্যায়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষকালে হাসপাতালে আগত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম হাফিজুর রহমান (৬০)। তিনি উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই রোগী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন বলে জানানো হয়।

হামলায় আহত জাবেদ সেলিমের ভাই সালাম ব্যাপারী বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশ অন্য অ্যাম্বুলেন্সচালকদের জানাতে গেলে পরিকল্পিতভাবে জামাল সিকদার ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়ে সেলিমকে বেদম মারধর করেন। হামলার খবর পেয়ে আমি এবং এক আত্মীয় ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত জাবেদ সেলিমকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

অপর দিকে জামাল সিকদারের ছেলে সাইদ সিকদার বলেন, ‘সেলিম এবং তাঁর লোকজনে অশ্লীল ভাষায় আমাদের গালিগালাজ করার প্রতিবাদ করায় হামলা চালিয়েছেন। সাইদ এবং তাঁর বাবা জামাল সিকদার, ভাই শাহাদাত সিকদার ও হেলপার রাহাত ঘরামীকে মারধর করে আহত করা হয়েছে।’

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শাহতা জারাব সালেহিন বলেন, হাসপাতালের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের বিষয়টি তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়। রোগীদের শতভাগ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করে সব ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত