Ajker Patrika

দুঃখপ্রকাশ করায় হেফাজতকে সাধুবাদ জানালেন লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো সেই ৬ নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
হেফাজতে ইসলামকে নোটিশ পাঠানো ৬ নারী। ছবি: সংগৃহীত
হেফাজতে ইসলামকে নোটিশ পাঠানো ৬ নারী। ছবি: সংগৃহীত

প্রকাশ্য সমাবেশে নারীদের গালিগালাজের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম দুঃখপ্রকাশ করায় সাধুবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো ৬ নারী। একই সঙ্গে ট্যাগিংয়ের রাজনীতি থেকে হেফাজতকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার ফেসবুকে এক বিবৃতিতে তাঁরা এমনটি জানান। তাঁরা হলেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা ও দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী। নারী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা, ক্যামেলিয়া শারমিন ও নীলা আফরোজ।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিগত ৫ মে, ২০২৫ হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নারীকে বেশ্যা, হিজড়া বলে গালি দেবার কারণে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। সেটির প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দুঃখপ্রকাশ করে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে। নারীকে পাবলিক স্পেসে গালি দেবার পর, লিগ্যাল নোটিশের উত্তরে তাদের ক্ষমা চাওয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই এবং গ্রহণ করি।’

তবে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি তারা প্রেস রিলিজে বলেছেন, ‘নারীকে ‘পণ্য’ বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা তারা মেনে নেবেন না এবং ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবেন না।’ এ ছাড়াও তারা বলেন, ‘উগ্র নারীবাদীদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তাঁরা আরও বলেন, এই ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি থেকে তাদের আমরা বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাই। কারো মতের সঙ্গে না মিললেই তাকে কোনো না কোন ট্যাগ দেওয়া যাবেনা। ক্ষমাপ্রার্থনাকে মেনে নিয়েই তাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে ভবিষ্যতে টেবিল টক কিংবা পাবলিক ডিবেটের মাধ্যমে নারীদের সাথে আলাপে অংশ নিতে। নারীর সমঅধিকার কোনোভাবেই পশ্চিমা এজেন্ডা নয়।

সমাজে সকলেই বিরাজ করবেন নিজ নিজ ক্ষমতায় আর সেটিই সমাজের নিয়ম। আমরা আশা করব, তারা নিজেদের চিন্তা চেতনাকে আরও শাণিত করবেন।

হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রতি সম্মান রেখেই আমাদের ৬ নারীর আহ্বান থাকবে, নারীর সাম্য ও সামাজিক মর্যাদার বিষয় নারীই বুঝবে এবং তারা যেন সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। সকল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করাই আমাদের সকলের লক্ষ্য। কাজেই নারীদের ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।

২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানই নারীদের শক্তি তথা ক্ষমতা বোঝার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পেছনে নারীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাই যেকোনো দ্বিমতে এক টেবিলে বসে কথা বলার পরিস্থিতি বজায় রাখবেন এবং ভবিষ্যতে একটি সামাজিক চুক্তিতে আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।

লিগ্যাল নোটিশের একটি কপি তাঁদের কার্যালয়ে পৌঁছে যাবে আইন মোতাবেক। তাঁরা তাদের বর্তমান প্রেস রিলিজটি দিয়ে আইনজীবীকে জানিয়ে দিলেই হবে। এর মাধ্যমে এই লিগ্যাল নোটিশটিও প্রত্যাহার হয়ে যাবে।

আমরা আশা করি, নতুন বাংলাদেশ সবার হবে। আর এই দুঃখপ্রকাশের প্রক্রিয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত