Ajker Patrika

শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এস. এস শোহান, বাগেরহাট 
সমবায় সমিতি সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সমবায় সমিতি সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাট জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুহুর আলী মোল্লার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন শহরের প্রধান মাছবাজারের ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, নুহুর আলী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ১৬ বছর ধরে বাগেরহাট বাজার মৎস্য পাইকার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড নিজের কবজায় রেখেছিলেন। তিনি সদস্যদের চাঁদা ও তাঁদের কল্যাণে আড়ত থেকে তোলা টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সমিতির হিসাব ও সদস্যদের সঞ্চয় ফেরত চাইলে তিনি সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের প্রধান মাছবাজারে কর্মরত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা ১৯৯১ সালে একটি সমবায় সমিতি করেন। প্রথম দিকে সদস্যরা প্রতিদিন চাঁদা হিসাবে ২ এবং পরে ৫ টাকা করে জমা রাখতেন।

এর সঙ্গে পাইকারি আড়তগুলোর প্রত্যেক বিক্রেতা থেকে আগে ১০ ও পরে ২০ টাকা করে রাখা হতো। এ টাকা বছরের বিভিন্ন উৎসবে সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হতো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে সমিতির দায়িত্ব নেন শ্রমিক লীগ নেতা নুহুর আলী। সব শেষ ২০১৪ সালে সমিতির নির্বাচনে তিনি সাধারণ সম্পাদক হন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আর সমিতির কোনো হিসাব দেননি।

মাছ ব্যবসায়ী আছাদ মোল্লা বলেন, ‘১৬ বছরে নুহুর আলী মোল্লা প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা টাকা ফেরত চাই। টাকা ফেরত চাইলে, আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। মামুনসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে মারধরও করেছেন তিনি।’ মো. কামরুল সরদার নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘খুব কষ্ট করে টাকা জমিয়েছি। কিন্তু ক্ষমতার বলে নুহুর আলী মোল্লা টাকা মেরে দিয়েছেন।’

সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বলেন, ‘প্রতি মাসে আমরা সদস্যদের জমার তথ্যসংবলিত একটি তালিকা দিতাম। কিন্তু নুহুর আলী মোল্লা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আর কোনো তালিকাও দেন না, হিসাবও দেন না। বরং আমাদের সমিতির টাকা নিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে একটি সমিতি করেছেন। আমরা তাঁর বিচার চাই।’

জানতে চাইলে নুহুর আলী বলেন, ‘আমি দায়িত্বে ছিলাম কিন্তু কোনো টাকাপয়সা আত্মসাৎ করিনি। কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। করলে বাজারে থাকতে পারতাম না।’

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে আসেন না নুহুর আলী। সমিতিতে তাঁর আমলে প্রথম দিকে আ. লতিফ সভাপতি থাকলেও পরে আ. সালাম মোল্লাকে সভাপতি বানানো হয়। তিনি বলেন, ‘মূলত আমি ছিলাম পুতুল সভাপতি। টাকা সংগ্রহ করে সাধারণ সম্পাদকের কাছে দিতাম। তিনি আমাকেও কোনো হিসাব দিতেন না। মাসে মাসে আমাকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু টাকা দিতেন।’

যোগাযোগ করা হলে বাগেরহাট সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে বাগেরহাট বাজার মৎস্য পাইকার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কমিটি নেই। সদস্যদের একটি অ্যাডহক কমিটি করতে বলা হয়েছে। কমিটি করা হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা ও অডিট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে দুজন নিহত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যমুনা সেতু-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের ঘারিন্দা আন্ডারপাস এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আকুয়া গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সাহেব আলী (৪৫) এবং একই উপজেলার ভোক্তা গ্রামের নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে অটোরিকশার যাত্রী আব্দুল আলীম শেখ (৬০)।

এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান জানান, ঢাকাগামী সার্ভিস লেনে চলন্ত একটি অজ্ঞাত ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই যাত্রী আব্দুল আলীম মারা যান। গুরুতর আহত চালক সাহেব আলীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পথে তাঁরও মৃত্যু হয়।

আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় বিজিবির বিশেষ অভিযানে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা সীমান্ত এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, দুটি গুলি এবং ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরের দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনপুর মাঠ এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিজিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশপুর বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একটি বিশেষ টহল দল সীমান্ত পিলার হতে প্রায় ২০০ গজ অভ্যন্তরে অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালানবিরোধী এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় টহল দলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় এ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র, মাদক ও যেকোনো ধরনের চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। আন্তসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্ত সুরক্ষা এবং অবৈধ পণ্য পাচার রোধে টহল তৎপরতা ও গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে নিখোঁজ অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুজিবুর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত
মুজিবুর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জে নিখোঁজের তিন দিন পর খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মুজিবুর মাঝি (৪৫) নামে এক অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার পূর্ব রতনপুর এলাকার একটি খাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মুজিবুর মাঝি মুন্সিগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকার বাঁধন সরকারের গ্যারেজে কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার মুজিবুর লৌহজংয়ের মাওয়া যাওয়ার উদ্দেশে গ্যারেজ থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রাসেল মিয়া গতকাল রোববার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আজ সোমবার সকালে এলাকাবাসী ওই খালে হাত পা-বাঁধা অবস্থায় মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

এ বিষয়ে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহাগ জানান, ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

গাজীপুরের শ্রীপুরে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যান কৃষক জালাল উদ্দীন। পুরো ট্রেন তাঁর ওপর দিয়ে গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহত জালাল উদ্দীন (৪৫) ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর আগে জালাল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, শ্রীপুর রেলস্টেশনে দাঁড়ানো মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন। এ সময় তিনি ট্রেনে উঠতে দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছেড়ে দেয়। এ সময় পা পিছলে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান তিনি। এর পরের ঘটনা বলতে পারেননি গুরুতর আহত জালাল উদ্দীন।

স্থানীয় দোকানি মনির হোসেন জানান, স্টেশনে দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়া শুরু করে। হঠাৎ জালাল উদ্দীন এক নম্বর লাইনে দৌড়ালে পা পিছলে চোখের পলকে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু বলেন, রাতেই তিনি মারা গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজন মানুষ জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তা ছাড়া বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত