Ajker Patrika

ইসরায়েল ও ইহুদিদের সঙ্গে কোকা-কোলার সম্পর্ক কী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ১৭: ৫৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বহু বছর ধরে জনপ্রিয় পানীয় কোকা-কোলার সঙ্গে ইসরায়েলি সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। কেউ বলে, কোকা-কোলা ইসরায়েলি পণ্য, আবার কেউ বলে কোকা-কোলা মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে অর্থায়ন করে। নানা অভিযোগে বিশ্বজুড়ে বহু দেশে দীর্ঘদিন ধরে বয়কট আন্দোলনের মুখে কোকা-কোলা। কিন্তু প্রকৃত কারণটা কী? কোকো-কোলার সঙ্গে ইসরায়েলের আসলেই কোনো সম্পর্ক আছে? তারা কি ইসলাম বিদ্বেষ ছড়াতে সহায়তা করে?

উত্তরটা এত সহজ নয়। কোকা-কোলার মালিক কে?—নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানটি এই প্রশ্নের উত্তরে বলছে, ‘কোকা-কোলার মালিক একজন না, বরং এটি অনেক শেয়ারহোল্ডারের সম্মিলিত মালিকানায় পরিচালিত একটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক কোম্পানি।’ কোকা-কোলার সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার কে, সেই প্রশ্নেরও কৌশলী উত্তর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে ওয়ারেন বাফেটের মালিকানাধীন বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে ইনকরপোরেশন নামের একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের নাম।

তবে গাজা যুদ্ধের সঙ্গে এর সরাসরি একটি সম্পর্কও রয়েছে। ইসরায়েলে কোকা-কোলার ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিষ্ঠানের নাম দ্য সেন্ট্রাল বোটলিং কোম্পানি, যারা ‘কোকা-কোলা ইসরায়েল’ নামেও পরিচিত। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অধিকৃত ভূখণ্ডে বেসরকারি খাত ও অর্থনীতির মধ্যে সংযোগ নিয়ে গবেষণা করা সংস্থা ‘হু প্রফিটস?’ –এর তথ্যমতে, কোকা-কোলা ইসরায়েলের দখল করা পূর্ব জেরুজালেমের আতারোত শিল্পাঞ্চলে একটি বিতরণ কেন্দ্র এবং কুলিং হাউস পরিচালনা করছে। শুধু তা-ই নয়, এই প্রতিষ্ঠানের তৈরি অন্যান্য পানীয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ফলমূলও আসে পশ্চিম তীর ও সিরিয়ার গোলান মালভূতিতে ইসরায়েলের দখল করা ভূমি থেকে।

যদিও ইসরায়েলের দাবি, এসব কারখানা এবং ফলের বাগান ইসরায়েলের বৈধ জমিতে স্থাপিত। ইনস্টিটিউট অব প্যালেস্টাইন স্টাডিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর মধ্যে অন্যতম আতারোত। পূর্ব জেরুজালেমের বাইত হানিনা এবং কালানদিয়া চেকপয়েন্টের মাঝামাঝি এই এলাকার অবস্থান।

এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের বসতি স্থাপন অবৈধ এবং ওই সব ভূমিতে নির্মিত সব বসতি আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধের শামিল। সে হিসেবে কোকা-কোলাও আন্তর্জাতিক অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

কোকা-কোলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান দ্য সেন্ট্রাল বোটলিং কোম্পানির বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে (আইডিএফ) অনুদান দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। দ্য নিউ অ্যারাবের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে কট্টর ডানপন্থী সংগঠন ইম তিরুৎসুকে প্রায় ১৪ হাজার ডলার অনুদান দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। যদিও এই অনুদানের বিষয় গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল দুপক্ষই, তবে শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

ইম তিরৎসু ইসরায়েলের ডানপন্থী জায়নবাদী বেসরকারি সংস্থা, যারা নিজেদের মূলত ইসরায়েলের সংস্কৃতি ও আদর্শের রক্ষক হিসেবে দাবি করে। তবে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক সংস্থা এটিকে কট্টর ডানপন্থী, জায়নবাদী এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত সংস্থা আখ্যা দিয়েছে।

কোকা-কোলার ফর্মুলা নিয়ে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বলা হয়, বিশ্বের বহু দেশের পারমাণবিক কর্মসূচির চেয়েও গোপন রাখা হয় এর পেটেন্ট করা ফর্মুলা। কিন্তু কোকা-কোলার অভ্যন্তরীণ করপোরেটের কেউ না হয়েও এই ফর্মুলা জানার সুযোগ পেয়েছিলেন এক ইহুদি রাব্বি (ইহুদি আলেম)। তাঁর নাম তুভিয়া গেফেন। মূলত কোকা-কোলাকে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব পাসওভারে পান করার উপযুক্ত (হালাল) করতে তাঁকে এই ফর্মুলা জানার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

কোকা-কোলার সঙ্গে ইসরায়েরের নানাভাবে সংযোগ থাকতে পারে। তবে এটি মূলত মার্কিন কোম্পানি, যার প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে। ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কোকা-কোলা এযাবৎ বহুবার বর্জনের মধ্য দিয়ে গেলেও এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সফট ড্রিংকস কোম্পানি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত