ফজলুল কবির

স্কুলে যাওয়া-আসার পথে এক সটান রেললাইন। তার ওপর দিয়ে পদচারী-সেতু; শুধু এপার থেকে ওপারে যাওয়া। পার হলেই মাঝারি গড়নের একটি রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে কলোনির ভেতর দিয়ে সোজা শাহজাহানপুর মোড়ের দিকে। সেখানে গিয়ে সোজা বড় চোখ করে তাকালে যে সাইনবোর্ড—সেটিই মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়। শুনতে যতই সহজ রাস্তা মনে হোক না কেন, সটান স্কুলে চলে যাওয়াটা এত সহজ ছিল না। কারণ, ওই পদচারী-সেতু, আর তার নিচে নিরীহ মুখ করে বসে থাকা পত্রিকার স্টল। সেখানে থাকা ছোট তাক থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে—সেবা প্রকাশনীর সেই মনোহর প্রজাপতি। আর দড়িতে তখন রেখায় ও লেখার মোহন আকর্ষণ হয়ে ঝুলছে—নন্টে ফন্টে।
চিরচেনা সেবা ও কমিকসের ছিল এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয় ক্ষমতা। কত বিচিত্র বই যে সেবা হাতে তুলে দিয়েছে! বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্যুমা, আলেক্সান্ডার বেলায়েভ, স্যার ওয়াল্টার স্কট, জুল ভার্ন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন বা জেন অস্টিন—কতজনের নাম বলা যাবে? সেদিকে না গিয়ে শুধু একটি নামই বলা যায়—কাজী আনোয়ার হোসেন।
আর কমিকস? সেখানে ফ্যান্টম, হি-ম্যান, চাচা চৌধুরী (আরেক কিংবদন্তি—প্রাণ), টিনটিন, টারজান ইত্যাদির ভিড়ে দেশের চেনা গল্প নিয়ে ছিল ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, হাঁদা-ভোঁদা’, আর ‘নন্টে ফন্টে’। নন্টের সঙ্গে ফন্টে মিলে কেল্টুদাকে অবিরাম হেনস্তার যে একের পর এক দৃশ্য এবং বর্ণনা, তা নিয়ে যেত এক নির্মল আনন্দের জগতে। সেখানে শৈশবই সত্য একমাত্র। সেখানে হাসি আছে, আছে কল্পনা। আর এই কল্পনার জগতে যিনি নিয়ে যেতেন, যিনি এর রচয়িতা, তিনি আর কেউ নন—নারায়ণ দেবনাথ।
হ্যাঁ, আমাদের প্রজন্মের জন্য এমন দু-একটি দরজাই ছিল, যা দিয়ে অনায়াসে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে হাজির হওয়া যেত। শুনতে যেমনই লাগুক, এ তো সত্য যে, রবার্ট লুই স্টিভেনসন নন, আমরা ট্রেজার আইল্যান্ডে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলাম সবার প্রিয় কিন্তু অনেকেরই অদেখা জাদুকর কাজী আনোয়ার হোসেনের কল্যাণে। এমন নয় যে, তিনিই এই সব বইয়ের রচয়িতা বা অনুবাদক। কিন্তু আমাদের কাছে তিনি এমন একজন—যিনি গল্পে শোনা সেই গল্প-বুড়ো, যিনি অনায়াসে একের পর এক রাজ্যের গল্প বলে যেতে পারেন।
আমাদের অভিভাবকেরা এসব ঠিক পছন্দ করতেন না, তবে প্রচ্ছন্ন আশকারা পেতাম ঠিকই। কেউ না কেউ এই আশকারা দিতেন। আর সেই আশকারার কারণে অনায়াসে পড়ার টেবিলে পাঠ্যবইয়ের তলায় লুকিয়ে ঢুকে পড়তেন কাজী আনোয়ার হোসেন ও নারায়ণ দেবনাথ। কী দারুণ শক্তি ছিল তাঁদের? অনায়াসে তাঁরা আমাদের নেশায় (সু অর্থে পড়ুন) বুঁদ করে ফেলতেন। খুলে দিতেন ‘অঢেল আলোকধাম’।
আমরা সেই অঢেল আলোর জগতে একটু একটু করে হেঁটে যেতাম। কখনো নন্টে ফন্টের সঙ্গে রাজ্যের দুষ্টুমিতে মেতে উঠতাম, কখনো সেবার প্রজাপতিতে ভর করে ছুটতাম দিগ্বিজয়ে। সেই কমিকসে যা আঁকা থাকত, তার চেয়ে ঢের বড় কল্পনার জগতে আমরা ঢুকে পড়তাম, যা আঁকা নেই তার জোরে। সেবার বইয়ে যে বর্ণনা লেখা থাকত, তা খুলে দিত কত অজস্র অবর্ণনীয় কল্পজগৎকে, সে বলে শেষ করার নয়। তাঁরাই ছিলেন সেই গুটিকয় মানুষের একজন, যারা আমাদের চোখে মেখে দিয়েছিলেন মোহন অঞ্জন, যা সব সীমাকে মুছে দিতে পারে অনায়াসে।
আমাদের কালের ‘আউট বইয়ের’ জোগানদাতা এই কাজীদা (কোনো দিন দেখা বা কথা না হলেও অনেকটা শুনে শুনেই কেন যেন এভাবেই তাঁকে সম্বোধনের ইচ্ছা জাগে) আমাদের নিয়ে গেছেন সমুদ্রমন্থনে। বইয়ের ওপর নাম দেখেছি অন্য কারও, অনুবাদকের নাম দেখেছি আরেকজনের। কিন্তু ওই যে বিস্ময়জাগানিয়া প্রজাপতি, হলদেটে যার রং, যে একতাড়া নিউজপ্রিন্টের জাদুর পাতা নিয়ে হাজির হয়, সে-ই কেবল সত্য ছিল যেন। আমাদের কাছে অন্য কোনো কিছু নয়, ওই প্রজাপতিই ছিল গল্পের খনি।
‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর সেই মারলিন মাছ, আর সেই বৃদ্ধ জেলের গল্পের সঙ্গে সমুদ্রে আমরা ভেসেছি যতটা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সঙ্গে, ঠিক ততটাই কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। কিংবা বলা যায় ‘বাউন্টিতে বিদ্রোহ’ কিংবা ‘হ্যাঞ্চ ব্যাক অব নটর ড্যাম’-এর কথা। বলা যায় জ্যাঁ ভলজার সেই আখ্যান ‘লা মিজারেবল’-এর কথা। এই সবই আমাদের সামনে হাজির করেছিল সেবা।
স্কুলজীবনটা রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য সেই হলদে প্রজাপতির, সেই রেখায় আঁকা চরিত্রগুলোর যে কত বড় অবদান, তা বলবার নয়। পাড়ায় তখন স্টেশনারি দোকান মানেই সেবার বই আছে, আছে নারায়ণ দেবনাথের কমিকস। ফ্রেন্ডস নামের এক স্টেশনারি দোকান তো রীতিমতো বন্ধু হয়ে সামনে এল। তারা দু টাকায় বই ভাড়ার ব্যবসা শুরু করল। কমিকস ও বইয়ে বুঁদ হতে আর কী লাগে! এমনিতেও সেবার বইয়ের দাম ছিল খুব কম, আমাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে ছিল পুরোনো বইয়ের আখড়া। সুনীলের কবিতার পঙ্ক্তিতে যেমনটা আছে—গোপন সব ছোট ছোট নরকের কথা, ঠিক তেমন ছিল এগুলো।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল দুটি দোকান, ঠিক টিকিট কাউন্টারের পাশেই। ডাই করে সাজানো থাকত বই, যার আশি ভাগই সেবা প্রকাশনীর। আর দড়িতে ঝোলানো কমিকসে কার রাজত্ব, তা কি বলতে হবে মুখ ফুটে? স্কুলে হেঁটে যাওয়া-আসা করে টাকা জমিয়ে পছন্দের বই কিনতে ভিড় করতাম। আর অবধারিতভাবে মন খারাপ করেই বেরিয়ে আসতাম। কারণ, পছন্দের বই কেনায় যতটা আনন্দ হলো, তার চেয়ে ঢের বেশি মন খারাপ হলো আরও এমন অজস্র বই কিনতে না পারায়। আউট বইয়ের জন্য তো আর ঘর থেকে মাসে মাসে প্রণোদনা নেওয়া যায় না।
ছিল বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, যেখানে এর নিদান ছিল অনেকটাই। সেখানে সেবার অল্প দামের বই পুরোনো বলে আরও অল্প দামে কেনার সুযোগ ছিল। আর পাঁচ টাকা দিলে গুচ্ছের কমিকসের মালিকানা পাওয়া যেত। তখনো গুলিস্তান হল ওঠেনি। সেখানে হলের পেছন দিকে সিঁড়ির তলায় ছিলেন এক বিস্ময়কর মানুষ। তাঁর সঙ্গেও তো পরিচয়ের সূত্র সেবা তথা কাজীদার কল্যাণে। ভালো ভালো পুরোনো বই পাওয়া যায় বলে বাংলাবাজারে শুনেছিলাম বলেই না তাঁর খোঁজ করেছিলাম। আহা কত মধুর ছিলেন তিনি। বই বিক্রি করে ফেরার সময় বই উপহার দিতেন। আমাদের গোগ্রাসে গেলার সেই বয়সে তাঁর মতো অনেকেরই স্নেহ পেয়েছিলাম।
আমাদের শৈশব ও কৈশোরের সেই সময়ে একজন কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের পথ দেখিয়েছেন, একজন নারায়ণ দেবনাথ আমাদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। নিজের অজ্ঞাতেই তাঁদের ছায়ার নিচ দিয়ে হেঁটে গেছি আমরা। সেই ছায়া ঠিক কত বড়, সে বয়সে বোঝা সম্ভব হয়নি। সেই রাঙিয়ে দেওয়া শৈশব ও কৈশোরের দিকে তাকালে মাঝেমধ্যেই মন কেমন করে। আজ আরও বেশি করে করছে। কেন করছে কাজীদা? কেন করছে প্রিয় নারায়ণ দেবনাথ?

স্কুলে যাওয়া-আসার পথে এক সটান রেললাইন। তার ওপর দিয়ে পদচারী-সেতু; শুধু এপার থেকে ওপারে যাওয়া। পার হলেই মাঝারি গড়নের একটি রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে কলোনির ভেতর দিয়ে সোজা শাহজাহানপুর মোড়ের দিকে। সেখানে গিয়ে সোজা বড় চোখ করে তাকালে যে সাইনবোর্ড—সেটিই মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়। শুনতে যতই সহজ রাস্তা মনে হোক না কেন, সটান স্কুলে চলে যাওয়াটা এত সহজ ছিল না। কারণ, ওই পদচারী-সেতু, আর তার নিচে নিরীহ মুখ করে বসে থাকা পত্রিকার স্টল। সেখানে থাকা ছোট তাক থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে—সেবা প্রকাশনীর সেই মনোহর প্রজাপতি। আর দড়িতে তখন রেখায় ও লেখার মোহন আকর্ষণ হয়ে ঝুলছে—নন্টে ফন্টে।
চিরচেনা সেবা ও কমিকসের ছিল এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয় ক্ষমতা। কত বিচিত্র বই যে সেবা হাতে তুলে দিয়েছে! বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্যুমা, আলেক্সান্ডার বেলায়েভ, স্যার ওয়াল্টার স্কট, জুল ভার্ন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন বা জেন অস্টিন—কতজনের নাম বলা যাবে? সেদিকে না গিয়ে শুধু একটি নামই বলা যায়—কাজী আনোয়ার হোসেন।
আর কমিকস? সেখানে ফ্যান্টম, হি-ম্যান, চাচা চৌধুরী (আরেক কিংবদন্তি—প্রাণ), টিনটিন, টারজান ইত্যাদির ভিড়ে দেশের চেনা গল্প নিয়ে ছিল ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, হাঁদা-ভোঁদা’, আর ‘নন্টে ফন্টে’। নন্টের সঙ্গে ফন্টে মিলে কেল্টুদাকে অবিরাম হেনস্তার যে একের পর এক দৃশ্য এবং বর্ণনা, তা নিয়ে যেত এক নির্মল আনন্দের জগতে। সেখানে শৈশবই সত্য একমাত্র। সেখানে হাসি আছে, আছে কল্পনা। আর এই কল্পনার জগতে যিনি নিয়ে যেতেন, যিনি এর রচয়িতা, তিনি আর কেউ নন—নারায়ণ দেবনাথ।
হ্যাঁ, আমাদের প্রজন্মের জন্য এমন দু-একটি দরজাই ছিল, যা দিয়ে অনায়াসে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে হাজির হওয়া যেত। শুনতে যেমনই লাগুক, এ তো সত্য যে, রবার্ট লুই স্টিভেনসন নন, আমরা ট্রেজার আইল্যান্ডে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলাম সবার প্রিয় কিন্তু অনেকেরই অদেখা জাদুকর কাজী আনোয়ার হোসেনের কল্যাণে। এমন নয় যে, তিনিই এই সব বইয়ের রচয়িতা বা অনুবাদক। কিন্তু আমাদের কাছে তিনি এমন একজন—যিনি গল্পে শোনা সেই গল্প-বুড়ো, যিনি অনায়াসে একের পর এক রাজ্যের গল্প বলে যেতে পারেন।
আমাদের অভিভাবকেরা এসব ঠিক পছন্দ করতেন না, তবে প্রচ্ছন্ন আশকারা পেতাম ঠিকই। কেউ না কেউ এই আশকারা দিতেন। আর সেই আশকারার কারণে অনায়াসে পড়ার টেবিলে পাঠ্যবইয়ের তলায় লুকিয়ে ঢুকে পড়তেন কাজী আনোয়ার হোসেন ও নারায়ণ দেবনাথ। কী দারুণ শক্তি ছিল তাঁদের? অনায়াসে তাঁরা আমাদের নেশায় (সু অর্থে পড়ুন) বুঁদ করে ফেলতেন। খুলে দিতেন ‘অঢেল আলোকধাম’।
আমরা সেই অঢেল আলোর জগতে একটু একটু করে হেঁটে যেতাম। কখনো নন্টে ফন্টের সঙ্গে রাজ্যের দুষ্টুমিতে মেতে উঠতাম, কখনো সেবার প্রজাপতিতে ভর করে ছুটতাম দিগ্বিজয়ে। সেই কমিকসে যা আঁকা থাকত, তার চেয়ে ঢের বড় কল্পনার জগতে আমরা ঢুকে পড়তাম, যা আঁকা নেই তার জোরে। সেবার বইয়ে যে বর্ণনা লেখা থাকত, তা খুলে দিত কত অজস্র অবর্ণনীয় কল্পজগৎকে, সে বলে শেষ করার নয়। তাঁরাই ছিলেন সেই গুটিকয় মানুষের একজন, যারা আমাদের চোখে মেখে দিয়েছিলেন মোহন অঞ্জন, যা সব সীমাকে মুছে দিতে পারে অনায়াসে।
আমাদের কালের ‘আউট বইয়ের’ জোগানদাতা এই কাজীদা (কোনো দিন দেখা বা কথা না হলেও অনেকটা শুনে শুনেই কেন যেন এভাবেই তাঁকে সম্বোধনের ইচ্ছা জাগে) আমাদের নিয়ে গেছেন সমুদ্রমন্থনে। বইয়ের ওপর নাম দেখেছি অন্য কারও, অনুবাদকের নাম দেখেছি আরেকজনের। কিন্তু ওই যে বিস্ময়জাগানিয়া প্রজাপতি, হলদেটে যার রং, যে একতাড়া নিউজপ্রিন্টের জাদুর পাতা নিয়ে হাজির হয়, সে-ই কেবল সত্য ছিল যেন। আমাদের কাছে অন্য কোনো কিছু নয়, ওই প্রজাপতিই ছিল গল্পের খনি।
‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর সেই মারলিন মাছ, আর সেই বৃদ্ধ জেলের গল্পের সঙ্গে সমুদ্রে আমরা ভেসেছি যতটা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সঙ্গে, ঠিক ততটাই কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। কিংবা বলা যায় ‘বাউন্টিতে বিদ্রোহ’ কিংবা ‘হ্যাঞ্চ ব্যাক অব নটর ড্যাম’-এর কথা। বলা যায় জ্যাঁ ভলজার সেই আখ্যান ‘লা মিজারেবল’-এর কথা। এই সবই আমাদের সামনে হাজির করেছিল সেবা।
স্কুলজীবনটা রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য সেই হলদে প্রজাপতির, সেই রেখায় আঁকা চরিত্রগুলোর যে কত বড় অবদান, তা বলবার নয়। পাড়ায় তখন স্টেশনারি দোকান মানেই সেবার বই আছে, আছে নারায়ণ দেবনাথের কমিকস। ফ্রেন্ডস নামের এক স্টেশনারি দোকান তো রীতিমতো বন্ধু হয়ে সামনে এল। তারা দু টাকায় বই ভাড়ার ব্যবসা শুরু করল। কমিকস ও বইয়ে বুঁদ হতে আর কী লাগে! এমনিতেও সেবার বইয়ের দাম ছিল খুব কম, আমাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে ছিল পুরোনো বইয়ের আখড়া। সুনীলের কবিতার পঙ্ক্তিতে যেমনটা আছে—গোপন সব ছোট ছোট নরকের কথা, ঠিক তেমন ছিল এগুলো।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল দুটি দোকান, ঠিক টিকিট কাউন্টারের পাশেই। ডাই করে সাজানো থাকত বই, যার আশি ভাগই সেবা প্রকাশনীর। আর দড়িতে ঝোলানো কমিকসে কার রাজত্ব, তা কি বলতে হবে মুখ ফুটে? স্কুলে হেঁটে যাওয়া-আসা করে টাকা জমিয়ে পছন্দের বই কিনতে ভিড় করতাম। আর অবধারিতভাবে মন খারাপ করেই বেরিয়ে আসতাম। কারণ, পছন্দের বই কেনায় যতটা আনন্দ হলো, তার চেয়ে ঢের বেশি মন খারাপ হলো আরও এমন অজস্র বই কিনতে না পারায়। আউট বইয়ের জন্য তো আর ঘর থেকে মাসে মাসে প্রণোদনা নেওয়া যায় না।
ছিল বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, যেখানে এর নিদান ছিল অনেকটাই। সেখানে সেবার অল্প দামের বই পুরোনো বলে আরও অল্প দামে কেনার সুযোগ ছিল। আর পাঁচ টাকা দিলে গুচ্ছের কমিকসের মালিকানা পাওয়া যেত। তখনো গুলিস্তান হল ওঠেনি। সেখানে হলের পেছন দিকে সিঁড়ির তলায় ছিলেন এক বিস্ময়কর মানুষ। তাঁর সঙ্গেও তো পরিচয়ের সূত্র সেবা তথা কাজীদার কল্যাণে। ভালো ভালো পুরোনো বই পাওয়া যায় বলে বাংলাবাজারে শুনেছিলাম বলেই না তাঁর খোঁজ করেছিলাম। আহা কত মধুর ছিলেন তিনি। বই বিক্রি করে ফেরার সময় বই উপহার দিতেন। আমাদের গোগ্রাসে গেলার সেই বয়সে তাঁর মতো অনেকেরই স্নেহ পেয়েছিলাম।
আমাদের শৈশব ও কৈশোরের সেই সময়ে একজন কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের পথ দেখিয়েছেন, একজন নারায়ণ দেবনাথ আমাদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। নিজের অজ্ঞাতেই তাঁদের ছায়ার নিচ দিয়ে হেঁটে গেছি আমরা। সেই ছায়া ঠিক কত বড়, সে বয়সে বোঝা সম্ভব হয়নি। সেই রাঙিয়ে দেওয়া শৈশব ও কৈশোরের দিকে তাকালে মাঝেমধ্যেই মন কেমন করে। আজ আরও বেশি করে করছে। কেন করছে কাজীদা? কেন করছে প্রিয় নারায়ণ দেবনাথ?
ফজলুল কবির

স্কুলে যাওয়া-আসার পথে এক সটান রেললাইন। তার ওপর দিয়ে পদচারী-সেতু; শুধু এপার থেকে ওপারে যাওয়া। পার হলেই মাঝারি গড়নের একটি রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে কলোনির ভেতর দিয়ে সোজা শাহজাহানপুর মোড়ের দিকে। সেখানে গিয়ে সোজা বড় চোখ করে তাকালে যে সাইনবোর্ড—সেটিই মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়। শুনতে যতই সহজ রাস্তা মনে হোক না কেন, সটান স্কুলে চলে যাওয়াটা এত সহজ ছিল না। কারণ, ওই পদচারী-সেতু, আর তার নিচে নিরীহ মুখ করে বসে থাকা পত্রিকার স্টল। সেখানে থাকা ছোট তাক থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে—সেবা প্রকাশনীর সেই মনোহর প্রজাপতি। আর দড়িতে তখন রেখায় ও লেখার মোহন আকর্ষণ হয়ে ঝুলছে—নন্টে ফন্টে।
চিরচেনা সেবা ও কমিকসের ছিল এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয় ক্ষমতা। কত বিচিত্র বই যে সেবা হাতে তুলে দিয়েছে! বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্যুমা, আলেক্সান্ডার বেলায়েভ, স্যার ওয়াল্টার স্কট, জুল ভার্ন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন বা জেন অস্টিন—কতজনের নাম বলা যাবে? সেদিকে না গিয়ে শুধু একটি নামই বলা যায়—কাজী আনোয়ার হোসেন।
আর কমিকস? সেখানে ফ্যান্টম, হি-ম্যান, চাচা চৌধুরী (আরেক কিংবদন্তি—প্রাণ), টিনটিন, টারজান ইত্যাদির ভিড়ে দেশের চেনা গল্প নিয়ে ছিল ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, হাঁদা-ভোঁদা’, আর ‘নন্টে ফন্টে’। নন্টের সঙ্গে ফন্টে মিলে কেল্টুদাকে অবিরাম হেনস্তার যে একের পর এক দৃশ্য এবং বর্ণনা, তা নিয়ে যেত এক নির্মল আনন্দের জগতে। সেখানে শৈশবই সত্য একমাত্র। সেখানে হাসি আছে, আছে কল্পনা। আর এই কল্পনার জগতে যিনি নিয়ে যেতেন, যিনি এর রচয়িতা, তিনি আর কেউ নন—নারায়ণ দেবনাথ।
হ্যাঁ, আমাদের প্রজন্মের জন্য এমন দু-একটি দরজাই ছিল, যা দিয়ে অনায়াসে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে হাজির হওয়া যেত। শুনতে যেমনই লাগুক, এ তো সত্য যে, রবার্ট লুই স্টিভেনসন নন, আমরা ট্রেজার আইল্যান্ডে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলাম সবার প্রিয় কিন্তু অনেকেরই অদেখা জাদুকর কাজী আনোয়ার হোসেনের কল্যাণে। এমন নয় যে, তিনিই এই সব বইয়ের রচয়িতা বা অনুবাদক। কিন্তু আমাদের কাছে তিনি এমন একজন—যিনি গল্পে শোনা সেই গল্প-বুড়ো, যিনি অনায়াসে একের পর এক রাজ্যের গল্প বলে যেতে পারেন।
আমাদের অভিভাবকেরা এসব ঠিক পছন্দ করতেন না, তবে প্রচ্ছন্ন আশকারা পেতাম ঠিকই। কেউ না কেউ এই আশকারা দিতেন। আর সেই আশকারার কারণে অনায়াসে পড়ার টেবিলে পাঠ্যবইয়ের তলায় লুকিয়ে ঢুকে পড়তেন কাজী আনোয়ার হোসেন ও নারায়ণ দেবনাথ। কী দারুণ শক্তি ছিল তাঁদের? অনায়াসে তাঁরা আমাদের নেশায় (সু অর্থে পড়ুন) বুঁদ করে ফেলতেন। খুলে দিতেন ‘অঢেল আলোকধাম’।
আমরা সেই অঢেল আলোর জগতে একটু একটু করে হেঁটে যেতাম। কখনো নন্টে ফন্টের সঙ্গে রাজ্যের দুষ্টুমিতে মেতে উঠতাম, কখনো সেবার প্রজাপতিতে ভর করে ছুটতাম দিগ্বিজয়ে। সেই কমিকসে যা আঁকা থাকত, তার চেয়ে ঢের বড় কল্পনার জগতে আমরা ঢুকে পড়তাম, যা আঁকা নেই তার জোরে। সেবার বইয়ে যে বর্ণনা লেখা থাকত, তা খুলে দিত কত অজস্র অবর্ণনীয় কল্পজগৎকে, সে বলে শেষ করার নয়। তাঁরাই ছিলেন সেই গুটিকয় মানুষের একজন, যারা আমাদের চোখে মেখে দিয়েছিলেন মোহন অঞ্জন, যা সব সীমাকে মুছে দিতে পারে অনায়াসে।
আমাদের কালের ‘আউট বইয়ের’ জোগানদাতা এই কাজীদা (কোনো দিন দেখা বা কথা না হলেও অনেকটা শুনে শুনেই কেন যেন এভাবেই তাঁকে সম্বোধনের ইচ্ছা জাগে) আমাদের নিয়ে গেছেন সমুদ্রমন্থনে। বইয়ের ওপর নাম দেখেছি অন্য কারও, অনুবাদকের নাম দেখেছি আরেকজনের। কিন্তু ওই যে বিস্ময়জাগানিয়া প্রজাপতি, হলদেটে যার রং, যে একতাড়া নিউজপ্রিন্টের জাদুর পাতা নিয়ে হাজির হয়, সে-ই কেবল সত্য ছিল যেন। আমাদের কাছে অন্য কোনো কিছু নয়, ওই প্রজাপতিই ছিল গল্পের খনি।
‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর সেই মারলিন মাছ, আর সেই বৃদ্ধ জেলের গল্পের সঙ্গে সমুদ্রে আমরা ভেসেছি যতটা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সঙ্গে, ঠিক ততটাই কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। কিংবা বলা যায় ‘বাউন্টিতে বিদ্রোহ’ কিংবা ‘হ্যাঞ্চ ব্যাক অব নটর ড্যাম’-এর কথা। বলা যায় জ্যাঁ ভলজার সেই আখ্যান ‘লা মিজারেবল’-এর কথা। এই সবই আমাদের সামনে হাজির করেছিল সেবা।
স্কুলজীবনটা রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য সেই হলদে প্রজাপতির, সেই রেখায় আঁকা চরিত্রগুলোর যে কত বড় অবদান, তা বলবার নয়। পাড়ায় তখন স্টেশনারি দোকান মানেই সেবার বই আছে, আছে নারায়ণ দেবনাথের কমিকস। ফ্রেন্ডস নামের এক স্টেশনারি দোকান তো রীতিমতো বন্ধু হয়ে সামনে এল। তারা দু টাকায় বই ভাড়ার ব্যবসা শুরু করল। কমিকস ও বইয়ে বুঁদ হতে আর কী লাগে! এমনিতেও সেবার বইয়ের দাম ছিল খুব কম, আমাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে ছিল পুরোনো বইয়ের আখড়া। সুনীলের কবিতার পঙ্ক্তিতে যেমনটা আছে—গোপন সব ছোট ছোট নরকের কথা, ঠিক তেমন ছিল এগুলো।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল দুটি দোকান, ঠিক টিকিট কাউন্টারের পাশেই। ডাই করে সাজানো থাকত বই, যার আশি ভাগই সেবা প্রকাশনীর। আর দড়িতে ঝোলানো কমিকসে কার রাজত্ব, তা কি বলতে হবে মুখ ফুটে? স্কুলে হেঁটে যাওয়া-আসা করে টাকা জমিয়ে পছন্দের বই কিনতে ভিড় করতাম। আর অবধারিতভাবে মন খারাপ করেই বেরিয়ে আসতাম। কারণ, পছন্দের বই কেনায় যতটা আনন্দ হলো, তার চেয়ে ঢের বেশি মন খারাপ হলো আরও এমন অজস্র বই কিনতে না পারায়। আউট বইয়ের জন্য তো আর ঘর থেকে মাসে মাসে প্রণোদনা নেওয়া যায় না।
ছিল বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, যেখানে এর নিদান ছিল অনেকটাই। সেখানে সেবার অল্প দামের বই পুরোনো বলে আরও অল্প দামে কেনার সুযোগ ছিল। আর পাঁচ টাকা দিলে গুচ্ছের কমিকসের মালিকানা পাওয়া যেত। তখনো গুলিস্তান হল ওঠেনি। সেখানে হলের পেছন দিকে সিঁড়ির তলায় ছিলেন এক বিস্ময়কর মানুষ। তাঁর সঙ্গেও তো পরিচয়ের সূত্র সেবা তথা কাজীদার কল্যাণে। ভালো ভালো পুরোনো বই পাওয়া যায় বলে বাংলাবাজারে শুনেছিলাম বলেই না তাঁর খোঁজ করেছিলাম। আহা কত মধুর ছিলেন তিনি। বই বিক্রি করে ফেরার সময় বই উপহার দিতেন। আমাদের গোগ্রাসে গেলার সেই বয়সে তাঁর মতো অনেকেরই স্নেহ পেয়েছিলাম।
আমাদের শৈশব ও কৈশোরের সেই সময়ে একজন কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের পথ দেখিয়েছেন, একজন নারায়ণ দেবনাথ আমাদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। নিজের অজ্ঞাতেই তাঁদের ছায়ার নিচ দিয়ে হেঁটে গেছি আমরা। সেই ছায়া ঠিক কত বড়, সে বয়সে বোঝা সম্ভব হয়নি। সেই রাঙিয়ে দেওয়া শৈশব ও কৈশোরের দিকে তাকালে মাঝেমধ্যেই মন কেমন করে। আজ আরও বেশি করে করছে। কেন করছে কাজীদা? কেন করছে প্রিয় নারায়ণ দেবনাথ?

স্কুলে যাওয়া-আসার পথে এক সটান রেললাইন। তার ওপর দিয়ে পদচারী-সেতু; শুধু এপার থেকে ওপারে যাওয়া। পার হলেই মাঝারি গড়নের একটি রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে কলোনির ভেতর দিয়ে সোজা শাহজাহানপুর মোড়ের দিকে। সেখানে গিয়ে সোজা বড় চোখ করে তাকালে যে সাইনবোর্ড—সেটিই মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়। শুনতে যতই সহজ রাস্তা মনে হোক না কেন, সটান স্কুলে চলে যাওয়াটা এত সহজ ছিল না। কারণ, ওই পদচারী-সেতু, আর তার নিচে নিরীহ মুখ করে বসে থাকা পত্রিকার স্টল। সেখানে থাকা ছোট তাক থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে—সেবা প্রকাশনীর সেই মনোহর প্রজাপতি। আর দড়িতে তখন রেখায় ও লেখার মোহন আকর্ষণ হয়ে ঝুলছে—নন্টে ফন্টে।
চিরচেনা সেবা ও কমিকসের ছিল এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয় ক্ষমতা। কত বিচিত্র বই যে সেবা হাতে তুলে দিয়েছে! বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্যুমা, আলেক্সান্ডার বেলায়েভ, স্যার ওয়াল্টার স্কট, জুল ভার্ন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন বা জেন অস্টিন—কতজনের নাম বলা যাবে? সেদিকে না গিয়ে শুধু একটি নামই বলা যায়—কাজী আনোয়ার হোসেন।
আর কমিকস? সেখানে ফ্যান্টম, হি-ম্যান, চাচা চৌধুরী (আরেক কিংবদন্তি—প্রাণ), টিনটিন, টারজান ইত্যাদির ভিড়ে দেশের চেনা গল্প নিয়ে ছিল ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, হাঁদা-ভোঁদা’, আর ‘নন্টে ফন্টে’। নন্টের সঙ্গে ফন্টে মিলে কেল্টুদাকে অবিরাম হেনস্তার যে একের পর এক দৃশ্য এবং বর্ণনা, তা নিয়ে যেত এক নির্মল আনন্দের জগতে। সেখানে শৈশবই সত্য একমাত্র। সেখানে হাসি আছে, আছে কল্পনা। আর এই কল্পনার জগতে যিনি নিয়ে যেতেন, যিনি এর রচয়িতা, তিনি আর কেউ নন—নারায়ণ দেবনাথ।
হ্যাঁ, আমাদের প্রজন্মের জন্য এমন দু-একটি দরজাই ছিল, যা দিয়ে অনায়াসে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে হাজির হওয়া যেত। শুনতে যেমনই লাগুক, এ তো সত্য যে, রবার্ট লুই স্টিভেনসন নন, আমরা ট্রেজার আইল্যান্ডে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলাম সবার প্রিয় কিন্তু অনেকেরই অদেখা জাদুকর কাজী আনোয়ার হোসেনের কল্যাণে। এমন নয় যে, তিনিই এই সব বইয়ের রচয়িতা বা অনুবাদক। কিন্তু আমাদের কাছে তিনি এমন একজন—যিনি গল্পে শোনা সেই গল্প-বুড়ো, যিনি অনায়াসে একের পর এক রাজ্যের গল্প বলে যেতে পারেন।
আমাদের অভিভাবকেরা এসব ঠিক পছন্দ করতেন না, তবে প্রচ্ছন্ন আশকারা পেতাম ঠিকই। কেউ না কেউ এই আশকারা দিতেন। আর সেই আশকারার কারণে অনায়াসে পড়ার টেবিলে পাঠ্যবইয়ের তলায় লুকিয়ে ঢুকে পড়তেন কাজী আনোয়ার হোসেন ও নারায়ণ দেবনাথ। কী দারুণ শক্তি ছিল তাঁদের? অনায়াসে তাঁরা আমাদের নেশায় (সু অর্থে পড়ুন) বুঁদ করে ফেলতেন। খুলে দিতেন ‘অঢেল আলোকধাম’।
আমরা সেই অঢেল আলোর জগতে একটু একটু করে হেঁটে যেতাম। কখনো নন্টে ফন্টের সঙ্গে রাজ্যের দুষ্টুমিতে মেতে উঠতাম, কখনো সেবার প্রজাপতিতে ভর করে ছুটতাম দিগ্বিজয়ে। সেই কমিকসে যা আঁকা থাকত, তার চেয়ে ঢের বড় কল্পনার জগতে আমরা ঢুকে পড়তাম, যা আঁকা নেই তার জোরে। সেবার বইয়ে যে বর্ণনা লেখা থাকত, তা খুলে দিত কত অজস্র অবর্ণনীয় কল্পজগৎকে, সে বলে শেষ করার নয়। তাঁরাই ছিলেন সেই গুটিকয় মানুষের একজন, যারা আমাদের চোখে মেখে দিয়েছিলেন মোহন অঞ্জন, যা সব সীমাকে মুছে দিতে পারে অনায়াসে।
আমাদের কালের ‘আউট বইয়ের’ জোগানদাতা এই কাজীদা (কোনো দিন দেখা বা কথা না হলেও অনেকটা শুনে শুনেই কেন যেন এভাবেই তাঁকে সম্বোধনের ইচ্ছা জাগে) আমাদের নিয়ে গেছেন সমুদ্রমন্থনে। বইয়ের ওপর নাম দেখেছি অন্য কারও, অনুবাদকের নাম দেখেছি আরেকজনের। কিন্তু ওই যে বিস্ময়জাগানিয়া প্রজাপতি, হলদেটে যার রং, যে একতাড়া নিউজপ্রিন্টের জাদুর পাতা নিয়ে হাজির হয়, সে-ই কেবল সত্য ছিল যেন। আমাদের কাছে অন্য কোনো কিছু নয়, ওই প্রজাপতিই ছিল গল্পের খনি।
‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর সেই মারলিন মাছ, আর সেই বৃদ্ধ জেলের গল্পের সঙ্গে সমুদ্রে আমরা ভেসেছি যতটা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সঙ্গে, ঠিক ততটাই কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। কিংবা বলা যায় ‘বাউন্টিতে বিদ্রোহ’ কিংবা ‘হ্যাঞ্চ ব্যাক অব নটর ড্যাম’-এর কথা। বলা যায় জ্যাঁ ভলজার সেই আখ্যান ‘লা মিজারেবল’-এর কথা। এই সবই আমাদের সামনে হাজির করেছিল সেবা।
স্কুলজীবনটা রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য সেই হলদে প্রজাপতির, সেই রেখায় আঁকা চরিত্রগুলোর যে কত বড় অবদান, তা বলবার নয়। পাড়ায় তখন স্টেশনারি দোকান মানেই সেবার বই আছে, আছে নারায়ণ দেবনাথের কমিকস। ফ্রেন্ডস নামের এক স্টেশনারি দোকান তো রীতিমতো বন্ধু হয়ে সামনে এল। তারা দু টাকায় বই ভাড়ার ব্যবসা শুরু করল। কমিকস ও বইয়ে বুঁদ হতে আর কী লাগে! এমনিতেও সেবার বইয়ের দাম ছিল খুব কম, আমাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে ছিল পুরোনো বইয়ের আখড়া। সুনীলের কবিতার পঙ্ক্তিতে যেমনটা আছে—গোপন সব ছোট ছোট নরকের কথা, ঠিক তেমন ছিল এগুলো।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল দুটি দোকান, ঠিক টিকিট কাউন্টারের পাশেই। ডাই করে সাজানো থাকত বই, যার আশি ভাগই সেবা প্রকাশনীর। আর দড়িতে ঝোলানো কমিকসে কার রাজত্ব, তা কি বলতে হবে মুখ ফুটে? স্কুলে হেঁটে যাওয়া-আসা করে টাকা জমিয়ে পছন্দের বই কিনতে ভিড় করতাম। আর অবধারিতভাবে মন খারাপ করেই বেরিয়ে আসতাম। কারণ, পছন্দের বই কেনায় যতটা আনন্দ হলো, তার চেয়ে ঢের বেশি মন খারাপ হলো আরও এমন অজস্র বই কিনতে না পারায়। আউট বইয়ের জন্য তো আর ঘর থেকে মাসে মাসে প্রণোদনা নেওয়া যায় না।
ছিল বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, যেখানে এর নিদান ছিল অনেকটাই। সেখানে সেবার অল্প দামের বই পুরোনো বলে আরও অল্প দামে কেনার সুযোগ ছিল। আর পাঁচ টাকা দিলে গুচ্ছের কমিকসের মালিকানা পাওয়া যেত। তখনো গুলিস্তান হল ওঠেনি। সেখানে হলের পেছন দিকে সিঁড়ির তলায় ছিলেন এক বিস্ময়কর মানুষ। তাঁর সঙ্গেও তো পরিচয়ের সূত্র সেবা তথা কাজীদার কল্যাণে। ভালো ভালো পুরোনো বই পাওয়া যায় বলে বাংলাবাজারে শুনেছিলাম বলেই না তাঁর খোঁজ করেছিলাম। আহা কত মধুর ছিলেন তিনি। বই বিক্রি করে ফেরার সময় বই উপহার দিতেন। আমাদের গোগ্রাসে গেলার সেই বয়সে তাঁর মতো অনেকেরই স্নেহ পেয়েছিলাম।
আমাদের শৈশব ও কৈশোরের সেই সময়ে একজন কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের পথ দেখিয়েছেন, একজন নারায়ণ দেবনাথ আমাদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। নিজের অজ্ঞাতেই তাঁদের ছায়ার নিচ দিয়ে হেঁটে গেছি আমরা। সেই ছায়া ঠিক কত বড়, সে বয়সে বোঝা সম্ভব হয়নি। সেই রাঙিয়ে দেওয়া শৈশব ও কৈশোরের দিকে তাকালে মাঝেমধ্যেই মন কেমন করে। আজ আরও বেশি করে করছে। কেন করছে কাজীদা? কেন করছে প্রিয় নারায়ণ দেবনাথ?

৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে।
৩ দিন আগে
১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
৪ দিন আগে
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
৬ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে। কিন্তু অল্প কদিনেই হাঁপিয়ে উঠে আবারও কাজে ফিরতে চাইছেন তিনি। কোটিপতি হয়েও অবসর তাঁকে সুখ দিতে পারছিল না বলে জানান গ্রোগান।
ফরচুন ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের জনপ্রিয় চিকেন উইংস বিক্রেতা ব্র্যান্ড উইংসটপ ইউকের মালিক টম গ্রোগান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রাইভেট ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এর বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি। যার মূল্য ছিল ৬ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
নির্মাণশ্রমিক হিসেবে ঘণ্টায় মাত্র ৫ পাউন্ড মজুরিতে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন গ্রোগান। এরপর একসময় নিজের ব্যবসা শুরুর চিন্তা করেন তিনি। টেক্সাসে একটি ‘কোল্ড ই-মেইল’ পাঠানোর মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করেন টম গ্রোগান। এরপর টানা ৫০ টির বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়। কিন্তু ধৈর্য হারাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৫৭টি রেস্টুরেন্ট চালু করতে সক্ষম হন এই উদ্যোক্তা। এই সফল যাত্রার পর একসময় তাঁর মনে হলো, নিজেকে সময় দেওয়া যাক।
ব্যবসা বিক্রির পর জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রেখে তিনি মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। অবসরজীবনের ফাঁকা সময় এখন তার কাছে এক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টম গ্রোগান বলেন, ‘সাত বছর ধরে আমার পুরো মন-মস্তিষ্ক শুধু একটা জিনিসেই ব্যস্ত ছিল। এই ব্যবসাকে সফল করা। প্রতিদিন সেই ভাবনা মাথায় ঘুরতে থাকত। তারপর যখন লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেল, এ যেন অবিশ্বাস্য। মনে হচ্ছিল, আচ্ছা এখন কাজ শেষ। কিন্তু এবার কী? আর টাকাও সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারে না।’
এখন আবার কাজে ফেরার পরিকল্পনা করছেন গ্রোগান। তবে কী নিয়ে কাজ করবেন এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। শুধু বলেন, ‘সম্ভবত এটা খাবার বা পানীয় শিল্পে হবে না।’
গ্রোগান আরও বলেন, ‘এখন আমাদের ভাবনাটা পুরো বদলাতে হবে। আমরা এখন আর ব্যবসা গড়ে তুলছি না। এখন আমরা অর্থ পরিচালনা করছি। আর এই দুটি সম্পূর্ণ আলাদা দক্ষতা। তাই আমাদের শিখতে হচ্ছে বিনিয়োগের জগৎ। আর্থিক উপকরণ, শেয়ার, বন্ড এসব নতুন আমাদের কাছে। তবে আমরা কৌশলগতভাবে সতর্ক থেকে এগোচ্ছি।’
অগাধ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিলাসিতায় মেতে উঠছেন না টম গ্রোগান। এখনো ভাড়া বাসাতেই থাকছেন। সহপ্রতিষ্ঠাতা হারম্যান সাহোতা ও সল লিউইনের সঙ্গে বসে ভাবছেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘এটা বিরক্তিকর। আমি সারাজীবন সাগরপাড়ে বসে কাটাতে পারি না। আমাদের মনের ব্যস্ততা দরকার, নিজেদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে হবে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার একটা উদ্দেশ্য দরকার, যেটা এখন আমাদের নেই।’
তবে গ্রোগানের মতো এমন শূন্যতা অনুভব এবং কাজের জন্য ক্ষুধার উদ্রেক অনেক সফল উদ্যোক্তার মধ্যেই দেখা গেছে। এয়ারবিএনবির সহপ্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান চেস্কিও তেমন এক উদাহরণ। কোম্পানির আইপিওর পর বিলিয়নিয়ার বনে গেলেও তিনিও একই রকম হতাশা অনুভব করেছিলেন।
চেস্কি ভেবেছিলেন সাফল্য তাঁকে ভালোবাসা দেবে, জীবনের সব কিছু ঠিক করে দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তিনি নিজের সেই মুহূর্তকে বর্ণনা করেছেন জীবনের ‘সবচেয়ে দুঃখের সময়গুলোর একটি’ হিসেবে।
চেস্কি বলেন, ‘পাহাড়ের নিচে থাকলে তোমার মনে আশা থাকে। কিন্তু সমস্যাটা হলো, যখন তুমি চূড়ায় পৌঁছাও তখন দেখো, তুমি একা। চারপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন।’
এমন অভিজ্ঞতার কথা আগেও বলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা সিদ্ধার্থ শঙ্কর। ৫০ কোটি ডলারে ব্যবসা বিক্রি করার পর মানসিক দিক থেকে কীভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, সেটি জানিয়েছিলেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে শঙ্কর বলেন, কোম্পানি বিক্রির পর জীবনের পরিবর্তনটা ছিল কঠিন। ১৫ বছর টানা কাজের মধ্যে থাকার পর হঠাৎ নিয়মিত রুটিন হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরিবারের সবাই ভেবেছিল, এত টাকা পাওয়ার পর তাঁর জীবন আরও সুখের হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
তিনি মজা করে বলেন, ‘প্লে স্টেশন খেলা বা গলফ খেলারও একটা সীমা আছে।’ ভেতরে ভেতরে তিনি অনুভব করছিলেন এক গভীর শূন্যতা। উদ্যোক্তা জীবনের ছন্দ থেকে হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সেই মানসিক শূন্যতা সামলানো কঠিন হয়ে ওঠে।
বাইরের স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক সাফল্য পেলেও জীবনের উদ্দেশ্য ও মানে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে। কিন্তু অল্প কদিনেই হাঁপিয়ে উঠে আবারও কাজে ফিরতে চাইছেন তিনি। কোটিপতি হয়েও অবসর তাঁকে সুখ দিতে পারছিল না বলে জানান গ্রোগান।
ফরচুন ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের জনপ্রিয় চিকেন উইংস বিক্রেতা ব্র্যান্ড উইংসটপ ইউকের মালিক টম গ্রোগান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রাইভেট ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এর বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি। যার মূল্য ছিল ৬ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
নির্মাণশ্রমিক হিসেবে ঘণ্টায় মাত্র ৫ পাউন্ড মজুরিতে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন গ্রোগান। এরপর একসময় নিজের ব্যবসা শুরুর চিন্তা করেন তিনি। টেক্সাসে একটি ‘কোল্ড ই-মেইল’ পাঠানোর মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করেন টম গ্রোগান। এরপর টানা ৫০ টির বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়। কিন্তু ধৈর্য হারাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৫৭টি রেস্টুরেন্ট চালু করতে সক্ষম হন এই উদ্যোক্তা। এই সফল যাত্রার পর একসময় তাঁর মনে হলো, নিজেকে সময় দেওয়া যাক।
ব্যবসা বিক্রির পর জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রেখে তিনি মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। অবসরজীবনের ফাঁকা সময় এখন তার কাছে এক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টম গ্রোগান বলেন, ‘সাত বছর ধরে আমার পুরো মন-মস্তিষ্ক শুধু একটা জিনিসেই ব্যস্ত ছিল। এই ব্যবসাকে সফল করা। প্রতিদিন সেই ভাবনা মাথায় ঘুরতে থাকত। তারপর যখন লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেল, এ যেন অবিশ্বাস্য। মনে হচ্ছিল, আচ্ছা এখন কাজ শেষ। কিন্তু এবার কী? আর টাকাও সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারে না।’
এখন আবার কাজে ফেরার পরিকল্পনা করছেন গ্রোগান। তবে কী নিয়ে কাজ করবেন এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। শুধু বলেন, ‘সম্ভবত এটা খাবার বা পানীয় শিল্পে হবে না।’
গ্রোগান আরও বলেন, ‘এখন আমাদের ভাবনাটা পুরো বদলাতে হবে। আমরা এখন আর ব্যবসা গড়ে তুলছি না। এখন আমরা অর্থ পরিচালনা করছি। আর এই দুটি সম্পূর্ণ আলাদা দক্ষতা। তাই আমাদের শিখতে হচ্ছে বিনিয়োগের জগৎ। আর্থিক উপকরণ, শেয়ার, বন্ড এসব নতুন আমাদের কাছে। তবে আমরা কৌশলগতভাবে সতর্ক থেকে এগোচ্ছি।’
অগাধ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিলাসিতায় মেতে উঠছেন না টম গ্রোগান। এখনো ভাড়া বাসাতেই থাকছেন। সহপ্রতিষ্ঠাতা হারম্যান সাহোতা ও সল লিউইনের সঙ্গে বসে ভাবছেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘এটা বিরক্তিকর। আমি সারাজীবন সাগরপাড়ে বসে কাটাতে পারি না। আমাদের মনের ব্যস্ততা দরকার, নিজেদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে হবে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার একটা উদ্দেশ্য দরকার, যেটা এখন আমাদের নেই।’
তবে গ্রোগানের মতো এমন শূন্যতা অনুভব এবং কাজের জন্য ক্ষুধার উদ্রেক অনেক সফল উদ্যোক্তার মধ্যেই দেখা গেছে। এয়ারবিএনবির সহপ্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান চেস্কিও তেমন এক উদাহরণ। কোম্পানির আইপিওর পর বিলিয়নিয়ার বনে গেলেও তিনিও একই রকম হতাশা অনুভব করেছিলেন।
চেস্কি ভেবেছিলেন সাফল্য তাঁকে ভালোবাসা দেবে, জীবনের সব কিছু ঠিক করে দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তিনি নিজের সেই মুহূর্তকে বর্ণনা করেছেন জীবনের ‘সবচেয়ে দুঃখের সময়গুলোর একটি’ হিসেবে।
চেস্কি বলেন, ‘পাহাড়ের নিচে থাকলে তোমার মনে আশা থাকে। কিন্তু সমস্যাটা হলো, যখন তুমি চূড়ায় পৌঁছাও তখন দেখো, তুমি একা। চারপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন।’
এমন অভিজ্ঞতার কথা আগেও বলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা সিদ্ধার্থ শঙ্কর। ৫০ কোটি ডলারে ব্যবসা বিক্রি করার পর মানসিক দিক থেকে কীভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, সেটি জানিয়েছিলেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে শঙ্কর বলেন, কোম্পানি বিক্রির পর জীবনের পরিবর্তনটা ছিল কঠিন। ১৫ বছর টানা কাজের মধ্যে থাকার পর হঠাৎ নিয়মিত রুটিন হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরিবারের সবাই ভেবেছিল, এত টাকা পাওয়ার পর তাঁর জীবন আরও সুখের হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
তিনি মজা করে বলেন, ‘প্লে স্টেশন খেলা বা গলফ খেলারও একটা সীমা আছে।’ ভেতরে ভেতরে তিনি অনুভব করছিলেন এক গভীর শূন্যতা। উদ্যোক্তা জীবনের ছন্দ থেকে হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সেই মানসিক শূন্যতা সামলানো কঠিন হয়ে ওঠে।
বাইরের স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক সাফল্য পেলেও জীবনের উদ্দেশ্য ও মানে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্য
১৯ জানুয়ারি ২০২২
১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
৪ দিন আগে
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
৬ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
ঘড়িটির দাম উঠেছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার সুইস ফ্রাঁ, যা প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের সমান। ২০১৬ সালে একই ঘড়ি বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ দামে, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
ঘড়িটি হলো পাটেক ফিলিপ পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ রেফারেন্স ১৫১৮ মডেল। স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি মাত্র চারটি ঘড়ির একটি এটি। স্বর্ণের ঘড়ির তুলনায় এমন স্টিলের ঘড়ি বিরল হওয়ায় এটি সংগ্রাহকদের কাছে আরও মূল্যবান।
২০১৬ সালে রিস্টওয়াচ হিসেবে ঘড়িটি বিশ্বে সর্বোচ্চ দামে বিক্রির রেকর্ড গড়েছিল। তবে ২০১৭ সালে হলিউড তারকা পল নিউম্যানের মালিকানাধীন রোলেক্স ডেটোনা ঘড়ি ১ কোটি ৭৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয়।
২০১৯ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় আরেকটি পাটেক ফিলিপ গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম ঘড়ি, যা বিক্রি হয়েছিল ৩১ মিলিয়ন ডলারে।
নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস বলেছে, স্টেইনলেস স্টিলের ১৫১৮ মডেল আবারও প্রমাণ করল, এটি ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতঘড়িগুলোর একটি।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ঘড়িটি বিক্রি হতে সময় লেগেছে মাত্র ৯ মিনিটের একটু বেশি। এতে পাঁচজন ক্রেতা দরপত্রে অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত টেলিফোনে যুক্ত এক ক্রেতার কাছে ঘড়িটি বিক্রি হয়।
জেনেভার হোটেল প্রেসিডেন্টে অনুষ্ঠিত নিলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন খ্যাতনামা সংগ্রাহক, ব্যবসায়ী ও ঘড়িনির্মাতা।
ফিলিপস জানায়, ১৫১৮ এমন একটি ঘড়ি, যা সংগ্রহ করতে পারলে একজন সংগ্রাহক মনে করতে পারেন, তিনি ঘড়ি সংগ্রহের জগতে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছেন।
১৯৪১ সালে বাজারে আসা এই মডেল ছিল বিশ্বের প্রথম ধারাবাহিকভাবে উৎপাদিত পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ।
পাটেক ফিলিপ প্রায় ২৮০টি ১৫১৮ মডেলের ঘড়ি উৎপাদন করেছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগ হলুদ স্বর্ণে এবং প্রায় এক পঞ্চম অংশ গোল্ডের রঙের (রোজ গোল্ড)।
স্টেইনলেস স্টিলে বানানো মাত্র চারটি ঘড়ির কথা জানা যায়। সম্প্রতি বিক্রি হওয়া ঘড়িটি সেই চারটির মধ্যে প্রথম উৎপাদিত। কেন পাটেক ফিলিপ এই ঘড়িগুলো তৈরি করেছিল, তা আজও রহস্য।
নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এটিকে আখ্যায়িত করেছে, ‘এটি প্রায় পৌরাণিক মর্যাদার একটি সময়যন্ত্র। এটি ইতিহাসের গুরুত্ব, নকশার শ্রেষ্ঠত্ব, যান্ত্রিক উদ্ভাবন এবং বিরলতার চূড়ান্ত সমন্বয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’
দুই দিনের নিলামে মোট ২০৭টি লট বিক্রি হয়, যা ৬৬.৮ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ অতিক্রম করে। ফিলিপস জানায়, এটি কোনো ঘড়ি নিলামের জন্য সর্বোচ্চ মোট বিক্রির রেকর্ড।
৭২টি দেশে নিবন্ধিত ১ হাজার ৮৮৬ জন ক্রেতা নিলামে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
ঘড়িটির দাম উঠেছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার সুইস ফ্রাঁ, যা প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের সমান। ২০১৬ সালে একই ঘড়ি বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ দামে, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
ঘড়িটি হলো পাটেক ফিলিপ পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ রেফারেন্স ১৫১৮ মডেল। স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি মাত্র চারটি ঘড়ির একটি এটি। স্বর্ণের ঘড়ির তুলনায় এমন স্টিলের ঘড়ি বিরল হওয়ায় এটি সংগ্রাহকদের কাছে আরও মূল্যবান।
২০১৬ সালে রিস্টওয়াচ হিসেবে ঘড়িটি বিশ্বে সর্বোচ্চ দামে বিক্রির রেকর্ড গড়েছিল। তবে ২০১৭ সালে হলিউড তারকা পল নিউম্যানের মালিকানাধীন রোলেক্স ডেটোনা ঘড়ি ১ কোটি ৭৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয়।
২০১৯ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় আরেকটি পাটেক ফিলিপ গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম ঘড়ি, যা বিক্রি হয়েছিল ৩১ মিলিয়ন ডলারে।
নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস বলেছে, স্টেইনলেস স্টিলের ১৫১৮ মডেল আবারও প্রমাণ করল, এটি ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতঘড়িগুলোর একটি।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ঘড়িটি বিক্রি হতে সময় লেগেছে মাত্র ৯ মিনিটের একটু বেশি। এতে পাঁচজন ক্রেতা দরপত্রে অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত টেলিফোনে যুক্ত এক ক্রেতার কাছে ঘড়িটি বিক্রি হয়।
জেনেভার হোটেল প্রেসিডেন্টে অনুষ্ঠিত নিলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন খ্যাতনামা সংগ্রাহক, ব্যবসায়ী ও ঘড়িনির্মাতা।
ফিলিপস জানায়, ১৫১৮ এমন একটি ঘড়ি, যা সংগ্রহ করতে পারলে একজন সংগ্রাহক মনে করতে পারেন, তিনি ঘড়ি সংগ্রহের জগতে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছেন।
১৯৪১ সালে বাজারে আসা এই মডেল ছিল বিশ্বের প্রথম ধারাবাহিকভাবে উৎপাদিত পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ।
পাটেক ফিলিপ প্রায় ২৮০টি ১৫১৮ মডেলের ঘড়ি উৎপাদন করেছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগ হলুদ স্বর্ণে এবং প্রায় এক পঞ্চম অংশ গোল্ডের রঙের (রোজ গোল্ড)।
স্টেইনলেস স্টিলে বানানো মাত্র চারটি ঘড়ির কথা জানা যায়। সম্প্রতি বিক্রি হওয়া ঘড়িটি সেই চারটির মধ্যে প্রথম উৎপাদিত। কেন পাটেক ফিলিপ এই ঘড়িগুলো তৈরি করেছিল, তা আজও রহস্য।
নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এটিকে আখ্যায়িত করেছে, ‘এটি প্রায় পৌরাণিক মর্যাদার একটি সময়যন্ত্র। এটি ইতিহাসের গুরুত্ব, নকশার শ্রেষ্ঠত্ব, যান্ত্রিক উদ্ভাবন এবং বিরলতার চূড়ান্ত সমন্বয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’
দুই দিনের নিলামে মোট ২০৭টি লট বিক্রি হয়, যা ৬৬.৮ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ অতিক্রম করে। ফিলিপস জানায়, এটি কোনো ঘড়ি নিলামের জন্য সর্বোচ্চ মোট বিক্রির রেকর্ড।
৭২টি দেশে নিবন্ধিত ১ হাজার ৮৮৬ জন ক্রেতা নিলামে অংশ নিয়েছিলেন।

বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্য
১৯ জানুয়ারি ২০২২
৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে।
৩ দিন আগে
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
৬ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইলন মাস্ক। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে যার নাম আসে খবরের পাতায়। ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের ধনীদের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেন এই মার্কিন উদ্যোক্তা। আর ধনীদের তালিকায় তো এসেছেন বহুকাল আগে। সম্প্রতি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন প্রথম ৫০০ বিলিয়ন ডলারের (অর্ধ ট্রিলিয়ন) মালিক হিসেবে।
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ লাখ টাকা)।
ইলন মাস্কের সাদামাটা জীবন নিয়ে তাঁর সাবেক সঙ্গীদের আলাপেও উঠে এসেছে।
ইলন মাস্কের তিন সন্তানের জননী সাবেক সঙ্গী কানাডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী গ্রাইমস ২০২২ সালে ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, অনেকে যেমনটা মনে করেন আসলে তা নয়। মাস্ক বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন না। তিনি তেমন বেশি বিলাসিতার মধ্যে থাকেন না।

গ্রাইমস আরও বলেন, ‘তিনি মোটেও বিলিয়নিয়ারদের মতো থাকেন না। কখনো কখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। একবার তো এমনও হয়েছিল, বিছানায় তাঁর (গ্রাইমসের) পাশটায় ম্যাট্রেসে গর্ত হয়ে যাওয়ার পরও মাস্ক নতুন একটা কিনতে রাজি হননি।’
জীবনযাপন সাধারণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে মাস্কের খরচের খাতা বেশ ভারি।
মাস্কের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ চোখে পড়ার মতো। তাঁর কাছে এমন গাড়িও আছে, যা সাবমেরিনে রূপ নিতে পারে। এছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত জেটবিমানগুলোর মূল্যও কয়েক কোটি ডলার।
এরপর তো ২০২২ সালে পুরো প্রযুক্তি মাধ্যম কাঁপিয়ে দিয়ে সেই ‘ছোট্ট খরচা’ করলেন। ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে ফেললেন টুইটার। তারপর এর নাম দিলেন ‘এক্স’। এই কেনাকাটা ‘মন চাইল, কিনলাম’ টাইপই ছিল তাঁর কাছে।
১০ কোটি ডলারে ৭ বছরে ৭টি বাড়ি
ইলন মাস্কের এক বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য ছিল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাত বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার অভিজাত এলাকা বেল-এয়ারে সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক।
এগুলোতে ছিল টেনিস কোর্ট, সুইমিং পুল, ওয়াইন সেলার, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। এমনকি বল রুমও ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ‘উইলি ওয়ঙ্কা’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের র্যাঞ্চ হাউস।

তবে ২০২০ সালে এসে এই বিলাসবহুল বাড়ি কেনার ঝোঁক পাল্টে যায় মাস্কের। তিনি এক টুইটে জানান, প্রায় সব ভৌত সম্পদ বিক্রি করে দেবেন তিনি। আর কোনো বাড়ির মালিক থাকবেন না।
তিনি লেখেন, ‘আমার টাকার দরকার নেই। আমি নিজেকে মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর কাজে উৎসর্গ করছি। সম্পত্তি মানুষকে ভারী করে ফেলে।’
তবে তিনি একটি শর্তও দেন, অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িটি যেন ‘ধ্বংস না করা হয়’ এবং এর কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
ওয়াইল্ডারের ভাতিজা জর্ডান ওয়াকার-পার্লম্যানের কাছে তিন বেডরুমের ওই বাড়িটি বিক্রি করে দেন মাস্ক। বাড়িটি কেনার জন্য মাস্ক নিজেই ওয়াইল্ডারের ভাতিজাকে কয়েক মিলিয়ন ডলার ঋণ দেন। কিন্তু ওয়াকার-পার্লম্যান সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিলেন বলে ২০২৫ সালের জুনে বাড়িটির মালিকানা ফেরত নেন তিনি।

২০২১ সালে মাস্ক টুইট করে জানান, এখন থেকে তাঁর ‘প্রধান বাসস্থান’ টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এক সাধারণ প্রিফ্যাব্রিকেটেড বাড়ি, যার দাম প্রায় ৫০ হাজার ডলার। তাঁর মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স ওখান থেকেই পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্টারবেস’ নামে পরিচিত।
মাস্ক বলেন, ‘এটা আসলেই দারুণ।’
এর পরের বছর মাস্ক আবার জানান, তাঁর নিজের নামে কোনো বাড়িই নেই। একে নিজের কম ভোগবাদী জীবনযাপনের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। যদিও তাঁর সম্পদের পরিমাণ বিপুল।
তিনি মার্কিন-কানাডিয়ান অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা টেড-এর প্রধান ক্রিস অ্যান্ডারসনকে বলেন, ‘আমি বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতেই বেশি থাকি। যখন বে এরিয়ায় যাই, যেখানে টেসলার বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ হয়, তখন বন্ধুদের বাড়ির ফাঁকা ঘরগুলোতে পালা করে থাকি।’

এই কথা আসলেই সত্যি। ২০১৫ সালে গুগলের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ লেখক অ্যাশলি ভ্যান্সকে বলেছিলেন, মাস্ককে ‘একরকম গৃহহীন’-ই বলা যায়।
ল্যারি পেজ আরও বলেন, “সে ই-মেইল করে বলে, ‘আজ রাতে কোথায় থাকব বুঝতে পারছি না। তোমার বাড়িতে আসতে পারি?’ ”
বছরের পর বছর ধরে জল্পনা চলছে, মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্পত্তি কিনছেন কিনা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে টেক্সাসের ওই বাড়িটিই এখনো তাঁর একমাত্র বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
মাস্কের সংগ্রহ যেন ঐতিহাসিক গাড়ির মেলা
ইলন মাস্ক বাড়ির পেছনে খরচ না করলেও গাড়ির ক্ষেত্রে বেশ উদার। টেসলার মালিক হিসেবে তাঁর বিরল ও ব্যতিক্রমধর্মী গাড়ির সংগ্রহ থাকা আশ্চর্যের কিছু নয়! তবে তাঁর কিছু গাড়ি একেবারেই সবার থেকে আলাদা।
মাস্কের সংগ্রহে ছিল ২০শ শতাব্দীর প্রথম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি হিসেবে পরিচিত ফোর্ড মডেল ‘টি’। গাড়ি শিল্পে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটায় এই গাড়ি।
আরও ছিল ১৯৬৭ সালের জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার। এই গাড়িটির প্রতি নাকি শৈশব থেকেই মাস্কের আকর্ষণ। ১৯৯৭ সালের ম্যাকলারেন এফ ১ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। একবার দুর্ঘটনায় ভেঙে যায় গাড়িটি। বিপুল অর্থ ব্যয়ে মেরামত করেন তিনি। পরে অবশ্য বিক্রি করে দেন।

তাঁর আরেকটি বিখ্যাত গাড়ি হলো টেসলার প্রথম বাজারজাত করা টেসলা রোডস্টার। ২০১৮ সালে মাস্ক এই গাড়িটি মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন।
১৯৭৭ সালের জেমস বন্ডের সিনেমা দ্য স্পাই হু লাভড মি-তে ব্যবহৃত ১৯৭৬ সালে বাজারে আসা লোটাস এসপ্রিৎ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। সিনেমায় ‘ওয়েট নেলি’ নামের এই গাড়িটি সাবমেরিনে রূপ নিতে পারত। মাস্ক ২০১৩ সালে প্রায় ১০ লাখ ডলারে নিলামে গাড়িটি কিনেছিলেন। সেই সাবমেরিনে রূপান্তরের ক্ষমতাটিকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
আকাশ পথেও পিছিয়ে নন মাস্ক
উড়ালপথেও খরচ করতে ভালোবাসেন ইলন মাস্ক। তবে তাঁর দাবি, ‘এটি বিলাসিতা নয়—বরং কাজের প্রতি তাঁর নিবেদন।’
২০২২ সালে টেডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, ‘আমি যদি উড়োজাহাজ ব্যবহার করি, যাতে আমার কাজের জন্য হাতে বেশি সময় পাই।’
মাস্কের সংগ্রহে আছে একাধিক গালফস্ট্রিম মডেলের ব্যক্তিগত জেট, যার প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার।
মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্পেসএক্স ও টেসলার অফিসগুলো পরিদর্শনে এবং আন্তর্জাতিক সফরে এই উড়োজাহাজগুলো ব্যবহার করেন।
দাতব্য কাজ নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইলন মাস্ক
মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথি অনুযায়ী, মাস্ক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাকে বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দান করেছেন। প্রায় সময়ই নানা উদ্যোগে বহু মিলিয়ন ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর দানশীলতা নিয়ে সমালোচনাও আছে।
নিউইয়র্ক টাইমস গত বছর লিখেছিল, তাঁর দানের ধরন ‘অগোছালো এবং মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট’। এই দানের ধরন তাঁকে বিশাল কর-ছাড়ের সুযোগ দেয় এবং তাঁর ব্যবসাকেও সহায়তা করে।
তাঁর দাতব্য সংস্থা মাস্ক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা আছে, প্রতিষ্ঠানটি মানবজাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে ফাউন্ডেশনটি আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ দান করা প্রয়োজন, তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পত্রিকাটি যে কর সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করেছে, তাতে দেখা গেছে, সংস্থাটির বেশিরভাগ অনুদানই গেছে মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোতেই।
এ বিষয়ে মাস্ক ও তাঁর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পায়নি নিউইয়র্ক টাইমস।
অতীতে দান ও সমাজসেবামূলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মাস্ক প্রায়ই প্রচলিত দান পদ্ধতির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালে টেডের ক্রিস অ্যান্ডারসনকে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ভালো কাজের আসল প্রভাব নিয়ে ভাবেন, শুধু বাহ্যিক ভাবমূর্তি নয়, তাহলে দানশীলতা আসলে অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়।’
মাস্ক বলেন, টেসলা টেকসই জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে, আর নিউরালিংক মস্তিষ্কজনিত আঘাত এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে সৃষ্ট অস্তিত্বগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে।
তাঁর ব্যবসাগুলোই মানবকল্যাণের এক ধরনের দান বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, ‘যদি দানশীলতার অর্থ হয় মানবতার প্রতি ভালোবাসা, তবে এগুলোই দানশীলতা।’

ইলন মাস্ক। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে যার নাম আসে খবরের পাতায়। ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের ধনীদের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেন এই মার্কিন উদ্যোক্তা। আর ধনীদের তালিকায় তো এসেছেন বহুকাল আগে। সম্প্রতি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন প্রথম ৫০০ বিলিয়ন ডলারের (অর্ধ ট্রিলিয়ন) মালিক হিসেবে।
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ লাখ টাকা)।
ইলন মাস্কের সাদামাটা জীবন নিয়ে তাঁর সাবেক সঙ্গীদের আলাপেও উঠে এসেছে।
ইলন মাস্কের তিন সন্তানের জননী সাবেক সঙ্গী কানাডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী গ্রাইমস ২০২২ সালে ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, অনেকে যেমনটা মনে করেন আসলে তা নয়। মাস্ক বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন না। তিনি তেমন বেশি বিলাসিতার মধ্যে থাকেন না।

গ্রাইমস আরও বলেন, ‘তিনি মোটেও বিলিয়নিয়ারদের মতো থাকেন না। কখনো কখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। একবার তো এমনও হয়েছিল, বিছানায় তাঁর (গ্রাইমসের) পাশটায় ম্যাট্রেসে গর্ত হয়ে যাওয়ার পরও মাস্ক নতুন একটা কিনতে রাজি হননি।’
জীবনযাপন সাধারণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে মাস্কের খরচের খাতা বেশ ভারি।
মাস্কের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ চোখে পড়ার মতো। তাঁর কাছে এমন গাড়িও আছে, যা সাবমেরিনে রূপ নিতে পারে। এছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত জেটবিমানগুলোর মূল্যও কয়েক কোটি ডলার।
এরপর তো ২০২২ সালে পুরো প্রযুক্তি মাধ্যম কাঁপিয়ে দিয়ে সেই ‘ছোট্ট খরচা’ করলেন। ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে ফেললেন টুইটার। তারপর এর নাম দিলেন ‘এক্স’। এই কেনাকাটা ‘মন চাইল, কিনলাম’ টাইপই ছিল তাঁর কাছে।
১০ কোটি ডলারে ৭ বছরে ৭টি বাড়ি
ইলন মাস্কের এক বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য ছিল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাত বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার অভিজাত এলাকা বেল-এয়ারে সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক।
এগুলোতে ছিল টেনিস কোর্ট, সুইমিং পুল, ওয়াইন সেলার, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। এমনকি বল রুমও ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ‘উইলি ওয়ঙ্কা’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের র্যাঞ্চ হাউস।

তবে ২০২০ সালে এসে এই বিলাসবহুল বাড়ি কেনার ঝোঁক পাল্টে যায় মাস্কের। তিনি এক টুইটে জানান, প্রায় সব ভৌত সম্পদ বিক্রি করে দেবেন তিনি। আর কোনো বাড়ির মালিক থাকবেন না।
তিনি লেখেন, ‘আমার টাকার দরকার নেই। আমি নিজেকে মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর কাজে উৎসর্গ করছি। সম্পত্তি মানুষকে ভারী করে ফেলে।’
তবে তিনি একটি শর্তও দেন, অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িটি যেন ‘ধ্বংস না করা হয়’ এবং এর কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
ওয়াইল্ডারের ভাতিজা জর্ডান ওয়াকার-পার্লম্যানের কাছে তিন বেডরুমের ওই বাড়িটি বিক্রি করে দেন মাস্ক। বাড়িটি কেনার জন্য মাস্ক নিজেই ওয়াইল্ডারের ভাতিজাকে কয়েক মিলিয়ন ডলার ঋণ দেন। কিন্তু ওয়াকার-পার্লম্যান সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিলেন বলে ২০২৫ সালের জুনে বাড়িটির মালিকানা ফেরত নেন তিনি।

২০২১ সালে মাস্ক টুইট করে জানান, এখন থেকে তাঁর ‘প্রধান বাসস্থান’ টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এক সাধারণ প্রিফ্যাব্রিকেটেড বাড়ি, যার দাম প্রায় ৫০ হাজার ডলার। তাঁর মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স ওখান থেকেই পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্টারবেস’ নামে পরিচিত।
মাস্ক বলেন, ‘এটা আসলেই দারুণ।’
এর পরের বছর মাস্ক আবার জানান, তাঁর নিজের নামে কোনো বাড়িই নেই। একে নিজের কম ভোগবাদী জীবনযাপনের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। যদিও তাঁর সম্পদের পরিমাণ বিপুল।
তিনি মার্কিন-কানাডিয়ান অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা টেড-এর প্রধান ক্রিস অ্যান্ডারসনকে বলেন, ‘আমি বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতেই বেশি থাকি। যখন বে এরিয়ায় যাই, যেখানে টেসলার বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ হয়, তখন বন্ধুদের বাড়ির ফাঁকা ঘরগুলোতে পালা করে থাকি।’

এই কথা আসলেই সত্যি। ২০১৫ সালে গুগলের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ লেখক অ্যাশলি ভ্যান্সকে বলেছিলেন, মাস্ককে ‘একরকম গৃহহীন’-ই বলা যায়।
ল্যারি পেজ আরও বলেন, “সে ই-মেইল করে বলে, ‘আজ রাতে কোথায় থাকব বুঝতে পারছি না। তোমার বাড়িতে আসতে পারি?’ ”
বছরের পর বছর ধরে জল্পনা চলছে, মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্পত্তি কিনছেন কিনা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে টেক্সাসের ওই বাড়িটিই এখনো তাঁর একমাত্র বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
মাস্কের সংগ্রহ যেন ঐতিহাসিক গাড়ির মেলা
ইলন মাস্ক বাড়ির পেছনে খরচ না করলেও গাড়ির ক্ষেত্রে বেশ উদার। টেসলার মালিক হিসেবে তাঁর বিরল ও ব্যতিক্রমধর্মী গাড়ির সংগ্রহ থাকা আশ্চর্যের কিছু নয়! তবে তাঁর কিছু গাড়ি একেবারেই সবার থেকে আলাদা।
মাস্কের সংগ্রহে ছিল ২০শ শতাব্দীর প্রথম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি হিসেবে পরিচিত ফোর্ড মডেল ‘টি’। গাড়ি শিল্পে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটায় এই গাড়ি।
আরও ছিল ১৯৬৭ সালের জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার। এই গাড়িটির প্রতি নাকি শৈশব থেকেই মাস্কের আকর্ষণ। ১৯৯৭ সালের ম্যাকলারেন এফ ১ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। একবার দুর্ঘটনায় ভেঙে যায় গাড়িটি। বিপুল অর্থ ব্যয়ে মেরামত করেন তিনি। পরে অবশ্য বিক্রি করে দেন।

তাঁর আরেকটি বিখ্যাত গাড়ি হলো টেসলার প্রথম বাজারজাত করা টেসলা রোডস্টার। ২০১৮ সালে মাস্ক এই গাড়িটি মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন।
১৯৭৭ সালের জেমস বন্ডের সিনেমা দ্য স্পাই হু লাভড মি-তে ব্যবহৃত ১৯৭৬ সালে বাজারে আসা লোটাস এসপ্রিৎ গাড়িটিও তাঁর সংগ্রহে ছিল। সিনেমায় ‘ওয়েট নেলি’ নামের এই গাড়িটি সাবমেরিনে রূপ নিতে পারত। মাস্ক ২০১৩ সালে প্রায় ১০ লাখ ডলারে নিলামে গাড়িটি কিনেছিলেন। সেই সাবমেরিনে রূপান্তরের ক্ষমতাটিকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
আকাশ পথেও পিছিয়ে নন মাস্ক
উড়ালপথেও খরচ করতে ভালোবাসেন ইলন মাস্ক। তবে তাঁর দাবি, ‘এটি বিলাসিতা নয়—বরং কাজের প্রতি তাঁর নিবেদন।’
২০২২ সালে টেডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, ‘আমি যদি উড়োজাহাজ ব্যবহার করি, যাতে আমার কাজের জন্য হাতে বেশি সময় পাই।’
মাস্কের সংগ্রহে আছে একাধিক গালফস্ট্রিম মডেলের ব্যক্তিগত জেট, যার প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার।
মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্পেসএক্স ও টেসলার অফিসগুলো পরিদর্শনে এবং আন্তর্জাতিক সফরে এই উড়োজাহাজগুলো ব্যবহার করেন।
দাতব্য কাজ নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইলন মাস্ক
মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথি অনুযায়ী, মাস্ক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাকে বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দান করেছেন। প্রায় সময়ই নানা উদ্যোগে বহু মিলিয়ন ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর দানশীলতা নিয়ে সমালোচনাও আছে।
নিউইয়র্ক টাইমস গত বছর লিখেছিল, তাঁর দানের ধরন ‘অগোছালো এবং মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট’। এই দানের ধরন তাঁকে বিশাল কর-ছাড়ের সুযোগ দেয় এবং তাঁর ব্যবসাকেও সহায়তা করে।
তাঁর দাতব্য সংস্থা মাস্ক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা আছে, প্রতিষ্ঠানটি মানবজাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে ফাউন্ডেশনটি আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ দান করা প্রয়োজন, তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পত্রিকাটি যে কর সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করেছে, তাতে দেখা গেছে, সংস্থাটির বেশিরভাগ অনুদানই গেছে মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোতেই।
এ বিষয়ে মাস্ক ও তাঁর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পায়নি নিউইয়র্ক টাইমস।
অতীতে দান ও সমাজসেবামূলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মাস্ক প্রায়ই প্রচলিত দান পদ্ধতির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালে টেডের ক্রিস অ্যান্ডারসনকে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ভালো কাজের আসল প্রভাব নিয়ে ভাবেন, শুধু বাহ্যিক ভাবমূর্তি নয়, তাহলে দানশীলতা আসলে অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়।’
মাস্ক বলেন, টেসলা টেকসই জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে, আর নিউরালিংক মস্তিষ্কজনিত আঘাত এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে সৃষ্ট অস্তিত্বগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে।
তাঁর ব্যবসাগুলোই মানবকল্যাণের এক ধরনের দান বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, ‘যদি দানশীলতার অর্থ হয় মানবতার প্রতি ভালোবাসা, তবে এগুলোই দানশীলতা।’

বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্য
১৯ জানুয়ারি ২০২২
৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে।
৩ দিন আগে
১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
৪ দিন আগে
‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না। প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদেরের ছেলের নাম হাজী মাখন। তাঁর নামেই ব্যবসার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সত্তর বছরের বেশি আবদুল কাদেরের এই ব্যবসার বয়স। পঞ্চাশের দশক থেকে তিন প্রজন্ম ধরে চলছে পারিবারিক এই ব্যবসা। একসময় ১ পয়সা কি ২ পয়সায় এক প্লেট মাখন বিরিয়ানি খাওয়া যেত। এখন খেতে হলে শ দেড়েক টাকা তো লাগবেই। পোলাওয়ের চালের সঙ্গে গরুর মাংসের মাখো মাখো এই বিরিয়ানি খেতে কিন্তু একেবারেই মাখন!
ছবি: হাসান রাজা

‘হাজী মাখন বিরানী’ বা ‘হাজী মাখন পোলাও’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের দোকান ওই দুইটাই; পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসিরুদ্দিন লেনে। না, মাখন দিয়ে তাদের পোলাও বা বিরিয়ানি রান্না করা হয় না। প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদেরের ছেলের নাম হাজী মাখন। তাঁর নামেই ব্যবসার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সত্তর বছরের বেশি আবদুল কাদেরের এই ব্যবসার বয়স। পঞ্চাশের দশক থেকে তিন প্রজন্ম ধরে চলছে পারিবারিক এই ব্যবসা। একসময় ১ পয়সা কি ২ পয়সায় এক প্লেট মাখন বিরিয়ানি খাওয়া যেত। এখন খেতে হলে শ দেড়েক টাকা তো লাগবেই। পোলাওয়ের চালের সঙ্গে গরুর মাংসের মাখো মাখো এই বিরিয়ানি খেতে কিন্তু একেবারেই মাখন!
ছবি: হাসান রাজা

বিশ্বসাহিত্যের কতশত অনুবাদ যে হাতে এসেছে শুধু সেবার কল্যাণে। আর ‘কুয়াশা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘তিন গোয়েন্দা’ তো আছেই। এসবের প্রতি আকর্ষণ যখন কমে এসেছে, তখনো সামনে হাজির ‘কিশোর ক্ল্যাসিক’ সিরিজ, যেখানে ছিল বিশ্বখ্যাত সব লেখকের সঙ্গে পরিচয়ের হাতছানি। কত কত নাম বলা যাবে? এরিক মারিয়া রেমার্ক, আলেক্সান্ডার দ্য
১৯ জানুয়ারি ২০২২
৩৫ বছর বয়সী টম গ্রোগান। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। এক দশক খেটে শূন্য থেকে গড়েছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা। সেই ব্যবসার বড় একটি অংশ বিক্রি করে দিয়ে গেলেন অবসরে।
৩ দিন আগে
১৯৪৩ সালে তৈরি একটি হাতঘড়ি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ল। এর আগে ২০১৬ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ঘড়ি হিসেবে রেকর্ড গড়ে এই ঘড়িটি। এবার আরও বেশি দামে ঘড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস।
৪ দিন আগে
এত অর্থ-সম্পদ দিয়ে ইলন মাস্ক কী করেন, এ নিয়ে অনেক জল্পনা চলে বছরজুড়েই। তিনি নতুন করে আরও একটি ঘোষণা দেন এবং আবারও উঠে আসে এই আলোচনা। তবুও মাস্কের দাবি, তাঁর জীবনযাপন বেশ সাধারণ এবং অনাড়ম্বর। ২০২১ সালে একবার মাস্ক জানান, টেক্সাসে যে ছোট্ট বাড়িটিতে তিনি থাকেন, সেটির মূল্য মাত্র ৫০ হাজার ডলার।
৬ দিন আগে