রাহুল শর্মা, ঢাকা

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃতী, মেধাবী ও যশস্বী শিক্ষার্থীদের অনেকেই আজ স্বনামখ্যাত। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কলেজকেও করেছেন গৌরবান্বিত।
আজ ২০ নভেম্বর ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।
সদরঘাটের শরণার্থী
ঢাকা নগরীর বিদ্যারণ্যে এক প্রবীণ বৃক্ষ ‘ঢাকা কলেজ’। ডাকাতিয়ার জলে ধোয়া বুড়িগঙ্গার স্মৃতিসিক্ত ইতিহাসের সদরদ্বার ‘ঢাকা কলেজ’। ১৮২৮ সালের ২০ আগস্ট রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মঝড়ে লণ্ডভণ্ড ঢাকাইয়া গৃহস্থরা আঙ্গিনা ছেড়ে নতুন আলোয় আশ্রয় খুঁজে ফেরেন। শুরু হয় সনাতন রেকর্ডে নতুন সুরের লয়। এরই কাঁধে ভর করে ঢাকাতে বেশ ক’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৩৫ সালের ‘ইংলিশ সেমিনারি স্কুল’, ‘কলেজিয়েট স্কুল’, ১৮৪৮ সালের ‘পোগোজ’ এবং ১৮৬৮ সালের জগন্নাথ স্কুল মূলত রামমোহন রেনেসাঁরই শ্বাস-প্রশ্বাস।
জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই বুড়িগঙ্গার তটস্থ ঢাকা নগরীর গায় ‘ইংলিশ সেমিনার স্কুল’-এর জন্ম। অনাবিষ্কৃত দ্বীপের পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে ইংরেজি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই তৎকালীন সিভিল সার্জন ড. জেমস টেইলর ও ঢাকা জেলার ম্যাজিস্ট্রেট মি. গ্রান্টের সহযোগিতায় ‘জনশিক্ষা কমিটি’ ইংলিশ সেমিনারি স্কুল প্রতিষ্ঠায় অগ্র সৈনিকের ভূমিকা পালন করেন।
১৮৪১ সালে ইংলিশ সেমিনারি স্কুল পোশাক পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘ঢাকা কলেজ’ নাম ধারণ করে। বুড়িগঙ্গার তট ছোঁয়া সদরঘাট ছিল ঢাকা কলেজের শৈশব ক্যাম্পাস। ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও ভবনের নকশা করেছিলেন কর্নেল গ্যাসটিন।
সদরঘাট সংলগ্ন এই ভবন বর্তমানে ব্যাংকের লেনদেনে ব্যস্ত। ব্যাংকের দখলদারিত্ব মেনে নিয়ে কলেজটি ১৯০৮ সালে কার্জন হলে অভিবাসিত হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ঢাকা কলেজ কার্জন হল ছেড়ে এর পূর্বদিকে বর্তমান ফার্মেসি ও কেমিস্ট্রি বিভাগের দালানগুলোতে অস্থায়ী আশ্রয় নেয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ধুতে ‘ঢাকা কলেজ’ তার ডিগ্রি শ্রেণি হারিয়ে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনীত হলেও পুনরায় তা উদ্ধারে সমর্থ হয়।
১৯২১ সালের পর কোনো এক সময় ‘ঢাকা কলেজ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিটেমাটি সর্বস্ব দিয়ে পুরোনো হাইকোর্টের লাট ভবনে (বর্তমান সুপ্রিমকোর্ট) নীড় বাঁধে। ১৯৩৯ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সেনা তাঁবু গ্রাস করে হাইকোর্ট ভবন। নীড়ভাঙা ঢাকা কলেজ ১৯৪৩ সালে ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজের (বর্তমান কবি নজরুল কলেজের মূল ভবন) দালানে কিছুদিন ডানা ঝাপটালেও শিগগিরই ফুলবাড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে খান বাহাদুর আবদুল হাইয়ের মরচে ধরা দালানে আশ্রয় পায়।
সরদঘাটের শরণার্থী ‘ঢাকা কলেজ’ নীড় ভাঙার জোয়ার-ভাটায় ভাসতে ভাসতে ১৯৫৫ সালে আপন গৃহের সন্ধান পায় বর্তমান ‘ঢাকা কলেজ’। ১৯৫৫-এর শরণার্থী অতীতকে ইতিহাসবন্দী করে ১৯৫৫ সালে ১৮ একর জমিনের বিস্তৃত ভুবনে সংসার পাতে। ইতিহাসের এই সদর দ্বারে আপনিও আসতে পারেন মিরপুর রোড ধানমণ্ডি ঢাকা ১২০৫-এ ঠিকানায়।
সেদিন দু’জনে...
‘সেদিন দু’জনে (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ) দিয়েছিনু মোরে বিনে সুতায় গাঁথামালা’ রবীন্দ্র আদলে কথাগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইটপাথরে এখনও শোনা যায়। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নগরীর অরণ্যায়নে আসে ১৯২১ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তরণের সেবা দিতেই ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) নিজেদের ডিগ্রি শ্রেণি ও গ্রন্থাগারে সঞ্চিত বই মুক্তহস্তে তুলে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিন্দে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জগন্নাথ হল’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণে এবং ‘ঢাকা হল’ (যা বর্তমানে ফজলুল হক হল নামে পরিচিত) ঢাকা কলেজ স্মরণেরই অর্ঘ্য।
বর্তমানে কার্জন হলের পূর্বপাশে কলেজ রোড মূলত কৃতজ্ঞতার পাথরে খোদাই করা ঢাকা কলেজেরই স্মৃতিচিহ্ন। বই, ছাত্র দিয়ে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনত হয়েই ক্ষান্ত হয়নি ‘ঢাকা কলেজ’; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত সিন্ধুতে বিসর্জন দিয়েছে ভিটেমাটি সর্বস্ব! এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একে অপরের দেহে মিশে আছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার মতো বুড়িগঙ্গার মোহনায়।
পড়েছি প্রভাত বাসে
১৮৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ জে আর আয়ারল্যান্ড (১৮৪১-৪৩)। বর্তমানে যে অধ্যক্ষের অধিনায়কত্বে ইতিহাসের এই সদরদুর্গ শিক্ষার নিয়ন আলোয় আলোকিত হচ্ছে তিনি অধ্যাপক কে এম ইলিয়াস। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর এই তিন ধরনের শিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
১৯৭২ সালে ৬টি বিষয় নিয়ে অনার্স শুরু হলেও ২০২৪-এর কার্নিশে লাগা ঢাকা কলেজে ১৯টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর বিষয়ে পাঠদান করা হয়। এগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, পরিসংখ্যান, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, হিসাববিজ্ঞান, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, আরবি ও ইসলাম শিক্ষা ইত্যাদি।
১৮৪১ সালে ২৬০ জন অভিযাত্রীর ঢাকা কলেজ ১৯১৭-১৮ সালে ৯৯৫ জনে গিয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। শিক্ষক আছেন ২৫০ এবং কর্মচারী ১২০ জন, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ঢাকা কলেজের এক নীড়ে প্রায় সাড়ে ২০ হাজার জনের ঘরবসতি।

কলেজের তানপুরা
জীবনের অবিচ্ছিন্ন গানের সুর তোলা ঢাকা কলেজের তানপুরায় আছে রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, সায়েন্স ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, থিয়েটার, বিজ্ঞান ক্লাব, জিমনেসিয়ামসহ ক্যারিয়ারের সকল নার্সারির সমারোহ। এছাড়াও রয়েছে কাউন্সিলিং সেন্টার, মেডিক্যাল সেন্টার, লিটারেরি ক্লাব ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব।
শান্তিকুঞ্জ ঢাকা কলেজের সবুজ চাদর মাড়িয়ে একটু হাঁটলেই স্মৃতির কাড়ি মোড়ানো পরিচ্ছন্ন ক্যানটিন। ক্যানটিন ঘেঁষেই রয়েছে বিস্তৃত পুকুর। পুকুরের কোলে লাল পদ্ম আর সবুজের একাত্মতা দেখে মুখ ফসকে যে কেউই বলে ফেলতে পারেন, ‘নাফের পানি কী নীল! অনন্য তুমি নাফ তুমি ঝরনা... তুমি সুন্দরী ঝরনার। নাফের সুনীল সিক্ত পুকুরের অপর পাড়ে সুমধুর আজানের ধ্বনি ললিত মসজিদ এবং ৭টি ছাত্রাবাস।
‘পশ্চিম ছাত্রাবাস’ স্থাপিত ১৯৬৪ সালে। এখানে শুধু হিন্দু ছাত্রদের বসতি। এরপর রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস’। যার দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ২০৯নং কক্ষ। এ কক্ষটি একটি বিশেষ কারণে বিখ্যাত। কারণ এ কক্ষেই জীবনের ভিত গড়েন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল কাইয়ুম। বাংলা সাহিত্যের খ্যতিমান লেখক ‘চিলেকোঠার সেপাই’ খ্যত আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ১৬-২-১৯৯২ থেকে ৪-১-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই লেখকের স্মরণে স্মৃতির তাজমহল ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস’।
স্মরণের সজনে ডাটায় গড়া ‘শহীদ ফরহাদ ছাত্রাবাস।’ জানা যায়, শহীদ ফরহাদ ছিলেন ১৯৯১-৯২ সেশনে দ্বাদশ বিজ্ঞান শ্রেণির ছাত্র। ২৫-৮-১৯৯২ তারিখে নীলক্ষেত বাকুশাহ মার্কেটে ঘাতকেরা নির্মমভাবে ফরহাদকে হত্যা করে। অকাল প্রয়াত ফরহাদের প্রতি ছাত্রদের বিনীত মস্তক ওই ছাত্রাবাস।
এছাড়াও দক্ষিণ ছাত্রাবাস, উত্তর ছাত্রাবাস ও দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস সন্তানদের বুকে ধারণ করে আছে গভীর মমতায়।
রাজনীতির ঝড়
সদরঘাটের বিরহবাণে ১৮৩৫-এর মুসাফির নগরীর পান্থজন ‘ঢাকা কলেজ’ যুগে যুগে শাসন-শোষণের স্টিমরোলারকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক ঝড়। কালের ধারাবাহিকতায় ঢাকা কলেজ জন্ম দিয়েছে অনেক বিচক্ষণ, তুখোড় রাজনীতিকের-যারা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুর রাজ্জাক (সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী) ১৯৫৮ সালে এক রাজনৈতিক স্মৃতিচারণে লেখেন, ‘সামরিক শাসনের স্টিমরোলার থেকে কীভাবে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করা যায় এ ব্যাপারে পথ বের করার জন্য কতদিন যে সন্ধ্যার পর কলেজের মাঠে বসে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে গোপনে শলাপরামর্শ করেছি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।... সেদিন আমার সে বিদ্রোহী সত্তা পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত। বিদ্রোহের এ বীজ আমার মাঝে রোপিত হয়েছে ঢাকা কলেজেই।’
সমাজবিজ্ঞানী ড. নাজমুল করিমের লেখায় ১৯৩৯-৪১ সালে ঢাকা কলেজের রাজনীতি ছুঁয়ে চৈত্রের দাহ বোঝা যায়। ১৯৪১ সালের ‘আল্লাহু আকবর’ আর ‘বন্দে মাতরম’ দাঙ্গা ঢাকা কলেজের রাজনীতিতে বারুদের গন্ধ মেখে দেয়। ১৯৫৮-৬২ সময়ে ঢাকা কলেজের দুর্বার ছাত্রনেতা রাশেদ খান মেননের স্মৃতিপত্রে- ‘আজ যেমন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের শাখা হিসেবে ঢাকা কলেজ পরিচিত, তখন তেমন ছিল না। ‘পাইওয়ানিয়ার্স’ ও ‘ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’ এই দুই ফ্লাটফর্মে মিলেমিশে ভাগ হয়েছিল প্রধান দুই ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা। বাকি নামে যে সংগঠন মাত্র বছর দুয়েক হলো জন্ম নিয়েছিল, তাদের অনুসারীরা ছিল এই দুইয়ের মাঝে। কোনো বিশেষ সংগঠনের প্রাবল্য ছিল না। এই দুটি প্ল্যাটফর্মের কাছে। তবে অন্তঃস্রোত পরিষ্কার বোঝা যেত।’
স্লোগানের জলছাপ
স্লোগান কখনও হারিয়ে যায় না, কিংবা হয় না কখনও বিস্মৃত। স্লোগানকে বলা হয় রাজনীতির আন্দোলন-সংগ্রামের ইশতেহার। স্লোগান কথা বলে বারুদ স্টেনগান আর তাঁতানো রাইফেলের ভাষায়। ছাত্র সংসদ হচ্ছে সেই তাঁতানো ছাত্র রাজনীতির বোমার আধার। ১৮৩ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ ঢাকা কলেজের নথিপত্রে ছাত্র সংসদের শিকড় সন্ধান কঠিন বৈকি।
১৯ শতকের শুরুতে ঢাকা কলেজের গায়ে অগ্নিজ্বর উঠলেও তা ছাত্র সংসদ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় নিয়েছিল ৫০ বছর। সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী আবুদর রাজ্জাক ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননের লেখা থেকে অনুমান করা যায়, ১৯৫৮-৫৯ সালের দিকে কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা কলেজে সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। ১৮৩৫ সালের স্কুল ও ১৮৪১ সালের ‘ঢাকা কলেজ’ ২০২৪ সালের ভ্যানিশিং স্টেশনে। যাত্রী দলে আছে- ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রসমাজ, ছাত্রশিবির ইত্যাদি। তথাপি কষ্টের নীল জঞ্জাল বুকে একাকীত্বের পাথর চোখে তাকিয়ে ছাত্র সংসদ।
বেদনার নীলকণ্ঠ
দেশ ও জাতির দুর্দিনে ‘ঢাকা কলেজ’ দুঃশাসনের মরণ-যন্ত্রণা আর কষ্ট সংগ্রামকে ধারণ করতে করতে নিজেই যেন হয়ে গেছে বেদনার ‘নীলকণ্ঠ’। বাংলার আকাশে যখনই দুর্যোগ আর অশান্তির মেঘ জমেছে ‘ঢাকা কলেজ’ তখন তার সর্বস্ব নিয়ে, লড়াকু বহ্নি হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রণাঙ্গনে।
১৯৩৯-৪৫ সালের মহাযুদ্ধ, ১৯৪১ সালের দোল দাঙ্গা, ১৯৫২ সালে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ ভাষা আন্দোলনে, ১৯৫৩ সালের গোলযোগ, ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এ কলেজের ছাত্ররা ছিল প্রতিশোধের খড়গহস্ত।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্রদের ইস্পাত বাহুতে গর্জন করত ‘৭১-এর হাতিয়ার’, তেমনি এখনও শোনা যায় ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাশ কাঁপানো আর্তনাদ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা কলেজের ৮ জন ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন। এই ৮ বীর হলেন- শহীদ নজরুল ইসলাম, শহীদ আবদুস শিকদার, শহীদ নাজিবুদ্দিন খান, শহীদ আলী আহসান, শহীদ মোয়াজ্জেম হোসেন, শহীদ নিজামুদ্দিন সাজ্জাদ, শহীদ আজিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ এম এ কাইয়ুম। এই ৮ বীরকে শ্রদ্ধা ও স্মরণের নকশী কাঁথায় জড়িয়ে রাখতেই মূল ভবনের প্রবেশদ্বারের বাম দেয়ালে লেখা আছে বীরদের নাম অঙ্কিত স্মৃতিফলক।
শেষ কথা
কালের আবর্তে ১৮৩ বছর পেরিয়েছে ‘ঢাকা কলেজ’। মেধাধীদের পছন্দের তালিকায় এখনও শীর্ষে ঢাকা কলেজ। অতীতের মতো এখনও দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বে এই কলেজের ছাত্ররাই। গৌরবের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে আগামী প্রজন্মও এমনই আশাবাদ।

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃতী, মেধাবী ও যশস্বী শিক্ষার্থীদের অনেকেই আজ স্বনামখ্যাত। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কলেজকেও করেছেন গৌরবান্বিত।
আজ ২০ নভেম্বর ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।
সদরঘাটের শরণার্থী
ঢাকা নগরীর বিদ্যারণ্যে এক প্রবীণ বৃক্ষ ‘ঢাকা কলেজ’। ডাকাতিয়ার জলে ধোয়া বুড়িগঙ্গার স্মৃতিসিক্ত ইতিহাসের সদরদ্বার ‘ঢাকা কলেজ’। ১৮২৮ সালের ২০ আগস্ট রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মঝড়ে লণ্ডভণ্ড ঢাকাইয়া গৃহস্থরা আঙ্গিনা ছেড়ে নতুন আলোয় আশ্রয় খুঁজে ফেরেন। শুরু হয় সনাতন রেকর্ডে নতুন সুরের লয়। এরই কাঁধে ভর করে ঢাকাতে বেশ ক’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৩৫ সালের ‘ইংলিশ সেমিনারি স্কুল’, ‘কলেজিয়েট স্কুল’, ১৮৪৮ সালের ‘পোগোজ’ এবং ১৮৬৮ সালের জগন্নাথ স্কুল মূলত রামমোহন রেনেসাঁরই শ্বাস-প্রশ্বাস।
জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই বুড়িগঙ্গার তটস্থ ঢাকা নগরীর গায় ‘ইংলিশ সেমিনার স্কুল’-এর জন্ম। অনাবিষ্কৃত দ্বীপের পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে ইংরেজি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই তৎকালীন সিভিল সার্জন ড. জেমস টেইলর ও ঢাকা জেলার ম্যাজিস্ট্রেট মি. গ্রান্টের সহযোগিতায় ‘জনশিক্ষা কমিটি’ ইংলিশ সেমিনারি স্কুল প্রতিষ্ঠায় অগ্র সৈনিকের ভূমিকা পালন করেন।
১৮৪১ সালে ইংলিশ সেমিনারি স্কুল পোশাক পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘ঢাকা কলেজ’ নাম ধারণ করে। বুড়িগঙ্গার তট ছোঁয়া সদরঘাট ছিল ঢাকা কলেজের শৈশব ক্যাম্পাস। ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও ভবনের নকশা করেছিলেন কর্নেল গ্যাসটিন।
সদরঘাট সংলগ্ন এই ভবন বর্তমানে ব্যাংকের লেনদেনে ব্যস্ত। ব্যাংকের দখলদারিত্ব মেনে নিয়ে কলেজটি ১৯০৮ সালে কার্জন হলে অভিবাসিত হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ঢাকা কলেজ কার্জন হল ছেড়ে এর পূর্বদিকে বর্তমান ফার্মেসি ও কেমিস্ট্রি বিভাগের দালানগুলোতে অস্থায়ী আশ্রয় নেয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ধুতে ‘ঢাকা কলেজ’ তার ডিগ্রি শ্রেণি হারিয়ে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনীত হলেও পুনরায় তা উদ্ধারে সমর্থ হয়।
১৯২১ সালের পর কোনো এক সময় ‘ঢাকা কলেজ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিটেমাটি সর্বস্ব দিয়ে পুরোনো হাইকোর্টের লাট ভবনে (বর্তমান সুপ্রিমকোর্ট) নীড় বাঁধে। ১৯৩৯ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সেনা তাঁবু গ্রাস করে হাইকোর্ট ভবন। নীড়ভাঙা ঢাকা কলেজ ১৯৪৩ সালে ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজের (বর্তমান কবি নজরুল কলেজের মূল ভবন) দালানে কিছুদিন ডানা ঝাপটালেও শিগগিরই ফুলবাড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে খান বাহাদুর আবদুল হাইয়ের মরচে ধরা দালানে আশ্রয় পায়।
সরদঘাটের শরণার্থী ‘ঢাকা কলেজ’ নীড় ভাঙার জোয়ার-ভাটায় ভাসতে ভাসতে ১৯৫৫ সালে আপন গৃহের সন্ধান পায় বর্তমান ‘ঢাকা কলেজ’। ১৯৫৫-এর শরণার্থী অতীতকে ইতিহাসবন্দী করে ১৯৫৫ সালে ১৮ একর জমিনের বিস্তৃত ভুবনে সংসার পাতে। ইতিহাসের এই সদর দ্বারে আপনিও আসতে পারেন মিরপুর রোড ধানমণ্ডি ঢাকা ১২০৫-এ ঠিকানায়।
সেদিন দু’জনে...
‘সেদিন দু’জনে (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ) দিয়েছিনু মোরে বিনে সুতায় গাঁথামালা’ রবীন্দ্র আদলে কথাগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইটপাথরে এখনও শোনা যায়। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নগরীর অরণ্যায়নে আসে ১৯২১ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তরণের সেবা দিতেই ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) নিজেদের ডিগ্রি শ্রেণি ও গ্রন্থাগারে সঞ্চিত বই মুক্তহস্তে তুলে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিন্দে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জগন্নাথ হল’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণে এবং ‘ঢাকা হল’ (যা বর্তমানে ফজলুল হক হল নামে পরিচিত) ঢাকা কলেজ স্মরণেরই অর্ঘ্য।
বর্তমানে কার্জন হলের পূর্বপাশে কলেজ রোড মূলত কৃতজ্ঞতার পাথরে খোদাই করা ঢাকা কলেজেরই স্মৃতিচিহ্ন। বই, ছাত্র দিয়ে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনত হয়েই ক্ষান্ত হয়নি ‘ঢাকা কলেজ’; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত সিন্ধুতে বিসর্জন দিয়েছে ভিটেমাটি সর্বস্ব! এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একে অপরের দেহে মিশে আছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার মতো বুড়িগঙ্গার মোহনায়।
পড়েছি প্রভাত বাসে
১৮৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ জে আর আয়ারল্যান্ড (১৮৪১-৪৩)। বর্তমানে যে অধ্যক্ষের অধিনায়কত্বে ইতিহাসের এই সদরদুর্গ শিক্ষার নিয়ন আলোয় আলোকিত হচ্ছে তিনি অধ্যাপক কে এম ইলিয়াস। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর এই তিন ধরনের শিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
১৯৭২ সালে ৬টি বিষয় নিয়ে অনার্স শুরু হলেও ২০২৪-এর কার্নিশে লাগা ঢাকা কলেজে ১৯টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর বিষয়ে পাঠদান করা হয়। এগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, পরিসংখ্যান, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, হিসাববিজ্ঞান, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, আরবি ও ইসলাম শিক্ষা ইত্যাদি।
১৮৪১ সালে ২৬০ জন অভিযাত্রীর ঢাকা কলেজ ১৯১৭-১৮ সালে ৯৯৫ জনে গিয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। শিক্ষক আছেন ২৫০ এবং কর্মচারী ১২০ জন, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ঢাকা কলেজের এক নীড়ে প্রায় সাড়ে ২০ হাজার জনের ঘরবসতি।

কলেজের তানপুরা
জীবনের অবিচ্ছিন্ন গানের সুর তোলা ঢাকা কলেজের তানপুরায় আছে রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, সায়েন্স ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, থিয়েটার, বিজ্ঞান ক্লাব, জিমনেসিয়ামসহ ক্যারিয়ারের সকল নার্সারির সমারোহ। এছাড়াও রয়েছে কাউন্সিলিং সেন্টার, মেডিক্যাল সেন্টার, লিটারেরি ক্লাব ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব।
শান্তিকুঞ্জ ঢাকা কলেজের সবুজ চাদর মাড়িয়ে একটু হাঁটলেই স্মৃতির কাড়ি মোড়ানো পরিচ্ছন্ন ক্যানটিন। ক্যানটিন ঘেঁষেই রয়েছে বিস্তৃত পুকুর। পুকুরের কোলে লাল পদ্ম আর সবুজের একাত্মতা দেখে মুখ ফসকে যে কেউই বলে ফেলতে পারেন, ‘নাফের পানি কী নীল! অনন্য তুমি নাফ তুমি ঝরনা... তুমি সুন্দরী ঝরনার। নাফের সুনীল সিক্ত পুকুরের অপর পাড়ে সুমধুর আজানের ধ্বনি ললিত মসজিদ এবং ৭টি ছাত্রাবাস।
‘পশ্চিম ছাত্রাবাস’ স্থাপিত ১৯৬৪ সালে। এখানে শুধু হিন্দু ছাত্রদের বসতি। এরপর রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস’। যার দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ২০৯নং কক্ষ। এ কক্ষটি একটি বিশেষ কারণে বিখ্যাত। কারণ এ কক্ষেই জীবনের ভিত গড়েন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল কাইয়ুম। বাংলা সাহিত্যের খ্যতিমান লেখক ‘চিলেকোঠার সেপাই’ খ্যত আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ১৬-২-১৯৯২ থেকে ৪-১-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই লেখকের স্মরণে স্মৃতির তাজমহল ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস’।
স্মরণের সজনে ডাটায় গড়া ‘শহীদ ফরহাদ ছাত্রাবাস।’ জানা যায়, শহীদ ফরহাদ ছিলেন ১৯৯১-৯২ সেশনে দ্বাদশ বিজ্ঞান শ্রেণির ছাত্র। ২৫-৮-১৯৯২ তারিখে নীলক্ষেত বাকুশাহ মার্কেটে ঘাতকেরা নির্মমভাবে ফরহাদকে হত্যা করে। অকাল প্রয়াত ফরহাদের প্রতি ছাত্রদের বিনীত মস্তক ওই ছাত্রাবাস।
এছাড়াও দক্ষিণ ছাত্রাবাস, উত্তর ছাত্রাবাস ও দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস সন্তানদের বুকে ধারণ করে আছে গভীর মমতায়।
রাজনীতির ঝড়
সদরঘাটের বিরহবাণে ১৮৩৫-এর মুসাফির নগরীর পান্থজন ‘ঢাকা কলেজ’ যুগে যুগে শাসন-শোষণের স্টিমরোলারকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক ঝড়। কালের ধারাবাহিকতায় ঢাকা কলেজ জন্ম দিয়েছে অনেক বিচক্ষণ, তুখোড় রাজনীতিকের-যারা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুর রাজ্জাক (সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী) ১৯৫৮ সালে এক রাজনৈতিক স্মৃতিচারণে লেখেন, ‘সামরিক শাসনের স্টিমরোলার থেকে কীভাবে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করা যায় এ ব্যাপারে পথ বের করার জন্য কতদিন যে সন্ধ্যার পর কলেজের মাঠে বসে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে গোপনে শলাপরামর্শ করেছি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।... সেদিন আমার সে বিদ্রোহী সত্তা পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত। বিদ্রোহের এ বীজ আমার মাঝে রোপিত হয়েছে ঢাকা কলেজেই।’
সমাজবিজ্ঞানী ড. নাজমুল করিমের লেখায় ১৯৩৯-৪১ সালে ঢাকা কলেজের রাজনীতি ছুঁয়ে চৈত্রের দাহ বোঝা যায়। ১৯৪১ সালের ‘আল্লাহু আকবর’ আর ‘বন্দে মাতরম’ দাঙ্গা ঢাকা কলেজের রাজনীতিতে বারুদের গন্ধ মেখে দেয়। ১৯৫৮-৬২ সময়ে ঢাকা কলেজের দুর্বার ছাত্রনেতা রাশেদ খান মেননের স্মৃতিপত্রে- ‘আজ যেমন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের শাখা হিসেবে ঢাকা কলেজ পরিচিত, তখন তেমন ছিল না। ‘পাইওয়ানিয়ার্স’ ও ‘ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’ এই দুই ফ্লাটফর্মে মিলেমিশে ভাগ হয়েছিল প্রধান দুই ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা। বাকি নামে যে সংগঠন মাত্র বছর দুয়েক হলো জন্ম নিয়েছিল, তাদের অনুসারীরা ছিল এই দুইয়ের মাঝে। কোনো বিশেষ সংগঠনের প্রাবল্য ছিল না। এই দুটি প্ল্যাটফর্মের কাছে। তবে অন্তঃস্রোত পরিষ্কার বোঝা যেত।’
স্লোগানের জলছাপ
স্লোগান কখনও হারিয়ে যায় না, কিংবা হয় না কখনও বিস্মৃত। স্লোগানকে বলা হয় রাজনীতির আন্দোলন-সংগ্রামের ইশতেহার। স্লোগান কথা বলে বারুদ স্টেনগান আর তাঁতানো রাইফেলের ভাষায়। ছাত্র সংসদ হচ্ছে সেই তাঁতানো ছাত্র রাজনীতির বোমার আধার। ১৮৩ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ ঢাকা কলেজের নথিপত্রে ছাত্র সংসদের শিকড় সন্ধান কঠিন বৈকি।
১৯ শতকের শুরুতে ঢাকা কলেজের গায়ে অগ্নিজ্বর উঠলেও তা ছাত্র সংসদ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় নিয়েছিল ৫০ বছর। সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী আবুদর রাজ্জাক ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননের লেখা থেকে অনুমান করা যায়, ১৯৫৮-৫৯ সালের দিকে কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা কলেজে সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। ১৮৩৫ সালের স্কুল ও ১৮৪১ সালের ‘ঢাকা কলেজ’ ২০২৪ সালের ভ্যানিশিং স্টেশনে। যাত্রী দলে আছে- ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রসমাজ, ছাত্রশিবির ইত্যাদি। তথাপি কষ্টের নীল জঞ্জাল বুকে একাকীত্বের পাথর চোখে তাকিয়ে ছাত্র সংসদ।
বেদনার নীলকণ্ঠ
দেশ ও জাতির দুর্দিনে ‘ঢাকা কলেজ’ দুঃশাসনের মরণ-যন্ত্রণা আর কষ্ট সংগ্রামকে ধারণ করতে করতে নিজেই যেন হয়ে গেছে বেদনার ‘নীলকণ্ঠ’। বাংলার আকাশে যখনই দুর্যোগ আর অশান্তির মেঘ জমেছে ‘ঢাকা কলেজ’ তখন তার সর্বস্ব নিয়ে, লড়াকু বহ্নি হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রণাঙ্গনে।
১৯৩৯-৪৫ সালের মহাযুদ্ধ, ১৯৪১ সালের দোল দাঙ্গা, ১৯৫২ সালে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ ভাষা আন্দোলনে, ১৯৫৩ সালের গোলযোগ, ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এ কলেজের ছাত্ররা ছিল প্রতিশোধের খড়গহস্ত।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্রদের ইস্পাত বাহুতে গর্জন করত ‘৭১-এর হাতিয়ার’, তেমনি এখনও শোনা যায় ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাশ কাঁপানো আর্তনাদ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা কলেজের ৮ জন ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন। এই ৮ বীর হলেন- শহীদ নজরুল ইসলাম, শহীদ আবদুস শিকদার, শহীদ নাজিবুদ্দিন খান, শহীদ আলী আহসান, শহীদ মোয়াজ্জেম হোসেন, শহীদ নিজামুদ্দিন সাজ্জাদ, শহীদ আজিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ এম এ কাইয়ুম। এই ৮ বীরকে শ্রদ্ধা ও স্মরণের নকশী কাঁথায় জড়িয়ে রাখতেই মূল ভবনের প্রবেশদ্বারের বাম দেয়ালে লেখা আছে বীরদের নাম অঙ্কিত স্মৃতিফলক।
শেষ কথা
কালের আবর্তে ১৮৩ বছর পেরিয়েছে ‘ঢাকা কলেজ’। মেধাধীদের পছন্দের তালিকায় এখনও শীর্ষে ঢাকা কলেজ। অতীতের মতো এখনও দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বে এই কলেজের ছাত্ররাই। গৌরবের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে আগামী প্রজন্মও এমনই আশাবাদ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃ
২০ নভেম্বর ২০২৪
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃ
২০ নভেম্বর ২০২৪
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃ
২০ নভেম্বর ২০২৪
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

ঢাকা কলেজ, এ দেশের শিক্ষা ইতিহাসেই শুধু নয়, জাতির ইতিহাসেরও এক অনন্য অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত এক নাম। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। এ কলেজের কৃ
২০ নভেম্বর ২০২৪
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে