মইনুল হাসান, ফ্রান্স
১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট। চমৎকার ভূমধ্যসাগরীয় আবহাওয়া, রোদ ঝলমলে একটি দিন। ইতালির রোম বিমানবন্দর থেকে টিডব্লিউএ-৮৪০ বিমানটি গ্রিসের এথেন্সের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সবে ইতালির বন্দরনগর বৃন্দিজির আকাশে পৌঁছেছে। ঠিক সে সময়ে বিমানের ককপিটে গিয়ে হাজির হন সুদর্শনা ও সপ্রতিভ এক তরুণী।
চোখে আগুনের ফুলকি। পিস্তল হাতে স্পষ্ট উচ্চারণে পাইলটকে দামেস্কের উদ্দেশে বিমান চালাতে নির্দেশ দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় বিমানচালক বিনা বাক্য ব্যয়ে তাঁর কথা মেনে নেন এবং বিমান ঘুরিয়ে দামেস্কে অবতরণ করেন। বিদ্যুৎগতিতে বিমান ছিনতাইয়ের এমন দুঃসাহসিক অভিযানের কথা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের সর্বত্র। সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হন ফিলিস্তিনি ‘নারী বিমান ছিনতাইকারী’। বিরতিহীন সংবাদ প্রচার হতে থাকে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১১৬ জন যাত্রী নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছিলেন। তবে বিমানটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। অবাক বিস্ময়ে সবার একই প্রশ্ন, ‘কে এই নারী?’
নাম, লায়লা খালিদ। বয়স ২৫। ফিলিস্তিনি বিপ্লবী সংস্থা পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) একজন সদস্য। পশ্চিমের গণমাধ্যমগুলোয় তাঁকে আখ্যায়িত করা হয় প্রথম ‘নারী বিমান ছিনতাইকারী’ হিসেবে। কারণ, বিমানের ইতিহাসে ছিনতাইকারীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তখনো কোনো নারীর নাম যুক্ত হয়নি। পিএফএলপির বিপ্লবী সেলিম ঈসায়ীর নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তিনি বিমান ছিনতাইয়ে অংশ নেন।
বিমান ছিনতাইয়ের সময় এডি অ্যাডামস নামের এক ব্যক্তি গোপনে লায়লার একটি ছবি তুলে নেন। ছবিতে লায়লার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র একে-৪৭। পরে এ ছবি ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে বিপত্তি বেধেছিল অন্যখানে। তা হলো, বিশ্বজুড়ে প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে তাঁর ছবি প্রকাশিত হলে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন এবং আলোচিত হন। ফলে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া তাঁর জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই নিজের চেহারা বদলে ফেলার জন্য তিনি তাঁর নাক ও চিবুকে ছয়বার কষ্টকর প্লাস্টিক সার্জারি করান।
১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লায়লা আমস্টারডাম থেকে নিউইয়র্কগামী একটি বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে ব্যর্থ হন এবং বিমানটি হিথ্রো বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করলে তিনি গ্রেপ্তার হন। ব্রিটিশ সরকার একই বছরের ১ অক্টোবর তাঁকে বন্দিবিনিময় হিসেবে মুক্তি দেয়। মুক্তিলাভের পর লায়লা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য হন।
চার বছর বয়সে নিজের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে পুরো পরিবারের সঙ্গে লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিলেন লায়লা। তারুণ্যে শিক্ষকতা ছেড়ে ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামে যোগ দেন এবং দুঃসাহসিক বিমান ছিনতাইসহ বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নেন। ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা লিনা মাকবুল তাঁকে নিয়ে ‘লায়লা খালিদ দ্য হাইজ্যাকার’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বর্তমানে তিনি তাঁর দুই পুত্রসন্তানসহ জর্ডানের আম্মানে বসবাস করছেন।
লায়লার বিমান ছিনতাইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলের অবৈধ দখল থেকে মাতৃভূমি ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হলেও নিজ দেশে পরবাসী ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বঞ্চনার ইতিহাস করুণ ও নির্মম।
১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট। চমৎকার ভূমধ্যসাগরীয় আবহাওয়া, রোদ ঝলমলে একটি দিন। ইতালির রোম বিমানবন্দর থেকে টিডব্লিউএ-৮৪০ বিমানটি গ্রিসের এথেন্সের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সবে ইতালির বন্দরনগর বৃন্দিজির আকাশে পৌঁছেছে। ঠিক সে সময়ে বিমানের ককপিটে গিয়ে হাজির হন সুদর্শনা ও সপ্রতিভ এক তরুণী।
চোখে আগুনের ফুলকি। পিস্তল হাতে স্পষ্ট উচ্চারণে পাইলটকে দামেস্কের উদ্দেশে বিমান চালাতে নির্দেশ দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় বিমানচালক বিনা বাক্য ব্যয়ে তাঁর কথা মেনে নেন এবং বিমান ঘুরিয়ে দামেস্কে অবতরণ করেন। বিদ্যুৎগতিতে বিমান ছিনতাইয়ের এমন দুঃসাহসিক অভিযানের কথা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের সর্বত্র। সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হন ফিলিস্তিনি ‘নারী বিমান ছিনতাইকারী’। বিরতিহীন সংবাদ প্রচার হতে থাকে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১১৬ জন যাত্রী নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছিলেন। তবে বিমানটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। অবাক বিস্ময়ে সবার একই প্রশ্ন, ‘কে এই নারী?’
নাম, লায়লা খালিদ। বয়স ২৫। ফিলিস্তিনি বিপ্লবী সংস্থা পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) একজন সদস্য। পশ্চিমের গণমাধ্যমগুলোয় তাঁকে আখ্যায়িত করা হয় প্রথম ‘নারী বিমান ছিনতাইকারী’ হিসেবে। কারণ, বিমানের ইতিহাসে ছিনতাইকারীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তখনো কোনো নারীর নাম যুক্ত হয়নি। পিএফএলপির বিপ্লবী সেলিম ঈসায়ীর নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তিনি বিমান ছিনতাইয়ে অংশ নেন।
বিমান ছিনতাইয়ের সময় এডি অ্যাডামস নামের এক ব্যক্তি গোপনে লায়লার একটি ছবি তুলে নেন। ছবিতে লায়লার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র একে-৪৭। পরে এ ছবি ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে বিপত্তি বেধেছিল অন্যখানে। তা হলো, বিশ্বজুড়ে প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে তাঁর ছবি প্রকাশিত হলে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন এবং আলোচিত হন। ফলে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া তাঁর জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই নিজের চেহারা বদলে ফেলার জন্য তিনি তাঁর নাক ও চিবুকে ছয়বার কষ্টকর প্লাস্টিক সার্জারি করান।
১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লায়লা আমস্টারডাম থেকে নিউইয়র্কগামী একটি বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে ব্যর্থ হন এবং বিমানটি হিথ্রো বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করলে তিনি গ্রেপ্তার হন। ব্রিটিশ সরকার একই বছরের ১ অক্টোবর তাঁকে বন্দিবিনিময় হিসেবে মুক্তি দেয়। মুক্তিলাভের পর লায়লা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য হন।
চার বছর বয়সে নিজের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে পুরো পরিবারের সঙ্গে লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিলেন লায়লা। তারুণ্যে শিক্ষকতা ছেড়ে ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামে যোগ দেন এবং দুঃসাহসিক বিমান ছিনতাইসহ বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নেন। ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা লিনা মাকবুল তাঁকে নিয়ে ‘লায়লা খালিদ দ্য হাইজ্যাকার’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বর্তমানে তিনি তাঁর দুই পুত্রসন্তানসহ জর্ডানের আম্মানে বসবাস করছেন।
লায়লার বিমান ছিনতাইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলের অবৈধ দখল থেকে মাতৃভূমি ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হলেও নিজ দেশে পরবাসী ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বঞ্চনার ইতিহাস করুণ ও নির্মম।
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৪ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৪ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৪ দিন আগে