বিভুরঞ্জন সরকার
নাসির উদ্দিন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ শেষে হয়েছেন জীবনযোদ্ধা। নিজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ-নিশ্চিন্ত জীবনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পালন করেছেন নানা সামাজিক দায়িত্ব। কিন্তু এসব আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমি কয়েকটি কথা বলব তাঁর লেখা ‘স্মৃতির পাতায় মুক্তিযুদ্ধ ও সোনাকান্দা’ বইটি সম্পর্কে। কারও আত্মজীবনীও যে চিত্তাকর্ষক হতে পারে, তার প্রমাণ বইটি।
বইটিতে লেখক তাঁর জন্মস্থান সোনাকান্দার কথা ছাড়াও স্কুলজীবন থেকে শুরু করে জীবনের নানা পর্যায়ে, নানা বাঁকে কত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন, এসেছেন কত মানুষের সান্নিধ্যে—তার কিছু চিত্র এই বইয়ে তুলে ধরেছেন। প্রতিটি মানুষের জীবনই স্মৃতিময়। ‘কেউ ভোলে আর কেউ ভোলে না অতীত দিনের স্মৃতি’। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন আহমেদও ভোলেননি অতীতের ঘটনার ঘনঘটা। তাঁর লেখায় তত্ত্ব নেই, উপদেশ নেই, কিন্তু আছে এমন সব ঘটনা, যা পড়ে মনে হবে, হ্যাঁ, তাই তো, এগুলো তো আমারও গল্প। আবার কারও নিজের জীবনের গল্পের সঙ্গে না মিললেও মনে পড়বে অন্য কোনো বয়সী মানুষের কাছে এমন সব কথা তিনি শুনেছেন।
লেখক হিসেবে নাসির উদ্দিন আহমেদকে সার্থক মনে করি এ কারণে যে তিনি নিজের স্মৃতির দুয়ার খুলে অনেকের স্মৃতিকে উসকে দিয়েছেন। সহজ-সরল ভাষায় কথকের মতো গল্প শুনিয়েছেন, যাতে নিজের কথা আছে কিন্তু তার চেয়ে বেশি আছে আরও অনেকের কথা। আসলে মানুষের কাহিনি তো একার নয়, যৌথ। একজন কলেজছাত্র কী করে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক হলেন, তা তিনি বর্ণনা করেছেন একেবারে গল্পচ্ছলে।
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জীবনের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ঘটনা। পরবর্তী প্রজন্মের একজন মানুষ চেষ্টা করে অনেক কিছু হতে পারবেন, খ্যাতির শিখরে আরোহণ করতে পারবেন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার গৌরবের অংশীদার হতে পারবেন না, যেটা নাসির উদ্দিন আহমেদ পেরেছেন।
বইয়ের ভূমিকায় তিনি বলছেন: ‘স্মৃতির গহীনে অনেক কথা, অনেক ঘটনা সঞ্চিত হয় প্রতিনিয়তই, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্মৃতিরাশি হয়তো ভোলা সম্ভব নয়। তারপরও স্মৃতিকথা লেখা সহজ কাজ নয়, বড় কঠিন ব্যাপার; এ কথা আগে বুঝতে পারিনি। জীবনে এত কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি, এত মানুষের সঙ্গে মিশেছি, এত ঘটনা দেখেছি, বইটি লিখতে না বসলে বুঝতেই পারতাম না। জীবনের সব ঘটনা সবিস্তারে লিখতে পারিনি, সেটা সম্ভবও নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ, প্রিয় সোনাকান্দা ও অন্যান্য উজ্জ্বল স্মৃতিগুলো বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।’
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সোনাকান্দা গ্রামে জন্ম নিয়ে নাসির উদ্দিন আহমেদ যেমন গোটা বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার জীবনবাজি রাখা যুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরত্বগাথা রচনা করেছেন, তেমনি একাত্তরে গ্রামের আরও অসংখ্য নাসির উদ্দিন একই কাজ করেছেন। সবাই যদি নিজের অভিজ্ঞতা লিখতেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের কারও কারও মধ্যে যে বিভ্রান্তি, ধোঁয়াশা তা দূর হতো।
নাসির উদ্দিন আহমেদ কত সহজ করে লিখেছেন: ‘তারপর এলো ১৯৭১। গোটা দেশ যেন আন্দোলনের দুর্গ। আমি তখন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। টগবগে তরুণ।
রাজনীতির সব খোঁজখবর রাখি, নিয়মিত মিছিল-মিটিং করি।’
মিছিল-মিটিং থেকে চলে যান যুদ্ধের ময়দানে। সেই যুদ্ধেরও কত ঘটনা। একদিনের ঘটনা বলছেন: ‘কানাইনগর স্কুলে সন্ধ্যার পর সবাই মিলে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের বিখ্যাত “চরমপত্র” পাঠ শুনে আমরা অপারেশনের জন্য বের হতাম। এম আর আখতার মুকুল ছিলেন সাংবাদিক ও লেখক। তিনি ঢাকাইয়া ভাষায় এটা প্রচার করতেন।’
এমন স্মৃতিজাগানিয়া অনেক তথ্য বইটিতে আছে, যা আবার পাঠককে ভারাক্রান্ত না করে কৌতূহলী করে তুলবে। বইটি সুন্দর প্রচ্ছদে ছাপা, বাঁধাই ভালো এবং অসামান্য বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
নাসির উদ্দিন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ শেষে হয়েছেন জীবনযোদ্ধা। নিজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ-নিশ্চিন্ত জীবনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পালন করেছেন নানা সামাজিক দায়িত্ব। কিন্তু এসব আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমি কয়েকটি কথা বলব তাঁর লেখা ‘স্মৃতির পাতায় মুক্তিযুদ্ধ ও সোনাকান্দা’ বইটি সম্পর্কে। কারও আত্মজীবনীও যে চিত্তাকর্ষক হতে পারে, তার প্রমাণ বইটি।
বইটিতে লেখক তাঁর জন্মস্থান সোনাকান্দার কথা ছাড়াও স্কুলজীবন থেকে শুরু করে জীবনের নানা পর্যায়ে, নানা বাঁকে কত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন, এসেছেন কত মানুষের সান্নিধ্যে—তার কিছু চিত্র এই বইয়ে তুলে ধরেছেন। প্রতিটি মানুষের জীবনই স্মৃতিময়। ‘কেউ ভোলে আর কেউ ভোলে না অতীত দিনের স্মৃতি’। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন আহমেদও ভোলেননি অতীতের ঘটনার ঘনঘটা। তাঁর লেখায় তত্ত্ব নেই, উপদেশ নেই, কিন্তু আছে এমন সব ঘটনা, যা পড়ে মনে হবে, হ্যাঁ, তাই তো, এগুলো তো আমারও গল্প। আবার কারও নিজের জীবনের গল্পের সঙ্গে না মিললেও মনে পড়বে অন্য কোনো বয়সী মানুষের কাছে এমন সব কথা তিনি শুনেছেন।
লেখক হিসেবে নাসির উদ্দিন আহমেদকে সার্থক মনে করি এ কারণে যে তিনি নিজের স্মৃতির দুয়ার খুলে অনেকের স্মৃতিকে উসকে দিয়েছেন। সহজ-সরল ভাষায় কথকের মতো গল্প শুনিয়েছেন, যাতে নিজের কথা আছে কিন্তু তার চেয়ে বেশি আছে আরও অনেকের কথা। আসলে মানুষের কাহিনি তো একার নয়, যৌথ। একজন কলেজছাত্র কী করে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক হলেন, তা তিনি বর্ণনা করেছেন একেবারে গল্পচ্ছলে।
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জীবনের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ঘটনা। পরবর্তী প্রজন্মের একজন মানুষ চেষ্টা করে অনেক কিছু হতে পারবেন, খ্যাতির শিখরে আরোহণ করতে পারবেন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার গৌরবের অংশীদার হতে পারবেন না, যেটা নাসির উদ্দিন আহমেদ পেরেছেন।
বইয়ের ভূমিকায় তিনি বলছেন: ‘স্মৃতির গহীনে অনেক কথা, অনেক ঘটনা সঞ্চিত হয় প্রতিনিয়তই, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্মৃতিরাশি হয়তো ভোলা সম্ভব নয়। তারপরও স্মৃতিকথা লেখা সহজ কাজ নয়, বড় কঠিন ব্যাপার; এ কথা আগে বুঝতে পারিনি। জীবনে এত কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি, এত মানুষের সঙ্গে মিশেছি, এত ঘটনা দেখেছি, বইটি লিখতে না বসলে বুঝতেই পারতাম না। জীবনের সব ঘটনা সবিস্তারে লিখতে পারিনি, সেটা সম্ভবও নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ, প্রিয় সোনাকান্দা ও অন্যান্য উজ্জ্বল স্মৃতিগুলো বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।’
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সোনাকান্দা গ্রামে জন্ম নিয়ে নাসির উদ্দিন আহমেদ যেমন গোটা বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার জীবনবাজি রাখা যুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরত্বগাথা রচনা করেছেন, তেমনি একাত্তরে গ্রামের আরও অসংখ্য নাসির উদ্দিন একই কাজ করেছেন। সবাই যদি নিজের অভিজ্ঞতা লিখতেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের কারও কারও মধ্যে যে বিভ্রান্তি, ধোঁয়াশা তা দূর হতো।
নাসির উদ্দিন আহমেদ কত সহজ করে লিখেছেন: ‘তারপর এলো ১৯৭১। গোটা দেশ যেন আন্দোলনের দুর্গ। আমি তখন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। টগবগে তরুণ।
রাজনীতির সব খোঁজখবর রাখি, নিয়মিত মিছিল-মিটিং করি।’
মিছিল-মিটিং থেকে চলে যান যুদ্ধের ময়দানে। সেই যুদ্ধেরও কত ঘটনা। একদিনের ঘটনা বলছেন: ‘কানাইনগর স্কুলে সন্ধ্যার পর সবাই মিলে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের বিখ্যাত “চরমপত্র” পাঠ শুনে আমরা অপারেশনের জন্য বের হতাম। এম আর আখতার মুকুল ছিলেন সাংবাদিক ও লেখক। তিনি ঢাকাইয়া ভাষায় এটা প্রচার করতেন।’
এমন স্মৃতিজাগানিয়া অনেক তথ্য বইটিতে আছে, যা আবার পাঠককে ভারাক্রান্ত না করে কৌতূহলী করে তুলবে। বইটি সুন্দর প্রচ্ছদে ছাপা, বাঁধাই ভালো এবং অসামান্য বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
জার্মানিতে নির্বাসিত বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি দাউদ হায়দার বার্লিনের শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ১টায়) তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। কবি বার্লিনের...
৩ দিন আগেধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে আলোকচিত্রী সাংবাদিক, গবেষক সাহাদাত পারভেজ সম্পাদিত ‘আলোকচিত্রপুরাণ’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। বইটি প্রকাশ করেছে কথাপ্রকাশ।
৬ দিন আগেনোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা শুধু কথাসাহিত্যের জন্যই নন, মানবিকতা ও বিশ্ব রাজনীতির প্রতি গভীর মনোযোগের জন্যও পরিচিত। বাংলাদেশে এসিড হামলার শিকার নারীদের নিয়ে তাঁর লেখা হৃদয়বিদারক প্রবন্ধ ‘Weaker sex’ প্রমাণ করে, কীভাবে যোসার কলম ছুঁয়ে গিয়েছিল বাংলার পীড়িত নারীদের কান্না ও সংগ্রাম।
১৬ দিন আগেনোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৬ দিন আগে