Ajker Patrika

আমতলী-তালতলী

দাদনের গ্যাঁড়াকলে জেলেরা

  • আমতলীতে ইলিশ জেলে ৬ হাজার ৭৮৯ এবং তালতলীতে ৭ হাজার ৯০০ জন।
  • দাদনের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয় জেলেদের।
  • অনেক জেলে সারা জীবন বসেও দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারেন না।
  • দাদন ব্যবসায়ীদের দাবি, জেলেদের জিম্মি করা হয় না, তবে মাছ ধরা পড়লে কিছু টাকা কাটা হয়।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০৩
বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্টার চর এলাকায় ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্টার চর এলাকায় ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দাদনের ভয়াবহ গ্যাঁড়াকলে পড়ে আছে বরগুনার দুই উপজেলার ১৪ হাজার ৬৮৯ জন ইলিশ জেলের জীবন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দারিদ্র্যের শেকলে বাঁধা তাঁরা। অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের দারিদ্র্যের কশাঘাতের সুযোগ নিচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। দাদনের কারণে ইলিশের ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত তাঁরা। দাদন ব্যবসায়ীদের জিম্মি ও দাদনের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেতে সরকারিভাবে সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এসব জেলে।

জেলেদের দাবি, সরকারিভাবে তাঁদের জাল ও নৌকা বিতরণ করা হোক। মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরিং পলিসিতে কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ আছে কিন্তু জেলেদের জন্য কোনো ঋণ নেই। কৃষিঋণের আওতায় জেলেদের আনা হলে তারা দাদনের গ্যাঁড়াকল থেকে মুক্তি পেত। জেলেদের দাদন থেকে মুক্তি দিতে সরকারিভাবে ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ১৪ হাজার ৬৮৯ জন নিবন্ধনধারী জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে আমতলীর ৬ হাজার ৭৮৯ এবং তালতলীর জেলে ৭ হাজার ৯০০ জন। এরা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। বংশপরম্পরায় তাঁরা এ পেশা ধরে রেখেছেন। সারা বছর মাছ শিকার করেই চলে তাঁদের সংসারজীবন।

জেলেরা বলছেন, নদী ও সাগরে মাছ ধরা পড়লে ভালো চলে তাঁদের জীবনকাল। আর মাছ ধরা না পড়লে উনুনে পাতিল ওঠে না। জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে তেমন শিক্ষা নেই। ফলে দাদন ব্যবসায়ীদের হাতে অতি সহজে তাঁরা জিম্মি হয়ে যান। উপকূলীয় অঞ্চলের গভীর সাগরে, সাগরের কিনারে এবং সাগরের শাখা-প্রশাখা নদীতে তিন শ্রেণির জেলে মাছ শিকার করেন। জেলেদের নদী ও সাগরে মাছ শিকার করতে প্রয়োজন জাল, নৌকা, ট্রলার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। কিন্তু জাল, নৌকা ও ট্রলার তৈরিতে প্রয়োজনীয় টাকা অধিকাংশ জেলের হাতে থাকে না। তখনই তাঁরা দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হন। দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হলেই তাঁদের হাতে জেলেরা জিম্মি হয়ে পড়েন। জেলেদের সংসার চলুক আর নাই চলুক আসল টাকা রেখে ব্যবসার টাকা তুলে নেন দাদন ব্যবসায়ীরা।

দাদন ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর চলে জেলেদের সংসারজীবন—এমন অভিযোগ জেলে ইসমাইল ও মাসুম তালুকদারের।

জেলে ছত্তার, লাল মিয়া ও মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন মাস। এই চার মাসে চলে দাদন ব্যবসায়ীদের রমরমা বাণিজ্য। দাদনের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন জেলেরা। কেজিপ্রতি ইলিশের মূল্য ৫০-১৫০ টাকা কমিয়ে দেওয়া হয় জেলেদের। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেই দাদনের টাকা ফেরত দিতে চাপ দেয় দাদন ব্যবসায়ীরা।

তালতলী উপজেলার গাবতলী এলাকার জেলে ছত্তার বলেন, ‘গত বছর দুই ফার (৯০০ হাত) জাল ও নৌকা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় তৈরি করেছি। ওই টাকা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে এনে পরিশোধ করতে হয়েছে। দাদনের টাকা আনা মানেই দাদন ব্যবসায়ীর কাছে জিম্মি। তাঁরা যেমন ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেন, তেমনই নিতে হয়। এতে আমরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারিভাবে জেলেদের জাল ও নৌকা বিতরণ করা হলে জেলেরা দাদন ব্যবসায়ীদের জিম্মি থেকে মুক্তি পেত।’

লাল মিয়া বলেন, ‘৮০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে এক ফার জাল-নৌকা তৈরি করেছি। গত পাঁচ বছরেও এ টাকা পরিশোধ করতে পারিনি।’

আমতলী গুলিশাখালী ইউনিয়নের নাইয়াপাড়া গ্রামের শামিম, আমানুল ও নাশির মাদবর বলেন, দাদন ছাড়া জেলেদের জীবন চলে না। প্রত্যেক জেলেরই কিছু না কিছু দাদন থাকে।

একই এলাকার নাঈম বলেন, ‘১০ বচ্ছর ধইরা জাল-নৌকা দিয়া ইলিশ মাছ ধরছি। আইজ পর্যন্ত দাদনের টাহা শ্যাষ হরতে পারি নাই। কবে শ্যাষ হরমু হেইয়্যা কইতে পারি না।’

নাইয়াপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ সৈয়দ আকন বলেন, ‘ইলিশ মাছ ধরতে ধরতে বুড়া অইয়্যা গ্যালাম কিন্তু দাদন শ্যাষ হরতে পারলাম না। শ্যাষ হরতে পারমু কিনা জানি না। সরহার যদি মোগো জাল-নৌকা বানাইয়্যা দিতো হ্যালে আর মহাজনদের ধারে যাইতে অইতো না। মোরা সরহারের কাছে জাল-নৌকার দাবি হরি।’

তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের মৎস্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক দাদন ব্যবসায়ী মজিবর ফরাজী জেলেদের জিম্মি রাখার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা খাটিয়ে সারা বছর জেলেদের পাশে থাকি। যখন মাছ ধরা পড়ে তখন কিছু কিছু কেটে রাখা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দাদন ছাড়া কোনো জেলে নদীতে মাছ শিকারে যেতে পারে না।’

ফকিরহাট মৎস্য সমিতির সহসভাপতি ইউপি সদস্য মো. ছালাম হাওলাদার বলেন, অধিকাংশ জেলেই দরিদ্র। দাদন ছাড়া জেলেরা চলতে পারে না। জাল-নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তৈরিতে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, ওই টাকা জেলেদের কাছে থাকে না। তাই বাধ্য হয়েই দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে যেতে হয়।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাস বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরিং পলিসিতে কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ আছে কিন্তু জেলেদের জন্য কোনো ঋণ নেই। কৃষিঋণের আওতায় জেলেদের আনা হলে তারা দাদনের গ্যাঁড়াকল থেকে মুক্তি পেত। জেলেদের দাদন থেকে মুক্তি দিতে সরকারিভাবে ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠিত

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি প্রতিযোগীদের হাতে ইয়েস কার্ড, ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন। এ সময় মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘পিএইচপির আয়োজনে ‘‘পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে’’ প্রতিযোগিতা। বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়াতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রমজান মাস ধরে আমাদের আয়োজকেরা হাফেজে কোরআনদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত ১৭ বছর ধরে চলে আসা এই অনুষ্ঠান দেশে ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’

কোরআনের আলো অনুষ্ঠানকে চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পিএইচপি কেয়ামত পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, যারা কুফরি করে এবং মানুষকে সত্যের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের দুনিয়ায় শাস্তি দেবেন এবং আখিরাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন—এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর ঘোষণা। প্রত্যেকের জীবনকে পবিত্র কোরআনের আলোয় জীবন গঠন করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘সারা দেশের হাজার হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই করে টিভি অনুষ্ঠানের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। সেখান থেকে মাত্র চারজনকে বাছাই করা অনেক কঠিন কাজ। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা পৌঁছাই।’ অডিশনে উপস্থিত ছিলেন কোরআনের আলো ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মুফতি মোহম্মদ মহিউদ্দিন, অর্থ সচিব হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া, ক্বারী মাওলানা জহিরুল ইসলাম, হাফেজ আবদুল্লাহ আল জায়েদ, পিএইচপি পরিবারের মিডিয়া অ্যাডভাইজার দিলশাদ আহমেদসহ পিএইচপি পরিবার ও আয়োজকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে আড়াই ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক

মাদারীপুর প্রতিনিধি
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।

লাভলু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধের কারণে এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর অংশে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় পর সড়ক অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, দীর্ঘ যানজট

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী কান্দিরপাড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।

ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার রাত পৌনে ১২টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাজী ইয়াছিনের সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছি। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বলে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত