ইশতিয়াক হাসান

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!
ইশতিয়াক হাসান

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!

অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৩ দিন আগে
পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
৪ দিন আগে
আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ...
৫ দিন আগে
মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ! শব্দটি হলো ‘67’ (উচ্চারণ: ‘সিক্স সেভেন’), যার কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং স্কুলে জেন-আলফা এই শব্দটিকে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জেন-জি-এর পরবর্তী প্রজন্মকে জেন-আলফা বলা হচ্ছে। মূলত ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা প্রজন্মই জেনারেশন আলফা বা জেন-আলফা।
ডিকশনারি ডটকম এই শব্দটি বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এর ব্যাপকতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে চিহ্নিত করেছে। ডিকশনারি মিডিয়া গ্রুপের শব্দকোষ পরিচালক স্টিভ জনসন সিবিএস নিউজকে জানান, যে শব্দটিকে আপনি ভেবেছিলেন সহজে বিলীন হয়ে যাবে, সেটিই একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসেবে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।
এই শব্দে কী বোঝায়?
‘সিক্স-সেভেন’ শব্দটি অতীতের বর্ষসেরা শব্দগুলোর থেকে আলাদা। কারণ এটি কোনো জটিল ধারণা বা বড় ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে না। স্টিভ জনসন এটিকে একটি ‘ইন্টারজেকশন’ বা বিস্ময়সূচক শব্দ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ শব্দ মূলত উদ্দেশ্যহীনভাবে চিৎকার করে বলা হয়।
ডিকশনারি ডটকম-এর মতে, এই শব্দের ব্যবহার অস্পষ্ট এবং পরিবর্তনশীল। কিছু ক্ষেত্রে এটিকে ‘মোটামুটি’ বা ‘হতে পারে এটা, হতে পারে ওটা’-এমন বোঝাতে ব্যবহার করা হলেও, শব্দটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অর্থহীন।
একই সঙ্গে ডিকশনারি ডটকম এটিকে ‘ব্রেনরট স্ল্যাং’-এর উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থহীন এবং উদ্ভট। স্টিভ জনসনের মতে, এটি আসলে জেন-আলফা-এর একটি দলগত পরিচয়ের প্রতীক। এই প্রজন্মের কাছে এটি একটি ‘ইন-গ্রুপ জোক’-এর মতো। সমবয়সীদের নিজস্ব কোড ভাষায় কৌতুক করে যেভাবে বোঝানো হয় যে, ‘আমি এই প্রজন্মের অংশ, এটাই আমি।’
কীভাবে হলো এর উৎপত্তি?
এই অপ্রচলিত শব্দটির (স্ল্যাং) উৎপত্তি হয়েছে র্যাপার স্করিলার-এর গান ‘Doot Doot (6 7) ’ থেকে। পরবর্তীতে এটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের ভিডিও ক্লিপে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার বাস্কেটবল খেলোয়াড় লামেলো বল-এর ভিডিও ক্লিপ। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে এই গান বাস্কেটবল দৃশ্যের সঙ্গে ভাইরাল হতে শুরু করে এবং দ্রুত তরুণ দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো ‘সাউথ পার্ক’-এর একটি পর্বেও এটি স্থান পায়।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই শব্দের নির্বাচন নিয়ে প্রজন্ম ভেদে প্রতিক্রিয়া বিভক্ত। স্টিভ জনসন জানান, একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক তাঁকে ভোরবেলা মেসেজ করে অনুরোধ করেন, যেন তাঁরা এই শব্দটিকে বর্ষসেরা নির্বাচন না করেন। জনসন মজা করে বলেন, ‘শিক্ষকেরাও এটি ধরে ফেলেছেন!’
জনসন এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘একটি নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষাগত শক্তিমত্তা ও প্রভাব প্রদর্শন করছে। ইংরেজি ভাষার ওপর এটি অসাধারণ প্রভাব ফেলছে। এটা উদ্যাপন করার মতো বিষয়।’ তবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য, যারা দৈনিক সময় অসময়ে ‘সিক্স সেভেন’ চিৎকার শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া অনেকাংশেই বিরক্তি এবং হতাশার মিশ্রণ!
সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্যান্য শব্দ
ডিকশনারি ডট কম ২০২৫ সালের বর্ষসেরা শব্দের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রাজনীতি এবং সমাজ সম্পর্কিত আরও কয়েকটি শব্দ বিবেচনা করেছিল। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল:
Agentic: (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত) লক্ষ্য পূরণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম।
Aura farming: ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের আকর্ষণ, স্টাইল বা ভাবমূর্তি তৈরি করা, যা অনলাইন মনোযোগ বা সামাজিক প্রভাব অর্জনের জন্য করা হয়।
Gen Z stare: জেন-জি-এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অভিব্যক্তি, যা উদাসীন বা নির্লিপ্ত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
Overtourism: কোনো জনপ্রিয় গন্তব্যে অতিরিক্ত পর্যটকের ভিড়, যার ফলে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সমাজ-সাংস্কৃতিক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়।
Tradwife: একজন বিবাহিত নারী যিনি ঐতিহ্যবাহী নারীসুলভ লিঙ্গ ভূমিকা মেনে নিয়ে গৃহিণী হিসেবে জীবনযাপন করেন। এটি প্রায়শই রক্ষণশীল রাজনৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি শব্দ।

অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ! শব্দটি হলো ‘67’ (উচ্চারণ: ‘সিক্স সেভেন’), যার কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং স্কুলে জেন-আলফা এই শব্দটিকে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জেন-জি-এর পরবর্তী প্রজন্মকে জেন-আলফা বলা হচ্ছে। মূলত ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা প্রজন্মই জেনারেশন আলফা বা জেন-আলফা।
ডিকশনারি ডটকম এই শব্দটি বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এর ব্যাপকতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে চিহ্নিত করেছে। ডিকশনারি মিডিয়া গ্রুপের শব্দকোষ পরিচালক স্টিভ জনসন সিবিএস নিউজকে জানান, যে শব্দটিকে আপনি ভেবেছিলেন সহজে বিলীন হয়ে যাবে, সেটিই একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসেবে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।
এই শব্দে কী বোঝায়?
‘সিক্স-সেভেন’ শব্দটি অতীতের বর্ষসেরা শব্দগুলোর থেকে আলাদা। কারণ এটি কোনো জটিল ধারণা বা বড় ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে না। স্টিভ জনসন এটিকে একটি ‘ইন্টারজেকশন’ বা বিস্ময়সূচক শব্দ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ শব্দ মূলত উদ্দেশ্যহীনভাবে চিৎকার করে বলা হয়।
ডিকশনারি ডটকম-এর মতে, এই শব্দের ব্যবহার অস্পষ্ট এবং পরিবর্তনশীল। কিছু ক্ষেত্রে এটিকে ‘মোটামুটি’ বা ‘হতে পারে এটা, হতে পারে ওটা’-এমন বোঝাতে ব্যবহার করা হলেও, শব্দটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অর্থহীন।
একই সঙ্গে ডিকশনারি ডটকম এটিকে ‘ব্রেনরট স্ল্যাং’-এর উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থহীন এবং উদ্ভট। স্টিভ জনসনের মতে, এটি আসলে জেন-আলফা-এর একটি দলগত পরিচয়ের প্রতীক। এই প্রজন্মের কাছে এটি একটি ‘ইন-গ্রুপ জোক’-এর মতো। সমবয়সীদের নিজস্ব কোড ভাষায় কৌতুক করে যেভাবে বোঝানো হয় যে, ‘আমি এই প্রজন্মের অংশ, এটাই আমি।’
কীভাবে হলো এর উৎপত্তি?
এই অপ্রচলিত শব্দটির (স্ল্যাং) উৎপত্তি হয়েছে র্যাপার স্করিলার-এর গান ‘Doot Doot (6 7) ’ থেকে। পরবর্তীতে এটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের ভিডিও ক্লিপে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার বাস্কেটবল খেলোয়াড় লামেলো বল-এর ভিডিও ক্লিপ। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে এই গান বাস্কেটবল দৃশ্যের সঙ্গে ভাইরাল হতে শুরু করে এবং দ্রুত তরুণ দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টিভি শো ‘সাউথ পার্ক’-এর একটি পর্বেও এটি স্থান পায়।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই শব্দের নির্বাচন নিয়ে প্রজন্ম ভেদে প্রতিক্রিয়া বিভক্ত। স্টিভ জনসন জানান, একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক তাঁকে ভোরবেলা মেসেজ করে অনুরোধ করেন, যেন তাঁরা এই শব্দটিকে বর্ষসেরা নির্বাচন না করেন। জনসন মজা করে বলেন, ‘শিক্ষকেরাও এটি ধরে ফেলেছেন!’
জনসন এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘একটি নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষাগত শক্তিমত্তা ও প্রভাব প্রদর্শন করছে। ইংরেজি ভাষার ওপর এটি অসাধারণ প্রভাব ফেলছে। এটা উদ্যাপন করার মতো বিষয়।’ তবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য, যারা দৈনিক সময় অসময়ে ‘সিক্স সেভেন’ চিৎকার শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া অনেকাংশেই বিরক্তি এবং হতাশার মিশ্রণ!
সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্যান্য শব্দ
ডিকশনারি ডট কম ২০২৫ সালের বর্ষসেরা শব্দের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রাজনীতি এবং সমাজ সম্পর্কিত আরও কয়েকটি শব্দ বিবেচনা করেছিল। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল:
Agentic: (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত) লক্ষ্য পূরণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম।
Aura farming: ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের আকর্ষণ, স্টাইল বা ভাবমূর্তি তৈরি করা, যা অনলাইন মনোযোগ বা সামাজিক প্রভাব অর্জনের জন্য করা হয়।
Gen Z stare: জেন-জি-এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অভিব্যক্তি, যা উদাসীন বা নির্লিপ্ত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
Overtourism: কোনো জনপ্রিয় গন্তব্যে অতিরিক্ত পর্যটকের ভিড়, যার ফলে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সমাজ-সাংস্কৃতিক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়।
Tradwife: একজন বিবাহিত নারী যিনি ঐতিহ্যবাহী নারীসুলভ লিঙ্গ ভূমিকা মেনে নিয়ে গৃহিণী হিসেবে জীবনযাপন করেন। এটি প্রায়শই রক্ষণশীল রাজনৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি শব্দ।

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
৪ দিন আগে
আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ...
৫ দিন আগে
মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
২০০৫ সালে হানিফ বিরিয়ানির প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুর পর ব্যবসার হাল ধরেন তাঁর ছেলে হাজি মোহাম্মদ ইব্রাহিম রনি। অনেকে বলেন, কয়েক বছর হানিফের স্বাদে নাকি ভাটা পড়েছিল। এই কথা এখন ডাহা মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয় দোকানের ভিড়ভাট্টা দেখলেই। পুরান ঢাকার খ্যাতনামা সব বিরিয়ানির মধ্যে এখন হানিফ যে তাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে, তা আর বলতে হয় না।
ছবি: জাহিদুল ইসলাম

পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
২০০৫ সালে হানিফ বিরিয়ানির প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুর পর ব্যবসার হাল ধরেন তাঁর ছেলে হাজি মোহাম্মদ ইব্রাহিম রনি। অনেকে বলেন, কয়েক বছর হানিফের স্বাদে নাকি ভাটা পড়েছিল। এই কথা এখন ডাহা মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয় দোকানের ভিড়ভাট্টা দেখলেই। পুরান ঢাকার খ্যাতনামা সব বিরিয়ানির মধ্যে এখন হানিফ যে তাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে, তা আর বলতে হয় না।
ছবি: জাহিদুল ইসলাম

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৩ দিন আগে
আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ...
৫ দিন আগে
মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা ছিল সব গরিব ঘরেরই ছেলে। আমাদের গ্রামে আলাদা কোনো বুর্জোয়া বা সামন্তসমাজ ছিল না। সেখানে বিশ থেকে ত্রিশ জন ভূস্বামী ছিল, যারা অবশ্য সব সময় একসঙ্গে থাকত। কিন্তু আমার বাবা ওদের থেকে পৃথক থাকতেন।
... আমি বাইরের মানুষ বলতে বাবার খামারে কাজ করা ওই গরিব মানুষদেরই দেখতাম। আমি হাইতিয়ানদের কুঁড়েঘরে যেতাম। হাইতিয়ানদের বাড়িতে ওদের সঙ্গে বসে একবার খাওয়ার জন্য আমি বেশ বকা খেয়েছিলাম। আমাকে ঠিক সামাজিকতার প্রশ্নে বকা দেওয়া হয়নি, বকা খেয়েছিলাম স্বাস্থ্যগত প্রশ্নে। আমার বাবা-মার শ্রেণির কোনো অহমবোধ ছিল না। তাদের ঠিক ভূস্বামী মানসিকতাও ছিল না।
আমার ভেতর নৈতিকতার ধারণা এসেছে আমার স্কুল এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে, আমার পরিবার থেকেও। খুব ছোটবেলা থেকেই আমাকে বলা হয়েছে কোনোভাবেই মিথ্যা কথা বলা যাবে না। আমার স্কুলের শিক্ষকেরাও তা-ই বলেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই মার্ক্সীয় দর্শন বা নৈতিক আদর্শ থেকে বলেননি, বলেছেন ধর্মীয় নৈতিকতার দিক থেকে। তারা আমাকে শিখিয়েছেন কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। আমাদের সমাজে এইভাবে ধর্মীয় আবহ থেকে ঐতিহ্যগতভাবে সবাই নৈতিকতার শিক্ষা পায়। যদিও তাতে অনেক অবৈজ্ঞানিক শিক্ষাও থাকে। ধীরে ধীরে আমার ভেতরে ভুল-শুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা জন্ম নিতে থাকে এবং বেশ কিছু তথাকথিত নৈতিকতাকে আমি ভঙ্গ করতে থাকি। ছোটবেলা থেকেই আমার যেমন নৈতিকতার শিক্ষার অভিজ্ঞতা হয়েছে, তেমনি নৈতিকতা ভঙ্গের অভিজ্ঞতাও হয়েছে। তথাকথিত নৈতিকতার নামে মানুষের অনেক অনৈতিক কাজ আমি দেখেছি।
সূত্র: শাহাদুজ্জামান কর্তৃক ফিদেল কাস্ত্রোর অনূদিত সাক্ষাৎকার। ‘কথা পরম্পরা’, পৃষ্ঠা-২২৩।

আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা ছিল সব গরিব ঘরেরই ছেলে। আমাদের গ্রামে আলাদা কোনো বুর্জোয়া বা সামন্তসমাজ ছিল না। সেখানে বিশ থেকে ত্রিশ জন ভূস্বামী ছিল, যারা অবশ্য সব সময় একসঙ্গে থাকত। কিন্তু আমার বাবা ওদের থেকে পৃথক থাকতেন।
... আমি বাইরের মানুষ বলতে বাবার খামারে কাজ করা ওই গরিব মানুষদেরই দেখতাম। আমি হাইতিয়ানদের কুঁড়েঘরে যেতাম। হাইতিয়ানদের বাড়িতে ওদের সঙ্গে বসে একবার খাওয়ার জন্য আমি বেশ বকা খেয়েছিলাম। আমাকে ঠিক সামাজিকতার প্রশ্নে বকা দেওয়া হয়নি, বকা খেয়েছিলাম স্বাস্থ্যগত প্রশ্নে। আমার বাবা-মার শ্রেণির কোনো অহমবোধ ছিল না। তাদের ঠিক ভূস্বামী মানসিকতাও ছিল না।
আমার ভেতর নৈতিকতার ধারণা এসেছে আমার স্কুল এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে, আমার পরিবার থেকেও। খুব ছোটবেলা থেকেই আমাকে বলা হয়েছে কোনোভাবেই মিথ্যা কথা বলা যাবে না। আমার স্কুলের শিক্ষকেরাও তা-ই বলেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই মার্ক্সীয় দর্শন বা নৈতিক আদর্শ থেকে বলেননি, বলেছেন ধর্মীয় নৈতিকতার দিক থেকে। তারা আমাকে শিখিয়েছেন কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। আমাদের সমাজে এইভাবে ধর্মীয় আবহ থেকে ঐতিহ্যগতভাবে সবাই নৈতিকতার শিক্ষা পায়। যদিও তাতে অনেক অবৈজ্ঞানিক শিক্ষাও থাকে। ধীরে ধীরে আমার ভেতরে ভুল-শুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা জন্ম নিতে থাকে এবং বেশ কিছু তথাকথিত নৈতিকতাকে আমি ভঙ্গ করতে থাকি। ছোটবেলা থেকেই আমার যেমন নৈতিকতার শিক্ষার অভিজ্ঞতা হয়েছে, তেমনি নৈতিকতা ভঙ্গের অভিজ্ঞতাও হয়েছে। তথাকথিত নৈতিকতার নামে মানুষের অনেক অনৈতিক কাজ আমি দেখেছি।
সূত্র: শাহাদুজ্জামান কর্তৃক ফিদেল কাস্ত্রোর অনূদিত সাক্ষাৎকার। ‘কথা পরম্পরা’, পৃষ্ঠা-২২৩।

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৩ দিন আগে
পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
৪ দিন আগে
মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
একই নামে ঢাকায় আরও বিরিয়ানির দোকান থাকলেও শর্ষের তেলে তৈরি মামুনের তেহারির স্বাদ পাওয়া যায় কেবল নাজিমুদ্দীন রোডের দুটি, নাজিরাবাজার ও এলিফ্যান্ট রোডের একটি করে শাখায়। মামুন বিরিয়ানি হাউসের নব্য সংযোজন গরু ও খাসির কাচ্চি কিংবা মোরগ পোলাও হলেও তেহারির সুঘ্রাণেই সেখানে ছুটে যান ভোজনরসিকেরা। পুরান ঢাকাবাসীর জন্য হোম ডেলিভারির বিশেষ সুবিধা দেয় এই রেস্তোরাঁটি। বিয়েশাদিতে তেহারির ‘ডেগ’ ভাড়া নেবেন? তা-ও সম্ভব।
ছবি: জাহিদুল ইসলাম

মামুন বিরিয়ানি হাউসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরান ঢাকার এই রেস্তোরাঁটি গরুর তেহারি বিক্রি করে সুনাম কুড়িয়ে নেয়। শুরুর দিকে এক প্লেট তেহারির দাম ছিল মাত্র ১২ টাকা! তাদের তেহারিভর্তি হাঁড়ি খালি হতে বেশি সময় লাগে না। তাই তো মামুন বিরিয়ানির চারটি শাখা পরিচালনা করতে হচ্ছে।
একই নামে ঢাকায় আরও বিরিয়ানির দোকান থাকলেও শর্ষের তেলে তৈরি মামুনের তেহারির স্বাদ পাওয়া যায় কেবল নাজিমুদ্দীন রোডের দুটি, নাজিরাবাজার ও এলিফ্যান্ট রোডের একটি করে শাখায়। মামুন বিরিয়ানি হাউসের নব্য সংযোজন গরু ও খাসির কাচ্চি কিংবা মোরগ পোলাও হলেও তেহারির সুঘ্রাণেই সেখানে ছুটে যান ভোজনরসিকেরা। পুরান ঢাকাবাসীর জন্য হোম ডেলিভারির বিশেষ সুবিধা দেয় এই রেস্তোরাঁটি। বিয়েশাদিতে তেহারির ‘ডেগ’ ভাড়া নেবেন? তা-ও সম্ভব।
ছবি: জাহিদুল ইসলাম

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ! জনপ্রিয় অভিধান ওয়েবসাইট Dictionary. com ২০২৫ সালের জন্য বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে এমন একটি শব্দকে বেছে নিয়েছে, যা মূলত এক ধরনের প্রলাপ!
৩ দিন আগে
পুরান ঢাকার বাসিন্দা হাজি মোহাম্মদ হানিফ ১৯৭৫ সালে শুরু করেন বিরিয়ানির ব্যবসা। নাজিরাবাজারে যে দোকানটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সেটির নাম দেন হানিফ বিরিয়ানি। অর্ধশত বছর ধরে দোকানটির খাসির বিরিয়ানি ও তার সুঘ্রাণ মন-পেট দুই-ই ভরাচ্ছে ভোজনরসিকদের।
৪ দিন আগে
আমাদের পরিবার থাকত গ্রামে, গরিবদের মধ্যে। আমার আশপাশে ছিল নগ্নপায়ের ছেল-মেয়েরা, ওদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব ছিল। আমি দেখেছি ওদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, দেখেছি কীভাবে একটা সাধারণ রোগের প্রকোপ ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবার। এসব নিয়ে ওই বয়সে নিশ্চয়ই এত চিন্তাভাবনা করিনি, তবে এ জীবনটার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ...
৫ দিন আগে