Ajker Patrika

ওষুধ রিপ্রেজেনটেটিভদের দৌরাত্ম্যে বিপাকে রোগীরা! 

প্রতিনিধি, ঝালকাঠি
ওষুধ রিপ্রেজেনটেটিভদের দৌরাত্ম্যে বিপাকে রোগীরা! 

ঝালকাঠি জেলার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান সদর হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে বিপাকে পড়েছে রোগীরা। নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধ রিপ্রেজেনটেটিভদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলেও ঠেকানো যাচ্ছে না তাঁদের। এ সব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের টানাটানিতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। 

জানা গেছে, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এসব বিধিনিষেধ মানছে না ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে এবং ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে স্মার্ট ফোনে ছবি তুলছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। পুরুষ রোগীদের থেকে প্রেসক্রিপশন না নিয়ে গ্রামাঞ্চল থেকে আসা নারী রোগীদের প্রেসক্রিপশনের দিকেই তাঁদের টার্গেট বেশি ছিল।   হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হতেই রোগীর হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে শুরু হয় ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভদের টানাটানি। অনেক সময় একাধিক রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ব্যবস্থাপত্র পরিবর্তনও হয়ে যাচ্ছে। টানাটানি করে অনেক সময় ব্যবস্থাপত্র ছিঁড়েও ফেলার ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ওষুধের দোকানগুলোও একই অবস্থা চোখে পড়ে। 

একটি সূত্রে জানা যায়, ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভরা চিকিৎসকদের দামি দামি উপহার দিয়ে থাকেন। এসব দামি উপহার বদৌলতে চিকিৎসকদের বাধ্য করা হচ্ছে তাঁদের কোম্পানির ওষুধ লেখাতে। ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভদের দেওয়া দামি দামি উপহারের কারণে নিম্নমানের ওষুধ চিকিৎসকেরা লিখে দিচ্ছেন কি–না  এমনটি আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল। 

চিকিৎসা নিতে আসা আয়েশা খাতুন, মর্জিনা ও স্বপ্না আক্তারসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী রোগী বলেন, ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হতেই হাসপাতালের মধ্যে এবং বাইরে তিন চারজন লোক আমার দিকে এগিয়ে এসে ব্যবস্থাপত্র দেখতে চায়, তা দেখাতে আগ্রহী না হয়ে চলে যেতে চাইলে, জোর করে সামনে দাঁড়িয়ে প্রেসক্রিপশন টেনে নিয়ে ছবি তুলে নেওয়া । চিকিৎসা নিতে এসে এমন নাজেহাল হওয়া মোটেই আশা করিনি। 

ওষুধ কোম্পানির বেশ কয়েকজন রিপ্রেজেনটেটিভদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, অফিস থেকে নির্দেশনা আছে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে অফিসে পাঠানোর। ব্যবস্থাপত্রে নিজ নিজ কোম্পানির ওষুধের নাম ও থাকতে হবে। ছবি তুলার টারগেটও দেওয়া থাকে, টারগেট পূরণ না হলে বসদের গালিগালাজ শুনতে হয়। এ ছাড়া সপ্তাহে ও মাসে কোম্পানির সার্ভে থাকে তাই আমাদের বাধ্য হয়েই এ বিষয়ে সোচ্চার থাকতে হয়। 

এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলার সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবুল হাসান বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত