জাহীদ রেজা নূর

ভাষা ছাড়া কি মানুষ হয়? মানুষের সবচেয়ে জটিল সৃষ্টি হলো ভাষা। কোত্থেকে, কীভাবে এর জন্ম, তা নিয়ে কত গবেষণাই তো হলো। কত রকম মতবাদে ছেয়ে গেল বিজ্ঞান, পৃথিবী। কিন্তু সত্যিই কি পাওয়া গেল উত্তর?
আজ একটু আড্ডার ছলে ভাষা বিষয়ে কিছু কথা বলি। বাক্যগঠন, ধ্বনি উচ্চারণে নানা ধরনের বৈচিত্র্য আছে প্রতিটি ভাষায়। সেই সঙ্গে ভাষার সঙ্গে মিশে থাকে অতীত থেকে উঠে আসা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য। কেউ যদি অন্য কারও ভাষা অনুবাদ করতে চায়, তাহলে সেই সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারটা বুঝতে হবে। না হলে সে অনুবাদ হয়ে উঠবে কাটখোট্টা শব্দের কফিন। সংস্কৃতি না জানলে ভাষা শিক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়।
কয়েকটি বিষয়কে আমরা এখানে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। প্রথমেই জানার চেষ্টা করি, পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল ভাষা হিসেবে যদি বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন ভাষাগুলোকে বেছে নিতে হবে। মানে, কোন ভাষাগুলো আসলে খুব জটিল?
হ্যাঁ, সে আলোচনার আগে আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে, এখন পৃথিবীতে মোট ভাষার সংখ্যা সাত হাজারের এদিক-ওদিক। তবে বিশাল পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ ভাবের আদানপ্রদান করে মূলত ২৩টি ভাষায়। আপনার ভাষা যে ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত, তার ওপর নির্ভর করবে কোন ভাষা আপনার কাছে সহজ বা জটিল লাগবে। আপনার ভাষাগোষ্ঠী কিংবা আপনার কাছাকাছি কোনো ভাষাগোষ্ঠীর ভাষা আপনার কাছে সহজ লাগবে। কিন্তু দূরের ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাকে আপনার মনে হতে পারে জটিল। তাই সবচেয়ে কঠিন ভাষা নির্ধারণ করা সহজ কাজ নয়।
তবে বিজ্ঞানীরা ভেবে দেখেছেন, নিচের ছয়টি ভাষা শিখতে জান বেরিয়ে যায়। এদের খুব জটিল ভাষা হিসেবে নাম আছে। এরা হলো বাস্ক, এসকিমো, নাবাখো, চিপ্পেভা, তাবাসারান, চীনা।
কেন এদের জটিল বা কঠিন ভাষা বলা হয়, তা জানতে হলে একটু বইপত্র নিয়ে বসতে হবে আপনাকে। সবকিছুর সহজ সমাধান নেই। একটু তো কষ্ট করা দরকার।
দুই.
ভাষার মরে যাওয়া নিয়ে কথা না বলে কী করে জন্ম হলো ভাষার, তা নিয়ে কথা বলা যাক। কেউ যদি বলে, আরে, ভাষার সৃষ্টি তো হয়েছে এভাবে—তাহলে বুঝবেন গুল মারছে সে। এখনো ভাষাবিজ্ঞানীরা একেবারে নিখুঁতভাবে বলতে পারেননি, কী করে মানুষ কথা বলা শিখল; কী করে জন্ম হলো ভাষার।
তবে, কিছু কিছু অনুমান তো করেছেন বিজ্ঞানীরা। না হলে তাঁরা কী করে টিকে থাকবেন?
একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই এক সময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর কথা বলতে শিখে গেল মানুষ।
কিন্তু এই তত্ত্ব অনুসরণ করতে গেলে বেশ কিছু ফাঁকফোকর বেরিয়ে আসবে। কত রকম ধ্বনি নিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ। শুধু পশুর ডাক থেকে কি সে রকম শব্দ আবিষ্কার করা সম্ভব?
‘পুঃ পুঃ তত্ত্ব’ নামে আরেকটি তত্ত্ব নিয়েও মাথা ঘামিয়েছে মানুষ। এটা হচ্ছে যেকোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যখন ‘আঃ’ ‘উঃ’ ইত্যাদি উচ্চারণ করে, সেগুলোই পরে পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করেছে ভাষার।
বিজ্ঞানীরা এ রকম একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন, ভালো কথা, কিন্তু আদতে কি এই উচ্ছ্বাস-মার্কা ধ্বনির মাধ্যমে ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
না হে; মন সায় দিচ্ছে না!
তবে কি ‘ডিং ডং তত্ত্ব’-কে আলিঙ্গন করব? এই তত্ত্ব বলছে, ধ্বনি আর অর্থের মধ্যে সম্পর্ক আছে। কোনো ঘটনা ঘটতে দেখলে আদিম মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিত। এই সাড়া দেওয়ার সহজাত প্রবণতা থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নিয়েছে ভাষা।
‘ইয়ো হে হে’ বলে রয়েছে আরেকটি তত্ত্ব। শ্রমিকেরা যখন খুব কঠিন কোনো কাজ করে, তখন সবাই মিলে ছন্দোবদ্ধ কোনো আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ভাষার। ওই যে ‘হেই সামাল ধান হো/কাস্তেতে দাও শাণহো/জান কবুল আর মান কবুল/আর দেব না আর দেব না রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।’ এর পর যে ‘হেই সামাল, হেই সামাল’ বলা হয়, তাতে এ রকম একটা সুরের সৃষ্টি হয়। বাড়ির পাইলিং করার সময়ও কেমন সুরে শ্রমিকেরা গান ধরেন, লক্ষ্য করেছেন? সেগুলো থেকেই ভাষার সৃষ্টি।
তবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
‘দেহভঙ্গির তত্ত্ব’ হচ্ছে পরের তত্ত্বটি। আমেরিকার মূল অধিবাসী, যাদের রেড ইন্ডিয়ান নামে এখন বলে মানুষ, তারা দেহভঙ্গি বা জেশ্চারের মাধ্যমে কথা বলত। সাংকেতিক ভাষায় হতো কথোপকথন। কিন্তু সেটা যে ভাষার উৎপত্তির রহস্য উন্মোচন করে দিচ্ছে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
‘লা লা তত্ত্ব’টিও দারুণ। মানুষের প্রেম, ভালোবাসা, আনন্দানুভূতি থেকে নাকি সৃষ্টি হয়েছে ভাষার! লা লা লা লা লা! আরে ধুর! এটাও কি মেনে নেওয়া যায়? কোনো চিৎকার, সুরেলা আবেগ প্রকাশ কিংবা ভাবোচ্ছ্বাস থেকে কি ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
এ রকম নানা ধরনের তত্ত্ব ছিল আগে। হালে এর সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত হয়েছে।
এই তত্ত্ব অনুসারে মানব জাতির জৈব ইতিহাস, আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গভীরে ঢুঁ মারলে ভাষারহস্যের নাগাল পাওয়া যেতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, মানুষ ও বনমানুষ একই গোত্রের। অর্থাৎ, লাখ লাখ বছর আগে মানুষ আর বনমানুষের পূর্বপুরুষ এক ছিল।
বিশ লাখ বছর আগে হোমো হাবিলিসরা বাস করত আফ্রিকায়। তাদের তৈরি কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে। সূক্ষ্ম নয়, কিন্তু যন্ত্র তো! নিজের হাতে তৈরি যন্ত্র! তার মানে পশু থেকে তারা তত দিনে মানুষ হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। সে সময় যদি তারা কথা বলে ভাবের আদানপ্রদান করতে পারে, তবে তাকে প্রাক্-ভাষা নামে অভিহিত করাই ভালো।
যাদের আমরা বনমানুষ বলি, তাদের ডাক ছিল বদ্ধ, আর মানুষের ডাক মুক্ত। এই বদ্ধ থেকে লাখ লাখ বছর পার করে তার পর মুক্ত ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। বনমানুষের ভাষা থেকে মানুষের ভাষা সৃষ্টি হওয়ার একটা বড় কারণ মানুষের সৃজনীশক্তি। আর একটা জরুরি কথা। চোখের সামনে নেই, সেটার বর্ণনা করতে পারে কেবল মানুষ। আর সেটা সে করে ভাষার সাহায্যে। চোখের সামনে যা নেই, তাকে বোঝানোর জন্য তো একটা নাম বা প্রতীকের দরকার। ভাষা দিয়েই কেবল তাকে চেনানো যায়। ভাষার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা কিছু যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করা যায়। গাছ, আগাছা, গেছো—কতগুলো শব্দ তৈরি হয়ে গেল! আর হ্যাঁ, ভাষার মধ্যে তার ঐতিহ্যের সঞ্চালন হয়। মানবশিশু যখন জন্মায়, তখন সে কাঁদতে পারে, কিন্তু তার কোনো ভাষা থাকে না। সে বড় হতে থাকে, অনুকরণ করে করে ভাষা শিখে ফেলে।
নাহ! ঢের হয়েছে! জটিল হয়ে যাচ্ছে আড্ডাটা। একটু সহজ করা দরকার।
তিন.
পৃথিবীতে কত মানুষই তো লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। সব ভাষাতেই প্রিয় লেখক আছেন। জনপ্রিয় লেখক আছেন। সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিতও হয়। বাংলা উপন্যাসে একসময় শরৎচন্দ্র ছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে, তাঁর জায়গা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এর পর কেউ একজন নিশ্চয়ই আসবেন। কিন্তু এমন অনেক লেখক আছেন, যাঁদের লেখা অন্য ভাষাভাষী মানুষও ভালোবেসে পড়েন। কখনো কখনো তাঁরা এতটাই পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, তাঁদের লেখা অনুবাদ করার হিড়িক পড়ে যায়।
ইউনেসকো অনলাইনে একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তাতে কোন লেখকের বই সবচেয়ে বেশি অনূদিত হয়েছে, তা দেখা যায়। সেই তালিকায় সবার ওপরের নামটি হোমারের নয়, শেক্সপিয়ারের নয়, রবীন্দ্রনাথের নয়। সবার ওপরে আছেন আগাথা ক্রিস্টি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ৭ হাজার ২৩৪টি অনুবাদ হয়েছে তাঁর। পরের নামটি জুল ভার্নের। তিনি আছেন ৪ হাজার ৭৫১টি অনুবাদ নিয়ে। অ্যাঁ, শেক্সপিয়ার কিন্তু আছেন তার পরেই; ৪ হাজার ২৯৬ জন অনুবাদ করেছেন তাঁকে। লাকি সেভেন হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৩টি। শিশুসাহিত্যিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন, তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। তালিকায় আট নম্বর নামটি তাঁর। মার্ক টোয়েন আছেন ফেওদর দস্তইয়েভ্স্কির চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। ১৫ নম্বরে থাকা মার্ক টোয়েনের অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৩১টি, বেদনার ঋষি দস্তইয়েভ্স্কির অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৪২টি। বাকি নামগুলো বলছি না। তবে যে কেউ সেই ইনডেক্সটি দেখলে বালজাক, তলস্তয়, কাফকা, ডিকেন্সসহ প্রিয় লেখকদের নাম পেয়ে যাবেন। হ্যাঁ, কার্ল মার্ক্সের নাম না থাকার কোনো কারণ নেই।
চার.
ইন্টারনেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা কোনটি? কিংবা প্রথম দশটি ভাষা?
শুরুতেই কবুল করে নেওয়া দরকার, প্রথম ভাষাটি কোন ভাষা হতে পারে, সেটা আমি না বলে দিলেও যে কেউ অনুমান করে নিতে পারেন। হ্যাঁ, ইংরেজি। একসময় পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় উপনিবেশ করে নিজের ভাষাটাকে পোক্ত করে দিয়ে এসেছে তারা। ফলে এখন অন্তর্জালেও তাদের সদম্ভ উপস্থিতি। অন্তর্জালে যে লেখালেখি হয়, তার ৫২ শতাংশ হয় ইংরেজি ভাষায়।
এরপরই কিন্তু চীনা ভাষা। ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ এই ভাষায় অন্তর্জালে ভাবের আদানপ্রদান করে। আমরা সবাই জানি, আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বেশ একটা ঝগড়া চলছে। পৃথিবীতে মোড়লি কে করবে, তা নিয়েই ঝগড়া। অন্তর্জালে ইংরেজি ভাষাভাষী তো শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, তাই নেটের যুদ্ধে ইংরেজির আধিপত্য থাকবে আরও অনেকটা সময় ধরে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এর পরেই রয়েছে স্প্যানিশ ভাষা। ২০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ লেখালেখি করে স্প্যানিশ ভাষায়। বোঝাই যায়, এই ভাষাভাষীদের মধ্যে লাতিন আমেরিকার রয়েছে বড় অবদান। ইতিহাসের কোনো এক কালে এই মহাদেশকে পদানত করেছিল স্পেন দেশের মানুষেরা, তার ক্ষত আজও বহন করছে মহাদেশটির মানুষ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে আরবি, পর্তুগিজ, জাপানি, মালয়ি, রুশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষা।
না, এই বিশাল জগতে বাংলাকে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাবে কী করে, বাঙালি তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজিতেই মেইল করতে অভ্যস্ত। আলাপও চালায় ইংরেজিতে, অতএব…।

ভাষা ছাড়া কি মানুষ হয়? মানুষের সবচেয়ে জটিল সৃষ্টি হলো ভাষা। কোত্থেকে, কীভাবে এর জন্ম, তা নিয়ে কত গবেষণাই তো হলো। কত রকম মতবাদে ছেয়ে গেল বিজ্ঞান, পৃথিবী। কিন্তু সত্যিই কি পাওয়া গেল উত্তর?
আজ একটু আড্ডার ছলে ভাষা বিষয়ে কিছু কথা বলি। বাক্যগঠন, ধ্বনি উচ্চারণে নানা ধরনের বৈচিত্র্য আছে প্রতিটি ভাষায়। সেই সঙ্গে ভাষার সঙ্গে মিশে থাকে অতীত থেকে উঠে আসা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য। কেউ যদি অন্য কারও ভাষা অনুবাদ করতে চায়, তাহলে সেই সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারটা বুঝতে হবে। না হলে সে অনুবাদ হয়ে উঠবে কাটখোট্টা শব্দের কফিন। সংস্কৃতি না জানলে ভাষা শিক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়।
কয়েকটি বিষয়কে আমরা এখানে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। প্রথমেই জানার চেষ্টা করি, পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল ভাষা হিসেবে যদি বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন ভাষাগুলোকে বেছে নিতে হবে। মানে, কোন ভাষাগুলো আসলে খুব জটিল?
হ্যাঁ, সে আলোচনার আগে আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে, এখন পৃথিবীতে মোট ভাষার সংখ্যা সাত হাজারের এদিক-ওদিক। তবে বিশাল পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ ভাবের আদানপ্রদান করে মূলত ২৩টি ভাষায়। আপনার ভাষা যে ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত, তার ওপর নির্ভর করবে কোন ভাষা আপনার কাছে সহজ বা জটিল লাগবে। আপনার ভাষাগোষ্ঠী কিংবা আপনার কাছাকাছি কোনো ভাষাগোষ্ঠীর ভাষা আপনার কাছে সহজ লাগবে। কিন্তু দূরের ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাকে আপনার মনে হতে পারে জটিল। তাই সবচেয়ে কঠিন ভাষা নির্ধারণ করা সহজ কাজ নয়।
তবে বিজ্ঞানীরা ভেবে দেখেছেন, নিচের ছয়টি ভাষা শিখতে জান বেরিয়ে যায়। এদের খুব জটিল ভাষা হিসেবে নাম আছে। এরা হলো বাস্ক, এসকিমো, নাবাখো, চিপ্পেভা, তাবাসারান, চীনা।
কেন এদের জটিল বা কঠিন ভাষা বলা হয়, তা জানতে হলে একটু বইপত্র নিয়ে বসতে হবে আপনাকে। সবকিছুর সহজ সমাধান নেই। একটু তো কষ্ট করা দরকার।
দুই.
ভাষার মরে যাওয়া নিয়ে কথা না বলে কী করে জন্ম হলো ভাষার, তা নিয়ে কথা বলা যাক। কেউ যদি বলে, আরে, ভাষার সৃষ্টি তো হয়েছে এভাবে—তাহলে বুঝবেন গুল মারছে সে। এখনো ভাষাবিজ্ঞানীরা একেবারে নিখুঁতভাবে বলতে পারেননি, কী করে মানুষ কথা বলা শিখল; কী করে জন্ম হলো ভাষার।
তবে, কিছু কিছু অনুমান তো করেছেন বিজ্ঞানীরা। না হলে তাঁরা কী করে টিকে থাকবেন?
একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই এক সময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর কথা বলতে শিখে গেল মানুষ।
কিন্তু এই তত্ত্ব অনুসরণ করতে গেলে বেশ কিছু ফাঁকফোকর বেরিয়ে আসবে। কত রকম ধ্বনি নিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ। শুধু পশুর ডাক থেকে কি সে রকম শব্দ আবিষ্কার করা সম্ভব?
‘পুঃ পুঃ তত্ত্ব’ নামে আরেকটি তত্ত্ব নিয়েও মাথা ঘামিয়েছে মানুষ। এটা হচ্ছে যেকোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যখন ‘আঃ’ ‘উঃ’ ইত্যাদি উচ্চারণ করে, সেগুলোই পরে পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করেছে ভাষার।
বিজ্ঞানীরা এ রকম একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন, ভালো কথা, কিন্তু আদতে কি এই উচ্ছ্বাস-মার্কা ধ্বনির মাধ্যমে ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
না হে; মন সায় দিচ্ছে না!
তবে কি ‘ডিং ডং তত্ত্ব’-কে আলিঙ্গন করব? এই তত্ত্ব বলছে, ধ্বনি আর অর্থের মধ্যে সম্পর্ক আছে। কোনো ঘটনা ঘটতে দেখলে আদিম মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিত। এই সাড়া দেওয়ার সহজাত প্রবণতা থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নিয়েছে ভাষা।
‘ইয়ো হে হে’ বলে রয়েছে আরেকটি তত্ত্ব। শ্রমিকেরা যখন খুব কঠিন কোনো কাজ করে, তখন সবাই মিলে ছন্দোবদ্ধ কোনো আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ভাষার। ওই যে ‘হেই সামাল ধান হো/কাস্তেতে দাও শাণহো/জান কবুল আর মান কবুল/আর দেব না আর দেব না রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।’ এর পর যে ‘হেই সামাল, হেই সামাল’ বলা হয়, তাতে এ রকম একটা সুরের সৃষ্টি হয়। বাড়ির পাইলিং করার সময়ও কেমন সুরে শ্রমিকেরা গান ধরেন, লক্ষ্য করেছেন? সেগুলো থেকেই ভাষার সৃষ্টি।
তবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
‘দেহভঙ্গির তত্ত্ব’ হচ্ছে পরের তত্ত্বটি। আমেরিকার মূল অধিবাসী, যাদের রেড ইন্ডিয়ান নামে এখন বলে মানুষ, তারা দেহভঙ্গি বা জেশ্চারের মাধ্যমে কথা বলত। সাংকেতিক ভাষায় হতো কথোপকথন। কিন্তু সেটা যে ভাষার উৎপত্তির রহস্য উন্মোচন করে দিচ্ছে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
‘লা লা তত্ত্ব’টিও দারুণ। মানুষের প্রেম, ভালোবাসা, আনন্দানুভূতি থেকে নাকি সৃষ্টি হয়েছে ভাষার! লা লা লা লা লা! আরে ধুর! এটাও কি মেনে নেওয়া যায়? কোনো চিৎকার, সুরেলা আবেগ প্রকাশ কিংবা ভাবোচ্ছ্বাস থেকে কি ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
এ রকম নানা ধরনের তত্ত্ব ছিল আগে। হালে এর সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত হয়েছে।
এই তত্ত্ব অনুসারে মানব জাতির জৈব ইতিহাস, আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গভীরে ঢুঁ মারলে ভাষারহস্যের নাগাল পাওয়া যেতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, মানুষ ও বনমানুষ একই গোত্রের। অর্থাৎ, লাখ লাখ বছর আগে মানুষ আর বনমানুষের পূর্বপুরুষ এক ছিল।
বিশ লাখ বছর আগে হোমো হাবিলিসরা বাস করত আফ্রিকায়। তাদের তৈরি কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে। সূক্ষ্ম নয়, কিন্তু যন্ত্র তো! নিজের হাতে তৈরি যন্ত্র! তার মানে পশু থেকে তারা তত দিনে মানুষ হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। সে সময় যদি তারা কথা বলে ভাবের আদানপ্রদান করতে পারে, তবে তাকে প্রাক্-ভাষা নামে অভিহিত করাই ভালো।
যাদের আমরা বনমানুষ বলি, তাদের ডাক ছিল বদ্ধ, আর মানুষের ডাক মুক্ত। এই বদ্ধ থেকে লাখ লাখ বছর পার করে তার পর মুক্ত ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। বনমানুষের ভাষা থেকে মানুষের ভাষা সৃষ্টি হওয়ার একটা বড় কারণ মানুষের সৃজনীশক্তি। আর একটা জরুরি কথা। চোখের সামনে নেই, সেটার বর্ণনা করতে পারে কেবল মানুষ। আর সেটা সে করে ভাষার সাহায্যে। চোখের সামনে যা নেই, তাকে বোঝানোর জন্য তো একটা নাম বা প্রতীকের দরকার। ভাষা দিয়েই কেবল তাকে চেনানো যায়। ভাষার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা কিছু যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করা যায়। গাছ, আগাছা, গেছো—কতগুলো শব্দ তৈরি হয়ে গেল! আর হ্যাঁ, ভাষার মধ্যে তার ঐতিহ্যের সঞ্চালন হয়। মানবশিশু যখন জন্মায়, তখন সে কাঁদতে পারে, কিন্তু তার কোনো ভাষা থাকে না। সে বড় হতে থাকে, অনুকরণ করে করে ভাষা শিখে ফেলে।
নাহ! ঢের হয়েছে! জটিল হয়ে যাচ্ছে আড্ডাটা। একটু সহজ করা দরকার।
তিন.
পৃথিবীতে কত মানুষই তো লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। সব ভাষাতেই প্রিয় লেখক আছেন। জনপ্রিয় লেখক আছেন। সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিতও হয়। বাংলা উপন্যাসে একসময় শরৎচন্দ্র ছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে, তাঁর জায়গা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এর পর কেউ একজন নিশ্চয়ই আসবেন। কিন্তু এমন অনেক লেখক আছেন, যাঁদের লেখা অন্য ভাষাভাষী মানুষও ভালোবেসে পড়েন। কখনো কখনো তাঁরা এতটাই পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, তাঁদের লেখা অনুবাদ করার হিড়িক পড়ে যায়।
ইউনেসকো অনলাইনে একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তাতে কোন লেখকের বই সবচেয়ে বেশি অনূদিত হয়েছে, তা দেখা যায়। সেই তালিকায় সবার ওপরের নামটি হোমারের নয়, শেক্সপিয়ারের নয়, রবীন্দ্রনাথের নয়। সবার ওপরে আছেন আগাথা ক্রিস্টি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ৭ হাজার ২৩৪টি অনুবাদ হয়েছে তাঁর। পরের নামটি জুল ভার্নের। তিনি আছেন ৪ হাজার ৭৫১টি অনুবাদ নিয়ে। অ্যাঁ, শেক্সপিয়ার কিন্তু আছেন তার পরেই; ৪ হাজার ২৯৬ জন অনুবাদ করেছেন তাঁকে। লাকি সেভেন হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৩টি। শিশুসাহিত্যিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন, তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। তালিকায় আট নম্বর নামটি তাঁর। মার্ক টোয়েন আছেন ফেওদর দস্তইয়েভ্স্কির চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। ১৫ নম্বরে থাকা মার্ক টোয়েনের অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৩১টি, বেদনার ঋষি দস্তইয়েভ্স্কির অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৪২টি। বাকি নামগুলো বলছি না। তবে যে কেউ সেই ইনডেক্সটি দেখলে বালজাক, তলস্তয়, কাফকা, ডিকেন্সসহ প্রিয় লেখকদের নাম পেয়ে যাবেন। হ্যাঁ, কার্ল মার্ক্সের নাম না থাকার কোনো কারণ নেই।
চার.
ইন্টারনেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা কোনটি? কিংবা প্রথম দশটি ভাষা?
শুরুতেই কবুল করে নেওয়া দরকার, প্রথম ভাষাটি কোন ভাষা হতে পারে, সেটা আমি না বলে দিলেও যে কেউ অনুমান করে নিতে পারেন। হ্যাঁ, ইংরেজি। একসময় পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় উপনিবেশ করে নিজের ভাষাটাকে পোক্ত করে দিয়ে এসেছে তারা। ফলে এখন অন্তর্জালেও তাদের সদম্ভ উপস্থিতি। অন্তর্জালে যে লেখালেখি হয়, তার ৫২ শতাংশ হয় ইংরেজি ভাষায়।
এরপরই কিন্তু চীনা ভাষা। ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ এই ভাষায় অন্তর্জালে ভাবের আদানপ্রদান করে। আমরা সবাই জানি, আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বেশ একটা ঝগড়া চলছে। পৃথিবীতে মোড়লি কে করবে, তা নিয়েই ঝগড়া। অন্তর্জালে ইংরেজি ভাষাভাষী তো শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, তাই নেটের যুদ্ধে ইংরেজির আধিপত্য থাকবে আরও অনেকটা সময় ধরে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এর পরেই রয়েছে স্প্যানিশ ভাষা। ২০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ লেখালেখি করে স্প্যানিশ ভাষায়। বোঝাই যায়, এই ভাষাভাষীদের মধ্যে লাতিন আমেরিকার রয়েছে বড় অবদান। ইতিহাসের কোনো এক কালে এই মহাদেশকে পদানত করেছিল স্পেন দেশের মানুষেরা, তার ক্ষত আজও বহন করছে মহাদেশটির মানুষ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে আরবি, পর্তুগিজ, জাপানি, মালয়ি, রুশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষা।
না, এই বিশাল জগতে বাংলাকে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাবে কী করে, বাঙালি তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজিতেই মেইল করতে অভ্যস্ত। আলাপও চালায় ইংরেজিতে, অতএব…।
জাহীদ রেজা নূর

ভাষা ছাড়া কি মানুষ হয়? মানুষের সবচেয়ে জটিল সৃষ্টি হলো ভাষা। কোত্থেকে, কীভাবে এর জন্ম, তা নিয়ে কত গবেষণাই তো হলো। কত রকম মতবাদে ছেয়ে গেল বিজ্ঞান, পৃথিবী। কিন্তু সত্যিই কি পাওয়া গেল উত্তর?
আজ একটু আড্ডার ছলে ভাষা বিষয়ে কিছু কথা বলি। বাক্যগঠন, ধ্বনি উচ্চারণে নানা ধরনের বৈচিত্র্য আছে প্রতিটি ভাষায়। সেই সঙ্গে ভাষার সঙ্গে মিশে থাকে অতীত থেকে উঠে আসা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য। কেউ যদি অন্য কারও ভাষা অনুবাদ করতে চায়, তাহলে সেই সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারটা বুঝতে হবে। না হলে সে অনুবাদ হয়ে উঠবে কাটখোট্টা শব্দের কফিন। সংস্কৃতি না জানলে ভাষা শিক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়।
কয়েকটি বিষয়কে আমরা এখানে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। প্রথমেই জানার চেষ্টা করি, পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল ভাষা হিসেবে যদি বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন ভাষাগুলোকে বেছে নিতে হবে। মানে, কোন ভাষাগুলো আসলে খুব জটিল?
হ্যাঁ, সে আলোচনার আগে আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে, এখন পৃথিবীতে মোট ভাষার সংখ্যা সাত হাজারের এদিক-ওদিক। তবে বিশাল পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ ভাবের আদানপ্রদান করে মূলত ২৩টি ভাষায়। আপনার ভাষা যে ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত, তার ওপর নির্ভর করবে কোন ভাষা আপনার কাছে সহজ বা জটিল লাগবে। আপনার ভাষাগোষ্ঠী কিংবা আপনার কাছাকাছি কোনো ভাষাগোষ্ঠীর ভাষা আপনার কাছে সহজ লাগবে। কিন্তু দূরের ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাকে আপনার মনে হতে পারে জটিল। তাই সবচেয়ে কঠিন ভাষা নির্ধারণ করা সহজ কাজ নয়।
তবে বিজ্ঞানীরা ভেবে দেখেছেন, নিচের ছয়টি ভাষা শিখতে জান বেরিয়ে যায়। এদের খুব জটিল ভাষা হিসেবে নাম আছে। এরা হলো বাস্ক, এসকিমো, নাবাখো, চিপ্পেভা, তাবাসারান, চীনা।
কেন এদের জটিল বা কঠিন ভাষা বলা হয়, তা জানতে হলে একটু বইপত্র নিয়ে বসতে হবে আপনাকে। সবকিছুর সহজ সমাধান নেই। একটু তো কষ্ট করা দরকার।
দুই.
ভাষার মরে যাওয়া নিয়ে কথা না বলে কী করে জন্ম হলো ভাষার, তা নিয়ে কথা বলা যাক। কেউ যদি বলে, আরে, ভাষার সৃষ্টি তো হয়েছে এভাবে—তাহলে বুঝবেন গুল মারছে সে। এখনো ভাষাবিজ্ঞানীরা একেবারে নিখুঁতভাবে বলতে পারেননি, কী করে মানুষ কথা বলা শিখল; কী করে জন্ম হলো ভাষার।
তবে, কিছু কিছু অনুমান তো করেছেন বিজ্ঞানীরা। না হলে তাঁরা কী করে টিকে থাকবেন?
একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই এক সময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর কথা বলতে শিখে গেল মানুষ।
কিন্তু এই তত্ত্ব অনুসরণ করতে গেলে বেশ কিছু ফাঁকফোকর বেরিয়ে আসবে। কত রকম ধ্বনি নিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ। শুধু পশুর ডাক থেকে কি সে রকম শব্দ আবিষ্কার করা সম্ভব?
‘পুঃ পুঃ তত্ত্ব’ নামে আরেকটি তত্ত্ব নিয়েও মাথা ঘামিয়েছে মানুষ। এটা হচ্ছে যেকোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যখন ‘আঃ’ ‘উঃ’ ইত্যাদি উচ্চারণ করে, সেগুলোই পরে পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করেছে ভাষার।
বিজ্ঞানীরা এ রকম একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন, ভালো কথা, কিন্তু আদতে কি এই উচ্ছ্বাস-মার্কা ধ্বনির মাধ্যমে ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
না হে; মন সায় দিচ্ছে না!
তবে কি ‘ডিং ডং তত্ত্ব’-কে আলিঙ্গন করব? এই তত্ত্ব বলছে, ধ্বনি আর অর্থের মধ্যে সম্পর্ক আছে। কোনো ঘটনা ঘটতে দেখলে আদিম মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিত। এই সাড়া দেওয়ার সহজাত প্রবণতা থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নিয়েছে ভাষা।
‘ইয়ো হে হে’ বলে রয়েছে আরেকটি তত্ত্ব। শ্রমিকেরা যখন খুব কঠিন কোনো কাজ করে, তখন সবাই মিলে ছন্দোবদ্ধ কোনো আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ভাষার। ওই যে ‘হেই সামাল ধান হো/কাস্তেতে দাও শাণহো/জান কবুল আর মান কবুল/আর দেব না আর দেব না রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।’ এর পর যে ‘হেই সামাল, হেই সামাল’ বলা হয়, তাতে এ রকম একটা সুরের সৃষ্টি হয়। বাড়ির পাইলিং করার সময়ও কেমন সুরে শ্রমিকেরা গান ধরেন, লক্ষ্য করেছেন? সেগুলো থেকেই ভাষার সৃষ্টি।
তবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
‘দেহভঙ্গির তত্ত্ব’ হচ্ছে পরের তত্ত্বটি। আমেরিকার মূল অধিবাসী, যাদের রেড ইন্ডিয়ান নামে এখন বলে মানুষ, তারা দেহভঙ্গি বা জেশ্চারের মাধ্যমে কথা বলত। সাংকেতিক ভাষায় হতো কথোপকথন। কিন্তু সেটা যে ভাষার উৎপত্তির রহস্য উন্মোচন করে দিচ্ছে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
‘লা লা তত্ত্ব’টিও দারুণ। মানুষের প্রেম, ভালোবাসা, আনন্দানুভূতি থেকে নাকি সৃষ্টি হয়েছে ভাষার! লা লা লা লা লা! আরে ধুর! এটাও কি মেনে নেওয়া যায়? কোনো চিৎকার, সুরেলা আবেগ প্রকাশ কিংবা ভাবোচ্ছ্বাস থেকে কি ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
এ রকম নানা ধরনের তত্ত্ব ছিল আগে। হালে এর সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত হয়েছে।
এই তত্ত্ব অনুসারে মানব জাতির জৈব ইতিহাস, আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গভীরে ঢুঁ মারলে ভাষারহস্যের নাগাল পাওয়া যেতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, মানুষ ও বনমানুষ একই গোত্রের। অর্থাৎ, লাখ লাখ বছর আগে মানুষ আর বনমানুষের পূর্বপুরুষ এক ছিল।
বিশ লাখ বছর আগে হোমো হাবিলিসরা বাস করত আফ্রিকায়। তাদের তৈরি কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে। সূক্ষ্ম নয়, কিন্তু যন্ত্র তো! নিজের হাতে তৈরি যন্ত্র! তার মানে পশু থেকে তারা তত দিনে মানুষ হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। সে সময় যদি তারা কথা বলে ভাবের আদানপ্রদান করতে পারে, তবে তাকে প্রাক্-ভাষা নামে অভিহিত করাই ভালো।
যাদের আমরা বনমানুষ বলি, তাদের ডাক ছিল বদ্ধ, আর মানুষের ডাক মুক্ত। এই বদ্ধ থেকে লাখ লাখ বছর পার করে তার পর মুক্ত ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। বনমানুষের ভাষা থেকে মানুষের ভাষা সৃষ্টি হওয়ার একটা বড় কারণ মানুষের সৃজনীশক্তি। আর একটা জরুরি কথা। চোখের সামনে নেই, সেটার বর্ণনা করতে পারে কেবল মানুষ। আর সেটা সে করে ভাষার সাহায্যে। চোখের সামনে যা নেই, তাকে বোঝানোর জন্য তো একটা নাম বা প্রতীকের দরকার। ভাষা দিয়েই কেবল তাকে চেনানো যায়। ভাষার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা কিছু যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করা যায়। গাছ, আগাছা, গেছো—কতগুলো শব্দ তৈরি হয়ে গেল! আর হ্যাঁ, ভাষার মধ্যে তার ঐতিহ্যের সঞ্চালন হয়। মানবশিশু যখন জন্মায়, তখন সে কাঁদতে পারে, কিন্তু তার কোনো ভাষা থাকে না। সে বড় হতে থাকে, অনুকরণ করে করে ভাষা শিখে ফেলে।
নাহ! ঢের হয়েছে! জটিল হয়ে যাচ্ছে আড্ডাটা। একটু সহজ করা দরকার।
তিন.
পৃথিবীতে কত মানুষই তো লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। সব ভাষাতেই প্রিয় লেখক আছেন। জনপ্রিয় লেখক আছেন। সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিতও হয়। বাংলা উপন্যাসে একসময় শরৎচন্দ্র ছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে, তাঁর জায়গা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এর পর কেউ একজন নিশ্চয়ই আসবেন। কিন্তু এমন অনেক লেখক আছেন, যাঁদের লেখা অন্য ভাষাভাষী মানুষও ভালোবেসে পড়েন। কখনো কখনো তাঁরা এতটাই পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, তাঁদের লেখা অনুবাদ করার হিড়িক পড়ে যায়।
ইউনেসকো অনলাইনে একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তাতে কোন লেখকের বই সবচেয়ে বেশি অনূদিত হয়েছে, তা দেখা যায়। সেই তালিকায় সবার ওপরের নামটি হোমারের নয়, শেক্সপিয়ারের নয়, রবীন্দ্রনাথের নয়। সবার ওপরে আছেন আগাথা ক্রিস্টি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ৭ হাজার ২৩৪টি অনুবাদ হয়েছে তাঁর। পরের নামটি জুল ভার্নের। তিনি আছেন ৪ হাজার ৭৫১টি অনুবাদ নিয়ে। অ্যাঁ, শেক্সপিয়ার কিন্তু আছেন তার পরেই; ৪ হাজার ২৯৬ জন অনুবাদ করেছেন তাঁকে। লাকি সেভেন হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৩টি। শিশুসাহিত্যিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন, তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। তালিকায় আট নম্বর নামটি তাঁর। মার্ক টোয়েন আছেন ফেওদর দস্তইয়েভ্স্কির চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। ১৫ নম্বরে থাকা মার্ক টোয়েনের অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৩১টি, বেদনার ঋষি দস্তইয়েভ্স্কির অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৪২টি। বাকি নামগুলো বলছি না। তবে যে কেউ সেই ইনডেক্সটি দেখলে বালজাক, তলস্তয়, কাফকা, ডিকেন্সসহ প্রিয় লেখকদের নাম পেয়ে যাবেন। হ্যাঁ, কার্ল মার্ক্সের নাম না থাকার কোনো কারণ নেই।
চার.
ইন্টারনেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা কোনটি? কিংবা প্রথম দশটি ভাষা?
শুরুতেই কবুল করে নেওয়া দরকার, প্রথম ভাষাটি কোন ভাষা হতে পারে, সেটা আমি না বলে দিলেও যে কেউ অনুমান করে নিতে পারেন। হ্যাঁ, ইংরেজি। একসময় পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় উপনিবেশ করে নিজের ভাষাটাকে পোক্ত করে দিয়ে এসেছে তারা। ফলে এখন অন্তর্জালেও তাদের সদম্ভ উপস্থিতি। অন্তর্জালে যে লেখালেখি হয়, তার ৫২ শতাংশ হয় ইংরেজি ভাষায়।
এরপরই কিন্তু চীনা ভাষা। ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ এই ভাষায় অন্তর্জালে ভাবের আদানপ্রদান করে। আমরা সবাই জানি, আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বেশ একটা ঝগড়া চলছে। পৃথিবীতে মোড়লি কে করবে, তা নিয়েই ঝগড়া। অন্তর্জালে ইংরেজি ভাষাভাষী তো শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, তাই নেটের যুদ্ধে ইংরেজির আধিপত্য থাকবে আরও অনেকটা সময় ধরে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এর পরেই রয়েছে স্প্যানিশ ভাষা। ২০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ লেখালেখি করে স্প্যানিশ ভাষায়। বোঝাই যায়, এই ভাষাভাষীদের মধ্যে লাতিন আমেরিকার রয়েছে বড় অবদান। ইতিহাসের কোনো এক কালে এই মহাদেশকে পদানত করেছিল স্পেন দেশের মানুষেরা, তার ক্ষত আজও বহন করছে মহাদেশটির মানুষ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে আরবি, পর্তুগিজ, জাপানি, মালয়ি, রুশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষা।
না, এই বিশাল জগতে বাংলাকে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাবে কী করে, বাঙালি তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজিতেই মেইল করতে অভ্যস্ত। আলাপও চালায় ইংরেজিতে, অতএব…।

ভাষা ছাড়া কি মানুষ হয়? মানুষের সবচেয়ে জটিল সৃষ্টি হলো ভাষা। কোত্থেকে, কীভাবে এর জন্ম, তা নিয়ে কত গবেষণাই তো হলো। কত রকম মতবাদে ছেয়ে গেল বিজ্ঞান, পৃথিবী। কিন্তু সত্যিই কি পাওয়া গেল উত্তর?
আজ একটু আড্ডার ছলে ভাষা বিষয়ে কিছু কথা বলি। বাক্যগঠন, ধ্বনি উচ্চারণে নানা ধরনের বৈচিত্র্য আছে প্রতিটি ভাষায়। সেই সঙ্গে ভাষার সঙ্গে মিশে থাকে অতীত থেকে উঠে আসা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য। কেউ যদি অন্য কারও ভাষা অনুবাদ করতে চায়, তাহলে সেই সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারটা বুঝতে হবে। না হলে সে অনুবাদ হয়ে উঠবে কাটখোট্টা শব্দের কফিন। সংস্কৃতি না জানলে ভাষা শিক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়।
কয়েকটি বিষয়কে আমরা এখানে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। প্রথমেই জানার চেষ্টা করি, পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল ভাষা হিসেবে যদি বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন ভাষাগুলোকে বেছে নিতে হবে। মানে, কোন ভাষাগুলো আসলে খুব জটিল?
হ্যাঁ, সে আলোচনার আগে আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে, এখন পৃথিবীতে মোট ভাষার সংখ্যা সাত হাজারের এদিক-ওদিক। তবে বিশাল পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ ভাবের আদানপ্রদান করে মূলত ২৩টি ভাষায়। আপনার ভাষা যে ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত, তার ওপর নির্ভর করবে কোন ভাষা আপনার কাছে সহজ বা জটিল লাগবে। আপনার ভাষাগোষ্ঠী কিংবা আপনার কাছাকাছি কোনো ভাষাগোষ্ঠীর ভাষা আপনার কাছে সহজ লাগবে। কিন্তু দূরের ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাকে আপনার মনে হতে পারে জটিল। তাই সবচেয়ে কঠিন ভাষা নির্ধারণ করা সহজ কাজ নয়।
তবে বিজ্ঞানীরা ভেবে দেখেছেন, নিচের ছয়টি ভাষা শিখতে জান বেরিয়ে যায়। এদের খুব জটিল ভাষা হিসেবে নাম আছে। এরা হলো বাস্ক, এসকিমো, নাবাখো, চিপ্পেভা, তাবাসারান, চীনা।
কেন এদের জটিল বা কঠিন ভাষা বলা হয়, তা জানতে হলে একটু বইপত্র নিয়ে বসতে হবে আপনাকে। সবকিছুর সহজ সমাধান নেই। একটু তো কষ্ট করা দরকার।
দুই.
ভাষার মরে যাওয়া নিয়ে কথা না বলে কী করে জন্ম হলো ভাষার, তা নিয়ে কথা বলা যাক। কেউ যদি বলে, আরে, ভাষার সৃষ্টি তো হয়েছে এভাবে—তাহলে বুঝবেন গুল মারছে সে। এখনো ভাষাবিজ্ঞানীরা একেবারে নিখুঁতভাবে বলতে পারেননি, কী করে মানুষ কথা বলা শিখল; কী করে জন্ম হলো ভাষার।
তবে, কিছু কিছু অনুমান তো করেছেন বিজ্ঞানীরা। না হলে তাঁরা কী করে টিকে থাকবেন?
একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই এক সময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর কথা বলতে শিখে গেল মানুষ।
কিন্তু এই তত্ত্ব অনুসরণ করতে গেলে বেশ কিছু ফাঁকফোকর বেরিয়ে আসবে। কত রকম ধ্বনি নিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ। শুধু পশুর ডাক থেকে কি সে রকম শব্দ আবিষ্কার করা সম্ভব?
‘পুঃ পুঃ তত্ত্ব’ নামে আরেকটি তত্ত্ব নিয়েও মাথা ঘামিয়েছে মানুষ। এটা হচ্ছে যেকোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যখন ‘আঃ’ ‘উঃ’ ইত্যাদি উচ্চারণ করে, সেগুলোই পরে পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করেছে ভাষার।
বিজ্ঞানীরা এ রকম একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন, ভালো কথা, কিন্তু আদতে কি এই উচ্ছ্বাস-মার্কা ধ্বনির মাধ্যমে ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
না হে; মন সায় দিচ্ছে না!
তবে কি ‘ডিং ডং তত্ত্ব’-কে আলিঙ্গন করব? এই তত্ত্ব বলছে, ধ্বনি আর অর্থের মধ্যে সম্পর্ক আছে। কোনো ঘটনা ঘটতে দেখলে আদিম মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিত। এই সাড়া দেওয়ার সহজাত প্রবণতা থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নিয়েছে ভাষা।
‘ইয়ো হে হে’ বলে রয়েছে আরেকটি তত্ত্ব। শ্রমিকেরা যখন খুব কঠিন কোনো কাজ করে, তখন সবাই মিলে ছন্দোবদ্ধ কোনো আওয়াজ করে, সেই আওয়াজ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ভাষার। ওই যে ‘হেই সামাল ধান হো/কাস্তেতে দাও শাণহো/জান কবুল আর মান কবুল/আর দেব না আর দেব না রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।’ এর পর যে ‘হেই সামাল, হেই সামাল’ বলা হয়, তাতে এ রকম একটা সুরের সৃষ্টি হয়। বাড়ির পাইলিং করার সময়ও কেমন সুরে শ্রমিকেরা গান ধরেন, লক্ষ্য করেছেন? সেগুলো থেকেই ভাষার সৃষ্টি।
তবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
‘দেহভঙ্গির তত্ত্ব’ হচ্ছে পরের তত্ত্বটি। আমেরিকার মূল অধিবাসী, যাদের রেড ইন্ডিয়ান নামে এখন বলে মানুষ, তারা দেহভঙ্গি বা জেশ্চারের মাধ্যমে কথা বলত। সাংকেতিক ভাষায় হতো কথোপকথন। কিন্তু সেটা যে ভাষার উৎপত্তির রহস্য উন্মোচন করে দিচ্ছে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
‘লা লা তত্ত্ব’টিও দারুণ। মানুষের প্রেম, ভালোবাসা, আনন্দানুভূতি থেকে নাকি সৃষ্টি হয়েছে ভাষার! লা লা লা লা লা! আরে ধুর! এটাও কি মেনে নেওয়া যায়? কোনো চিৎকার, সুরেলা আবেগ প্রকাশ কিংবা ভাবোচ্ছ্বাস থেকে কি ভাষার সৃষ্টি হতে পারে?
এ রকম নানা ধরনের তত্ত্ব ছিল আগে। হালে এর সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত হয়েছে।
এই তত্ত্ব অনুসারে মানব জাতির জৈব ইতিহাস, আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গভীরে ঢুঁ মারলে ভাষারহস্যের নাগাল পাওয়া যেতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, মানুষ ও বনমানুষ একই গোত্রের। অর্থাৎ, লাখ লাখ বছর আগে মানুষ আর বনমানুষের পূর্বপুরুষ এক ছিল।
বিশ লাখ বছর আগে হোমো হাবিলিসরা বাস করত আফ্রিকায়। তাদের তৈরি কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে। সূক্ষ্ম নয়, কিন্তু যন্ত্র তো! নিজের হাতে তৈরি যন্ত্র! তার মানে পশু থেকে তারা তত দিনে মানুষ হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। সে সময় যদি তারা কথা বলে ভাবের আদানপ্রদান করতে পারে, তবে তাকে প্রাক্-ভাষা নামে অভিহিত করাই ভালো।
যাদের আমরা বনমানুষ বলি, তাদের ডাক ছিল বদ্ধ, আর মানুষের ডাক মুক্ত। এই বদ্ধ থেকে লাখ লাখ বছর পার করে তার পর মুক্ত ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। বনমানুষের ভাষা থেকে মানুষের ভাষা সৃষ্টি হওয়ার একটা বড় কারণ মানুষের সৃজনীশক্তি। আর একটা জরুরি কথা। চোখের সামনে নেই, সেটার বর্ণনা করতে পারে কেবল মানুষ। আর সেটা সে করে ভাষার সাহায্যে। চোখের সামনে যা নেই, তাকে বোঝানোর জন্য তো একটা নাম বা প্রতীকের দরকার। ভাষা দিয়েই কেবল তাকে চেনানো যায়। ভাষার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা কিছু যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করা যায়। গাছ, আগাছা, গেছো—কতগুলো শব্দ তৈরি হয়ে গেল! আর হ্যাঁ, ভাষার মধ্যে তার ঐতিহ্যের সঞ্চালন হয়। মানবশিশু যখন জন্মায়, তখন সে কাঁদতে পারে, কিন্তু তার কোনো ভাষা থাকে না। সে বড় হতে থাকে, অনুকরণ করে করে ভাষা শিখে ফেলে।
নাহ! ঢের হয়েছে! জটিল হয়ে যাচ্ছে আড্ডাটা। একটু সহজ করা দরকার।
তিন.
পৃথিবীতে কত মানুষই তো লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। সব ভাষাতেই প্রিয় লেখক আছেন। জনপ্রিয় লেখক আছেন। সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিতও হয়। বাংলা উপন্যাসে একসময় শরৎচন্দ্র ছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে, তাঁর জায়গা নিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এর পর কেউ একজন নিশ্চয়ই আসবেন। কিন্তু এমন অনেক লেখক আছেন, যাঁদের লেখা অন্য ভাষাভাষী মানুষও ভালোবেসে পড়েন। কখনো কখনো তাঁরা এতটাই পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, তাঁদের লেখা অনুবাদ করার হিড়িক পড়ে যায়।
ইউনেসকো অনলাইনে একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তাতে কোন লেখকের বই সবচেয়ে বেশি অনূদিত হয়েছে, তা দেখা যায়। সেই তালিকায় সবার ওপরের নামটি হোমারের নয়, শেক্সপিয়ারের নয়, রবীন্দ্রনাথের নয়। সবার ওপরে আছেন আগাথা ক্রিস্টি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ৭ হাজার ২৩৪টি অনুবাদ হয়েছে তাঁর। পরের নামটি জুল ভার্নের। তিনি আছেন ৪ হাজার ৭৫১টি অনুবাদ নিয়ে। অ্যাঁ, শেক্সপিয়ার কিন্তু আছেন তার পরেই; ৪ হাজার ২৯৬ জন অনুবাদ করেছেন তাঁকে। লাকি সেভেন হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৩টি। শিশুসাহিত্যিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন, তাঁর বইয়ের অনুবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। তালিকায় আট নম্বর নামটি তাঁর। মার্ক টোয়েন আছেন ফেওদর দস্তইয়েভ্স্কির চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। ১৫ নম্বরে থাকা মার্ক টোয়েনের অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৩১টি, বেদনার ঋষি দস্তইয়েভ্স্কির অনুবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩৪২টি। বাকি নামগুলো বলছি না। তবে যে কেউ সেই ইনডেক্সটি দেখলে বালজাক, তলস্তয়, কাফকা, ডিকেন্সসহ প্রিয় লেখকদের নাম পেয়ে যাবেন। হ্যাঁ, কার্ল মার্ক্সের নাম না থাকার কোনো কারণ নেই।
চার.
ইন্টারনেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা কোনটি? কিংবা প্রথম দশটি ভাষা?
শুরুতেই কবুল করে নেওয়া দরকার, প্রথম ভাষাটি কোন ভাষা হতে পারে, সেটা আমি না বলে দিলেও যে কেউ অনুমান করে নিতে পারেন। হ্যাঁ, ইংরেজি। একসময় পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় উপনিবেশ করে নিজের ভাষাটাকে পোক্ত করে দিয়ে এসেছে তারা। ফলে এখন অন্তর্জালেও তাদের সদম্ভ উপস্থিতি। অন্তর্জালে যে লেখালেখি হয়, তার ৫২ শতাংশ হয় ইংরেজি ভাষায়।
এরপরই কিন্তু চীনা ভাষা। ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ এই ভাষায় অন্তর্জালে ভাবের আদানপ্রদান করে। আমরা সবাই জানি, আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বেশ একটা ঝগড়া চলছে। পৃথিবীতে মোড়লি কে করবে, তা নিয়েই ঝগড়া। অন্তর্জালে ইংরেজি ভাষাভাষী তো শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, তাই নেটের যুদ্ধে ইংরেজির আধিপত্য থাকবে আরও অনেকটা সময় ধরে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এর পরেই রয়েছে স্প্যানিশ ভাষা। ২০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ লেখালেখি করে স্প্যানিশ ভাষায়। বোঝাই যায়, এই ভাষাভাষীদের মধ্যে লাতিন আমেরিকার রয়েছে বড় অবদান। ইতিহাসের কোনো এক কালে এই মহাদেশকে পদানত করেছিল স্পেন দেশের মানুষেরা, তার ক্ষত আজও বহন করছে মহাদেশটির মানুষ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে আরবি, পর্তুগিজ, জাপানি, মালয়ি, রুশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষা।
না, এই বিশাল জগতে বাংলাকে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাবে কী করে, বাঙালি তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজিতেই মেইল করতে অভ্যস্ত। আলাপও চালায় ইংরেজিতে, অতএব…।

এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
২ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
২ দিন আগে
কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে।
৩ দিন আগে
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইলন মাস্ক। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে যার নাম আসে খবরের পাতায়। ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের ধনীদের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেন এই মার্কিন উদ্যোক্তা। আর ধনীদের তালিকায় তো এসেছেন বহুকাল আগে। সম্প্রতি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন প্রথম ৫০০ বিলিয়ন ডলারের (অর্ধ ট্রিলিয়ন) মালিক হিসেবে।
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ লাখ টাকা)।
ইলন মাস্কের সাদামাটা জীবন নিয়ে তাঁর সাবেক সঙ্গীদের আলাপেও উঠে এসেছে।
ইলন মাস্কের তিন সন্তানের জননী সাবেক সঙ্গী কানাডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী গ্রাইমস ২০২২ সালে ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, অনেকে যেমনটা মনে করেন আসলে তা নয়। মাস্ক বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন না। তিনি তেমন বেশি বিলাসিতার মধ্যে থাকেন না।

গ্রাইমস আরও বলেন, ‘তিনি মোটেও বিলিয়নিয়ারদের মতো থাকেন না। কখনো কখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। একবার তো এমনও হয়েছিল, বিছানায় তাঁর (গ্রাইমসের) পাশটায় ম্যাট্রেসে গর্ত হয়ে যাওয়ার পরও মাস্ক নতুন একটা কিনতে রাজি হননি।’
জীবনযাপন সাধারণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে মাস্কের খরচের খাতা বেশ ভারি।
মাস্কের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ চোখে পড়ার মতো। তাঁর কাছে এমন গাড়িও আছে, যা সাবমেরিনে রূপ নিতে পারে। এছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত জেটবিমানগুলোর মূল্যও কয়েক কোটি ডলার।
এরপর তো ২০২২ সালে পুরো প্রযুক্তি মাধ্যম কাঁপিয়ে দিয়ে সেই ‘ছোট্ট খরচা’ করলেন। ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে ফেললেন টুইটার। তারপর এর নাম দিলেন ‘এক্স’। এই কেনাকাটা ‘মন চাইল, কিনলাম’ টাইপই ছিল তাঁর কাছে।
১০ কোটি ডলারে ৭ বছরে ৭টি বাড়ি
ইলন মাস্কের এক বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য ছিল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাত বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার অভিজাত এলাকা বেল-এয়ারে সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক।
এগুলোতে ছিল টেনিস কোর্ট, সুইমিং পুল, ওয়াইন সেলার, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। এমনকি বল রুমও ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ‘উইলি ওয়ঙ্কা’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের র্যাঞ্চ হাউস।

তবে ২০২০ সালে এসে এই বিলাসবহুল বাড়ি কেনার ঝোঁক পাল্টে যায় মাস্কের। তিনি এক টুইটে জানান, প্রায় সব ভৌত সম্পদ বিক্রি করে দেবেন তিনি। আর কোনো বাড়ির মালিক থাকবেন না।
তিনি লেখেন, ‘আমার টাকার দরকার নেই। আমি নিজেকে মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর কাজে উৎসর্গ করছি। সম্পত্তি মানুষকে ভারী করে ফেলে।’
তবে তিনি একটি শর্তও দেন, অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িটি যেন ‘ধ্বংস না করা হয়’ এবং এর কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
ওয়াইল্ডারের ভাতিজা জর্ডান ওয়াকার-পার্লম্যানের কাছে তিন বেডরুমের ওই বাড়িটি বিক্রি করে দেন মাস্ক। বাড়িটি কেনার জন্য মাস্ক নিজেই ওয়াইল্ডারের ভাতিজাকে কয়েক মিলিয়ন ডলার ঋণ দেন। কিন্তু ওয়াকার-পার্লম্যান সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিলেন বলে ২০২৫ সালের জুনে বাড়িটির মালিকানা ফেরত নেন তিনি।

২০২১ সালে মাস্ক টুইট করে জানান, এখন থেকে তাঁর ‘প্রধান বাসস্থান’ টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এক সাধারণ প্রিফ্যাব্রিকেটেড বাড়ি, যার দাম প্রায় ৫০ হাজার ডলার। তাঁর মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স ওখান থেকেই পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্টারবেস’ নামে পরিচিত।
মাস্ক বলেন, ‘এটা আসলেই দারুণ।’
এর পরের বছর মাস্ক আবার জানান, তাঁর নিজের নামে কোনো বাড়িই নেই। একে নিজের কম ভোগবাদী জীবনযাপনের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। যদিও তাঁর সম্পদের পরিমাণ বিপুল।
তিনি মার্কিন-কানাডিয়ান অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা টেড-এর প্রধান ক্রিস অ্যান্ডারসনকে বলেন, ‘আমি বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতেই বেশি থাকি। যখন বে এরিয়ায় যাই, যেখানে টেসলার বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ হয়, তখন বন্ধুদের বাড়ির ফাঁকা ঘরগুলোতে পালা করে থাকি।’

এই কথা আসলেই সত্যি। ২০১৫ সালে গুগলের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ লেখক অ্যাশলি ভ্যান্সকে বলেছিলেন, মাস্ককে ‘একরকম গৃহহীন’-ই বলা যায়।
ল্যারি পেজ আরও বলেন, “সে ই-মেইল করে বলে, ‘আজ রাতে কোথায় থাকব বুঝতে পারছি না। তোমার বাড়িতে আসতে পারি?’ ”
বছরের পর বছর ধরে জল্পনা চলছে, মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্পত্তি কিনছেন কিনা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে টেক্সাসের ওই বাড়িটিই এখনো তাঁর একমাত্র বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
মাস্কের সংগ্রহ যেন ঐতিহাসিক গাড়ির মেলা
ইলন মাস্ক বাড়ির পেছনে খরচ না করলেও গাড়ির ক্ষেত্রে বেশ উদার। টেসলার মালিক হিসেবে তাঁর বিরল ও ব্যতিক্রমধর্মী গাড়ির সংগ্রহ থাকা আশ্চর্যের কিছু নয়! তবে তাঁর কিছু গাড়ি একেবারেই সবার থেকে আলাদা।
মাস্কের সংগ্রহে ছিল ২০শ শতাব্দীর প্রথম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি হিসেবে পরিচিত ফোর্ড মডেল ‘টি’। গাড়ি শিল্পে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটায় এই গাড়ি।
আরও ছিল ১৯৬৭ সালের জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার। এই গাড়িটির প্রতি নাকি শৈশব থেকেই মাস্কের আকর্ষণ। ১৯৯৭ সালের ম্যাকলারেন এফ ১ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। একবার দুর্ঘটনায় ভেঙে যায় গাড়িটি। বিপুল অর্থ ব্যয়ে মেরামত করেন তিনি। পরে অবশ্য বিক্রি করে দেন।

তাঁর আরেকটি বিখ্যাত গাড়ি হলো টেসলার প্রথম বাজারজাত করা টেসলা রোডস্টার। ২০১৮ সালে মাস্ক এই গাড়িটি মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন।
১৯৭৭ সালের জেমস বন্ডের সিনেমা দ্য স্পাই হু লাভড মি-তে ব্যবহৃত ১৯৭৬ সালে বাজারে আসা লোটাস এসপ্রিৎ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। সিনেমায় ‘ওয়েট নেলি’ নামের এই গাড়িটি সাবমেরিনে রূপ নিতে পারত। মাস্ক ২০১৩ সালে প্রায় ১০ লাখ ডলারে নিলামে গাড়িটি কিনেছিলেন। সেই সাবমেরিনে রূপান্তরের ক্ষমতাটিকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
আকাশ পথেও পিছিয়ে নন মাস্ক
উড়ালপথেও খরচ করতে ভালোবাসেন ইলন মাস্ক। তবে তাঁর দাবি, ‘এটি বিলাসিতা নয়—বরং কাজের প্রতি তাঁর নিবেদন।’
২০২২ সালে টেডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, ‘আমি যদি উড়োজাহাজ ব্যবহার করি, যাতে আমার কাজের জন্য হাতে বেশি সময় পাই।’
মাস্কের সংগ্রহে আছে একাধিক গালফস্ট্রিম মডেলের ব্যক্তিগত জেট, যার প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার।
মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্পেসএক্স ও টেসলার অফিসগুলো পরিদর্শনে এবং আন্তর্জাতিক সফরে এই উড়োজাহাজগুলো ব্যবহার করেন।
দাতব্য কাজ নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইলন মাস্ক
মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথি অনুযায়ী, মাস্ক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাকে বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দান করেছেন। প্রায় সময়ই নানা উদ্যোগে বহু মিলিয়ন ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর দানশীলতা নিয়ে সমালোচনাও আছে।
নিউইয়র্ক টাইমস গত বছর লিখেছিল, তাঁর দানের ধরন ‘অগোছালো এবং মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট’। এই দানের ধরন তাঁকে বিশাল কর-ছাড়ের সুযোগ দেয় এবং তাঁর ব্যবসাকেও সহায়তা করে।
তাঁর দাতব্য সংস্থা মাস্ক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা আছে, প্রতিষ্ঠানটি মানবজাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে ফাউন্ডেশনটি আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ দান করা প্রয়োজন, তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পত্রিকাটি যে কর সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করেছে, তাতে দেখা গেছে, সংস্থাটির বেশিরভাগ অনুদানই গেছে মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোতেই।
এ বিষয়ে মাস্ক ও তাঁর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পায়নি নিউইয়র্ক টাইমস।
অতীতে দান ও সমাজসেবামূলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মাস্ক প্রায়ই প্রচলিত দান পদ্ধতির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালে টেডের ক্রিস অ্যান্ডারসনকে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ভালো কাজের আসল প্রভাব নিয়ে ভাবেন, শুধু বাহ্যিক ভাবমূর্তি নয়, তাহলে দানশীলতা আসলে অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়।’
মাস্ক বলেন, টেসলা টেকসই জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে, আর নিউরালিংক মস্তিষ্কজনিত আঘাত এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে সৃষ্ট অস্তিত্বগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে।
তাঁর ব্যবসাগুলোই মানবকল্যাণের এক ধরনের দান বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, ‘যদি দানশীলতার অর্থ হয় মানবতার প্রতি ভালোবাসা, তবে এগুলোই দানশীলতা।’

ইলন মাস্ক। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে যার নাম আসে খবরের পাতায়। ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের ধনীদের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেন এই মার্কিন উদ্যোক্তা। আর ধনীদের তালিকায় তো এসেছেন বহুকাল আগে। সম্প্রতি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন প্রথম ৫০০ বিলিয়ন ডলারের (অর্ধ ট্রিলিয়ন) মালিক হিসেবে।
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ লাখ টাকা)।
ইলন মাস্কের সাদামাটা জীবন নিয়ে তাঁর সাবেক সঙ্গীদের আলাপেও উঠে এসেছে।
ইলন মাস্কের তিন সন্তানের জননী সাবেক সঙ্গী কানাডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী গ্রাইমস ২০২২ সালে ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, অনেকে যেমনটা মনে করেন আসলে তা নয়। মাস্ক বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন না। তিনি তেমন বেশি বিলাসিতার মধ্যে থাকেন না।

গ্রাইমস আরও বলেন, ‘তিনি মোটেও বিলিয়নিয়ারদের মতো থাকেন না। কখনো কখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। একবার তো এমনও হয়েছিল, বিছানায় তাঁর (গ্রাইমসের) পাশটায় ম্যাট্রেসে গর্ত হয়ে যাওয়ার পরও মাস্ক নতুন একটা কিনতে রাজি হননি।’
জীবনযাপন সাধারণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে মাস্কের খরচের খাতা বেশ ভারি।
মাস্কের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ চোখে পড়ার মতো। তাঁর কাছে এমন গাড়িও আছে, যা সাবমেরিনে রূপ নিতে পারে। এছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত জেটবিমানগুলোর মূল্যও কয়েক কোটি ডলার।
এরপর তো ২০২২ সালে পুরো প্রযুক্তি মাধ্যম কাঁপিয়ে দিয়ে সেই ‘ছোট্ট খরচা’ করলেন। ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে ফেললেন টুইটার। তারপর এর নাম দিলেন ‘এক্স’। এই কেনাকাটা ‘মন চাইল, কিনলাম’ টাইপই ছিল তাঁর কাছে।
১০ কোটি ডলারে ৭ বছরে ৭টি বাড়ি
ইলন মাস্কের এক বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য ছিল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাত বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার অভিজাত এলাকা বেল-এয়ারে সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক।
এগুলোতে ছিল টেনিস কোর্ট, সুইমিং পুল, ওয়াইন সেলার, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। এমনকি বল রুমও ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ‘উইলি ওয়ঙ্কা’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের র্যাঞ্চ হাউস।

তবে ২০২০ সালে এসে এই বিলাসবহুল বাড়ি কেনার ঝোঁক পাল্টে যায় মাস্কের। তিনি এক টুইটে জানান, প্রায় সব ভৌত সম্পদ বিক্রি করে দেবেন তিনি। আর কোনো বাড়ির মালিক থাকবেন না।
তিনি লেখেন, ‘আমার টাকার দরকার নেই। আমি নিজেকে মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর কাজে উৎসর্গ করছি। সম্পত্তি মানুষকে ভারী করে ফেলে।’
তবে তিনি একটি শর্তও দেন, অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িটি যেন ‘ধ্বংস না করা হয়’ এবং এর কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
ওয়াইল্ডারের ভাতিজা জর্ডান ওয়াকার-পার্লম্যানের কাছে তিন বেডরুমের ওই বাড়িটি বিক্রি করে দেন মাস্ক। বাড়িটি কেনার জন্য মাস্ক নিজেই ওয়াইল্ডারের ভাতিজাকে কয়েক মিলিয়ন ডলার ঋণ দেন। কিন্তু ওয়াকার-পার্লম্যান সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিলেন বলে ২০২৫ সালের জুনে বাড়িটির মালিকানা ফেরত নেন তিনি।

২০২১ সালে মাস্ক টুইট করে জানান, এখন থেকে তাঁর ‘প্রধান বাসস্থান’ টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এক সাধারণ প্রিফ্যাব্রিকেটেড বাড়ি, যার দাম প্রায় ৫০ হাজার ডলার। তাঁর মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স ওখান থেকেই পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্টারবেস’ নামে পরিচিত।
মাস্ক বলেন, ‘এটা আসলেই দারুণ।’
এর পরের বছর মাস্ক আবার জানান, তাঁর নিজের নামে কোনো বাড়িই নেই। একে নিজের কম ভোগবাদী জীবনযাপনের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। যদিও তাঁর সম্পদের পরিমাণ বিপুল।
তিনি মার্কিন-কানাডিয়ান অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা টেড-এর প্রধান ক্রিস অ্যান্ডারসনকে বলেন, ‘আমি বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতেই বেশি থাকি। যখন বে এরিয়ায় যাই, যেখানে টেসলার বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ হয়, তখন বন্ধুদের বাড়ির ফাঁকা ঘরগুলোতে পালা করে থাকি।’

এই কথা আসলেই সত্যি। ২০১৫ সালে গুগলের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ লেখক অ্যাশলি ভ্যান্সকে বলেছিলেন, মাস্ককে ‘একরকম গৃহহীন’-ই বলা যায়।
ল্যারি পেজ আরও বলেন, “সে ই-মেইল করে বলে, ‘আজ রাতে কোথায় থাকব বুঝতে পারছি না। তোমার বাড়িতে আসতে পারি?’ ”
বছরের পর বছর ধরে জল্পনা চলছে, মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্পত্তি কিনছেন কিনা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে টেক্সাসের ওই বাড়িটিই এখনো তাঁর একমাত্র বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
মাস্কের সংগ্রহ যেন ঐতিহাসিক গাড়ির মেলা
ইলন মাস্ক বাড়ির পেছনে খরচ না করলেও গাড়ির ক্ষেত্রে বেশ উদার। টেসলার মালিক হিসেবে তাঁর বিরল ও ব্যতিক্রমধর্মী গাড়ির সংগ্রহ থাকা আশ্চর্যের কিছু নয়! তবে তাঁর কিছু গাড়ি একেবারেই সবার থেকে আলাদা।
মাস্কের সংগ্রহে ছিল ২০শ শতাব্দীর প্রথম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি হিসেবে পরিচিত ফোর্ড মডেল ‘টি’। গাড়ি শিল্পে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটায় এই গাড়ি।
আরও ছিল ১৯৬৭ সালের জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার। এই গাড়িটির প্রতি নাকি শৈশব থেকেই মাস্কের আকর্ষণ। ১৯৯৭ সালের ম্যাকলারেন এফ ১ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। একবার দুর্ঘটনায় ভেঙে যায় গাড়িটি। বিপুল অর্থ ব্যয়ে মেরামত করেন তিনি। পরে অবশ্য বিক্রি করে দেন।

তাঁর আরেকটি বিখ্যাত গাড়ি হলো টেসলার প্রথম বাজারজাত করা টেসলা রোডস্টার। ২০১৮ সালে মাস্ক এই গাড়িটি মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন।
১৯৭৭ সালের জেমস বন্ডের সিনেমা দ্য স্পাই হু লাভড মি-তে ব্যবহৃত ১৯৭৬ সালে বাজারে আসা লোটাস এসপ্রিৎ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। সিনেমায় ‘ওয়েট নেলি’ নামের এই গাড়িটি সাবমেরিনে রূপ নিতে পারত। মাস্ক ২০১৩ সালে প্রায় ১০ লাখ ডলারে নিলামে গাড়িটি কিনেছিলেন। সেই সাবমেরিনে রূপান্তরের ক্ষমতাটিকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
আকাশ পথেও পিছিয়ে নন মাস্ক
উড়ালপথেও খরচ করতে ভালোবাসেন ইলন মাস্ক। তবে তাঁর দাবি, ‘এটি বিলাসিতা নয়—বরং কাজের প্রতি তাঁর নিবেদন।’
২০২২ সালে টেডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, ‘আমি যদি উড়োজাহাজ ব্যবহার করি, যাতে আমার কাজের জন্য হাতে বেশি সময় পাই।’
মাস্কের সংগ্রহে আছে একাধিক গালফস্ট্রিম মডেলের ব্যক্তিগত জেট, যার প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার।
মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্পেসএক্স ও টেসলার অফিসগুলো পরিদর্শনে এবং আন্তর্জাতিক সফরে এই উড়োজাহাজগুলো ব্যবহার করেন।
দাতব্য কাজ নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইলন মাস্ক
মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথি অনুযায়ী, মাস্ক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাকে বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দান করেছেন। প্রায় সময়ই নানা উদ্যোগে বহু মিলিয়ন ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর দানশীলতা নিয়ে সমালোচনাও আছে।
নিউইয়র্ক টাইমস গত বছর লিখেছিল, তাঁর দানের ধরন ‘অগোছালো এবং মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট’। এই দানের ধরন তাঁকে বিশাল কর-ছাড়ের সুযোগ দেয় এবং তাঁর ব্যবসাকেও সহায়তা করে।
তাঁর দাতব্য সংস্থা মাস্ক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা আছে, প্রতিষ্ঠানটি মানবজাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে ফাউন্ডেশনটি আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ দান করা প্রয়োজন, তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পত্রিকাটি যে কর সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করেছে, তাতে দেখা গেছে, সংস্থাটির বেশিরভাগ অনুদানই গেছে মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোতেই।
এ বিষয়ে মাস্ক ও তাঁর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পায়নি নিউইয়র্ক টাইমস।
অতীতে দান ও সমাজসেবামূলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মাস্ক প্রায়ই প্রচলিত দান পদ্ধতির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালে টেডের ক্রিস অ্যান্ডারসনকে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ভালো কাজের আসল প্রভাব নিয়ে ভাবেন, শুধু বাহ্যিক ভাবমূর্তি নয়, তাহলে দানশীলতা আসলে অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়।’
মাস্ক বলেন, টেসলা টেকসই জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে, আর নিউরালিংক মস্তিষ্কজনিত আঘাত এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে সৃষ্ট অস্তিত্বগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে।
তাঁর ব্যবসাগুলোই মানবকল্যাণের এক ধরনের দান বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, ‘যদি দানশীলতার অর্থ হয় মানবতার প্রতি ভালোবাসা, তবে এগুলোই দানশীলতা।’

একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই একসময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
২ দিন আগে
কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে।
৩ দিন আগে
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না। প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদেরের ছেলের নাম হাজী মাখন। তাঁর নামেই ব্যবসার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সত্তর বছরের বেশি আবদুল কাদেরের এই ব্যবসার বয়স। পঞ্চাশের দশক থেকে তিন প্রজন্ম ধরে চলছে পারিবারিক এই ব্যবসা। একসময় ১ পয়সা কি ২ পয়সায় এক প্লেট মাখন বিরিয়ানি খাওয়া যেত। এখন খেতে হলে শ দেড়েক টাকা তো লাগবেই। পোলাওয়ের চালের সঙ্গে গরুর মাংসের মাখো মাখো এই বিরিয়ানি খেতে কিন্তু একেবারেই মাখন!
ছবি: হাসান রাজা

‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না। প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদেরের ছেলের নাম হাজী মাখন। তাঁর নামেই ব্যবসার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সত্তর বছরের বেশি আবদুল কাদেরের এই ব্যবসার বয়স। পঞ্চাশের দশক থেকে তিন প্রজন্ম ধরে চলছে পারিবারিক এই ব্যবসা। একসময় ১ পয়সা কি ২ পয়সায় এক প্লেট মাখন বিরিয়ানি খাওয়া যেত। এখন খেতে হলে শ দেড়েক টাকা তো লাগবেই। পোলাওয়ের চালের সঙ্গে গরুর মাংসের মাখো মাখো এই বিরিয়ানি খেতে কিন্তু একেবারেই মাখন!
ছবি: হাসান রাজা

একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই একসময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
২ দিন আগে
কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে।
৩ দিন আগে
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে। লেখাতে কিন্তু একটা জিনিস থাকা উচিত বলে আমার মনে হয়—হিউমার। রসবোধ থাকা উচিত, প্রত্যেকের লেখাতেই। যে ভিক্ষা করছে তাকে যদি ফলো করি, দেখা যাবে একটা সময়ে একটা হাসির কথা বলছে, একটা সময়ে একটা ভঙ্গি করল যেটা হাসির ভঙ্গি। সব সময়ই তাকে যদি এভাবে কষ্টকরভাবে দেখি, ঠিক না। ওর লেখাতে হাসিটা নেই। কায়েস আহমেদের লেখা আমার ভালো লাগত।
মঞ্জু সরকারের লেখা ভালো। আমার ভালো লাগে। সুশান্ত মজুমদারের কিছু লেখা আছে, খুব সিরিয়াসলি লিখেছে, খুব সিরিয়াসলি। বোঝা যায় আরকি। সিরিয়াস লিখলেও এখনো পর্যন্ত বলা চলে না যে ছোটগল্প লেখক হয়েছে। মঈনুল আহসান সাবের সো সো। একটা কথা কি, এদের সময় থেকে লেখকেরা প্রচণ্ড লোভী হয়ে পড়ল, তাই যা হবার হয়েছে। লোভী লোকের দ্বারা গল্প হয় না।
সমরেশ বসু ভার্সেটাইল লেখক। ভার্সেটাইল বলছি এ জন্য যে, উনি যে-সমস্ত বিষয় নিয়ে লিখেছেন, তা ওই লোকই। যেমন, রাস্তায় পড়ে থাকাদের নিয়ে তিনটা বই আছে ওনার। তিনটা কি দুটি হবে। অথচ মনে হবে ওদেরই ভাষা। ওদেরই জীবন, অসাধারণ। অন্য বইও লিখেছেন, সুন্দর।
অমিয়ভূষণ মজুমদারের লেখা আমার প্রথমেই খুব ভালো লেগেছিল, ওনার ভাষার জন্য। এত মেদহীন ভাষা বোধ হয় কারও নেই, এটা আমার মনে হয়েছিল। আমার মনে আছে, প্রায় টেক্সটের মতো বইটা (গড় শ্রীখন্ড) পড়তাম। অনেক মোটা বই। খুব ভালো লেগেছিল বইটা পড়ে।
সূত্র: প্রশান্ত মৃধা ও হামিম কামরুল হকের গ্রহণ করা কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৬০-৬১

কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে। লেখাতে কিন্তু একটা জিনিস থাকা উচিত বলে আমার মনে হয়—হিউমার। রসবোধ থাকা উচিত, প্রত্যেকের লেখাতেই। যে ভিক্ষা করছে তাকে যদি ফলো করি, দেখা যাবে একটা সময়ে একটা হাসির কথা বলছে, একটা সময়ে একটা ভঙ্গি করল যেটা হাসির ভঙ্গি। সব সময়ই তাকে যদি এভাবে কষ্টকরভাবে দেখি, ঠিক না। ওর লেখাতে হাসিটা নেই। কায়েস আহমেদের লেখা আমার ভালো লাগত।
মঞ্জু সরকারের লেখা ভালো। আমার ভালো লাগে। সুশান্ত মজুমদারের কিছু লেখা আছে, খুব সিরিয়াসলি লিখেছে, খুব সিরিয়াসলি। বোঝা যায় আরকি। সিরিয়াস লিখলেও এখনো পর্যন্ত বলা চলে না যে ছোটগল্প লেখক হয়েছে। মঈনুল আহসান সাবের সো সো। একটা কথা কি, এদের সময় থেকে লেখকেরা প্রচণ্ড লোভী হয়ে পড়ল, তাই যা হবার হয়েছে। লোভী লোকের দ্বারা গল্প হয় না।
সমরেশ বসু ভার্সেটাইল লেখক। ভার্সেটাইল বলছি এ জন্য যে, উনি যে-সমস্ত বিষয় নিয়ে লিখেছেন, তা ওই লোকই। যেমন, রাস্তায় পড়ে থাকাদের নিয়ে তিনটা বই আছে ওনার। তিনটা কি দুটি হবে। অথচ মনে হবে ওদেরই ভাষা। ওদেরই জীবন, অসাধারণ। অন্য বইও লিখেছেন, সুন্দর।
অমিয়ভূষণ মজুমদারের লেখা আমার প্রথমেই খুব ভালো লেগেছিল, ওনার ভাষার জন্য। এত মেদহীন ভাষা বোধ হয় কারও নেই, এটা আমার মনে হয়েছিল। আমার মনে আছে, প্রায় টেক্সটের মতো বইটা (গড় শ্রীখন্ড) পড়তাম। অনেক মোটা বই। খুব ভালো লেগেছিল বইটা পড়ে।
সূত্র: প্রশান্ত মৃধা ও হামিম কামরুল হকের গ্রহণ করা কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৬০-৬১

একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই একসময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
২ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
২ দিন আগে
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ! শব্দটি হলো ‘67’ (উচ্চারণ: ‘সিক্স সেভেন’), যার কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং স্কুলে জেন-আলফা এই শব্দটিকে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জেন-জি-এর পরবর্তী প্রজন্মকে জেন-আলফা বলা হচ্ছে। মূলত ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা প্রজন্মই জেনারেশন আলফা বা জেন-আলফা।
ডিকশনারি ডটকম এই শব্দটি বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এর ব্যাপকতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে চিহ্নিত করেছে। ডিকশনারি মিডিয়া গ্রুপের শব্দকোষ পরিচালক স্টিভ জনসন সিবিএস নিউজকে জানান, যে শব্দটিকে আপনি ভেবেছিলেন সহজে বিলীন হয়ে যাবে, সেটিই একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসেবে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।
এই শব্দে কী বোঝায়?
‘সিক্স-সেভেন’ শব্দটি অতীতের বর্ষসেরা শব্দগুলোর থেকে আলাদা। কারণ এটি কোনো জটিল ধারণা বা বড় ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে না। স্টিভ জনসন এটিকে একটি ‘ইন্টারজেকশন’ বা বিস্ময়সূচক শব্দ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ শব্দ মূলত উদ্দেশ্যহীনভাবে চিৎকার করে বলা হয়।
ডিকশনারি ডটকম-এর মতে, এই শব্দের ব্যবহার অস্পষ্ট এবং পরিবর্তনশীল। কিছু ক্ষেত্রে এটিকে ‘মোটামুটি’ বা ‘হতে পারে এটা, হতে পারে ওটা’-এমন বোঝাতে ব্যবহার করা হলেও, শব্দটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অর্থহীন।
একই সঙ্গে ডিকশনারি ডটকম এটিকে ‘ব্রেনরট স্ল্যাং’-এর উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থহীন এবং উদ্ভট। স্টিভ জনসনের মতে, এটি আসলে জেন-আলফা-এর একটি দলগত পরিচয়ের প্রতীক। এই প্রজন্মের কাছে এটি একটি ‘ইন-গ্রুপ জোক’-এর মতো। সমবয়সীদের নিজস্ব কোড ভাষায় কৌতুক করে যেভাবে বোঝানো হয় যে, ‘আমি এই প্রজন্মের অংশ, এটাই আমি।’
কীভাবে হলো এর উৎপত্তি?
এই অপ্রচলিত শব্দটির (স্ল্যাং) উৎপত্তি হয়েছে র্যাপার স্করিলার-এর গান ‘Doot Doot (6 7) ’ থেকে। পরবর্তীতে এটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের ভিডিও ক্লিপে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার বাস্কেটবল খেলোয়াড় লামেলো বল-এর ভিডিও ক্লিপ। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে এই গান বাস্কেটবল দৃশ্যের সঙ্গে ভাইরাল হতে শুরু করে এবং দ্রুত তরুণ দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো ‘সাউথ পার্ক’-এর একটি পর্বেও এটি স্থান পায়।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই শব্দের নির্বাচন নিয়ে প্রজন্ম ভেদে প্রতিক্রিয়া বিভক্ত। স্টিভ জনসন জানান, একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক তাঁকে ভোরবেলা মেসেজ করে অনুরোধ করেন, যেন তাঁরা এই শব্দটিকে বর্ষসেরা নির্বাচন না করেন। জনসন মজা করে বলেন, ‘শিক্ষকেরাও এটি ধরে ফেলেছেন!’
জনসন এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘একটি নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষাগত শক্তিমত্তা ও প্রভাব প্রদর্শন করছে। ইংরেজি ভাষার ওপর এটি অসাধারণ প্রভাব ফেলছে। এটা উদ্যাপন করার মতো বিষয়।’ তবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য, যারা দৈনিক সময় অসময়ে ‘সিক্স সেভেন’ চিৎকার শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া অনেকাংশেই বিরক্তি এবং হতাশার মিশ্রণ!
সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্যান্য শব্দ
ডিকশনারি ডট কম ২০২৫ সালের বর্ষসেরা শব্দের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রাজনীতি এবং সমাজ সম্পর্কিত আরও কয়েকটি শব্দ বিবেচনা করেছিল। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল:
Agentic: (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত) লক্ষ্য পূরণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম।
Aura farming: ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের আকর্ষণ, স্টাইল বা ভাবমূর্তি তৈরি করা, যা অনলাইন মনোযোগ বা সামাজিক প্রভাব অর্জনের জন্য করা হয়।
Gen Z stare: জেন-জি-এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অভিব্যক্তি, যা উদাসীন বা নির্লিপ্ত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
Overtourism: কোনো জনপ্রিয় গন্তব্যে অতিরিক্ত পর্যটকের ভিড়, যার ফলে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সমাজ-সাংস্কৃতিক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়।
Tradwife: একজন বিবাহিত নারী যিনি ঐতিহ্যবাহী নারীসুলভ লিঙ্গ ভূমিকা মেনে নিয়ে গৃহিণী হিসেবে জীবনযাপন করেন। এটি প্রায়শই রক্ষণশীল রাজনৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি শব্দ।

অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ! শব্দটি হলো ‘67’ (উচ্চারণ: ‘সিক্স সেভেন’), যার কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং স্কুলে জেন-আলফা এই শব্দটিকে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জেন-জি-এর পরবর্তী প্রজন্মকে জেন-আলফা বলা হচ্ছে। মূলত ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা প্রজন্মই জেনারেশন আলফা বা জেন-আলফা।
ডিকশনারি ডটকম এই শব্দটি বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এর ব্যাপকতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে চিহ্নিত করেছে। ডিকশনারি মিডিয়া গ্রুপের শব্দকোষ পরিচালক স্টিভ জনসন সিবিএস নিউজকে জানান, যে শব্দটিকে আপনি ভেবেছিলেন সহজে বিলীন হয়ে যাবে, সেটিই একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসেবে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।
এই শব্দে কী বোঝায়?
‘সিক্স-সেভেন’ শব্দটি অতীতের বর্ষসেরা শব্দগুলোর থেকে আলাদা। কারণ এটি কোনো জটিল ধারণা বা বড় ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে না। স্টিভ জনসন এটিকে একটি ‘ইন্টারজেকশন’ বা বিস্ময়সূচক শব্দ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ শব্দ মূলত উদ্দেশ্যহীনভাবে চিৎকার করে বলা হয়।
ডিকশনারি ডটকম-এর মতে, এই শব্দের ব্যবহার অস্পষ্ট এবং পরিবর্তনশীল। কিছু ক্ষেত্রে এটিকে ‘মোটামুটি’ বা ‘হতে পারে এটা, হতে পারে ওটা’-এমন বোঝাতে ব্যবহার করা হলেও, শব্দটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অর্থহীন।
একই সঙ্গে ডিকশনারি ডটকম এটিকে ‘ব্রেনরট স্ল্যাং’-এর উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থহীন এবং উদ্ভট। স্টিভ জনসনের মতে, এটি আসলে জেন-আলফা-এর একটি দলগত পরিচয়ের প্রতীক। এই প্রজন্মের কাছে এটি একটি ‘ইন-গ্রুপ জোক’-এর মতো। সমবয়সীদের নিজস্ব কোড ভাষায় কৌতুক করে যেভাবে বোঝানো হয় যে, ‘আমি এই প্রজন্মের অংশ, এটাই আমি।’
কীভাবে হলো এর উৎপত্তি?
এই অপ্রচলিত শব্দটির (স্ল্যাং) উৎপত্তি হয়েছে র্যাপার স্করিলার-এর গান ‘Doot Doot (6 7) ’ থেকে। পরবর্তীতে এটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের ভিডিও ক্লিপে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার বাস্কেটবল খেলোয়াড় লামেলো বল-এর ভিডিও ক্লিপ। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে এই গান বাস্কেটবল দৃশ্যের সঙ্গে ভাইরাল হতে শুরু করে এবং দ্রুত তরুণ দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো ‘সাউথ পার্ক’-এর একটি পর্বেও এটি স্থান পায়।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই শব্দের নির্বাচন নিয়ে প্রজন্ম ভেদে প্রতিক্রিয়া বিভক্ত। স্টিভ জনসন জানান, একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক তাঁকে ভোরবেলা মেসেজ করে অনুরোধ করেন, যেন তাঁরা এই শব্দটিকে বর্ষসেরা নির্বাচন না করেন। জনসন মজা করে বলেন, ‘শিক্ষকেরাও এটি ধরে ফেলেছেন!’
জনসন এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘একটি নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষাগত শক্তিমত্তা ও প্রভাব প্রদর্শন করছে। ইংরেজি ভাষার ওপর এটি অসাধারণ প্রভাব ফেলছে। এটা উদ্যাপন করার মতো বিষয়।’ তবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য, যারা দৈনিক সময় অসময়ে ‘সিক্স সেভেন’ চিৎকার শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া অনেকাংশেই বিরক্তি এবং হতাশার মিশ্রণ!
সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্যান্য শব্দ
ডিকশনারি ডট কম ২০২৫ সালের বর্ষসেরা শব্দের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রাজনীতি এবং সমাজ সম্পর্কিত আরও কয়েকটি শব্দ বিবেচনা করেছিল। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল:
Agentic: (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত) লক্ষ্য পূরণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম।
Aura farming: ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের আকর্ষণ, স্টাইল বা ভাবমূর্তি তৈরি করা, যা অনলাইন মনোযোগ বা সামাজিক প্রভাব অর্জনের জন্য করা হয়।
Gen Z stare: জেন-জি-এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অভিব্যক্তি, যা উদাসীন বা নির্লিপ্ত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
Overtourism: কোনো জনপ্রিয় গন্তব্যে অতিরিক্ত পর্যটকের ভিড়, যার ফলে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সমাজ-সাংস্কৃতিক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়।
Tradwife: একজন বিবাহিত নারী যিনি ঐতিহ্যবাহী নারীসুলভ লিঙ্গ ভূমিকা মেনে নিয়ে গৃহিণী হিসেবে জীবনযাপন করেন। এটি প্রায়শই রক্ষণশীল রাজনৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি শব্দ।

একসময় বলা হতো, পশুর ডাকের অনুকরণ করতে করতেই মানুষ তার ভাষা রপ্ত করেছে। ‘বৌ-ঔ তত্ত্ব’ নামে তা বিজ্ঞানী মহলে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা বলেন, আগের কালে মানুষ কিছু আওয়াজ করতে শিখেছে পশুদের আদলে। নানা রকম আওয়াজ করে তারা পশুদের তাড়িয়ে দেওয়ার পথ খুঁজত। নানা রকম আওয়াজ করতে করতেই একসময় একেকটা আওয়াজের একেকটা মানে দা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
২ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
২ দিন আগে
কমলকুমার মজুমদারের বই উচ্চারণ করে পড়লে, দাঁড়ি-কমা মেলে পড়া গেলে, বোঝা যায় যে, কী আশ্চর্য সুন্দর লেখা! কী বলব, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর লেখা পড়ে। হাসান আজিজুল হকের লেখাও ভালোই লাগে, তাঁর লেখাতে একটা ত্রুটি আছে।
৩ দিন আগে