ব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন।
৫ দিন আগে
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
৫ দিন আগে
আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি।
৫ দিন আগে
থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্নত দেশগুলোতে, নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি হারে খণ্ডকালীন কাজ করেন। এর ফলে, গড়ে তাঁদের প্রতি সপ্তাহে বেতনভুক্ত কাজের সময় পুরুষের তুলনায় কম হয়। তবে এটি কোনো আইনের কারণে হয়নি। আইন দিয়ে যা করা হয়েছে, তা আফগানিস্তানে। সেটি অবশ্য নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা নয়, বরং নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ২৮ শতাংশ কর্মজীবী নারী খণ্ডকালীন কাজ করেন। যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৮ শতাংশ। সেই পরিসংখ্যান থেকে হিসাব করলে বলা যায়, নারীদের কর্মঘণ্টা কম। তবে তা লৈঙ্গিক হিসাবের কারণে নয়। এই পার্থক্যের প্রধান কারণ হলো সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যগত লৈঙ্গিক ভূমিকা। সমাজ ও পরিবারে যত্নের দায়িত্ব নারীদের ওপর বর্তানোর কারণে কর্মক্ষেত্রে নারীরা নমনীয়তা বা কম সময়ের কাজের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া করকাঠামো এবং শ্রমবাজারের নীতিগুলোও নারী ও পুরুষের কাজের সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যে মহাদেশ বা অঞ্চলে শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে সামগ্রিকভাবে উভয় লিঙ্গের জন্যই কম বেতনভুক্ত কাজের সময় দেখা যায়।
এশিয়ার কিছু দেশ; যেমন ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া বা বড় অনানুষ্ঠানিক খাত রয়েছে এমন দেশগুলোতে, পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য খুব উচ্চ বার্ষিক বেতনভুক্ত কাজের হার দেখা যায়। ফ্রান্স, ডেনমার্ক বা নরওয়ের মতো কিছু ইউরোপীয় দেশে সাধারণত পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৩৯ কর্মঘণ্টা প্রচলিত। তবে নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে নারী কর্মীদের একটি বড় অংশ প্রতি সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার কম কাজ করেন। উত্তর আমেরিকায়; যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পূর্ণকালীন কর্মরত নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে দৈনিক সামান্য কম ঘণ্টা কাজ করেন। যেমন নারীদের জন্য প্রতিদিন ৭ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং পুরুষদের জন্য ৮ দশমিক ৪ ঘণ্টা প্রচলিত আছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বজুড়ে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি সময় অবৈতনিক কাজে; যেমন গৃহস্থালি, সন্তান ও আত্মীয়দের যত্নের পেছনে ব্যয় করেন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৭৪৮ মিলিয়ন মানুষ পরিচর্যার দায়িত্বের কারণে শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০৮ মিলিয়ন নারী। এতে অঞ্চলভিত্তিক; যেমন উত্তর আফ্রিকা, আরব রাষ্ট্র, ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, গড়ে পুরুষদের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই গুণ বেশি সময় ঘরোয়া ও পরিচর্যার কাজে সময় ব্যয় করেন নারীরা। যখন এই অবৈতনিক সময়কে বেতনভুক্ত কাজের সময়ের সঙ্গে যোগ করা হয়, তখন দেখা যায়, নারীরা পুরুষের চেয়ে সামগ্রিকভাবে বেশি ঘণ্টা কাজ করেন। তবে সেই কর্মঘণ্টার কোনো অর্থমূল্য হয় না। হোক তা ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা কিংবা এশিয়া।
কাজের সময়ের এই লৈঙ্গিকভিত্তিক পার্থক্য মূলত নারীর ওপর অবৈতনিক যত্নের কাজের অস্বাভাবিক বোঝা এবং সামাজিক প্রত্যাশার ফল, যা তাঁদের বেতনভুক্ত কাজের ধরনকে প্রভাবিত করে।

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্নত দেশগুলোতে, নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি হারে খণ্ডকালীন কাজ করেন। এর ফলে, গড়ে তাঁদের প্রতি সপ্তাহে বেতনভুক্ত কাজের সময় পুরুষের তুলনায় কম হয়। তবে এটি কোনো আইনের কারণে হয়নি। আইন দিয়ে যা করা হয়েছে, তা আফগানিস্তানে। সেটি অবশ্য নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা নয়, বরং নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ২৮ শতাংশ কর্মজীবী নারী খণ্ডকালীন কাজ করেন। যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৮ শতাংশ। সেই পরিসংখ্যান থেকে হিসাব করলে বলা যায়, নারীদের কর্মঘণ্টা কম। তবে তা লৈঙ্গিক হিসাবের কারণে নয়। এই পার্থক্যের প্রধান কারণ হলো সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যগত লৈঙ্গিক ভূমিকা। সমাজ ও পরিবারে যত্নের দায়িত্ব নারীদের ওপর বর্তানোর কারণে কর্মক্ষেত্রে নারীরা নমনীয়তা বা কম সময়ের কাজের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া করকাঠামো এবং শ্রমবাজারের নীতিগুলোও নারী ও পুরুষের কাজের সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যে মহাদেশ বা অঞ্চলে শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে সামগ্রিকভাবে উভয় লিঙ্গের জন্যই কম বেতনভুক্ত কাজের সময় দেখা যায়।
এশিয়ার কিছু দেশ; যেমন ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া বা বড় অনানুষ্ঠানিক খাত রয়েছে এমন দেশগুলোতে, পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য খুব উচ্চ বার্ষিক বেতনভুক্ত কাজের হার দেখা যায়। ফ্রান্স, ডেনমার্ক বা নরওয়ের মতো কিছু ইউরোপীয় দেশে সাধারণত পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৩৯ কর্মঘণ্টা প্রচলিত। তবে নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে নারী কর্মীদের একটি বড় অংশ প্রতি সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার কম কাজ করেন। উত্তর আমেরিকায়; যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পূর্ণকালীন কর্মরত নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে দৈনিক সামান্য কম ঘণ্টা কাজ করেন। যেমন নারীদের জন্য প্রতিদিন ৭ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং পুরুষদের জন্য ৮ দশমিক ৪ ঘণ্টা প্রচলিত আছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বজুড়ে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি সময় অবৈতনিক কাজে; যেমন গৃহস্থালি, সন্তান ও আত্মীয়দের যত্নের পেছনে ব্যয় করেন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৭৪৮ মিলিয়ন মানুষ পরিচর্যার দায়িত্বের কারণে শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০৮ মিলিয়ন নারী। এতে অঞ্চলভিত্তিক; যেমন উত্তর আফ্রিকা, আরব রাষ্ট্র, ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, গড়ে পুরুষদের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই গুণ বেশি সময় ঘরোয়া ও পরিচর্যার কাজে সময় ব্যয় করেন নারীরা। যখন এই অবৈতনিক সময়কে বেতনভুক্ত কাজের সময়ের সঙ্গে যোগ করা হয়, তখন দেখা যায়, নারীরা পুরুষের চেয়ে সামগ্রিকভাবে বেশি ঘণ্টা কাজ করেন। তবে সেই কর্মঘণ্টার কোনো অর্থমূল্য হয় না। হোক তা ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা কিংবা এশিয়া।
কাজের সময়ের এই লৈঙ্গিকভিত্তিক পার্থক্য মূলত নারীর ওপর অবৈতনিক যত্নের কাজের অস্বাভাবিক বোঝা এবং সামাজিক প্রত্যাশার ফল, যা তাঁদের বেতনভুক্ত কাজের ধরনকে প্রভাবিত করে।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
১২ দিন আগে
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
৫ দিন আগে
আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি।
৫ দিন আগে
থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
৫ দিন আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
ছোটবেলা থেকে হস্তশিল্প শেখার আগ্রহ তাঁর মায়ের কাজ দেখে। এখনো নতুন নতুন জিনিস তৈরি করা শিখে চলেছেন তিনি। কখনো কাপড়ের ফুল, কখনো চকলেট কিংবা সাবান। ৩০ বছর ধরে নিজের বাড়ির নিচতলায় শৌখিন কারুশিল্প নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছেন তিনি। দু-তিন শিফটে এক শ থেকে দেড় শ শিক্ষার্থী তাঁর কাছে মোম, ব্লক, বাটিক, সাবান তৈরি এবং পুঁতির বিভিন্ন কাজ শেখেন।
হাতেখড়ি ছোটবেলায়
মুক্তা যখন ক্লাস সেভেনে পড়েন, তখন সাটিনের কাপড় দিয়ে ফুল বানানো শিখেছিলেন। তাঁর বড় বোনের বান্ধবীরা সেই সময় তাঁর কাছে এই ফুল বানানো শিখতে আসেন। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ার পাশাপাশি নতুন নতুন কাজ শেখা শুরু করেন বিসিক থেকে। ১৯৯১ সালের দিকে মোটামুটি দক্ষ হয়ে ওঠেন মুক্তা। তাঁর বাবা সুইডেন দূতাবাসে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে একবার রাষ্ট্রদূত আসেন তাঁদের বাসায়। তিনি মুক্তার কাজ দেখে প্রশংসা করেন। বিষয়টি তাঁকে আরও উৎসাহিত করে তোলে।

ধীরে ধীরে বিসিক এবং যুব উন্নয়নে বিভিন্ন সরকারি কোর্স করতে থাকেন মুক্তা। একবার বোনের চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চায়না পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফল-ফুল তৈরির কাজ শিখে আসেন! নিজে অনুশীলন করে বারো রকমের ফল বানানো শিখে ফেলেন মুক্তা।
শেখার জন্য দেশ থেকে বিদেশে
মুক্তা বলছিলেন জাপানি টাইডাই শেখার কথা। যে সময় তিনি এই কাজ শেখেন, তখন দেশে জাপানি টাইডাইয়ের কাজ হতো না বললেই চলে। তাদের কাজ করার কৌশল শিখে ফেলেন মুক্তা। ডাক আসে, টেলিভিশনে শেখাতে হবে। ২২ দিনের একটা অনুষ্ঠানে তিনি জাপানি টাইডাই শেখান টেলিভিশনের পর্দায়। মুক্তা বলেন, ‘আমি যখনই কোনো কিছু শিখেছি, সেখানে একটা নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করেছি। সর্বোচ্চটা শেখার চেষ্টা করেছি, যেন কাজটা নিখুঁত হয়। এই ধৈর্য আমি সব সময় রাখি।’

ভারতে গিয়ে লীনা বসাকের কাছে ডিসকভারি মোমের কাজ শেখেন। সেই কাজ দেখেও মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। অরগানিক সাবান তৈরি শেখার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মুক্তাকে।
এ ধরনের সাবান তৈরি শিখতে তিনি গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে থাকাকালীন দুর্ঘটনায় আহত হন। ফিরে আসার আগে পাঁচ দিনের ক্লাসে ১২ ধরনের সাবান তৈরি শিখে তবেই ফিরেছিলেন দেশে। বর্তমানে তিনি ২২ ধরনের সাবান তৈরি করছেন।
বসে থাকা নয়, কাজ করতে ভালোবাসেন
নিজের পরিচয় তৈরি করার একটা তাগিদ সব সময় তাড়া করে ফেরে আফরোজা খানম মুক্তাকে। তিনি কাজ করেন, কাজ শেখান আসলে নিজের জন্যই। ‘একজনকে শেখাতে হবে’—এ কারণেই তিনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শেখার চেষ্টা করেন। মুক্তা নিজে যেমন কোর্স করে শিখেছেন, তেমনই রান্না ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন কোর্সে ক্লাসও নিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কোর্স করানোর সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি।
‘রান্নার একাল সেকাল’ নামের একটি ফেসবুক পেজে নিজের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি প্রকাশ করেন মুক্তা। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে নতুন করে একটি কাজ শেখার আগ্রহ তৈরি হয় মুক্তার ভেতর। তিনি জানান, এমন অনেক মেয়ে আছে, যারা অর্থের কারণে কোর্স করতে পারে না। তাদের জন্য তিনি সরকারি কোর্সের কথা বলেন। তাতে টাকার দরকার নেই।

নিজের মতো তৈরি করা
প্রতিটি কাজে নিজস্বতার ছাপ রাখতে চান মুক্তা। তাই মন দিয়ে কাজের পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটান তিনি। এতে তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে যান বলে বিশ্বাস করেন। ১০ থেকে ১২ বছর আগে ভারতে গিয়ে শিখেছিলেন চকলেট তৈরি করা। এরপর দেশে ফিরে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মোল্ড কিনেছেন। এর ফলে তাঁর তৈরি চকলেটে এসেছে ভিন্নতা। তা দেখে অনেকে চমকে গিয়েছিল। একটি ডাল প্রতিযোগিতায় তিনি খেসারির ডালের পরোটা বানিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন বিচারকদের। সেই রেসিপি
ও পরোটার পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও জানিয়েছিলেন তাঁদের। সে জন্য পরামর্শ নিয়েছিলেন পুষ্টিবিদের।
মুক্তার এমন চিন্তা তাঁর শিল্পকে আরও নিখুঁত করে দেয়। সম্প্রতি চা-বাগানে গিয়ে চা ভর্তার সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তিনি। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করেছেন চা-পাতার পরোটা! মুক্তা বলেন, ‘যদি আবারও কোনো দিন সেই চা-শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা হয়, তাহলে তাঁদের বলব, এভাবে বানিয়েও তাঁরা খেতে পারেন।’
শুধু শিখে নয়, শিখিয়েও আনন্দ
‘কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু দেখেছি, শিখেছি।’
এ যেন মুক্তার জীবনের বিশাল গল্পের সারমর্ম। শুধু ব্লক-বাটিক নয়; একজন মানুষের শিখতে চাওয়া, সুযোগের অভাবে পিছিয়ে যাওয়ার অনেক গল্প কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। ফলে তিনি অন্য নারীদের শেখার পথ সহজ করতে চান। তাই সুযোগ পেলেই মুক্তা এমন প্রশিক্ষণে অংশ নেন, যেন অন্যদের নতুন কিছু শেখাতে পারেন। মুক্তা বলেন, ‘যারা আমার মতো শিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য আমি নিজেকে উন্মুক্ত রেখেছি।’
এ যেন এক নিরন্তর শিখে চলার গল্প, শেখানোর গল্প। অন্যকে সামনের দিকে নেওয়ার গল্প।

‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
ছোটবেলা থেকে হস্তশিল্প শেখার আগ্রহ তাঁর মায়ের কাজ দেখে। এখনো নতুন নতুন জিনিস তৈরি করা শিখে চলেছেন তিনি। কখনো কাপড়ের ফুল, কখনো চকলেট কিংবা সাবান। ৩০ বছর ধরে নিজের বাড়ির নিচতলায় শৌখিন কারুশিল্প নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছেন তিনি। দু-তিন শিফটে এক শ থেকে দেড় শ শিক্ষার্থী তাঁর কাছে মোম, ব্লক, বাটিক, সাবান তৈরি এবং পুঁতির বিভিন্ন কাজ শেখেন।
হাতেখড়ি ছোটবেলায়
মুক্তা যখন ক্লাস সেভেনে পড়েন, তখন সাটিনের কাপড় দিয়ে ফুল বানানো শিখেছিলেন। তাঁর বড় বোনের বান্ধবীরা সেই সময় তাঁর কাছে এই ফুল বানানো শিখতে আসেন। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ার পাশাপাশি নতুন নতুন কাজ শেখা শুরু করেন বিসিক থেকে। ১৯৯১ সালের দিকে মোটামুটি দক্ষ হয়ে ওঠেন মুক্তা। তাঁর বাবা সুইডেন দূতাবাসে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে একবার রাষ্ট্রদূত আসেন তাঁদের বাসায়। তিনি মুক্তার কাজ দেখে প্রশংসা করেন। বিষয়টি তাঁকে আরও উৎসাহিত করে তোলে।

ধীরে ধীরে বিসিক এবং যুব উন্নয়নে বিভিন্ন সরকারি কোর্স করতে থাকেন মুক্তা। একবার বোনের চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চায়না পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফল-ফুল তৈরির কাজ শিখে আসেন! নিজে অনুশীলন করে বারো রকমের ফল বানানো শিখে ফেলেন মুক্তা।
শেখার জন্য দেশ থেকে বিদেশে
মুক্তা বলছিলেন জাপানি টাইডাই শেখার কথা। যে সময় তিনি এই কাজ শেখেন, তখন দেশে জাপানি টাইডাইয়ের কাজ হতো না বললেই চলে। তাদের কাজ করার কৌশল শিখে ফেলেন মুক্তা। ডাক আসে, টেলিভিশনে শেখাতে হবে। ২২ দিনের একটা অনুষ্ঠানে তিনি জাপানি টাইডাই শেখান টেলিভিশনের পর্দায়। মুক্তা বলেন, ‘আমি যখনই কোনো কিছু শিখেছি, সেখানে একটা নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করেছি। সর্বোচ্চটা শেখার চেষ্টা করেছি, যেন কাজটা নিখুঁত হয়। এই ধৈর্য আমি সব সময় রাখি।’

ভারতে গিয়ে লীনা বসাকের কাছে ডিসকভারি মোমের কাজ শেখেন। সেই কাজ দেখেও মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। অরগানিক সাবান তৈরি শেখার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মুক্তাকে।
এ ধরনের সাবান তৈরি শিখতে তিনি গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে থাকাকালীন দুর্ঘটনায় আহত হন। ফিরে আসার আগে পাঁচ দিনের ক্লাসে ১২ ধরনের সাবান তৈরি শিখে তবেই ফিরেছিলেন দেশে। বর্তমানে তিনি ২২ ধরনের সাবান তৈরি করছেন।
বসে থাকা নয়, কাজ করতে ভালোবাসেন
নিজের পরিচয় তৈরি করার একটা তাগিদ সব সময় তাড়া করে ফেরে আফরোজা খানম মুক্তাকে। তিনি কাজ করেন, কাজ শেখান আসলে নিজের জন্যই। ‘একজনকে শেখাতে হবে’—এ কারণেই তিনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শেখার চেষ্টা করেন। মুক্তা নিজে যেমন কোর্স করে শিখেছেন, তেমনই রান্না ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন কোর্সে ক্লাসও নিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কোর্স করানোর সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি।
‘রান্নার একাল সেকাল’ নামের একটি ফেসবুক পেজে নিজের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি প্রকাশ করেন মুক্তা। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে নতুন করে একটি কাজ শেখার আগ্রহ তৈরি হয় মুক্তার ভেতর। তিনি জানান, এমন অনেক মেয়ে আছে, যারা অর্থের কারণে কোর্স করতে পারে না। তাদের জন্য তিনি সরকারি কোর্সের কথা বলেন। তাতে টাকার দরকার নেই।

নিজের মতো তৈরি করা
প্রতিটি কাজে নিজস্বতার ছাপ রাখতে চান মুক্তা। তাই মন দিয়ে কাজের পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটান তিনি। এতে তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে যান বলে বিশ্বাস করেন। ১০ থেকে ১২ বছর আগে ভারতে গিয়ে শিখেছিলেন চকলেট তৈরি করা। এরপর দেশে ফিরে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মোল্ড কিনেছেন। এর ফলে তাঁর তৈরি চকলেটে এসেছে ভিন্নতা। তা দেখে অনেকে চমকে গিয়েছিল। একটি ডাল প্রতিযোগিতায় তিনি খেসারির ডালের পরোটা বানিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন বিচারকদের। সেই রেসিপি
ও পরোটার পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও জানিয়েছিলেন তাঁদের। সে জন্য পরামর্শ নিয়েছিলেন পুষ্টিবিদের।
মুক্তার এমন চিন্তা তাঁর শিল্পকে আরও নিখুঁত করে দেয়। সম্প্রতি চা-বাগানে গিয়ে চা ভর্তার সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তিনি। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করেছেন চা-পাতার পরোটা! মুক্তা বলেন, ‘যদি আবারও কোনো দিন সেই চা-শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা হয়, তাহলে তাঁদের বলব, এভাবে বানিয়েও তাঁরা খেতে পারেন।’
শুধু শিখে নয়, শিখিয়েও আনন্দ
‘কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু দেখেছি, শিখেছি।’
এ যেন মুক্তার জীবনের বিশাল গল্পের সারমর্ম। শুধু ব্লক-বাটিক নয়; একজন মানুষের শিখতে চাওয়া, সুযোগের অভাবে পিছিয়ে যাওয়ার অনেক গল্প কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। ফলে তিনি অন্য নারীদের শেখার পথ সহজ করতে চান। তাই সুযোগ পেলেই মুক্তা এমন প্রশিক্ষণে অংশ নেন, যেন অন্যদের নতুন কিছু শেখাতে পারেন। মুক্তা বলেন, ‘যারা আমার মতো শিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য আমি নিজেকে উন্মুক্ত রেখেছি।’
এ যেন এক নিরন্তর শিখে চলার গল্প, শেখানোর গল্প। অন্যকে সামনের দিকে নেওয়ার গল্প।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
১২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন।
৫ দিন আগে
আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি।
৫ দিন আগে
থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
৫ দিন আগেডা. ফারজানা রহমান

প্রশ্ন: আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি। আমাকে সে ইমোশনাল কথাবার্তা বলে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। আমাকে ছাড়া বাঁচবে না; এমন কথা বলেছিল। অথচ সেই মানুষটি আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমাদের বিচ্ছেদ হওয়ার তিন-চার মাস আগে সে আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
বিচ্ছেদের পর কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়? যাদের এ রকম দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়, তারা কি পরবর্তী জীবনে সুখী আছেন?
ইরা, কুষ্টিয়া।
উত্তর: আমি মনে করি, আপনি সৌভাগ্যবান। সেটি দুটি কারণে—আপনি কর্মজীবী আর সম্পর্কটা বিয়ের পর্যায়ে যাওয়ার আগেই শেষ হয়েছে। আমি আপনার মধ্যে ব্যক্তিত্ব ও পরিমিত রুচিবোধের পরিচয় পাচ্ছি। আপনি কিন্তু আপনার প্রাক্তনের আবেগকে প্রাধান্য দিতেই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি সম্ভবত কোনো বিষয়ে তেমন সিরিয়াস নন। এ রকম কিছু মানুষ থাকে, এদের সঙ্গে সম্পর্ক এমনিতেও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিচ্ছেদের পর স্বাভাবিক জীবনে আসতে হলে, মন থেকে এই ভালোবাসার অধ্যায়ের ইতি এখানেই টানুন। নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করুন। নিজের যা অর্জন, সেগুলোর মূল্যায়ন করুন।
যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। শুধু নিজেকে সময় দিন; সময় নিন।
এমন অনেককে খুব কাছ থেকে আমি দেখেছি, যাঁরা বিচ্ছেদের পর খুব ভালো আছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার কোনো ভুল নেই, দোষও নেই।
যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। নিজেকে সময় দিন; সময় নিন। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি আপনার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। আমি নিশ্চিত, একজনের কথা এবং আবেগসর্বস্ব মানুষের ভালোবাসার অভিনয় থেকে মুক্তি পেয়ে আপনি স্বস্তি ও শান্তি ফিরে পাবেন। একটু বুঝেশুনে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আপনি অবশ্যই পরবর্তী জীবনে সুখী হবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. ফারজানা রহমান
সহযোগী অধ্যাপক
মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

প্রশ্ন: আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি। আমাকে সে ইমোশনাল কথাবার্তা বলে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। আমাকে ছাড়া বাঁচবে না; এমন কথা বলেছিল। অথচ সেই মানুষটি আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমাদের বিচ্ছেদ হওয়ার তিন-চার মাস আগে সে আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
বিচ্ছেদের পর কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়? যাদের এ রকম দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়, তারা কি পরবর্তী জীবনে সুখী আছেন?
ইরা, কুষ্টিয়া।
উত্তর: আমি মনে করি, আপনি সৌভাগ্যবান। সেটি দুটি কারণে—আপনি কর্মজীবী আর সম্পর্কটা বিয়ের পর্যায়ে যাওয়ার আগেই শেষ হয়েছে। আমি আপনার মধ্যে ব্যক্তিত্ব ও পরিমিত রুচিবোধের পরিচয় পাচ্ছি। আপনি কিন্তু আপনার প্রাক্তনের আবেগকে প্রাধান্য দিতেই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি সম্ভবত কোনো বিষয়ে তেমন সিরিয়াস নন। এ রকম কিছু মানুষ থাকে, এদের সঙ্গে সম্পর্ক এমনিতেও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিচ্ছেদের পর স্বাভাবিক জীবনে আসতে হলে, মন থেকে এই ভালোবাসার অধ্যায়ের ইতি এখানেই টানুন। নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করুন। নিজের যা অর্জন, সেগুলোর মূল্যায়ন করুন।
যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। শুধু নিজেকে সময় দিন; সময় নিন।
এমন অনেককে খুব কাছ থেকে আমি দেখেছি, যাঁরা বিচ্ছেদের পর খুব ভালো আছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার কোনো ভুল নেই, দোষও নেই।
যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। নিজেকে সময় দিন; সময় নিন। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি আপনার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। আমি নিশ্চিত, একজনের কথা এবং আবেগসর্বস্ব মানুষের ভালোবাসার অভিনয় থেকে মুক্তি পেয়ে আপনি স্বস্তি ও শান্তি ফিরে পাবেন। একটু বুঝেশুনে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আপনি অবশ্যই পরবর্তী জীবনে সুখী হবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. ফারজানা রহমান
সহযোগী অধ্যাপক
মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
১২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন।
৫ দিন আগে
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
৫ দিন আগে
থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
বনের সম্পদ ও স্থানীয় জীবিকা
বান পংয়ের বন থেকে গ্রামবাসী পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের উপযোগী বনজ সম্পদ। সেখানে পাওয়া যায় টার্মাইট মাশরুম, বাঁশের কচি অংশ, নানা ধরনের পাতাযুক্ত সবজি, এমনকি লাল পিঁপড়ার ডিম। রাচাপ্রাপা জানান, এসব পণ্য স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। এটা গ্রামের মানুষের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস।
গ্রুপটি বনকে আগুনমুক্ত রাখার পাশাপাশি মাশরুম চাষ করছে আগুন ছাড়াই। আগে অনেক এলাকায় মানুষ শুকনো পাতা পুড়িয়ে মাশরুম জন্মানোর চেষ্টা করত। তাতে প্রায়ই বনে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা ঘটত। কিন্তু বান পংয়ে চেক ড্যাম ব্যবহার করে বনভূমির মাটি আর্দ্র রাখা হয়। এতে পাতাগুলো প্রাকৃতিক সার হিসেবে কাজ করে এবং গাছ দ্রুত ও স্বাস্থ্যবান হয়ে বেড়ে ওঠে।
চেক ড্যামের ভূমিকা
রাচাপ্রাপা ও তাঁর দল ২০০৭ সালে ৪০ হাজার ১০০ একর এলাকার বন পুনরুদ্ধার শুরু করে। এর আগে এই জমি ছিল চিনাবাদামের খেত। তাঁরা স্থানীয় প্রজাতির গাছ রোপণ করেছেন এবং তিন শর বেশি চেক ড্যাম তৈরি করেছেন। এগুলো পাথর, কংক্রিট ও মাটির সংমিশ্রণে তৈরি ছোট বাঁধের মতো কাঠামো। এই চেক ড্যামগুলো ছোট নদী ও পানির স্রোত ধরে রাখে, মাটিতে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে। এতে প্রাকৃতিকভাবে বন পুনরুজ্জীবিত হয়।
নারী নেতৃত্বে বন রক্ষাকারী দল
রাচাপ্রাপার গ্রুপে ১০ জন সদস্যের ৮ জনই নারী। তাঁরা নিয়মিত বনে টহল দেন। এ ছাড়া আগুন প্রতিরোধে ফায়ারব্রেক তৈরি করে এবং ওয়াকিটকি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আগুনের খবর দ্রুত ছড়িয়ে দেন। রাচাপ্রাপা বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ প্রথম নারীদের বনে আগুন নেভাতে দেখে অবাক হতেন। কিন্তু দক্ষতা দেখার পর আমাদের প্রতি তাঁদের সম্মান বেড়ে গেছে।’
বনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক
রাচাপ্রাপা বলেন, ‘আমরা যখন বন রক্ষা করি, বনও তখন আমাদের রক্ষা করে।’ চেক ড্যামের কারণে বনভূমিতে আর্দ্রতা ফিরে এসেছে। গ্রামে থাকা হ্রদগুলো এখন সারা বছর পানি ধরে রাখে। এতে মাছ চাষ এবং কৃষিকাজের সুযোগ বেড়েছে। হ্রদে মাছ চাষের মাধ্যমে এখন ৬০ জনের বেশি মানুষ আয়ের সঙ্গে যুক্ত।
প্রাকৃতিক জীবন এবং বন্য প্রাণী
বন পুনরুদ্ধারের ফলে বন্য প্রাণীর বিচরণও বেড়েছে। গ্রুপের সদস্যরা জানান, এখানে নিয়মিত দেখা যায় বন্য শূকর, হরিণ, কাঠবিড়ালি, টিকটিকি, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বন পুনর্গঠন শুধু অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়নি, এর সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে এনেছে।

নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ
বান পংয়ের উদাহরণ প্রমাণ করছে, নারীর নেতৃত্বে বন রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ কতটা কার্যকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীরা বন ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হলে এর ফল অনেক বেশি ইতিবাচক হয়, বন সুস্থ থাকে, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষিত হয়। এর সঙ্গে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবিকা উন্নত হয়। নারীরা বন সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা নিলে দীর্ঘ মেয়াদে পুরো সম্প্রদায় উপকৃত হয়।
প্রশংসা এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা
বান পং এখন থাইল্যান্ডের অন্যান্য গ্রাম এবং বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে এক অনন্য উদাহরণ। তাদের সফল উদ্যোগ এবং নারী নেতৃত্বে পরিচালিত বন ও অগ্নিনিরোধ কর্মসূচি অন্য সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করছে। বান পংয়ের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, বন পুনরুদ্ধার এবং আগুন প্রতিরোধের কৌশল শেখাচ্ছেন এবং হাতেকলমে কাজের মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করছেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ শুধু নিজেদের বন রক্ষা করছে না, এর সঙ্গে আশপাশের গ্রামগুলোর বন রক্ষা এবং টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সাহায্য করছে।
সূত্র: মঙ্গাবে

থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।
বনের সম্পদ ও স্থানীয় জীবিকা
বান পংয়ের বন থেকে গ্রামবাসী পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের উপযোগী বনজ সম্পদ। সেখানে পাওয়া যায় টার্মাইট মাশরুম, বাঁশের কচি অংশ, নানা ধরনের পাতাযুক্ত সবজি, এমনকি লাল পিঁপড়ার ডিম। রাচাপ্রাপা জানান, এসব পণ্য স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। এটা গ্রামের মানুষের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস।
গ্রুপটি বনকে আগুনমুক্ত রাখার পাশাপাশি মাশরুম চাষ করছে আগুন ছাড়াই। আগে অনেক এলাকায় মানুষ শুকনো পাতা পুড়িয়ে মাশরুম জন্মানোর চেষ্টা করত। তাতে প্রায়ই বনে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা ঘটত। কিন্তু বান পংয়ে চেক ড্যাম ব্যবহার করে বনভূমির মাটি আর্দ্র রাখা হয়। এতে পাতাগুলো প্রাকৃতিক সার হিসেবে কাজ করে এবং গাছ দ্রুত ও স্বাস্থ্যবান হয়ে বেড়ে ওঠে।
চেক ড্যামের ভূমিকা
রাচাপ্রাপা ও তাঁর দল ২০০৭ সালে ৪০ হাজার ১০০ একর এলাকার বন পুনরুদ্ধার শুরু করে। এর আগে এই জমি ছিল চিনাবাদামের খেত। তাঁরা স্থানীয় প্রজাতির গাছ রোপণ করেছেন এবং তিন শর বেশি চেক ড্যাম তৈরি করেছেন। এগুলো পাথর, কংক্রিট ও মাটির সংমিশ্রণে তৈরি ছোট বাঁধের মতো কাঠামো। এই চেক ড্যামগুলো ছোট নদী ও পানির স্রোত ধরে রাখে, মাটিতে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে। এতে প্রাকৃতিকভাবে বন পুনরুজ্জীবিত হয়।
নারী নেতৃত্বে বন রক্ষাকারী দল
রাচাপ্রাপার গ্রুপে ১০ জন সদস্যের ৮ জনই নারী। তাঁরা নিয়মিত বনে টহল দেন। এ ছাড়া আগুন প্রতিরোধে ফায়ারব্রেক তৈরি করে এবং ওয়াকিটকি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আগুনের খবর দ্রুত ছড়িয়ে দেন। রাচাপ্রাপা বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ প্রথম নারীদের বনে আগুন নেভাতে দেখে অবাক হতেন। কিন্তু দক্ষতা দেখার পর আমাদের প্রতি তাঁদের সম্মান বেড়ে গেছে।’
বনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক
রাচাপ্রাপা বলেন, ‘আমরা যখন বন রক্ষা করি, বনও তখন আমাদের রক্ষা করে।’ চেক ড্যামের কারণে বনভূমিতে আর্দ্রতা ফিরে এসেছে। গ্রামে থাকা হ্রদগুলো এখন সারা বছর পানি ধরে রাখে। এতে মাছ চাষ এবং কৃষিকাজের সুযোগ বেড়েছে। হ্রদে মাছ চাষের মাধ্যমে এখন ৬০ জনের বেশি মানুষ আয়ের সঙ্গে যুক্ত।
প্রাকৃতিক জীবন এবং বন্য প্রাণী
বন পুনরুদ্ধারের ফলে বন্য প্রাণীর বিচরণও বেড়েছে। গ্রুপের সদস্যরা জানান, এখানে নিয়মিত দেখা যায় বন্য শূকর, হরিণ, কাঠবিড়ালি, টিকটিকি, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বন পুনর্গঠন শুধু অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়নি, এর সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে এনেছে।

নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ
বান পংয়ের উদাহরণ প্রমাণ করছে, নারীর নেতৃত্বে বন রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ কতটা কার্যকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীরা বন ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হলে এর ফল অনেক বেশি ইতিবাচক হয়, বন সুস্থ থাকে, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষিত হয়। এর সঙ্গে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবিকা উন্নত হয়। নারীরা বন সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা নিলে দীর্ঘ মেয়াদে পুরো সম্প্রদায় উপকৃত হয়।
প্রশংসা এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা
বান পং এখন থাইল্যান্ডের অন্যান্য গ্রাম এবং বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে এক অনন্য উদাহরণ। তাদের সফল উদ্যোগ এবং নারী নেতৃত্বে পরিচালিত বন ও অগ্নিনিরোধ কর্মসূচি অন্য সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করছে। বান পংয়ের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, বন পুনরুদ্ধার এবং আগুন প্রতিরোধের কৌশল শেখাচ্ছেন এবং হাতেকলমে কাজের মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করছেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ শুধু নিজেদের বন রক্ষা করছে না, এর সঙ্গে আশপাশের গ্রামগুলোর বন রক্ষা এবং টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সাহায্য করছে।
সূত্র: মঙ্গাবে

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
১২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন।
৫ দিন আগে
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।
৫ দিন আগে
আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি।
৫ দিন আগে