Ajker Patrika

`জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ক্ষমতাহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে'

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ২১
`জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ক্ষমতাহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে'

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, সরকারের সচিব এ এস এম আলী কবীর বলেছেন, নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকায় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ক্ষমতাহীন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নদী কমিশনকে পরিপূর্ণ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা না করলে নদী দখলকারীদের দমন করা সম্ভব নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানের ভাষায়, 'নদী দখল ইস্যুতে আমরা শুধু প্রেসক্রিপশন করার ক্ষমতা রাখি, ওষুধ প্রয়োগের ক্ষমতার জন্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হতে হয়।'

মুজিব শতবর্ষ ও বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আজ রোববার আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আলী কবীর। নদী দিবস উপলক্ষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্প এই আয়োজন করে।

কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, নদী কমিশনের এই দুর্বলতার সুযোগে দখলকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। দেশের নদী বাঁচাতে হলে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীন কমিশনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন কমিশনের চেয়ারম্যান। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিগত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে সারা দেশে দুর্নীতির থাবা নদীর ওপরেও পড়েছিল। নদী দখলকারীরা জানত অপরাধ করলে দলীয় পরিচয়ের কারণে শাস্তি হবে না। এ জন্য সারা দেশে নদী দখলের উৎসবে নেমেছিল বিগত সরকারের প্রভাবশালীরা। কিন্তু বর্তমান সরকার কোনো নদী দখলকারীকে ছাড় দেবে না বলে ঘোষণা দেন তিনি। 

এ সময় অনুষ্ঠানে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মনির হোসেন চৌধুরী, নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য, অতিরিক্ত সচিব কামরুন্নাহার আহমেদ, ৪৮ নদীর সমীক্ষা প্রকল্প পরিচালক একরামুল হক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গবেষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও হালদা নদী প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুরুল কিবরীয়া, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইজাজ। 

 ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শতভাগ স্বাধীন করার নির্দেশনা দেয়। আড়াই বছর পরেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ জানান বক্তারা। 

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের শিল্প শহর গড়ে উঠেছে নদীর ওপর ভিত্তি করে, অথচ এই শিল্প-কলকারখানাগুলো নদীকে ধ্বংস করছে। বাংলাদেশের নদী না বাঁচলে কৃষি বাঁচবে না আর কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। তাই দেশের নদীগুলো বাঁচানোর কার্যকর উদ্যোগ দরকার। তবে এক একটি নদীর একেকরকম বৈশিষ্ট্য হওয়ার কারণে নদী ব্যবস্থাপনা ঢালাওভাবে একই পদ্ধতিতে উদ্ধার করা বিজ্ঞানসম্মত হবে না। অপরিকল্পিতভাবে অনেক নদীতে ব্লক ফেলে নদীর ইকোসিস্টেম নষ্ট করা হচ্ছে। নদীদূষণের কারণে বাংলাদেশ থেকে অনেক দেশি মাছ হারিয়ে গেছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে সিলেট শহরে দূষণ কম হয়। এ কারণে সিলেটের নদী কম দূষিত হয়। তাই অন্য বিভাগের চেয়ে সেখানে মাছ বেশি পাওয়া যায়। বাংলাদেশের হালদা নদীকে টেমস নদীর সঙ্গে তুলনা করে তাঁরা বলেন, প্রতিটি নদী নিয়ে আলাদা আলাদা পরিকল্পনা করা গেলে এ দেশের নদীগুলো বাঁচানো সম্ভব। নদীমাতৃক বাংলাদেশের খেতাবকে অটুট রাখা সম্ভব। নদীদূষণ কমানো না গেলে `মাছে-ভাতে বাঙালি' প্রবাদটি হারিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রিজন ভ্যান থামিয়ে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা, ১১ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

মাজার ভেঙে লাশ পোড়ানোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক নেই: ইসলামী আন্দোলন

নুরাল পাগলার দাফনকে কেন্দ্র করে যেভাবে সহিংসতা ঘটল

জাকসুর ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল

তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের আয়োজক সুইটি গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত